নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রলোভন এবং প্রায়শ্চিত্তের গল্প

১৪ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৭


পূর্বজন্মের মনোলগ
সব সময় এত সাবধান থাকো কেন তুমি? কীসের এত ভয় তোমার? পা ফসকাবার? পা ফসকালে কী হবে? অনেক নিচে নেমে যাবে, অনেক অনেক গভীরে পতিত হবে, এই তো? তারপর কী হবে? কোথায় যাবে? নরকে? নরক কে এত ভয় তোমার? হাহাহা...
খরগোশদের আবাসস্থল
একটি কামরা। বদ্ধ এবং বিষণ্ণ। কিছু আসবাব। না থাকলেও চলতো। ওক কাঠ দিয়ে বানানো পুরোনো দরোজায় লেপ্টে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক হাহাকার। এখানে থাকে ৩ জন খরগোশ, অথবা ৩ জন মানুষ, অথবা ৩ জন মানবসদৃশ খরগোশ, কিংবা খরগোশ সদৃশ মানুষ। বলা যায় যে কোন একটি। তাতে কেউ বাধা দেবে না, কেউ কিছু মনে করবে না, কারো কিছু এসেও যাবে না।
বৃষ্টি ঝরেছে আজ সারা দিন। মুষুলধারে নয়, আবার টিপটিপ ছন্দেও নয়। বৃষ্টি ঝরেছে তার ইচ্ছে মত। কাউকে তোয়াজ করে নয়। কারো মন ভালো করার জন্যে বা কারো মাঝে কাব্যভাব তৈরি করার জন্যে নয়। কাউকে বিষাদী বা স্মৃতিকাতর করার জন্যে নয়। কারো কোথাও যাবার তাড়া নেই, বলা ভালো; কারো কোথাও যাবার ইচ্ছেই নেই। কোথায় যাবে মনুষ্য খরগোশের দল? এই বদ্ধ ঘরের ভেতর যে দরোজাটা আছে তা শাবল দিয়ে আটকানো। শক্তিশালী ইস্পাত। ভারী কাঠ। তাই আর কেউ সেটা ভাঙার চেষ্টা করে নি। কেটলিতে পড়ে আছে এক শতাব্দী পূর্বের বিকটবিদঘুটেবিস্বাদ চা। কারো খেতে ইচ্ছে করে নি। কে ওই কেটলিটা এনে রাখলো, কেনই বা রেখেছে তারও কোন তথ্য নেই।
তারা তিনজন। একজন দরোজা সংলগ্ন আয়রন টেবিলটায় জামা-কাপড় ইস্ত্রি করছে। আর বাকি দুইজন সোফায় বসে আছে। তাদের প্রত্যেকের শরীর মানুষের, আর মাথাটা খরগোশের। এর জন্যে তারা আনন্দিত নাকি বিষাদগ্রস্ত তা অবশ্য বোঝার উপায় নেই।
আয়রন করতে থাকা মানুষটির শরীরে মেয়েদের পোষাক পরানো। সোফায় বসে থাকা একজন মেয়ে, আরেক জন পুরুষ। ধরা যাক তাদের নাম যথাক্রমে রেখা, জুলেখা এবং একা।
কক্ষের ভেতরে যেন জায়গায় জায়গায় নিস্তব্ধতার মাইন পুতে রাখা। নিস্তব্ধতা হিমে হিমে বছরের পর বছর পার করে জমাট বেঁধে খাঁটি বিস্ফোরক হয়ে গেছে। হয়তো বা আর কিছুক্ষণ ভেন্টিলেটর থেকে নীরবতার শীত শীত হাওয়া এসে পৌঁছুলেই প্রাণ ফিরে পাবে বোমারু আসবাব গুলো। কিন্তু এই ষড়যন্ত্র কখনই বাস্তবায়িত হয় নি। হবে না কখনও।
হয়তো।
-আজ সারাদিন বৃষ্টি হলো।
একা সোফা থেকে উঠে কে জানে কেন পায়চারি করতে লাগলো। সে হয়তো আশা করেছিলো এর জবাবে রেখা অথবা জুলেখা ভদ্রতাসূচক কোন প্রত্যুত্তর করবে অথবা সম্মতির সুরে মাথা নড করবে। এসব কিছু হয়েছিলো কি না তা অবশ্য জানার কোন উপায় নেই। কারণ একা সেটা খেয়ালই করে নি।
-ভুলে যেও না আজ শুক্রবার।
বেশ খানিকটা বিরতির পর রেখার গলা শোনা গেলো। রেখা আয়রন করছে তখনও। এটা একার কথার জবাব হলো, না কি আরো একটি মনোলগ, তা অবশ্য নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে এই কথাটি বলার পর অনেক দূর থেকে কারা যেন...
অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।
জুলেখা জিজ্ঞেস করলো, আমাকে কি কেউ ফোন করেছিলো?

