নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা দেখেও না দেখার ভান করি, আজ থেকে চলুন তাই দেখি।

রিয়াদ আল সাহাফ

রিয়াদ আল সাহাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসম্ভব আকুতি; প্রাক্তন তুই ফিরে আয়

২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩১

একদিন আমার সারা গা কাঁপিয়ে প্রচন্ড জ্বর আসবে। সেদিন খুব ভালো হবে, অনেক মজা হবে। আমার যদি খুব করে অসুখ হতো। না, কোন মরণব্যাধির দরকার নেই, তবে দিন পনেরো হাসহাতালে ভর্তি থাকতে পারলে বেশ হতো।

সেদিন ঠিকই সে ছুটতে ছুটতে আসবে।

এসেই একরাশ বকা দিবে আমাকে। বলবে, "আগেই বলেছিলাম, ঠিকঠাক নিজের যত্ন নিস। সময়মতো খেতে বলেছিলাম, প্রতিদিন সকাল সকাল নাস্তা করতে বলেছিলাম। আমার কথাগুলো তো কারো ভালো লাগে না, লাগবেও না।"

আমি আর কি করবো?

শুয়ে শুয়ে মুখ ভাড় করার ভান করে হাসি লুকাবো। অসুস্থ হয়ে মটকা মেরে বিছানায় পড়ে থাকবো।

আমি জানি, সে আমার খুব যত্ন নিবে। আমি নিজ হাতেই খেতে পারবো, তবুও সে আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিবেই। আর খেতে না চাইলে আমাকে বাচ্চাদের মত বকা দিবে। ওষুধ খাইয়ে দেবে। প্রয়োজনে সারা গা মুছে দেবে।

আসলে ওকে ছাড়াও থেকে দেখেছি। সে ছাড়া আর কেউই আমাকে শাষণ করেনা, আমার যত্ন নেয়না। তাই, আমি তার কেউ না হলেও ওর একটু আদর, যত্ন বা সোহাগের জন্য আমি একটা অসুখের জন্য অপেক্ষা করি।

কিন্তু সমস্যা হলো, আমি দেখতে তাল পাতার সেপাই হলেও মোটেও রোগা না। কিন্তু, আমি জানি আমার একদিন প্রচন্ড জ্বর হবেই।

আমি যদি বলি, "তুই বরং হলে চলে যা।" সে আমাকে ধমক দিয়ে বলবে, "তোর কথা শোনার জন্য তো আমি আসিনি।"

বন্ধুরা যদি ওকে চলে যেতে বলে তবু সে যাবে না। মুখটা শুকনো করে বলবে, "আমি বরং থাকি? রাতে যদি কিছু লাগে।"

হাসপাতালের ছোট্ট বিছানায় সে আমার সাথে থাকবে। ঠাসাঠাসি করে ঠিক জায়গা হয়ে যাবে। আধো ঘুম, আধো জাগরণে রাত পার হয়ে যাবে। রাতে ঘুমের ঘোরে আমি একটু নড়ে উঠলে সেও হুরমুর করে উঠে পড়বে। কপালে হাত রেখে দেখবে জ্বরটা বেড়েছে কিনা। স্যালাইনটা ঠিকঠাক চলছে কিনা, তাও দেখবে। আমার শার্টের ভেতর বুকে হাত দিয়ে দেখবে ঘেমে যাচ্ছি কিনা।

সব ঠিক থাকলে তবেই সে আবার আমার গা ঘেষে শুয়ে পড়বে। সবার নজর এড়িয়ে কপালে একটা চুমুও খাবে।

আমি কিন্তু সব টের পাবো। কিন্তু ভুলেও জেগে উঠবো না। অনেক দিনের জমে থাকা এ আদর ভালোবাসা ঠিক ঠিক পুষিয়ে নিবো।

তারপর, তার সেবাযত্নে সুস্থ হয়ে যখন হাসপাতাল থেকে ছুটি পাবো, সেদিন সে খারাপ ব্যবহার করে বলবে, "এমন খাম্বার মতোন দাড়িয়ে আছিস কেন? এখনো কি অসুস্থ নাকি? যাহ, রিকসা ঠিক কর। নাকি এটাও আমার করতে হবে?"

আমি রিকসা ঠিক করে আনলে আমরা একসাথেই ফিরবো। নেমে যাবার সময় চোখ নামিয়ে খুব আস্তে করে বলবে, "ভালো থাকিস। বলেই সে হাটতে শুরু করবে।"

আমি খপ করে তার হাত ধরে বলবো, "না, ভালো থাকবো না। তোকে ছাড়া যে ভালো থাকতে পারিনা, তুই তো জানিস। এবারের মতো আদরের জন্য আমি আবার অসুস্থ হবো। তোকে কোনদিন যেতে দিবোনা। তোকে ছাড়া থাকতে পারিনা। আমার বেঁচে থাকার জন্যও তোকে লাগবে। খুব ভালোবাসি যে। চল, পুরনো ভুলগুলো ভুলে আবার সবকিছু শুরু করি। শেষবারের মতো ক্ষমা করা যায় না?"

সে বলবে, "হারামী, এই কথা বলতে এতক্ষন লাগে?"

ততক্ষনে তার চোখের জমিন ভিজে যাবে। দুহাতের তেলো দিয়ে জলটুকুন মুছে তবেই বুকে টেনে নিবো। সে বলবে, "চল, আমরা রিকসা করে কিছুক্ষণ ঘুরে আসি। আর রিকসার হুড কিন্তু নামানো থাকবে। খবরদার উল্টাপাল্টা করার চেষ্টা করবি না। করলে কিন্তু মেরে হাড্ডিগুড্ডি ভেঙ্গে দিবো।"

আমি বলবো, "হাড্ডি ভাঙলে ভাঙতে পারিস। কিন্তু প্লীজ, হৃদয়টা আর কখনো ভাঙ্গিস না।"

আমি রিকসা করে আনলে অনেকক্ষণ একসাথে ঘুরবো। সে হঠাৎ বলবে, "তোর কাছে কি টিস্যু আছে?"

"কেনো?"

"লিপস্টিক মুছবো।"

আমি টিস্যু বাড়িয়ে দিতে দিতে বলবো, "কিন্তু, লিপস্টিক মোছার কি দরকার? সুন্দর লাগছে তো।"

"তুই আসলেই একটা গাঁধা। তোর গালে লিপস্টিক লেগে যাবে যে!"

আমি সত্যিই মনে হয় গাঁধা। নাহলে এমন মেয়েকে কষ্ট দিতাম। একথা ভাবতে ভাবতে রিকসার হুডটা উঠিয়ে দিবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.