নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Oh Allah Plz Save Bangladesh

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু, থাকি ছিলট

সৈয়দ মবনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দু’টি প্রশ্নের উত্তরে শ্রদ্ধেয় মাসুদ রানা : অতঃপর তাঁর কাছে আমার কিছু কথা সৈয়দ মবনু

০৯ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪



আমার শ্রদ্ধেয় লেখক মাসুদ রানার কাছে আমি নীচে উল্লেখিত দু’টি প্রশ্ন রেখেছিলাম-

১) আপনি মুসলিম কিংবা হিন্দু শব্দকে যখন বলেন সাম্প্রদায়িকতা আর সমর্থন করেন বাঙালী জাতীয়তাবাদকে তখন প্রশ্ন জাগে বাঙালীও কি সাম্প্রদায়িকতা নয়? আপনি হয়তো বলবেন তা সাম্প্রদায়িকতা নয়, তা জাতীয়তা। আমি সিলেটী ভাষায় বলবো - হেইরে না বুঝলে পুরায় বুঝানো।

২) জন্ম দিবস পালনে কোন সার্থকতা নেই, তা আপনি বলছেন। বিয়াদবি নিবেন না, আমি যদি বলি আছে। কারণ, এদিনকে উপলক্ষ করে কিছু আলোচনা হয়। প্রতিদিন তো আলোচনা সম্ভব না। এখানেই সার্থকতা।

উত্তরে তিনি বলেছেন-প্রিয় মবনু, নিশ্চয় প্রশ্নের ঊর্ধ্বে কোনো কিছুই নেই। (১) আপনি কি আমাকে দয়া করে বলবেন কোথায় আমি "মুসলিম কিংবা হিন্দু শব্দকে" সাম্প্রদায়িকতা বলেছি? আমি খোদ 'সাম্প্রদায়িকতা' বা 'কম্যুনালিজম' শব্দের উপমহাদেশীয় ব্যবহারটাকে ভুল মনে করি। আর, জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা এক নয় এই জন্যেই যে, জাতীয়তাবাদের মধ্যে রয়েছে সার্বভৌমত্বের ধারণা - অর্থাৎ জাতীয়তাবাদে একটি জাতি সার্বভৌমত্ব দাবী করে। কিন্তু সম্প্রদায় সার্বভৌমত্ব দাবী করে না। আর যদি করেও বা, তাহলে তা আর সাম্প্রদায়িকতা থাকে না, তা জাতীয়তাবাদে উন্নীত হয়।

(২) জন্মদিবস পালনে সার্থকতা নেই, তাও আমি বলিনি। যদি আমি তা বলতাম, তাহলে মুসলমানদের ঈদে-মিলাদুন্নবী ও হিন্দুদের জন্মাষ্টমীকে র‌্যাশনাল বলতাম না। আমি বলেছি, সেক্যুলারদের জন্যে জন্মদিন পালন র‌্যাশনাল নয়।