(২)
পূর্বজন্মের ডায়ালগ
-আজ বিকেলে পাখি শিকার করতে বেরুবো।
-কোন পাখি শিকার করবে তুমি নাগর? পাখাওলা নাকি পাখা ছাড়া?
-হাহাহা! তুমি কথায় কথায় যে মেটাফর গুলি ইউজ কর না, শুনতে বেশ মজা লাগে।
-আমি তোমার বন্দুক এবং আন্ডারওয়্যার পরিষ্কার করে রেখেছি।
-এজন্যেই তোমাকে আমার এত ভালো লাগে।
-হ্যাঁ, আমিও বেশ উপভোগ করছি সম্পর্কটা।
-কোন সম্পর্কটা? আমার আর তোমার, নাকি আমার আর তার? অথবা তোমার আর তার?
খরগোশেরাও একসময় ব্ল্যাক মেটাল পছন্দ করতো
রেখা গুনগুন করে কী যেন গাইছে। একা কান খাড়া করে আছে সুরটা বোঝার জন্যে।
-এটা যেন কোন গান?
জুলেখা কৌতুহলী হয়ে উঠেছে বেশ। কিন্তু রেখা বা একা কেউ কোন উত্তর দিলো না।
সুরটা সংক্রামক। ওদের কে আক্রমণ করে বসলো অযথা। যেন জাগতিক মোহে উদভ্রান্ত মাতাল সন্ন্যাসীর অবিন্যস্ত ধ্যান। যেন গ্রীষ্মের দুপুরে হঠাৎ গাট্টি বোঁচকা নিয়ে নয় অতি শীত দেশে হাজির অতিথি পাখিদের বিষাদী অভিযাত্রার বয়ান। অথবা ওইজা বোর্ডে হঠাৎ ভর করে বসা পাপাচারীর নস্টালজিক অভিযাত্রার ভয়াল ফিসফিসে ছায়া বিবরণী।
নরওয়ে। কালো জাদুকরদের সুরের পসরা।
Burzum.
Dunkelheit
কয়েকটি মৃত্যু। আগুনের সঙ্গমে ধর্ষিত চার্চ।
When night falls
She cloaks the world
in impenetrable darkness.
A chill rises
from the soil
and contaminates the air
suddenly...
life has new meaning
বিস্রস্ত ভাঁড়দের পাগলের মত ছুঁয়ে ছুঁয়ে দিয়ে যায় অমরত্বের অমীয় গরল পান করে থাকা ফ্রাস্ট্রেটেড কাপালিকের দল। তবুও এই ঘরের নীরবতা কাটে না। জুলেখা আবারও প্রশ্ন করে বেরসিকের মত, বোকার মত
আজ কী বার? কয় তারিখ?
পরিপার্শ্ব আবারও ভারী হয়ে ওঠে কাদের যেন হাসিতে...

