নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময় পাইলে ব্লগ লেখাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ব্যাস্ততার ফাকে যারা আমার ব্লগ দেখেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের অনুপ্রেরণা থাকলে নিশ্চই সামনের দিন গুলোতে লেখা চালিয়ে যাবো।

শিশির খান ১৪

বেস্ত সময়ের ফাঁকে যারা আমার ব্লগ পরেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ

শিশির খান ১৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরমেনিয়া -আজারবাইজানের তিরিশ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি

০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:০৫


আরমেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে দীর্ঘ তিরিশ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি হতে যাচ্ছে। বিষয়টা জটিল তবে বাংলাদেশ ও ভারতের সিটমহল সমস্যা এবং কাশ্মীর সংঘাতের সাথে এর কিছুটা মিল খুজে পাওয়া যায় । মূলত ভৌগলিকভাবে মতবিরোধপূর্ণ একটি অঞ্চলকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মাঝে যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো । মতবিরোধপূর্ণ অঞ্চলটি নাগর্নো-কারাবাখ নাম পরিচিত। এই অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভৌগোলিক সীমান্তের অন্তর্ভুক্ত কিন্তু এর অধিকাংশ বাসিন্দা জাতিগত ভাবে আর্মেনিয়।আজারবাইজান কিংবা আর্মেনিয়া পৃথক রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণার বহু আগে থেকেই এই অঞ্চলে আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর বসবাস। আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠী আজারবাইজান রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ মানতে অস্বীকার করার কারণে দ্বন্দ্বের শুরু । যুদ্ধটা পরবর্তী সময়ে দুই প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন সদস্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি।

মজার বিষয় যুদ্ধটা শুরু থেকেই কোনো সঠিক বেকারণ অনুসরণ করে নাই । যেমন ধরুন পৃথিবীতে মাত্র দুটি শিয়া রাষ্ট্র রয়েছে একটি ইরান ও অন্যটি আজারবাইজান। কিন্তু যুদ্ধে ইরান প্রত্যক্ষ সমর্থন দিচ্ছে ক্রিস্টান রাষ্ট্র আর্মেনিয়াকে। আবার দেখুন মুসলমান রাষ্ট্রগুলোর সাথে ইসরাইলের সম্পর্ক কতটা খারাপ তা তো সবাই জানে কিন্তু এই যুদ্ধে ইসরাইল প্রত্যক্ষ ভাবে মুসলমান রাষ্ট্র আজারবাইজাকে সমর্থন দিচ্ছে।

কেন প্রতক্ষ সমর্থন বললাম তা একটু ব্যাখ্যা করি , আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার এই যুদ্ধটা অন্য দশটা যুদ্ধ থেকে একে বারেই ভিন্ন। প্রযুক্তির ব্যাবহারে যুদ্ধের ধরণ পরোপুরি পাল্টে গিয়েছে। যুদ্ধে ইসরাইল আজারবাইজানকে অত্যাধুনিক ড্রোন সরবরাহ করেছে।ড্রোনের হামলায় আরমেনিয়া রীতিমতো ভীত ,সন্ত্রস্ত, বিপযস্থ।অন্যদিকে আজারবাইজনের ড্রোন হামলা ঠেকাতে আরমেনিয়া ভারতের কাছ থেকে ড্রোন বিধ্বংসী মিসাইল ও ড্রোন সনাক্তকারী রাডার ক্রয় করেছে ।ভারত থেকে সংগ্রহ করা পুরো অস্ত্রের চালানটি আরমেনিয়ার কাছে পোছানোর জন্য ইরান ভারতকে তার ভৌগোলিক সীমানা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।

আরমেনিয়া এবং আজারবাইজান দুটি দেশই ককেশাস অঞ্চলে অবস্থিত। যুদ্ধ বিধস্ত ইরাক ও সিরিয়ার ভোগোলিক সীমানা ব্যবহার করে ইউরোপে প্রবেশ এখনো বিপদজনক ফলে ইউরোপের সাথে যোগাযোগের জন্য ককেশাস অঞ্চলের গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ককেশাস অঞ্চলে আধিপত্ব বৃদ্ধির জন্য আরমেনিয়া এবং আজারবাইজানের যুদ্ধে রাশিয়া আরমেনিয়ার পক্ষ নিয়েছে অন্যদিকে তুরস্ক আজারবাইজান এর পক্ষ নিয়েছে।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের জ্বালানি সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে ফলে জ্বালানি সমৃদ্ধ আজারবাইজানের উপর ইউরোপের দেশগুলোর নির্ভরতা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।স্থিতিশীল জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষে আজারবাইজান আরমেনিয়া যুদ্ধে ইউরোপের দেশগুলো আজারবাইজানের বিপক্ষে অবস্থান নিবে না। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে আজারবাইজান।

