নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ

লিখতেই থাকবো...

অর্থহীন ইতিকথা

অর্থহীন ইতিকথা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অহংকার

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২০

ইতা প্রায় ১৫ মিনিট যাবত চুল আচড়াচ্ছে।আধঘন্টার মাঝে ক্লাস শুরু হবে,সেদিকে কোন খেয়াল নেই।কোনমতেই কোঁকড়া চুলগুলোকে সে আজ বশে আনতে পারছে না।মাঝে মাঝে চুলগুলো কেটে ফেলতে ইচ্ছা করে!

তারপর ধাক্কা দিয়ে এই অশুভ কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ইতা ।যেমনি হোক চুলগুলো নিজের সন্তানের মতো...অবাধ্য সন্তান! মনের অজান্তেই ইতা হেসে ফেলে





ইতার এই দীর্ঘ সময়ের নাটকীয়তা একসময় একঘেয়েমি লাগলেও মা রুবি হকের বেশ ভালই লাগে।ইতার মুখে ফুটেউঠাহাসি রাগ ভালবাসা রুবি হক খুব গোপনে খেয়াল করেন। ইতার এই বিচিত্র কাজ রুবি হক খুব গোপনে রান্নাঘর থেকে দেখেন।

রুবি হকের এত সাবধানতার পরও ব্যাপারটা ইতার নজর এড়ায় না।সে জানে,মা তার এই কাজটা দেখতে ভালবাসেন।





একটা সময় ছিল,মার চুলগুলো মায়ের গোপন অহংকার ছিল।খুব ছোটবেলায় মার চুলগুলো ইতার খুব ভাল লাগতো।মা এর চুলের প্রশংসা করতেন বাবা।আর মা লজ্জায় লাল হয়ে যেতেন।চুলের প্রতি মায়ের আলাদা ভালবাসা ছিল।কারণটা খুব রহস্যজনক না হলেও এর সাথে এক ধরনের ভালবাসা কাজ করতো। বাবা মায়ের পিঠজোড়া চুল দেখেই প্রেমে পড়েছিলেন!



ইতা মাঝেমধ্যে এগুলা ভাবতে ভাবতে আনমনা হয়ে যায়।বাবা মারা যাবার অনেক বছর পার হয়ে গেছে। দুসন্তান নিয়ে রুবি হকের জীবনযুদ্ধের গল্প কারো অজানা নয়।মাঝে মাঝে রুবি হক দরজা বন্ধ করে রুমে বসে থাকতেন। ইতা বুঝতো মা কাঁদছেন।এর মাঝেই দুঃসংবাদটা পাওয়া গেল। ক্যান্সার! সবকিছু সামলে ক্যামোথেরাপি শুরু হয়। মাত্র এক মাসেই ক্যামথেরাপির প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। রুবি হকের পিঠজোড়া চুলের জায়গা দখল করে নেয় স্কার্ফ! রুবি হক ধীরে ধীরে নির্বাসিত জীবনকে সঙ্গী করে নেন। একঘরে হয়ে যাওয়া মা কে ইতা কখনই সান্ত্বনা দেয় না।সে জানে না সন্তান হারালে কেমন লাগে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.