নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Oh Allah Plz Save Bangladesh

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু, থাকি ছিলট

সৈয়দ মবনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের মৌলিক সমস্যা-৪

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৬



বৃটিশ সময়ে আমাদের শিক্ষা পদ্ধতিতে যে তিন ধারা চালু হয়েছিলো তা হলো-১) স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ধারা, ২) আলিয়া মাদরাসা ধারা, ৩) কাওমী মাদরাসা ধারা। প্রথম ধারা ইংরেজ সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলো এদেশে তাদের আমলা, কামলা, চামচা তৈরির জন্য। দ্বিতীয় ধারাও ইংরেজ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইংরেজদের মনমানসিকতা সম্পর্ণ কিছু আলেম তৈরির জন্য। আর দ্বিতীয় ধারা প্রতিষ্ঠা করেছেন কিছু আলেম, ইংরেজদের হাত থেকে দেশ-ধর্ম রক্ষার জন্য। প্রথম দুই ধারা স্বাধীনতার পর স্বাধীন সরকার কর্তৃক সরকারি স্বীকৃতির মধ্যে আসলেও তৃতীয় ধারাটি আজও সরকারি স্বীকৃতির বাইরে রয়ে গেলো। প্রথম দুই ধারা সরকারের পৃষ্ঠপোষতদায় বিল্ডিং এবং চাকরী-নকরি ইত্যাদির দিকে কিছুটা উন্নত অবস্থায় থাকলেও চিন্তা-চেতনা আর শিক্ষা পদ্ধতির দিকে এখনও সেই মান্ধাতা আমলে রয়েছে। আর তৃতীয় ধারাটিও অর্থনৈতিক এবং চিন্তাগত দৈন্যতার কারণে তাদের প্রতিষ্ঠাকালিন স্বাধীন চিন্তাকে সিলেবাস এবং পদ্ধতির ক্ষেত্রে অভ্যাহত রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। মোটকথা পরাধিরযুগের তিন ধারা-ই আজ শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি সন্তোষে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে শিক্ষার সাথে কর্মের সমন্বয় করে যে শিক্ষা পদ্ধতি চালুর চেষ্টা করেছিলেন তা বাস্তবায়ন করে যদি সরকার আরো উন্নত করার চেষ্টা করতো তবে দেশ কিছুটা উপকৃত হতো। স্বাধীনতার পর সরকারের উচিৎ ছিলো তিন ধারার সমন্বয়ে একটা ধারা চালু করা কিংবা তিন ধারাকে একটি জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অধিনে নিয়ে সমন্বয় করা। স্বাধীনতা পরবর্তী সবগুলো সরকার এক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। ভারত স্বাধীনের পর শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদের মতো বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব, ফলে সেখানের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিটি ধারাতে কিছুটা সমন্বয় সরকারি নীতিতে রয়েছে এবং ভারতীয় প্রতিটি ধর্মের মানুষের মধ্যে একটা দেশপ্রেম গড়ে উঠেছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা আজও এমন একজন শিক্ষামন্ত্রী পাই নি, যিনি আমাদেরকে এমন শিক্ষানীতি তৈরি করে দিবেন যা দিয়ে প্রত্যেক ধারাই পরিচালিত হবে। ফলে স্বাধীনতার এতোদিন পরও এই তিন পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের জন্য একটি মৌলিক সমস্যা। অবশ্য তা মৌলিক সমস্যা হতো না যদি সরকার এই তিন শিক্ষা পদ্ধতিতে একটা সমন্বয়ের নীতি তৈরি করতে পারতেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন বিভিন্ন পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থা থাকার পরও সরকার একটা নিয়মে এগুলোকে সমন্বিত করে নিয়েছে। আমরা বৃটেনের কথা এক্ষেত্রে আলোচনায় আনতে পারি। বৃটেনে অসংখ্য পদ্ধতির শিক্ষা চালু থাকার পরও মৌলিক শিক্ষায় সরকার একটা সমন্বয় করে দিয়েছে। ফলে একটি ছাত্র সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে, তেমনি কওমী মাদরাসায় কিংবা খ্রিষ্টান চার্চ স্কুলে পড়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারছে। এক্ষেত্রে তারা ইংলিশ আর অংককে বাধ্যতামূলক করে বাকিগুলোকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দিয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে-ই এই নিয়ম চালু রয়েছে। ভারতে, পাকিস্তানে, আফ্রিকায়ও এই নিয়ম রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার নিজ উদ্যোগে এই নিয়ম চালু করার চেষ্টা করা উচিৎ ছিলো। বাংলাদেশে যারা ইতোমধ্যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছেন তারা যদি এদেশের প্রতিটি নাগরিকের চিন্তা-চেতনাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতেন তবে তারা বুঝতেন এখানে কোনো ব্যবস্থাকে বাদ দিয়ে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করলে তা পূর্ণাঙ্গ হবে না। আর অপূর্ণাঙ্গ শিক্ষানীতি একদল মানলেও অন্যদল মানবে না। ফলে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

সরকারের মধ্যে থাকা অতিপ্রগতিবাদি (?) একটা শ্রেণী সর্বদাই চেষ্টা করেন কওমী কিংবা মাদরাসা শিক্ষাকে বন্ধ করার। এই শ্রেণীটা বিশ্বের ইতিহাস সম্পর্কে খুবই অজ্ঞ। তারা জানেন না তাসখন্দ, বোখারা, তাজেকিস্তান, চেচনিয়া ইত্যাদি দেশগুলোতে কমিউনিস্ট যুগে মাদরাসা শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে সরকারীভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও তা বন্ধ করা সম্ভব হয় নি। আজকের কওমী মাদরাসা বৃটিশ শাসনের যুগে বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সৈনিক তৈরির জন্য সরকারের গোয়েন্দাদেরকে ফাঁকি দিয়েই গড়ে উঠেছিলো। তুরস্কে কামাল পাশা পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কোরআন হাতে নিয়ে বলেছিলেন-হে পুরাতন বই আজ থেকে তোমাকে তুরস্ক থেকে বিদায় দিলাম, কিন্তু আজকের তুরস্কে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রী সভায় এবং পার্লামেন্টে বেশিরভাগ সদস্য ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত। তাই জাতীয় স্বার্থে সরকারের উচিৎ অতি উৎসাহি সেকুল্যার ড. কুদরত-এ-খোদা প্রমূখের চিন্তাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রত্যেক ধারা থেকে কিছু চিন্তককে নিয়ে বোর্ড গঠন করে একটা সমন্বিত শিক্ষানীতি তৈরি করা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.