নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"I am not too much bad as you think and I am not too much good as you think.\"

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন

অন্যরকম মানুষ!

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাত কুচিয়া! ! !

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০০

পরশুরাম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত ফেনী জেলার একটি পৌরসভা। তো ঐ পৌরসভাতে সাতকুচিয়া নামক একটা বিশাল দিঘি আছে। থাকতেই পারে। এ নিয়ে এত মাতামাতির কি আছে? সে বিষয়েই আসছি।

অনেক বছর আগে (যতটুকু শুনেছি প্রায় ৫০-৬০ বছর আগে) বিয়ে শেষে পালকি করে নতুন বৌকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল বরপক্ষ। চলতে চলতে তারা সাতকুচিয়া দিঘির কাছাকাছি চলে এলো। হঠাত্‍ নতুন বৌ বলল তার পানির তেষ্টা পেয়েছে। এজন্য বৌকে দিঘির পাড়ে নামালো। সময়টা তখন বিকেলের সর্বশেষ ভাগ অর্থাত্‍ কিছুক্ষণ পরেই মাগরিবের আযান দিবে। এই সময়টা এমনিতেই মহিলাদের জন্য খুব একটা ভালো নয়। এছাড়া দিঘিটা নিয়েও এলাকাবাসীরা হ্যাজিটেড ছিল। ঐ দিঘিতে নাকি খারাপ কিছু আছে। তো যাইহোক, নতুন বৌ দিঘির পানিতে নামল এবং পানি পান করল। বিষয়টাকে বরপক্ষের অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নেয়নি এবং তারা বৌকে পানিতে নামতে না ও করেছিল। কিন্তু তখন পানি পান করাটা খুবই জরুরি ছিল। নতুন বৌ যখন পানি পান করে দিঘি থেকে পাড়ে উঠছিলো তখন তার পায়ে কিছু একটা অন্যরকম অনুভুতি হচ্ছিল। পাড়ে উঠে দেখে যে তার পায়ের কনিষ্ঠা আঙ্গুল একটা শিকল আটকিয়ে ফেলেছে। তখন তো সবাই সকড। ইতোমধ্যে বোধয় মাগরিবের আযান দিয়ে ফেলেছে। বরপক্ষের লোকজন তখন শিকলটাকে ধরে টানতে শুরু করলো। টানছে তো টানছেই! টানতে টানতে সবাই ক্লান্ত। পাড়ে বিশাল এক শিকলের স্তুপ হয়ে গেছে। কিন্তু ঐ শিকলের যেন শেষ নেই, নেই কোনো কূল কিনারা। পরে দক্ষ কামার নিয়ে আসা হলো। কিন্তু কামার কর্তৃক শিকলের বন্ধন ছিন্ন করার চেষ্টা যেন অরণ্যে রোদন ছিল। এরপরে আরো যা যা সম্ভব ছিল সবই করলো কিন্তু মুক্তি পেল না বধু। রাতে সিন্ধান্ত নেওয়া হলো শিকলাবদ্ধ আঙ্গুলটি সকাল বেলায় কেটে ফেলা হবে। তো রাত্রে কিছু লোক বৌকে পাহারা দিল এবং কিছু লোক ঘুমালো। যারা ঘুমালো তাদের সবাই স্বপ্ন দেখল, কাল সময়ে বধুর দিঘিতে নামাতে দিঘিস্থ পরী টরী বা খারাপ যা কিছু ছিল তাদের কু-নজর পড়েছে বৌয়ের উপর। তারা নতুন বৌটাকে চায় এবং যদি কেউ বৌয়ের শিকলাবদ্ধ আঙ্গুলটি কাটার চেষ্টা করে তাহলে তার চৌদ্দ গোষ্ঠী নির্বংশ করে দেওয়া হবে। স্বপ্নের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে কেউ আর আঙ্গুল কাটার সাহস করলো না। পরদিন গ্র্যাজুয়ালি শিকলটা নতুন বৌটাকে টেনে টেনে দিঘিতে ডুবিয়ে ফেলতে লাগল। অশ্রুবন্যা বইয়ে দেওয়া ছাড়া কেউ কিচ্ছু করতে পারলো না। ডুবে গেল বৌটা। সেই থেকে দিঘিটার হররিটি আরো বাড়তে লাগল। এর কিছুদিন পর অতিবৃষ্টির ফলে দিঘির পানি অতিমাত্রায় বেড়ে গেলো। তখন প্রতক্ষদর্শীদের মতে, দিঘির মাঝখান থেকে উদ্ভত দানবের মতো কিছু একটা বিধ্বংসী রূপে দিঘির পশ্চিম-দক্ষিণ কোণের পাড়টা ভেঙে দিঘি থেকে বেরিয়ে গেছে। লোকেরা ভাবল দিঘিতে যে খারাপ কিছু ছিল তা দিঘি থেকে বিদায় নিয়েছে। শীতকালে যখন দিঘির পানি কিছুটা কমে গিয়েছিল তখন এলাকাবাসীরা ভাবল দিঘিটা সেঁচে ফেলা যাক। যেমন কথা তেমন কাজ। দিঘিটা সেঁচার জন্য পাড়ের চারপাশে প্রচুর পরিমাণে মোটর পাম্প বসানো হলো। সারাদিন ধরে পানি সেঁচা হচ্ছে বাট দিঘি থেকে একটুকু পানিও কমছে বলে মনে হচ্ছে না। রাতে মোটর পাম্পগুলো পাহারা দেওয়ার দিঘির পাড়ে টঙ বানিয়ে মোটর পাম্প এবং দিঘি সংশ্লিষ্ট লোকেরা সেখানে থাকল। গভীর রাতে তারা সবাই অনুভব করলো যে কেউ যেন তাদের গলা চেপে ধরলো এবং বলল আজকে সারাদিন কেন যদি সারাবছরও পানি সেঁচতে থাকিস তাহলেও দিঘির পানি এতটুকু কমবে না। আরো বলল, মোটর পাম্প গুলা বন্ধ না করলে তোদের বংশ নির্বংশ করে দিব। তারপর তারা সবাই ভয় পেয়ে মোটর পাম্পগুলো সরিয়ে নিল এবং দিঘি সেঁচার চিন্তা মাথা থেকে ঝেঁড়ে ফেলে দিল।

