নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একেক জন মানুষের চিন্তা-চেতনা, ভাবধারা একেক রকম । আর কারো লেখা পড়েই তার চিন্তার অংশীদার হওয়া যায় । তাই নয় কি?

ওয়াসি

বই পড়তে ভালবাসি। মাঝেমধ্যে টুকটাক লেখালেখি করি।

ওয়াসি › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বরফ গলা নদী" উপন্যাস রিভিউ

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২০


সাধারণত রিভিউ খুব কম লিখি। গল্পের বইয়ের তো আরো না। সেমিস্টার ব্রেকের ছুটিতে অনেকগুলো উপন্যাস পড়া হয়ে গেছে। কোনো এক বিচিত্র কারণে জহির রায়হানের সবগুলো বই পড়া থাকলেও তার "বরফ গলা নদী" পড়া হয় নাই।

কাল রাতে বইটা ধরলাম। শেষ করার পর ছোটখাট একটা রিভিউ না লিখে মনে শান্তি হচ্ছে না।

"বরফ গলা নদী" একটি নিম্নবিত্ত অসচ্ছল পরিবারের এবং তাদের ঘিরে আবির্ভূত হওয়া কিছু চরিত্রের সমন্বয়ে তৈরী দৈনন্দিন জীবন-যাত্রার গল্প।

সামান্য বেতনের কেরানির চাকরি করা হাসমত আলী এবং তার স্ত্রী সালেহা বিবির ঘরে পাঁচটি সন্তান। প্রেসে চাকরিরত বড় ছেলে মাহমুদ, ইন্টারমিডিয়েট পাস করা বড় মেয়ে মরিয়ম, তের- চৌদ্দ বছরের চটপটে কিশোরী মেয়ে হাসিনা, সাত বছরের ছোট ছেলে খোকন এবং চার বছরের মেয়ে দুলু।

একটা ভগ্নদশা দালানে সংসার চলে এই দারিদ্রতায় জর্জরিত বড় পরিবারটির । বড় ছেলে মাহমুদের স্বপ্ন ছিল সে বড় একজন সাংবাদিক হবে। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় এসে মানুষের জোচ্চুরি, বাটপারি, মিথ্যা অপপ্রচার, আর বড় লোকদের গরিবের উপর ক্ষমতার আধিপত্য দেখে তার স্বপ্ন বাস্তবতার কাছে হার মানে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় তার। আশেপাশের কাউকে সে সহ্য করতে পারে না। পত্রিকার জন্য ভুয়া খবর লিখতে লিখতে অতিষ্ঠ হয়ে সে একদিন চাকরি ছেড়ে দেয়।

পরিবারের বড় মেয়ে মরিয়ম। ইন্টার পাস করার পর পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করার জন্য সে সেলিনা নামের একটি মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করে। সেলিনার বড় বোনের দেবর মনসুর। মরিয়মকে তার খুব পছন্দ হয়। প্রায়ই সে সেলিনাদের বাসায় যাওয়া আসা করে মরিয়মের সাথে দেখা করার জন্য। মাঝে মাঝে তাকে রাস্তায় একটু এগিয়ে দেয়। মরিয়ম সবই বুঝতে পারে। তারও মনসুরকে ওর ভদ্র স্বভাবের জন্য ভাল লাগতে শুরু করে। কিন্তু অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্য মরিয়মের এখন পুরুষ মানুষকে বিশ্বাস করতে ভয় হয়। তাই চাইলেও মনসুরকে কাছে ভিড়তে দেয় না।

পরিবারে রয়েছে মেজো মেয়ে হাসিনা। সারাদিন লাফালাফি করা যার স্বভাব। একজন কিশোরী মেয়ের এত উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা তার পরিবারের কেউ ভাল চোখে দেখতে পারে না। কথা বলার সময় কোনো বাছ-বিচার নেই তার। বিনা সংকচে সবার সাথে মিশে বেড়ায়। কারো কোনো কিছু ভাল লাগলে হুট করে তার সেটা চেয়ে বসতেও দ্বিতীয় বার ভাবা লাগে না।

এছাড়া গল্পের আরো কিছু চরিত্রে আছে মরিয়মের বান্ধবি লিলি এবং মাহমুদের কয়েকজন বন্ধু। এই চরিত্রগুলোর জীবন যুদ্ধ নিয়েই গড়ে উঠেছে গল্পের কাহিণী।

প্রথম পুরুষে লেখা গল্পের বাচনভঙ্গি সহজ ও সাবলিল। ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট আর কাহিনীবিন্যাসও অনেক সুন্দর। নিম্নবিত্ত পরিবারের কষ্ট আর ছোট ছোট ঘটনার কারণে তাদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশও অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এরপরই রয়েছে একটা অসাধারণ সমাপ্তি, যা পাঠককে নাড়িয়ে দিতে যথেষ্ট।

যারা নিয়মিত বই পড়েন কিংবা অবসরে সুন্দর একটা ফ্রেশ গল্প পড়তে চান তাদের জন্য এটি একটি আবশ্যিক উপন্যাস।

পারসোনাল রেটিং: ৪.৭/৫

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.