(৩)
পূর্ব জন্মের ট্রায়ালগ, অথবা ম্যাক্সিকান স্ট্যান্ড অফ
-আমি কতবার, বার বার করে বলেছি, ওর কাছে যাবে না। ও একজন কালো জাদুকর। ও তোমাকে প্রাচীন জাদুঘরে বন্দী করে রাখবে। হাজার চাইলেও মুক্তি পাবে না।
-কিন্তু আমি শুনেছি ও নাকি কম দামে ভায়াগ্রা বিক্রী করে।
-তোমার ভায়াগ্রা কেনার দরকার নেই। আমার দরকার একটা ভালো মানের বটি আর কিছু স্নাফ ফিল্মের সিডি।
-আর আমার দরকার একটা টেলিস্কোপ।
-টেলিস্কোপ দিয়ে কী করবে শুনি? যতসব উদ্ভট আবদার তোমার।
-আশ্চর্য! তোমাদের যা যা দরকার তা বলতে ক্ষতি নেই, আর আমি কিছু একটা চাইলেই যত সব বায়নাক্কা?
-টেলিস্কোপের অনেক দাম।
-ভায়াগ্রাও কম দামী নয়।
- আর স্নাফ ফিল্ম? ওসব তো কালোবাজার ছাড়া পাবেই না।
-হ্যান্ডস আপ, আর একটা কথা বললে আমার স্বল্পত্থিত লিঙ্গ দিয়ে তোমাদের সবাইকে আঘাত করবো।
-হ্যান্ডস আপ! আর একটা আবদার করলে আমার ঝুলন্ত স্তন দিয়ে তোমাদের পিষে মারবো।
-হ্যান্ডস আপ! আর এক পা এগুলে আমার পায়ের প্লাস্টার দিয়ে সবাইকে আঘাত করবো।
নারকীয় স্তব্ধতার সাড়ম্বরে অনুতাপহীন কিছু প্রাণের র‍্যান্ডম উক্তি এবং দর্শক প্রতিক্রিয়া
-আই হ্যাভ আ সিক্রেট।
-আই হ্যাভ আ সিগ্রেট।
-লেটজ গো টু দ্যা সেক্রেটারিয়েট।
-সেক্রেটারিয়েট শুক্রবারে বন্ধ থাকে না?
(প্রচণ্ড হাসির শব্দ)
-কটা বাজে এখন?
(শুনে ‘ওরা’ হাসিতে ফেটে পড়লো)
-আমার ধারণা এটা দক্ষিণ পাইকপাড়া
(ভীতিকর হাসির শব্দ)
-এটা ইস্ট লন্ডন হবার সম্ভাবনাই বেশি।
(তরল হাসির ঢেঊ বয়ে গেলো)
-না, এটা প্রাক্তন রোডেশিয়া।
(প্রাণ খুলে হেসে নিলো ‘ওরা’)
-আমি বুঝতে পেরেছি ওরা কখন এবং কেন হাসে।
(প্রশংসা সূচক অব্যয় এবং হাত তালি)
-আমি আগে থেকেই জানতাম।
(বিস্ময় সূচক অব্যয় এবং হাত তালি)
-আমিও জেনে ফেলবো শিঘ্রই।
(হাত তালির শব্দে তিষ্টোনো দায়)
-আজ অনেক বৃষ্টি হয়েছে।
-সেদিনও অনেক বৃষ্টি ছিলো।
-আর মাটি ছিলো স্যাঁতস্যাতে এবং নরম।
-আর তাই কোঁদাল চালাতে ওদের খুব সুবিধে হয়েছিলো।
-রক্ত সহজেই ধুয়ে মুছে গিয়েছিলো।
-ওরা এক যোগে প্রার্থনা করেছিলো।
-হাস্যকর ভাড়ামী। এর চেয়ে মলয় রায় চৌধুরির হাংরি বুলেটিন পড়ে শোনালে ভালো হতো।
-কিংবা যদি পড়তো বার্বি গার্লের স্মৃতিকথা...
-কেউ যদি সঙ্গোপনে প্রার্থনা বইয়ের মধ্যে পর্ন পুস্তিকা ভরে দিতে পারতো...
-আমার সিক্রেট ফুরোলো বট গাছটি মুড়োলো।
-আমার সিগ্রেট শেষ হবে, ক্যাকটাস ফুটবে বাথটাবে।
-আমি এসবের শেষ দেখতে চাই। আগামী মাসের তৃতীয় তরশু কালে আমি সেক্রেটারিয়েট যাবো।
(শ্রদ্ধামিশ্রিত হাত তালি, যা কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিণত হলো বিদ্রপাত্মক হাসিতে। কে যেন সময়টাকে ধরে চাবকাতে লাগলো, আর তা দেখে ‘স্থান’ বারবার মুর্ছা যেতে লাগলো।)