উল্লেখিত ঘটনাগুলো অনেক আগের। এখন দিঘির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। দিঘির পাশে মসজিদ মাদ্রাসা আছে। দিঘিতে মানুষরা এখন গোসল করে, মাছ ধরে। দুই মাস আগে আমিও সাতকুচিয়া দিঘিটিতে নেমেছিলাম।

এই দিঘি সম্পর্কে আরেকটা ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো, দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যে পাড়টা ভেঙেছিল সেটা এখন পর্যন্ত জোড়া নেয়নি। বেশ কয়েকবার অনেক মজবুত করে পাড় তৈরি করা হয়ে কিন্তু টিকেনি। আমি নিজও পাড়ের ভাঙা অংশটি প্রত্যক্ষ করেছি।

এই ছিল পরশুরাম পৌরসভার বিখ্যাত সাতকুচিয়া দিঘির ইতিহাস।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮

মেদভেদ বলেছেন: হ ,আগেকার দিনে কারোর বাড়িতে বিয়ে সাদি হলে এই দিঘির কাছে চাইলে সোনার থালা বাসন দিত, তার পর কোনো এক দিন কোনো এক দুষ্টু লোক একটা সোনার থালা চুরি করেছিল তার পর থেকে দিঘি আর সোনার থালা বাসন দেয় না।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেছেন: আপনি যেটার কথা বলছেন সেটা সাতকুচিয়া দিঘি না। আপনার কথিত ঘটনাটা কুমিল্লার একটা দিঘিতে সহ বাংলাদেশের আরো একটা দিঘিতে ঘটতো। জায়গাটার নাম ঠিক মনে পড়তেছেনা।

