নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিমন মোড়ল

আমি অন্য সবার মতই।

রিমন মোড়ল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন কি এক আজব ফানুস । পুতুলের পুতুল খেলা।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৩

ক্ষণস্থায়ী। সব নশ্বর। সৃষ্টিকর্তা ছাড়া।



আমার চিন্তা, আবেগ, কষ্ট, প্রেরণা, পরিকল্পনা-সব এক দমকা হাওয়ায় উড়ে যেতে পারে। এই ঝড় কখন কিভাবে আসবে তা জানা আমি কেন, সকল মানুষের ক্ষমতার বাইরে।



বছর দেড়েক আগের কথা। এক শনিবারে সারা দিন ক্লাস নেয়ার পর বাসায় আসলাম। রাত ১০ টা । হাল্কা মাথা ব্যাথা করছিল। হঠাৎ মোবাইলে ফোন। রাজন এক্সিডেন্ট করেছে। পা ভেঙ্গে গেছে। মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। সেই ছোট বেলা থেকে রাজন কে দেখসি। চোখের সামনে বড় হয়ে উঠল ছেলেটা। কত ফর্সা আর লম্বা হয়ে গেল। আবার ফোন পেলাম। অবস্থা ভালো না। কোন চিন্তা না করে, সরাসরি চলে গেলাম হলি ফ্যামিলি হসপিটালে যেখানে রাজনকে রাখা হয়েছিল। ইমারজেনছি ডিপার্টমেন্ট এ ছুটলাম । দেখা মাত্র বিকট স্বরে হাউমাউ করে কাদতে লাগলাম। একি দেখছি আমি। আমি চিমটি কেটেছিলাম নিজেকে, আসলে স্বপ্ন দেখছিলাম কিনা। না স্বপ্ন নয়। রাজন মৃত। চোখের সামনে বেড়ে উঠা আমার ভাতিজা। আমার হাউমাউ কান্না হসপিটালের অন্যেরা দেখছিল। এত বড় ছেলে, এইভাবে কাদতে পারে। আমি জেনেছিলাম, জীবন নির্মমতার, নিষ্ঠুরতার এক অট্টহাসি । নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। এরপর একটানা ১৫ দিন আমি কোন ক্লাস নেই নি। অবাক তাকিয়ে সব দেখছিলাম। এই ঠুনকো জীবনের বাহাদুরি।



গতকাল রাতে আড়াইটায় আবার এক কফিনের সংবাদ। আসাদ মারা গেছে। শুনা মাত্র আমি কিংকর্তব্যবিমুর! আমি বললাম এ সম্ভব না। আমাদের আসাদ!! কিভাবে সম্ভব। ছোটবেলার অনেক স্মৃতি আছে, যা ভুলার নয়। আমাদের আসরের মধ্যমণি ছিল আসাদ। হাসিতামাশা করে গম্ভীর ব্যাপারকে মজার বানানোর ক্ষেত্রে তার ধারে কাছেও কেউ ছিল না। সে বিয়ে করেছে বছর তিনেক হবে। তার একটি ১১ মাস বয়সী সন্তান আছে। পরিবারের বড় ছেলে , ফলে পুরো পরিবারই এক রকম তার উপর নির্ভরশীল ছিল। সে ব্রেইন স্ট্রোক করে, এখন মৃত। সকালে তড়িঘড়ি করে গাজীপুর গেলাম। মৃতদেহ দেখে শিউরে উঠলাম। কিভাবে সম্ভব। জানাজার আগে সবার সামনে কথা বলতে যেয়ে আটকে গেলাম। বাকরুদ্ধ যাকে বলে। চোখের জল ততক্ষণে নিজের মত করে বইতে শুরু করেছে। আবার দিনগুলো চলা শুরু করবে। আবার আমি ব্যাস্ত হব। অবসর থাকবে না।



জীবন কি এক আজব ফানুস নয়? এত চাক চিক্য, এত রঙের বাহার। কিন্তু তার দিক ঐ এক মুখী। অনিবার্য মৃত্যু। পুতুলের পুতুল খেলা। কোথা থেকে আসা, কোথায় ভেসে যাওয়া। ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র, পরিবার, পরিজন, সদ্যসমাপ্ত নতুন বাড়ি, প্রিয় ঝুল বারান্দা, মাধবীলতা, কেয়ারি বাগান, আরাম কেদারা, ব্যাংক ব্যালেন্স , জমা-জমি, প্লট, ফ্ল্যাট সব পড়ে থাকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২০

হাসান মাহবুব বলেছেন: এসব ভাবনা খুব ভয়ংকর। একনার গ্রাস করলেই হয়েছে!

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৩৮

রিমন মোড়ল বলেছেন: সত্য ভাবনা অনেক সময়ই ভয়ঙ্কর! এক মেকি আস্তরণ দিয়ে সেই ভাবনাগুলোকে ডেকে রেখে লি লাভ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.