যোগসূত্র

-ক্যাচক্যাচ শব্দ হচ্ছে কোথাও।
-কেউ আসছে।
-কেউ আসছে?
-অদ্ভুত ব্যাপার! এখানে গত তিন হাজার বছরে কেউ আসে নি।
-ভুল। আমি এসেছি মাত্তর তিন মাস আগে।
-আরে নাহ! সংখ্যাটা আদতে হবে তিন কোটি বছর।
-অদ্ভুত ব্যাপার! কেউ হাসলো না এবার!
-হ্যাঁ, স্থান-কাল সম্পর্কিত কোন কথা শুনলেই ওরা...
সে কথা শেষ করতে পারলো না। দরোজা ক্যাচক্যাচ করতে লাগলো প্রচণ্ড শব্দে। বহুকালের অব্যবহারে ক্লান্ত কেঠো শরীর পোয়াতি শূকরের মত ঘোঁৎঘোঁৎ করতে লাগলো। খুব অস্পষ্ট ভাবে ধীরে ধীরে খুলতে থাকলো দরোজা টা। কেউ আসছে, কেউ একজন আসছে! দরোজা খুলছে, খুলছে, খুলছে...হঠাৎ প্রচণ্ড চিৎকার। তিনটে মানব খরগোশের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে কে? কেন? কীভাবে?

পরিশিষ্ট
কোন এক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে শুয়ে আছে ভ্যালেন্তিনা রুকাইয়া তন্দ্রা ইউলিয়া লিং চি...
দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত। সংজ্ঞাহীন। লাইফ সাপোর্ট দেয়া। আচমকা সে চোখ মেললো। দেখলো দরোজা খুলে ঠান্ডা মাথার এক খুনী কসাই আসছে নানাবিধ যন্ত্রপাতি নিয়ে। আজরাঈল আসছে ডাক্তারের ছদ্মবেশে। ভীষণ জোরে চিৎকার করে উঠলো সে। আর দৃশ্যান্তর থেকে কে বা কারা যেন বলে উঠলো,
-স্বাগতম!

ডেভিড লিঞ্চের "Rabbits" অবলম্বনে

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভালো লিখেছেন। যদিও কিছু কিছু জায়গায় বুঝতে অসুবিধা হয়েছে। পরে আর একবার পড়তে হবে।


ধন্যবাদ হা মা ভাই।

১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৪১

হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্পটা ভীষণ দুর্বোধ্য। স্বীকার করি। ব্যাখ্যাটাও বিশাল! :(

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: পড়লাম কিন্তু কিছু বুঝেছি বলে মনে হলো না। তবে শেষটায় 'পরিশিষ্ট' পড়ে বুঝলাম ডাক্তারের উপর রাগ ঝাড়া হয়েছে। ডাক্তারকে খুনি করা হয়েছে। আর মৃত্য স্বাগতম জানালো ডাক্তারকে।

১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: এটা আসলে মৃত্যু আর জীবনের মাঝের ফাঁকা কিছু অংশের ফাঁপা সারবৃত্ত!

মরে যাবার পর সব মানুষ এক হয়ে যায়। তখন পূর্ব জীবনের সেই ভীষণ লগবগে অনুভূতিবর্গের কিছুই এক থাকে না। স্বর্গ-নরক মিলেমিশে ভোঁতা হয়ে যায়। সংখ্যা, বর্ণ, স্বাদ, সবকিছু তারা মেলাতে চেষ্টা করে, তারা ভাবে যে পারবে, কিন্তু পারে না।

খরগোশমানবেরা সকল জীবিত ব্যক্তির ছায়া। আর মৃত্যু যখন কাছে আসে, তখন দেশ-কাল-বর্ণ-কালচার কোন ভেদাভেদ থাকে না।

ভ্যালেন্তিনা রুকাইয়া তন্দ্রা ইউলিয়া লিং চি
নামটাতেই আছে অনেক ব্যাখ্যা।

ধন্যবাদ আপনার ভাবনার জন্যে।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মাথা পুরাই হ্যাং কইরা দিলেন ;)

এত্তসব ভাবনা লইয়া ঘুমান কেমতে;) ???? হা হা হা

১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: ২ নাম্বার কমেন্টের রিপ্লাইটা দেইখ্যা লন!

৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৪৫

কলমের কালি শেষ বলেছেন: লেখার সাংঘর্সিক চমৎকারিত্বগুলো ভাল লেগেছে হামা ভাই । তবে আপনার বিগত লেখাগুলোর সাথে এই লেখাটাকে দূর্বল মনে হয়েছে আমার কাছে ।

১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমার কাছে অবশ্য এইডা সাংঘাতিক ভালো মনে হইছে B-)

৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:০৯

জেন রসি বলেছেন: আগেই পড়েছি বইতে। আপনার লেখা বেশ কিছু গল্প আমাকে নিজের মত করেই বুঝে নিতে হয়েছে! তবে এ গল্পটা আসলেই দুর্বোধ্য। পরাবাস্তব দৃশ্য। কোরিলেট করা যায়না এমন সব সংলাপ। তবে যাপিত জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে খুব ভিন্ন একটা আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন। গল্পের নামে এবং শরীরে এমন কিছু সংকেত আছে যার ফলে ইডেন গার্ডেনের কথা মনে পড়ে যাওয়াটা দোষের কিছু না। প্রলোভন, পতন এবং পাপ- সব মিলে যাপিত জীবনের একটা গল্প বলতে চেয়েছেন। এমনটাই আমার মনে হয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত আমি গল্পের অনেক কিছুই বুঝিনি। আপনার কাছে ব্যাখ্যা চাচ্ছি।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: সূচনাটা খুব ব্যক্তিগত। এটা পাঠকের বোঝার কোন কারণ নাই! নিজেকেই উদ্দেশ্য করে বলা। লিখে ফেলো গল্পটা। এত দ্বিধার কী আছে! কলমকে স্বেচ্ছাচারীতা করতে দাও!
খরগোশদের আবাসস্থল

এই অংশটি আমি ভেবেছি, একটি বাফার জোন। মৃত্যু পরবর্তী আবাসস্থল। হতে পারে এটাই নরক! নরক বলতে আমরা যে ভীষণ দুর্যোগ বুঝি, সেটাকে অন্যভাবে দেখানো। আগুন, সাপ, হিম এর বদলে শুধু একঘেয়েমীর বর্বরতা। যেখানে কোন কিছুর কোন অর্থ নেই। কাপড় আয়রন করে চলেছে, বৃষ্টি হচ্ছে, কেউ ফোন করেছে কি না জিজ্ঞেস করছে। আর এসবের উত্তরে কী পাচ্ছে? অট্টহাসি। এই হাসিটা কার?!
(২)
পূর্বজন্মের ডায়ালগ

এই অংশে আমরা আবার ফিরে যাই অতীতে। যখন তারা 'বেঁচে' ছিলো। এই যে স্বল্প সময় বেঁচে থাকা, এটাকেও আমরা কী ভীষণ অর্থহীন করে তুলি! দেখা যায় জীবন আর মৃত্যু, এই দু জায়গার নরকের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্যই নেই। গ্রে জোনটা দীর্ঘতর হয় ক্রমশ। আবারও অট্টহাসি। কে!!
মাঝখানে একটা খুব প্রিয় গানের লিরিক ব্যবহার করেছি। গল্পটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খুব। শুনে নিন।
https://youtu.be/DPyOhP1GTRQ

