নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারসাম্য মাত্রই কৃতিত্ব নয় ।

আল - বিরুনী প্রমিথ

আল - বিরুনী প্রমিথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইন পারসুইট অব ডেভেলপমেন্ট

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৭

কতো রকমের অভিব্যক্তি থাকতে পারে মানুষের; পারেনা, বলো তুমি? প্রেমিক ভিন্ননারীতে নিজের গন্তব্য স্থির করেছে; কথাটা তার মুখ থেকে শুনবার পর, রবীন্দ্র সরোবরে এসে একা একা মুখ ঢেকে কাঁদোনাই তুমি? তাও কিনা আবার নিজের জন্মদিনের দিনে। তোমার বন্ধুবান্ধবেরা তোমার জন্য সারপ্রাইজ পার্টি রাখছিলো; অফিসে ব্যস্ততার অজুহাত দেখায়ে তাদের রিফিউজ করে দিলা অবলীলায়- ছুটিছাটাহীন এক প্রাত্যহিক রবিবারের সন্ধ্যা, মালিবাগ থেকে রবীন্দ্রসরোবর কম দূরত্বের নয় কিন্তু।

তবুও তুমি আসলা, ভাবছিলা ব্যাচেলর পয়েন্টে এসে একা একা নিজের জন্মদিনের খাওয়া নিজে একলাই সারবা। গরুর চাপ উইথ লুচি, মোস্তাকিমের চাইতেও এখানে এইসব বেশী ভালো বানায়। তোমার খুব প্রিয়। প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক হবার পরে প্রথম প্রথম যখন ঝগড়া হইতো তোমার, মন ভালো করতে এসে খেয়ে যাইতা। সেদিন কী করলা? ঠিকই খাইলা, গরুর চাপ উইথ লুচি। খাওয়া সেরে বিল মিটায়ে ভাবতেছিলা, আজ আর বেশীক্ষণ না বসি এখানে। আশেপাশে অনেক লোকজন; নিজে থেকে, কয়টা বাজে এরকম খুচরা এবং অনর্থক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেও দুই চারটা কথা বলতে পারবা, কাউকে দেখেই এরকম ইচ্ছাও হচ্ছেনা।

এমন সময়ে কী হইলো? গোলচক্করটা পার হয়ে তোমার চোখ গেলো আরো বিস্তৃতে। যেখানে সন্ধ্যার আলোতে ধানমন্ডি লেকের প্রবাহমান জলধারা কালো রঙে ফুটে উঠে বয়ে চলেছে তো চলেছেই। আকাশে তখন আধখানি চাঁদ; আশেপাশে কিছু সাদা আলো জ্বলছে, সাদা আলোতে কাপল সারভেইলেন্সের কাজটা সহজে করা যায় বলে শহর থেকে ক্রমশ সোডিয়াম বাতি অন্তর্হিত। গভর্নমেন্টের তরফ থেকে সাসটেইনেবল গুড গভর্নেন্স, হা হা হা। এমন সময়ে তোমার হইলো কী, প্রবাহমান জলধারা দেখতে দেখতে কেঁদে ফেললা। আশেপাশে মানুষজন তো কম নাই। তা সেটা বন্ধুদের সাথে ধুমায়ে আড্ডা দেওয়া তরুণ হোক কিংবা বাদামওয়ালা; কার কাছেই বা চোখের জল দেখিয়ে অশ্রুমালার প্রশমণ হবে? তাই তুমি দুই হাতে মুখ ঢাকলা। কখনো না পাওয়ার চাইতে পেয়ে হারানোর বেদনা বেশী নিগূঢ় সন্দেহ নাই; মানুষ হয়ে একবার জন্ম নিলে, এই অনুভূতির কাছে ফিরে আসতে হয় বারবার, নানাভাবে। কিন্তু দুই হাতে মুখ ঢেকেও বা কী হইলো? চাঁদের আলো, ধানমন্ডি লেকের পানিধারার উপরে সাদা আলোর বিচ্ছুরণে যখন সামলে রাখা যাচ্ছেনা নিজেকে; মনোলগের পোশাক পরে আসা কোন সান্ত্বনাবাণী কিংবা বেঁচে থাকবার পশুসুলভ ইন্সটিংটও যখন অকেজো- তখন একবার ভাবতে পারতা ফেসবুকের কথা, নিদেনপক্ষে ইউটিউবের। তাও যদি না পারো, তবে ভাবতে পারতা কোন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের কথা। তার মাদকতা অনস্বীকার্য, উন্নয়ন মানে তো শুধু রাস্তাঘাট আর হাইরাইজ বিল্ডিং না। উন্নয়ন এক কুইনাইন গেলানো ভাষাও বটে। কোটিপতি থেকে শুরু করে মেয়েদের ব্লাউজ বানানোর সদাসুখী গর্বিত কারিগর, সবেতেই যে ভাষাতে কথা কয়।

