![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফোনটা রিসিভ করে বললাম,
- হুম, বলো,
- ফ্রি আছো?
- পুরাই ফ্রি। টাকা লাগবে না। কি করবা?
- ধুর! মজা করা বাদ দাও। মার্কেটে যাবো। দ্রুত আসো।
- কোন মার্কেট? চাঁদনিচক বা গাউছিয়া হলে যাবো না। বসুন্ধরা বা বেইলি রোড হলে যেতে পারি?
- গাউছিয়ায় গেলে সমস্যা কি?
- ওখানে এতোই মেয়েদের ভীড় যে, মার্কেট থেকে বের হলে ছেলেদের শরীর থেকেও মেয়েদের স্নো, পাউডারের গন্ধ বের হয়। একবার তো এক মেয়ের ঠোঁট থেকে আমার টি-শার্টে লিপস্টিক লেগে গেলো। ভাগ্য ভালো যে, টি-শার্টটাও লাল
রঙের ছিলো।
- কি? আমাকে বলোনি তো!
- কি বলবো? বললে কি তুমি ওই মেয়েকে মাইর দিতা?
- প্রয়োজন হলে দিতাম।
- এজন্যই তো বলিনি।
- ইশ! একদিনের ঠোটের ছোয়ায় অপরিচিত একটা মেয়ের জন্য দরদ উতলে পড়তেছে!
- একটু দরদ তো হবেই। অন্য কেউ তো আর এই স্পর্শ দেয় না।
- ওসব ধান্ধা বাদ দাও।
- আমি বাদ দিলে কি হবে? বখাটে মেয়েরা তো বাদ দেয় না। সুযোগ বুঝে আমাকে একা মার্কেটের চিপায় পেয়ে...! ছি!
- এখন ছি? তখন তো খুব মজা পাইছো।
- মজা পাইনি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তো সব শেষ।
- ওহ! আরোও কিছু প্রত্যাশা করছিলা?
- হলে তো খারাপ হতো না।
- মেজাজ খারাপ হচ্ছে কিন্তু।
- আচ্ছা বাদ দাও। এখন থেকে খেয়াল রেখো অন্য কোন মেয়ে যাতে আমার ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
- সমস্যা নেই। আজকে আমি থাকবো। অন্য কেউ আর তোমাকে কিস করতে পারবে না। বসুন্ধরা যাবো। দ্রুত রেডি হয়ে বের হও।
- কি কিনবা?
- শাড়ি আর পাঞ্জাবি। আপু আর ভাইয়ার (দুলাভাই) জন্য।
- আচ্ছা। তুমি রেডি হও। আমার দশমিনিট লাগবে।
কিছুক্ষণ পর আমরা একসাথে বের হলাম। বসুন্ধরা সিটির উদ্দে্যশ্য রিকসা নিলাম। সে আমার পাশে বসে আছে। সাধারণ পোষাক, সাজগোজের মধ্যে শুধু একটা কালো টিপ। আমি জানি এটা আমার জন্য। সাজের কথা জিজ্ঞেস করলে আমার একটাই রিকোয়ারমেন্ট থাকে। আমি বললাম,
- এই তোমার টিপ তো বাঁকা হয়েছে।
- সেতো প্রতিদিনই হয়। তুমি ঠিক করে দিবা বলে বাঁকা করেই পরি।
বলে মাথাটা আমার দিকে ঘোরালো। স্ফিত হেসে বললো, "দাও, ঠিক করে দাও।"
আমিও টিপটা ঠিক করে দিলাম। দুজনই জানি যে, টিপের অবস্থান সম্পূর্ণ ঠিক আছে। এরপরও এই ঢংটা আমাদের দুজনেরই খুব প্রিয়। তার টিপ ঠিক থাকলেও আমাকে বলবে, "দেখো তো, টিপটা মনে হয় বাঁকা হয়েছে।" না বলা কথাটা বুঝতে পেরে আমিও কপালে একটু হাত দেই।
- শাড়ি পাঞ্জাবি যে কিনবা, টাকা পেয়েছো কোথায়?
- জমিয়েছি। শোন, ভাইয়া লম্বায় তোমার মতোই, আর গায়ের রংও তোমার মতো কালা। আর আপুকে তো দেখেছোই আমার ডুপ্লিকেট। তোমার সাইজের পাঞ্জাবি কিনলেই হবে।
- এই সুযোগে কালা বললা?
- কালা কে কালা না বলে মিথ্যা করে ধলা বললে পাপ হবে।
- হুম, বুঝলাম।
অতঃপর আমরা সারা মার্কেট তন্নতন্ন করে তার ধলা আপু আর কালা দুলাভাইয়ের জন্য ম্যাচিং ম্যাচিং শাড়ি, পাঞ্জাবি কিনলাম। পাঞ্জাবিটা আমি ট্রায়ালও দিলাম। শপিং শেষে বেশি টাকা ছিলো না তাই রাস্তার পাশে খাওয়া-দাওয়া করলাম। অবশেষে লোকাল বাসে করে ঝুলতে ঝুলতে ফিরেও এলাম।
- পাঞ্জাবিটা তোমার পছন্দ হয়েছে তো?
- হুম হয়েছে।
- শাড়িটা আমাকে মানাবে না?
- আপুর শাড়ির দিকে নজর দাও কেন?
- নিজের বোনের শাড়িতে নজর দিলে কিচ্ছু হয় না। তুমি একটু দাড়াও, আমি হল থেকে আসছি।
বলেই শাড়ির প্যাকেট নিয়ে সে চলে গেলো। বললাম,
- পাঞ্জাবির প্যাকেট নিয়ে যাও।
- আরে আসবো তো আবার।
- আচ্ছা, তাড়াতাড়ি আসো।
তাড়াতাড়ি আসার কথার উত্তর না দিয়েই সে হলের ভেতর ঢুকে গেলো। আমিও হল গেটে একা একা দাড়িয়ে কালা দুলাভাইয়ের পাঞ্জাবি হাতে অপেক্ষা করতে লাগলাম।
কিছুক্ষণ পর মোবাইলে একটা ম্যাসেজ এলো। সে পাঠিয়েছে। ম্যাসেজে লিখা,
"ওই বুদ্ধু, হলগেটে মেয়ে দেখা শেষ হলে, চলে যেয়ো। আমি আসবো না। আর পাঞ্জাবিটা আমার দুলাভাইয়ের না, আমার ছোট বোনের দুলাভাইয়ের।"
আমি ম্যাসেজের রিপ্লাই দিলাম না। কিছু কিছু উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে নেই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩৫
কাল্পনিক হিমু বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে