![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা সবাই পাপী তবু নিজের পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি।
ধান বিজ্ঞানীদের সাফল্যের ডানায় যুক্ত হলো আরো একটি নতুন জাত। যে জাতটি একাধারে দুটি বিশেষ গুনের অধিকারী। বিইউ কোয়াশি হাইব্রিড ধান-১ নামে নতুন আবিস্কৃত এই ধানের প্রথম বিশেষত্ব হলো এটি মানব দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় আয়রন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ এবং দ্বিতীয়ত এটি সুগন্ধি গুন সম্পন্ন। গাজীপুরস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিজ্ঞানী জেনেটিক্স অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএ খালেক মিয়া ও সহযোগী অধ্যাপক ড. নাসরীন আক্তার আইভী কয়েক বছর ধরে গবেষণার পর বিইউ কোয়াশি হাইব্রিড ধান-১ ধান উদ্ভাবন করেছেন।
কিছু মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট মানব দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় যেমন আয়রন, আয়োডিন, ভিটামিন-এ এবং জিংক। ভাত বা তরকারিতে যেমন আমরা খুব অল্প পরিমাণ লবণ খাই। এই অল্প পরিমাণ লবণ না খেলে আয়োডিনের অভাব পূরণ হয় না, তেমনি জিংক ও আয়রন মানব দেহের জন্য অল্প পরিমাণে প্রয়োজন কিন্তু এর অভাবে মানব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তা বিকাশ বিঘিœত হয়। এছাড়াও জিংক মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট এর অভাবে দেশের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগের বেশি স্টান্টেড গ্রোথ অর্থাৎ খর্বকায় হয়ে থাকে । একই বয়সের শতকরা ৪৪ ভাগ শিশু জিংক ঘাটতির শিকার। সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লাখ শিশু জিংক ঘাটতি জনিত কারণে মারা যায়। মানব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য জিংক খুবই দরকার এবং হাড়ের গঠনের জন্য আয়রন অতি প্রয়োজনীয় উপাদান।
আয়রন ও জিঙ্কসমৃদ্ধ সুগন্ধি ধানের জাত উদ্ভাবনকারী বিজ্ঞানী ড. নাসরীন আক্তার আইভী জানান, জাতটি দেশের আমন মৌসুমের একমাত্র হাইব্রিড সুগন্ধি ধান। এ জাত দেশের নিজস্ব জার্মপ্লাজম ব্যবহার করে উদ্ভাবিত। আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধান উৎপাদন করার উদ্দেশ্যেই তারা প্রথম গবেষণা শুরু করেন। পরে পরীক্ষায় দেখা যায়, জাতটির চালে প্রচুর জিঙ্ক ও আয়রন রয়েছে, যা মানবদেহের আয়রন ও জিঙ্কের ঘাটতি কমাতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, জাতটি আমন ও বোরো উভয় মৌসুমে আবাদযোগ্য। ধানের ফলন আমন মৌসুমে হেক্টরপ্রতি পাঁচ টন এবং বোরো মৌসুমে হেক্টরপ্রতি ছয় টন। এছাড়া এ জাতের ধানের আমন মৌসুমে জীবনকাল ১০০ থেকে ১১০ দিন এবং বোরো মৌসুমে ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন। এ জাতের ধানের চাল খুবই চিকন ও লম্বা। প্রতি কেজি চালে ২২ মিলিগ্রাম জিঙ্ক ও ১০ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে। জাতটি যেহেতু আগাম, তাই কৃষকরা আমন ধান কাটার পর রবিশস্যের আবাদ করতে পারবেন। জাতটি এখন অবমুক্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই জাত আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে বাংলাদেশের সুগন্ধি চালের চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে দেশ থেকে সুগন্ধি চাল রফতানিও হচ্ছে। দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশে বোরো এবং আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধান চাষ হয়ে থাকে।
©somewhere in net ltd.