নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেস্ত সময়ের ফাঁকে যারা আমার ব্লগ পরেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ
দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বেশ বড়সড় একটা টুইস্ট আনতেই মূলত বিভক্ত ঢাকার নির্বাচনের তোড়জোড়। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে এসএসসিতে কিছু বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে। আবার ১ এপ্রিল থেকে ১১ জুন এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। ১৮ বা ১৯ জুন থেকে রোজা ?শুরু হবে। তাই রোজা শুরু হওয়ার আগে পরীক্ষার মধ্যেই যে কোনো একটি গ্যাপে নির্বাচন করে ফেলবো।’পরীক্ষা স্থগিত ছাড়া ঈদের আগে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। কারণ যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা হবে-সেখানেই ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরীক্ষা পেছানোর জন্য বলা হবে।সিইসি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য অন্তত ৫ দিনের গ্যাপ দরকার। (ইসি)। তবে পরীক্ষার মধ্যে নির্বাচন হওয়ায় পূর্বনির্ধারিত কমপক্ষে ৮টি বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর যদি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হয় সেক্ষেত্রে ৪টি বিষয়ের পরীক্ষা পেছাতে পারে।
ঢাকার দুই ভাগে প্রায় ৪০ লাখ ভোটার রয়েছে।সর্বশেষ অবিভক্ত ডিসিসি’র নির্বাচন হয় ২০০২ সালের এপ্রিলে ২০০৭ সালে এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি বেশ ক’বার নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়।২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ডিসিসিকে উত্তর ও দক্ষিণ করে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন সংসদে পাস হয়। এসময় ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা থাকায় ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের কথা ছিল।কিন্তু বিদায়ী ইসি তাতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন করার সময় বাড়িয়ে ১৮০ দিন তথা মে পর্যন্ত করা হয়।কিন্তু কোনো এক অজানা কারনে নির্বাচন বার বার পিছিয়ে যায়। এই নির্বাচন না দিয়ে আগে ঢাকার বাইরের জনমত যাচাইয়ের চেষ্টা করে সরকার। কিন্তু চট্রগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা প্রতিটি সিটি নির্বাচনেই ধরাশয়ী হয় সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থী।সর্বশেষ খুলনা,বরিশাল,সিলেট ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের কিছুদিনের মধ্যেই ঢাকায় নির্বাচনের কথা ছিল। তাও নির্বাচন অনুষ্ঠান পিছিয়ে পরে কোনো এক অজানা কারনে
ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে মোহাম্মদ সাঈদ ওরফে সাঈদ খোকনকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। মোহাম্মদ হানিফ পুরানো আওয়ামী লীগার। তিনি কথাবার্তায় কখনোই অভদ্র বা অমার্জিত ছিলেন বলে আমার মনে পড়েনা। অধিকিন্তু ঢাকার মেয়র থাকাকালীন ঢাকার নগর প্রশাসনে আমূল পরিবর্তন এনে নগর সরকার নামে আরো ক্ষমতাধর ও আরো দায়িত্বের অধিকারী একটি নগর প্রশাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবী তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু তার এই দাবী পূর্ণ হয়নি। উল্টো তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। যার জন্য নিজের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দলের অসহযোগিতার জন্য পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপির সাদেক হোসেনকে তিনি ময়দান ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
হানিফের ছেলে সাঈদ ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগের সংস্কারবাদী অংশের অন্যতম সক্রিয় নেতা ছিলেন। তার পিতার প্রতি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের কথিত বেইনসাফির কথা তখনো বাতাসে ভাসতো, এবং সম্ভবত সে কারণেই তিনি সংস্কারবাদী হয়ে ফেরদৌস আহমদ কুরাইশীর সাথে কিছুদিন ভিড়েছিলেন।
দক্ষিণে আরেক প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের বহুল আলোচিত সাবেক এমপি গোলাম মাওলা। বিএনপির বহিস্কৃত নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামানও উত্তরে ভোটে দাঁড়াতে চান।
নামজাদা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও হালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাবিত নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আনিসুল হক নাকি বিটিভির সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৮১ সালের জুনের প্রথমার্ধে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জানাজার নামাজের লাইভ ধারাভাষ্যের দলে নাকি তিনিও ছিলেন। সেদিন তিনি অত্যন্ত হূদয়গ্রাহী ভাষায়, কেঁদেকেটে আকুল হয়ে নাকি ধারাভাষ্য প্রদান করেছিলেন। আম্মার দৃঢ় বিশ্বাস, আনিসুল হকের সেদিনের হূদয়বিদারী কান্না নাকি মেকী ছিলোনা।
আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জন্যই এই নির্বাচন সম্পন্ন করা মুশকিল। দলের অনেক পুরানো মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাদ দিয়ে প্রায় অজ্ঞাতকুলশীল আনিসুল হক ও সংস্কারপন্থীর তকমা লাগা মোহাম্মদ সাঈদের মেয়র পদে মনোনয়ন দলের মধ্যেই অস্থিরতার জন্ম দেবে। তাছাড়া ইদানিং প্রায় প্রতিটি সপ্তাহেই আওয়ামী লীগ বা তার সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গোলাগুলিতে প্রাণহানী ঘটছে। কামাল মজুমদার, এখলাস মোল্লা, অথবা হাজী সেলিমদের মতো ঘাঘুদের বাদ দিয়ে এই দুই 'মুই কার খালুরে' মেয়র হতে গেলে তাতে ক্ষতি ছাড়া লাভের কোন অবকাশ অাছে বলে মনে হয় না।
©somewhere in net ltd.