আমি প্রথমে মাসুদ রানা ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চাইবো এজন্য যে প্রথম প্রশ্নে সরাসরি বলেছি ‘আপনি মুসলিম কিংবা হিন্দু শব্দকে যখন বলেন সাম্প্রদায়িকতা...’ আমার বলার ইচ্ছে ছিলো ‘কেউ কেউ’ বলেন মুসলিম কিংবা হিন্দু হওয়াকে সাম্প্রদায়িকতা। মাসুদ ভাই কোথাও এমন কথা বলেছেন বলে প্রকৃতঅর্থেই আমি দেখিনি। আর এখানে তো তিনি নিজেই বলছেন- ‘আমি খোদ 'সাম্প্রদায়িকতা' বা 'কম্যুনালিজম' শব্দের উপমহাদেশীয় ব্যবহারটাকে ভুল মনে করি।’ মাসুদ ভাই যা বলেন তা তাঁর বিশ্বাস থেকেই বলে থাকেন, তা আমি জানি। তবে তিনি যখন বলছেন- ‘জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা এক নয় এই জন্যেই যে, জাতীয়তাবাদের মধ্যে রয়েছে সার্বভৌমত্বের ধারণা- অর্থাৎ জাতীয়তাবাদে একটি জাতি সার্বভৌমত্ব দাবী করে।’ তিনি যদি এতটুকু বলে থেমে যেতেন তবে আমি তাঁকে ধরতাম খুব শক্ত করে। কিন্তু তিনি আমাকে আর ধরার সুযোগ দিতে রাজি না, তাই জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার চিন্তাগত ব্যবধানকে তিনি উপস্থাপন করে দিয়েছেন এই বলে-‘সম্প্রদায় সার্বভৌমত্ব দাবী করে না। আর যদি করেও বা, তাহলে তা আর সাম্প্রদায়িকতা থাকে না, তা জাতীয়তাবাদে উন্নীত হয়।’ তবে একানে তিনি একটু তীক্ষন বুদ্ধিভিত্তিক চালাকির আশ্রয় নিয়েছেন। আমি যদি একটু বিষয়টাকে ঘুরিয়ে বলি-সার্বভৌমত্বেও জন্য প্রয়োজন ‘ভূমির’, জাতীয়তা কিংবা সাম্প্রদায়িকতার জন্য ভূমির কোন প্রয়োজন নেই। যেমন, আমরা যখন বলি আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে তখন আমরা বুঝাই স্বাধীন বাংলাদেশের কথা। এই অর্থে আমাদেরকে স্বীকার করতে হবে আমাদের জাতীয়তা হচ্ছে বাংলাদেশী। কেউ বলতে পারেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ শূদ্ধ নয়, আমরা বাঙালী। আমরা যখন স্বীকার করবো আমরা জাতীয়তার দিকে বাঙালী তখন তাও স্বীকার করতে হবে আমরা আজও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা লাভ করিনি। আমাদেরকে যারা পূর্ব-পশ্চিতে ভাগ করেছিলো ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তাদের একদলের (পাকিস্তানের) সাথে যুদ্ধ করে আমরা ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন হয়েছি এবং আরেক দলের (ভারতের) সাথে যুদ্ধ এখনও শুরু করতে পারি নি। আমার প্রশ্ন মাসুদ ভাই আপনি কি আমার এই কথার সাথে সহমতে আছেন? যদি না থাকেন তবে কথা নেই। আমরা সন্তোষ্ট ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশ নিয়ে। আমরা সন্তোষ্ট মেজর জিয়া কর্তৃক ঘোষিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চিন্তা নিয়ে। আর যদি আপনি দ্বি-মত থাকেন তবে প্রশ্ন-১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিম বঙ্গের লোকেরা ভারতের পক্ষে এবং পূর্ব বঙ্গের লোকেরা পাকিস্তানের পক্ষে যে কারণে এসেছিলেন সেই কারণগুলোর কি সমাধান হয়েছে বলে আপনি মনে করেন? কেউ বলতে পারেন ধর্মভিত্তিক জাতীয়তা ভুল এবং ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা শুদ্ধ তা ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে প্রমাণিত হয়েছে। কথাটা এভাবে কি সত্য হবে মাসুদ ভাই? বাংলাদেশে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে যা হয়েছে তা কিন্তু প্রম্ণা করে না ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার বিরুদ্ধে মানুষ অবস্থান নিয়েছে, বরং এখানের আজও মানুষ আজও ধর্ম এবং ভাষার দিকে সমান দৃঢ় আবস্থানে জাতীয়তাকে ধারণ করে আছে। চিন্তার দিকে এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা পৃথিবীতে একই অবস্থা। বৃটেনে বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, বর্ণের মানুষগুলোর জাতীয়তা বৃটিশ। আপনি নিজেও স্বীকার করবেন আপনি-আমি কিংবা আমাদের সন্তানেরা বৃটিশ বাঙালী। আমরা এক সময় ছিলাম ইয়ামনী-আরব। আরেক সময় হলাম আরব-বাঙালী। এরপর হলাম পাকিস্তানি-বাঙালী। এখন হচ্ছি বৃটিশ-বাঙালী। এই একেক মূহুর্তে আমাদের একেক পরিচয়! মাসুদ ভাই আপনি কি পারবেন চার্বাক ইতিহাস কিংবা তার পূর্বের সংকরায়নকে কিংবা পরবর্তি সংকরায়নকে এক করতে? পারবেন কি এই সংকরায়নের মাইগ্রেন্ট পদ্ধতিকে রোধ করতে? তাই আমার মতো ছোট মানুষ আপনার মতো বড় মানুষদের কাছে স্ববিনয়ে অনুরোধ করছি সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী জাগরণের পথে শ্রম ও মেধা ব্যয় না করে আসুন আমরা আমাদের হাজার হাজার বছরের দার্শনিক চিন্তা ‘দয়া’র বাণীকে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। এখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, বাঙালী, ইংরেজ, জার্মানী কোন বিষয় নয়, বিষয় হলো আমরা মানুষ গড়বো জ্ঞান-বুদ্ধি-কর্ম-প্রেমের আলোকে। শ্রদ্ধেয় মাসুদ ভাই ‘দয়াদর্শন’ গ্রন্থখানা একটু দয়া করে পড়লে আমরা কৃতজ্ঞ হবো। আমরা আমাদের ক্ষুদ্র অবস্থান থেকে বিষয়টার উপস্থাপন করেছি। আপনাদের মতো বিজ্ঞারা যদি বিষয়টিকে ধারণ করেন তবে আমাদের বিশ্বাস এই চিন্তার আলোকে আমরা পৃথিবীর মানুষগুলোকে একটা চিন্তার প্লাটফরমে দাঁড় করাতে পারবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.