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৯

মেদভেদ বলেছেন: আরে আমি তো ঐ বরের সাথে বরযাত্রি গিয়েছিলাম।

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


অত আগে মটর পাম্প ছিল না সেসব এলাকায়; কিছু লিখতে হলে সামান্য হলেও ভাবনা শক্তি থাকতে হয়।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেছেন: প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউই এখন বেঁচে নেই। যাদের কাছে শুনেছি তারা কেউই সঠিক সময়টা বলতে পারেনাই। দিঘি সংশ্লিষ্ট কারো দেখাও পাইনি। টাইম ফ্যাক্ট ইজ অল ওভার এ গেইজ। আর কারো ভাবনা শক্তি নিয়া বেশি ঘাটাঘাটি না করাই বোধয় বেটার। বাট ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য থ্যাংকস।

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: সো সো ইন্টারেস্টিং..........। :) :) :)

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেছেন: সো সো থ্যাংকস ভাইয়া! :-)

৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

প্রামানিক বলেছেন: কাহিনী পড়ে মজাই পেলাম। পুরানো ভৌতিক কাহিনী আসলেই ভাল লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামাণিক ভাই!

৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০২

ভোরের সূর্য বলেছেন: পার্বত্য চট্টগ্রাম বা ইংরেজিতে যেটাকে বলে হিল ট্রাক্ট সেটা ৩টি জেলা নিয়ে গঠিত। জেলা ৩টি হচ্ছে রাঙামাটি,বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি। তাই ফেনীর পরশুরাম চট্রগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তর্গত নয়।এটা ঠিক করে দিন।

দ্বিতীয়ত আমিও @চাঁদগাজী ভাইয়ের সাথে একমত যে অত আগে মানে আপনার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১০০বছর আগে মটর পাম্প ছিল না।তাই গল্প লিখতে গেলে পারিপার্শ্বিক দিকগুলো বিবেচনা করা উচিৎ।

যাই হোক। আপনি এই গল্পটি কেন করেছেন বুঝলাম না। যদি বেড়ানোর উদ্দেশ্যে হয় তাহলে ভাল হত ছবি দেয়া। এখন প্রায় সব মোবাইলেই ছবি তোলার ব্যবস্থা আছে। আরো ভাল হত আপনার লেখা আনুযায়ী ইন্টারেস্টিং অংশটি মানে দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যে পাড়টা ভেঙেছিল সেটির ছবি দিতে পারতেন।
বাংলাদেশের সব বড় বড় দীঘি সম্বন্ধেই কমবেশী এরকম মিথ চালু আছে। যদিও সেটা কাল্পনিক। আমাদের ধর্ম কিংবা বিজ্ঞান কোনটাই সেটাকে সমর্থন করে না। তবে বড় দীঘি এবং এর আশে পাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য সবাই আগ্রহ নিয়ে দেখতে চায় আর সাথে বোনাস হিসেবে একটু মিথ।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৮

মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেছেন: আসলে সাতকুচিয়ায় লাস্ট গিয়েছিলাম প্রায় ২ মাস আগে। তেমন পিক টিক তোলা হয়নাই। আর আজকে বিকালে হঠাত্‍ করেই সাতকুচিয়ার কথা মনে পড়ে গেল এবং লিখা শুরু করলাম। আর এই পোষ্টের উদ্দেশ্য? কাউকে কোনো কিছু জানাতে উদ্দেশ্য লাগেনা। এছাড়া পৃথিবীতে এখনও এমন কিছু প্যারা নরমাল ঘটনা ঘটে যার ডেফিনেশন সায়েন্স জানেনা। বাই দা ওয়ে, থ্যাংকস ফর ইউর ইমফরট্যান্ট কমেন্ট।

৭| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৯

বাংলার ফেসবুক বলেছেন: উল্লেখিত ঘটনাগুলো অনেক আগের। এখন দিঘির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। দিঘির পাশে মসজিদ মাদ্রাসা আছে। দিঘিতে মানুষরা এখন গোসল করে, মাছ ধরে। দুই মাস আগে আমিও সাতকুচিয়া দিঘিটিতে নেমেছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.