আজারবাইজান এবং আরমেনিয়া যুদ্ধে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোগান সফল ভু রাজনৈতিক কৌশল প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছেন । অন্যদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের কৌশলের লেজে গোবরে অবস্থা প্রকাশ পেয়েছে।

ইউক্রেন রাশিয়ার প্রলম্বিত যুদ্ধের কারণে আরমেনিয়ার সাথে রাশিয়ার সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে ।আরমেনিয়ার ভূ রাজনৈতিক কৌশলেও পরিবর্তন এনেছে। রাশিয়ার তুলনায় পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আর্মেনিয়দের সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে আরমেনিয়া ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়েছে এমনকি আরমেনিয়া রাষ্ট্রীয় ভাবে যুদ্ধ বিদ্ধস্থ ইউক্রেনের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরমেনিয়ার একটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি সাক্ষর হয়েছে। চুক্তির বিরোধিতা করে রাশিয়া আরমেনিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে রাশিয়া দুই হাজার সৈন্য সরিয়ে নিয়েছে। ফলে আজারবাইজান আরমেনিয়া যুদ্ধে তুরস্কের প্রভাব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুরু থেকেই তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোগান আজারবাইজানের সঠিক ভূ রাজনৈতিক কৌশল প্রণয়নে সহযোগিতা করছেন। তুরস্ক আজারবাইজান সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ,অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করেছে, ,ড্রোন এর ব্যবহার শিখিয়েছে। এক কথায় তুরস্কের সহযোগিতা ছাড়া আজারবাইজান কখনোই আর্মেনিয়ার কাছ থেকে দখল করা অঞ্চল উদ্ধার করতে সক্ষম হতো না ।


মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:৩২

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আরমেনিয়া এবং আজারবাইজানের যুদ্ধে সেই সুদূর আফ্রিকা থেকে আলজেরিয়াকে টেনে আনা কি ঠিক হচ্ছে ভাই সাহেব! :)

০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:৫৩

শিশির খান ১৪ বলেছেন: হা হা হা আসলেই তো টাইপিং মিসটেক হওয়া গেছে ভালো হইছে আপনি লক্ষ করছেন।

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৮

বাকপ্রবাস বলেছেন: হা হা মফিজ ভাই ভালই কমেন্ট করেছেন, আলজেরিয়া আজারবাইজান মিলে তালগোল পাকাচ্ছিলাম,

১) ইরান শিয়া রাষ্ট হওয়া সত্তেও আজারবাইজেনকে সমর্থন দেয়নি
২) ইজরাইল সমর্থন দিচ্ছে শিয়া রাষ্ট্র আজারবাইজানকে
৩) রাশিয়া নিয়েছে আর্মেনিয়ার পক্ষে
৪) তুরস্ক আজারবাইজান এর পক্ষে

ওদিকে আবার রাশিয়া আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব ও করেছে

০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৪

শিশির খান ১৪ বলেছেন: আসলেই আজারবাইজান আর আলজেরিয়ার মাঝে পেচ লাগায় ফেলছি জায়গায় দুইটার মধ্যে খালি পেচ লাগতাছে

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৫

করুণাধারা বলেছেন: তেমন ভালো ভাবে এসব জানা ছিল না, পোস্ট পড়ে জানলাম।

তবে আপনার আলজেরিয়া এখনো রয়ে গেছে শেষ প্যারায়। প্রথমে পড়ে আমি বুঝতে পারছিলাম না এখানে আলজেরিয়া এলো কোথা থেকে!

৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:১২

কামাল১৮ বলেছেন: চিট মহল সমস্যা আর কাশ্মির সমস্য এক না।কাশ্মির সমস্যার সমাধান কামনা করি তবে পাকিস্তানে যোগদান সমর্থন করি না।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:০২

শিশির খান ১৪ বলেছেন: ছিট মহল সমস্যা আর কাশ্মীর সমস্যা অবশ্যই ভিন্ন ঠিক বলছেন তবে কারবাখ অঞ্চলের মানুষ আরমেনিয়া বা আজারবাইজান কোনো রাষ্ট্রের সাথে থাকতে চায় না এরা নিজেদের আলাদা রাষ্ট্র চায় অনেকটা কাশ্মীরের মতো। আর ভাই কাশ্মীর পাকিস্তানে যাবে না ভারত যাবে এটা তো ওরা সিদ্ধান্ত নিবে তবে মুসলিম জনসংখ্যা বেশি হইলে পাকিস্তান ভালো। মারামারি কম হইবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.