(৩)
পূর্ব জন্মের ট্রায়ালগ, অথবা ম্যাক্সিকান স্ট্যান্ড অফ

পুরোটাই অর্থহীন সংলাপে ভর্তি। মানুষ চেষ্টা করছে ঘুরে দাঁড়ানোর। জেগে ওঠার। কিন্তু সময়কে ধরে চাবকাচ্ছে কে? 'স্থান' এর কোন সংজ্ঞাও তাদের জানা নেই। এ এক আশ্চর্য জায়গা। আশ্চর্য রকম লিকুইড। এখানে কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তাহলে আমরা আসলে কীসের দিকে যাচ্ছি? আমরা খুব বোকা না?
যোগসূত্র
কেউ একজন মারা যাচ্ছে। সে আসছে নরকের দিকে। দরোজা খুলে যাচ্ছে। ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ হচ্ছে। আর তাতে উৎসাহী হয়ে উঠছে মানব খরগোশ, অর্থাৎ নরকসদৃশ জায়গার অধিবাসীরা।
মানুষ শেষতক মানুষকেই চায়। অতি উচ্চতর অবস্থানে অধিষ্ঠিত কাউকে না।
পরিশিষ্ট
মৃত্যু যখন কাছে আসে, তখন দেশ-কাল-বর্ণ-কালচার কোন ভেদাভেদ থাকে না। এজন্যেই নাম দেয়া হয়েছে ভ্যালেন্তিনা রুকাইয়া তন্দ্রা ইউলিয়া লিং চি...(শেষ হয় নি কিন্তু নামটা!)।

জীবন্মৃতের মত বেঁচে থেকে মৃত্যুর পর পূনর্জন্ম যদি হয়, তা আদিজন্ম থেকে খুব একটু বিচ্যুত কিছু হবে না। মানুষ যতটা পারে জীবনকে রাঙাতে ঈশ্বর ততটা কি পারে মরণকে মহিমান্বিত করতে?

৬| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:১৮

করুণাধারা বলেছেন: বড় শক্ত।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: একমত।

একটু ৫ নাম্বার কমেন্টের ব্যাখ্যা পড়বেন?

৭| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:২৬

সুমন কর বলেছেন: মৃত্যু আর জীবনের মাঝের ফাঁকা কিছু অংশের ফাঁপা সারবৃত্ত! -- মূল গল্পটি পড়িনি। তবে আপনারটি পড়ে ভালোই লাগল।

২ নাম্বার কমেন্টের রিপ্লাইটা দেইখ্যা ভালা হইছে। ;)

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: এবার ৫ নং কমেন্টের রিপ্লাইটাও দেখে নিন ;)

৮| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৪১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বইতে পড়েছি।
এটা আর অবাস্তব যোগজীকরণের উচ্চাভিলাস আমার কাছে দুর্বোধ্য লেগেছে

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঐটা বুঝতে হালকা ম্যাথ জানা লাগবে :-B

রিভিউ কই? X((

৫ নং কমেন্টের রিপ্লাই দেখো।

৯| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২১

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: কখন মরণ আসে ..... কেবা জানে ?মনিকা আমাদের বন্ধু ,বলেছিলো পরে মরে যাবার চাইতে অর্ধনারীশ্বর হয়ে যাও , হিসাব করতে হবে না ঠিক কতটা পড়লে মরে যাবো ?

দরোজা খুলছে, খুলছে, খুলছে...হঠাৎ প্রচণ্ড চিৎকার।তারপর অসীম নীরবতা নাকি সাইকেল অফ লাইফ ?

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: সাইকেল অফ লাইফ-ডেথ-লাইফ-ডেথ-লাইফ...

খুব একটু পার্থক্য আসলে নেই জীবন-আর মৃত্যুতে। নির্ভর করে আমাদের ওপর। শুধুই আমাদের ওপর।

১০| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: দূর্বোধ্য! তবে যট্টুকু ধরতে পেরেছি তা উপভোগ্য ঠেকেছে বেশ!

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: উপভোগ করাটাই মূল ব্যাপার!

১১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:০৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

গল্পের সাথে মন্তব্যও পড়তে হলো।
তবে দারুণ চেষ্টা... কারণ যা বুঝেছি এবং যা বুঝি নি... সবই ভালো লেগেছে।

গল্পকার হাসান মাহবুবকে অনেক শুভেচ্ছা :)

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ মইনুল ভাই। শুভকামনা রইলো।

১২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: বুর্জুম ডাঙ্কেলএইট

নাম লিখতে আমার কলম ভেঙে যায় , কিন্তু লিরিক্স বেশ পচন্দ !