যখন কাঁদছিলে; সদ্যই সাবেক হয়ে যাওয়া প্রেমিকের কথা ভেবে, একবার যদি তখন স্মরণ করতে পারতে ফেসবুকের কথা। খুব বেশী না, কিছু গুরুগম্ভীর পেইজের জ্ঞানী জ্ঞানী ফটোর কথা। মনে রাখতে হবে, ফেসবুক মিমগুলার কোন ভরক্রন্দ্র নাই। তারা হয় একটি উত্তরাধুনিক প্রপঞ্চ। এর তুলনায় বছর দশেক আগেও যখন ফেসবুকে জ্ঞানী জ্ঞানী ফটো দেখা যাইতো, সেগুলার ভার বেশী। বিশেষত দুঃখের অনুভবে সেসকল ছবি আমাদের দুঃখ থেকে ছাড়িয়ে এনে বসিয়ে দিতো গভীর জীবনবোধ আছে, এমন এক সুখময় অনুভবের আত্মগরীমার কোলে। কী চমৎকার ছিলো সেই ট্রান্সফর্মেশন, ভাবা যায়? জানো তো অবশ্যই- সকল দুঃখের পরেও সাহসের সাথে সামনে এগিয়ে চলেছে; তাও কিনা তোমার মতো কোন সপ্রতিভ শহুরে সুন্দরী, এনজিও-মাল্টিন্যাশনাল প্যাট্রোনাইজড ওমেন এমপাওয়ারমেন্টের রমরমা বাণিজ্যে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলাতে এমন চরিত্ররা বেশ দাবড়ে বেড়ায়। ‘তোমাকে খুঁজছে বাংলাদেশ’, ‘তোমাদেরই খুঁজছে বাংলাদেশ’। যখন এসকল চরিত্ররা প্রাথমিক অবস্থায় এখানে সেখানে দাবড়ে বেড়াতে বেড়াতে একবার পুঁজি নামক বেড়ালের গলায় ঘন্টা পরাতে পারে; তখন হয় মোটিভেশন। তোমার চামড়ার ভেতর ক্রমশ যতো রক্তাক্ত হতে থাকবে, ততো বেশী তুমি পৌঁছাতে পারবে ইয়াং আইকন নামক সোনার হরিণের কাছে। তোমার অন্তর্গত কান্না দশ লক্ষগুন হাসি হয়ে তোমার কাছে ফিরে আসবে। উইথআউট এনি রিস্ক। উইথআউট এনি সিগনিফিক্যান্ট এমাউন্ট অফ মনিটারী ইনভেস্টমেন্ট। এ লিটল কমপেনসেশন অফ দা সৌল, দো।

জনসমক্ষে কেঁদে ফেলেছিলে; এই প্রথমবার অবশ্য, তাই কোয়ি বাত নেহি। এমনটা হতেই পারে। তবে খুব সাবধান, দ্বিতীয়বার যেনো এমনটা না হয়। দ্বিতীয় সুযোগ সব সেক্টরে আসেনা কিন্তু। উন্নয়নভাষায় তো সেই কল্পনাই করা যায়না। তাহলে কীভাবে তোমার এন্ট্রি হবে, সাকসেসফুল আইকনের লিস্টে? সন্ধ্যার আলোতে; প্রবাহমান জলধারার সাদা-কালো ইফেক্টে অনুভূতিপ্রবণ হয়ে সদ্যই সাবেক হওয়া প্রেমিকের কথা ভেবে অশ্রুমালাদের মুক্তি দিলে ক্ষতি নেই, কিন্তু বিনিময়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। যে, ভবিষ্যতে যখনই কাঁদবে; তা যে কারণেই হোক না কেনো- তা হওয়া চাই একেবারে নিভৃতে। যেনো নিজের কাছেও অশ্রুগুলো অদৃশ্যমানই ঠেকে।

নিজেকে নিজের কাছে ইনভিজিবল না করে; রেসপনডেন্টদের অনুক্ত অপ্রাসঙ্গিক না রেখে, শুনেছো কখনো, সফল পার্টিসিপেটরী ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম হয়?

তাই; সুযোগ্য পরামর্শ রইলো, নিজের রক্তাক্ত চামড়ার ঠিকানা অন্যদের দিতে যেওনা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ কথা সহজ ভাবে লিখুন। এত প্যাচানোর কিছু নাই।

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০০

নাহিদ০৯ বলেছেন: আসলেই অনেক প্যাঁচ। আর ব্যক্তিগত আবেগঘন ঘটনা লিখার ভিতরে স্পষ্ট।

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:২৩

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.