নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রহস্যময় পৃথিবী

ঝুলছি সময়ের কার্ণিশে, নীল কিংবা লাল সময় বুঝে। হঠাৎ হঠাৎ, নিশ্চুপ কবিতারা সময় দিশেহারা। তারপর চুপচাপ অন্তহীন সময় তবুও ঝুলে থাকার জয়। মানুষের সব বিশ্বাস আসলে অবিশ্বাস থেকে জন্ম! আমার মধ্যে আমি স্বতন্ত্র জীবন যাপন করছি! পৃথিবীটা রহস্যের, রহস্য শেষ হয়ে গেলে বেঁচে থাকতে ইচ্ছা হয় না।

রহস্যময় পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

" হাল ছেড়ো না বন্ধু আমার "

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

আশেপাশে যখন শুনি কেও আত্মহত্যায় মারা গেছে, তখন নিজের মধ্যে ভীতিকর একাটা অনুভূতির সৃষ্টি হয় । মৃত বেক্তিটির ঠিক শেষ মুহূর্তের কথা চিন্তা করি যখন তার জীবনের বেঁচে থাকার স্বপ্ন, ইচ্ছাগুলো তিলে তিলে নিঃশেষ হচ্ছিলো । চোখের সামনে তখন ভাসতে থাকে একটা হাস্যজ্জল চেহারা, কিছু প্রিয় মানুষে ঘেরা তার শৈশব, ধীরে ধীরে বড় হওয়া আর তাকে ঘিরে তার পরিবারের হাজারও স্বপ্নের বুনন । তারপর একদিন তার না ফেরার দেশে চলে যাওয়া , পরিবারের হৃদয় বিদারক মর্মান্তিক বেদনা উফ......
আর পারছিনা কল্পনা করতে.....................

তার না থাকার কথা চিন্তা করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া বা মৃত বেক্তিটিকে নিয়ে সমবেদনা যাপন করা অনেক সহজ । কিন্তু ধীরে ধীরে জীবন যুদ্ধে সামনে এগিয়ে যাওয়া বেক্তিটি হটাত কেন আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আর জীবনের শেষ মুহূর্তে বেঁচে থাকার ইচ্ছাটুকু কিভাবে মানসিক কান্সারে পরিনত হল এটা আপনি বা আমি কখনো অনুভব করতে পারবো না ।

আমার কাছে আত্মহত্যা কিন্তু একাটি পরিকল্পিত মার্ডারের মতো । আত্মহত্যার দায় আপনার, আমার বা আমাদের সকলেরই ।

একসময়কার সেই মেধাবি ব্রাইট ছাত্র কেন বা এমন সিধান্ত নেয় কখনো ভেবে দেখেছেন কি ? কখনো আমারা ভেবে দেখি না সেই বন্ধুর কথা যার রেজাল্ট খারাপ নিয়ে তুমিই তার পেছনে রসিকতা করেছিলে, আর ঠিক সেই মুহূর্তে তার মানুষিক অবস্থা কেমন হয়েছিলো ।
আর সেই শিক্ষক যে তার ছাত্রের বাবা হতে পারেনি,সেই শিক্ষিকা যে তার ছাত্রের মা হতে শেখেনি । হায়রে আমাদের সমাজ ! শুধুই দীর্ঘশ্বাস ! !

যখন বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছা টুকু চারপাশের মানুষ চুষে নেয় তখন ছেলেটা বা মেয়েটার আর কি করার থাকে?

এই পরিস্থিতি আমিও পার করে এসেছি, তাই জানি এই মুহূর্তটা কতটা কষ্টের ।

আপু ও ভাইয়ারা যারা আজকে এস.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ করে ঘরের দরজা-জানালা দিয়ে বালিশ কামড়ে কান্না করবে আর এমন ভয়ানক কথা চিন্তা করছ তাদের উদ্দেশে বলছি,
পৃথিবীতে কেওই শতভাগ সুখি নয়
কান্সারে আক্রান্ত কোন মানুষের কাছে জানতে চেয়েছো তার শেষ ইচ্ছার কথা? এই সুন্দর ভুবনে আরও অল্প কিছু মুহূর্ত বাঁচার সেই আকুতির কাছে কিন্তু তোমার এই মন খারাপ অনেক সামান্য কিছু । কিছু মানুষ গরম ভাতের গন্ধ নেওয়ার জন্য বাঁচতে চায়,আবার কেউ কেউ একজন্মে আকাশের সব তারা গুণে শেষ করতে পারবে না বলে বাঁচতে চায়, সবুজ ঘাসের উপর শুয়ে নীলাকাশ উপভোগ করার জন্য বাঁচতে চায় হাজারও বছর, আবার প্রিয় মানুষ গুলার চেহারা প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে দেখবে বলে বেঁচে থাকে কেউ কেউ , অনেকে কেউ পরিবারের দায়িক্তবোধ এড়াতে পারে না বলে বাঁচে । জীবন কত অদ্ভুত না? বেঁচে থাকাটাও কিন্তু একটা চ্যালেঞ্জে ।

তোমার স্বপ্ন চুরি হয়ে গেছে বলে ভেঙ্গে পড় না । স্বপ্ন কিন্তু অনেকটা তরল পদার্থের মতন, তাকে যেভাবে যে পাত্রে রাখাবা সেটার আকার লাভ করবে। এই অপ্রাপ্তিটুকু এমন কোন বড় কিছু নয় । স্বপ্নকে কুড়িয়ে বাঁচতে শিখ ।
স্বপ্ন তাদেরই সত্যি হয় যারা স্বপ্ন দেখার সাহস রাখে । জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে ধর্যের সাথে সামনে এগিয়ে জয়ী হওয়া সেইসব সাহসী মানুষের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তোমরাও তোমাদের লক্ষে এগিয়ে যাও ।
অপ্রাপ্তির হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে, অল্প প্রাপ্তিকে পুঁজি করে বীরের মতো সামনে লক্ষ্যর দিকে এগিয়ে যাও গর্বের সাথে । সুখে থাকার অভিনয় করে যাও । যেন তোমার নিন্দুকেরাই ঈর্ষান্বিত হয় ।

যে বা যারা তোমাকে চাইনি, যারা তোমার সুখের মুহূর্তে ছিল কিন্তু দুঃখের মুহূর্তে স্বার্থপরের মতো দূরে সরে গিয়েছে তাদেরকে দেখিয়ে দাও তুমিও বাঁচতে শিখেছো । কাউকে ঈর্ষান্বিত করার জন্য হলেও বেঁচে থাক । এর চেয়ে অসাধারণ আর কিছু হতে পারে???

পরিশেষে কবির সুরে সুর মিলিয়ে আমিও বলতে চাই,
" আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি,
তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ ইতিবাচক
হোক, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোক, অন্যকে বুঝতে শিখুক।

(বিঃ দ্রঃ আজকের লেখাটি এইচ এস সি পরীক্ষায় ফলাফল নিয়ে চিন্তিত, সে সকল ছোট ভাইবোনদের উদ্দেশে । এইদিকে আবার ফাইনাল পরীক্ষা, সময় সল্পতার কারনে নতুন লেখা দিতে পারলাম না, আমার পুরানো একটা লেখা তোমাদের জন্য আবারও শেয়ার দিলাম । অগ্রিম শুভকামনা রইল সবার প্রতি। )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.