When night falls
She cloaks the world
In impenetrable darkness

A chill rises
From the soil
And contaminates the air
Suddenly...
Life has new meaning

When night falls
She cloaks the world
In impenetrable darkness
A chill rises
From the soil
And contaminates the air

When night falls
She cloaks the world
In impenetrable darkness
A chill rises
From the soil
And contaminates the air
Suddenly...
Life has new meaning

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুইনা দেখেন। ভাল্লাগবো।

১৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৪

ক্লে ডল বলেছেন: প্যাটার্ন খুব ভাল লেগেছে! ভিন্ন প্রচেষ্টাই আমার কাছে আকর্ষণীয়।

এলোমেলো, অর্থহীন সংলাপগুলো পড়ে স্যমুয়েল বেকেটের ওয়েটিং ফর গডো নাটকটির কথা মনে এসেছে আমার।

তবে, পুরুষের নাম "একা"? প্রতীকি কিছু?

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:২০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ওয়েটিং ফর গডোর সাথে আমার একটা গল্পের খুব মিল আছে।
শহরের মতিভ্রম

একা নামটা কীজন্যে দিছিলাম মনে নাই =p~

১৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫২

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: সকালে পড়েছিলাম কিন্তু ছোট মাথায় ঢুকেনি লেখাটা।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্পটা অন্য কেউ লিখলে আমি নিজেও বুঝতাম না :|

১৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৪৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব ,



লেখাটি পড়ে "এ্যালিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড" এর কথা মনে পড়ে গেলো .......... উদ্ভট সব ঘটনা এবং তার-ই মাঝে ফাঁপা কিছু জীবনদর্শন পারিপার্শ্বিকতার আড়ালে ।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৪৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: সেই উপমা দিছেন!

১৬| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫০

পথে-ঘাটে বলেছেন: ইহা একটি অসাধারণ গল্প এবং ইহা অসাধারণদের জন্যই লেখা হয়েছে। আমার জন্য না। তারপরও পড়ে ফেললাম। পড়ার পর কমেন্ট করার জন্য কোন কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। শুধু একটা শব্দই মাথায় এসেছে - অদ্ভুত!!!


একটি সাধারণ গল্প পড়ার জন্য আমার ব্লগ বাটিতে আপনাকে নিমন্ত্রণ।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: সাধারণের মাঝেই অসাধারণ বিদ্যমান।

কাল আসবো।

শুভরাত্রি।

১৭| ১৬ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫৪

বৃতি বলেছেন: সব তুচ্ছতা নিয়ে তবু পৃথিবীর জীবনকেই আকর্ষণীয় মনে হয়--স্বর্গ বা নরকের একঘেয়েমিকে নয়। পৃথিবীতে অনর্থক হাসি আছে, অনর্থক আড্ডা আছে। অ্যাবসার্ডিটির ওপর ভিত্তি করে সুন্দর গল্প।

১৬ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ বৃতি। ভালো থাকবেন।

১৮| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৩৭

সোহানী বলেছেন: গল্পটা দু'বার পড়েছি, জেন রসিকে দেয়া উত্তর তিনবার পড়েছি, বাকি মন্তব্যগুলো একবার পড়েছি......। এবং যোগফল কিছুই বুঝিনি। আসলে আপনার গল্প বুঝতে অনেক সময় নেয় নতুবা বোঝার মতো পরিপক্কতা এখনো আসেনি.... :P

না বুঝেই +++++++++++++

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমার সব গল্প কিন্তু এত দুর্বোধ্য না। নেক্সট পুস্টে সুজা-সাপ্টা গফ দিমু। তখন বুইঝ্যাই প্লাস দিয়েন।

১৯| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:১১

কলমের কালি শেষ বলেছেন: আপনার এই গল্পের সাদৃশে একটা কবিতা লিখেছিলাম । দেখার আমন্ত্রণ রইলো । :)

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: আসছি !:#P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.