নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সদয় খান

সাধারন একজন মানুষ কিছু অসাধারন সপ্ন নিয়ে দিন পার করছি । সাধারণ থাকতে চাই । তবে মাঝে মাঝে ভাবও মারি । আমার আশপাশের সবাইকে হাসি-খুশি রাখতে বেশি পছন্দ করি । ফেসবুকে লিখি আবার টুকটাক ব্লগে লিখি । আমার লিখা পড়ে কারও মুখে যদি একটুখানি হাসি ফুটে তাই যথেষ্ঠ । ধন্যবাদ ।

সদয় খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্দামান সাগরে ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি হোপে আমার বড় ভাইও থাকতে পারতো

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:৫৭

খবরের কাগজ খুললেই একটা না একটা দূর্ঘটনার খবর চোখে পড়বেই যার সিংহ ভাগই সড়ক দূর্ঘটনা । প্রতিদিন কত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে,কত পরিবার নিশ্চিন্ন হয়ে যাচ্ছে ।এসব খবর কি আমাদের মনে কোন দাগ কেটে যায়? অবশ্যই না ।



জাফর ইকবাল স্যার তারেক মাসুদ এবং মিশুক মনিরের সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণহানীর পর পত্রিকায় একটি কলাম লিখেছিলেন যার একটি লাইন আমার খুব ভাল লেগেছিল ।উনার কথাটা অনেকটা এমন..."এসব সড়ক দূর্ঘটনার খবর প্রতিদিনই আমরা দেখি,পড়ি এবং আমাদের কিছুই মনে হয় না ।খারাপ লাগে তখন যখন পরিচিত বা নিজের কাউকে হারায়" ।



কথাগুলো লিখলাম কারণ গত ৩ জুলাই আগে থাইল্যান্ডের আন্দামান সাগরে বাংলাদেশের একটি জাহাজ (এমভি হোপ) ডুবে যায় । জাহাজের ১৭ জন নাবিক ছিল যার সবাই বাংলাদেশী । এর মাঝে প্রাণ হারায় দুই জন নাবিক,ছয় জনের এখন পর্যন্ত কোন খবর পাওয়া যায়নি ।বহু কষ্টে ভয়াল সমুদ্রের হাত থেকে জীবন বাঁচিয়ে ফিরে আসতে পারে বাকি নয় জন নাবিক ।নিঁখোজ ছয় নাবিকের উদ্ধার কাজ এখনও অব্যাহত ।সাগরে হারিয়ে যাওয়া সেই নাবিকদের আত্মীয়-স্বজনরা এখনও সেই শিপিং কোম্পানির অফিসে প্রিয়জনের খবরের অপেক্ষায় বসে রয়েছে ।



এই খবরটা আমাকে এবং আমার পরিবারের সবাইকে প্রবলভাবে নাড়া দেয় কারণ আমার বড় ভাই একজন মেরিনার ।এখানেই জাফর ইকবাল স্যারের কথাটা মিলে যায় ।



আমি খুব ভাল করে জানি একজন মেরিনারের জীবনটা কেমন হয় । প্রতিবার ভাইকে বিদায় দেওয়ার সময় কি যে কষ্ট হয় তা আমার ভাই এবং আমাদের পরিবারের সবাই খুব ভালভাবেই জানে ।কখনও রাজশাহী টার্মিনাল আবার কথনও পতেঙ্গা বিচ থেকে ভাইকে বিদায় দেওয়ার সময় দু-ভাই খুব চেষ্টা করি হাসি মুখে পরস্পরকে বিদায় দেওয়ার কিন্তু কেন জানি হয়ে উঠে না ।চোখ ফেটে পানি বের হয়ে যায় ।আমি এব্যাপারে একটু বেশিই দূর্বল ।



প্রিয়জনের কাছ থেকে বিদায়ের যে কি কষ্ট তা একজন মেরিনার তার চাকরী জবীনে অসংখ্যবার উপলব্ধি করতে পারে ।সবাইকে দেশে রেখে তাদের ছুটে চলা সাগর থেকে মহাসাগরে,দেশ থেকে দেশান্তরে,দিনের পর দিন,মাসের পর মাস ।কখনও কখনও মনের মধ্যে গানের সুর বেজে উঠে, "ওরে নীল দরিয়া আমার দেরে দে ছাড়িয়া..." ।দিন গোনা,আর কতদিন বাকি দেশে ফিরতে ।বাড়ি ফেরার কি আকুল প্রতিক্ষা । পরিবারে সবাই পথ চেয়ে বসে থাকে ।



এত প্রতিক্ষার পর যদি সেই প্রিয় মানুষটার মত্যু সংবাদ শুনতে হয় তাহলে এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে ।



আন্দামান সাগরের সেই ডুবে যাওয়া জাহাজে আমার ভাইও থাকতে পারতো ।আমার ভাইকেও হয়তো হারাতে হতো ।জাহাজ ডোবার খবর জানার পর ভাইকে (বর্তমানে ঢাকা অবাস্থানরত) ফোন দিলে সে একটা কথায় বলে,"ভয় পেয়ো না ।মানুষের যার যেখানে মৃত্যু লিখা আছে সেখানেই হবে ।ভাইয়ের কথায় নিজেকে স্বান্তনা দেয়,কথাতো সত্যই ।আমরা কে জানি,কার কোথায় কিভাবে মত্যু হবে ।মত্যুর ভয়ে কি আমাদের জীবন থেমে থাকে?কখনই না ।আমরা যে যার পেশাই নিয়েজিত ।জীবন জীবনের মত এগিয়ে যাবে ।



আমি আল্লাহর কাছে সবসময় আমার ভাইয়ের নিরাপদ কর্ম জীবনের প্রার্থনা করি । আল্লাহ তাকে সবসময় যেন ভাল রাখেন ।



Note: আমার লিখা পড়ে এতক্ষনে হয়তো সবাই ভাবছে,“ধুরু যাহ...জাহাজের চাকরি মাইনষে করে ?!” নারে ভাই,মেরিনারের জীবন নিয়ে অনেক কষ্টের কথা বললেও তাদের জীবনটা শুধু কষ্টেরই না ।তারাই পারে অনেক কম বয়সে নিজের সম্পূর্ণ হালাল আয়ে জীবনে অনেক সাইন করতে ।আয়ের জন্যই তো আমরা চাকরী করি,নাকি?ডলার কামানোর যে কি মজা তা এরাই জানে । আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে যখন চাকরী খুঁজতে খুঁজতে সেন্ডেলের তলা ক্ষয় করছি মেরিনাররা তখন হাজার হাজার ডলার কামাচ্ছে । তাই আমার লিখা পড়ে মেরিনারদের জীবনকে শুধু প্রচন্ড সহানুভূতির চোখে দেখার দরকার নাই ।



আল্লাহ তাআলা তাদের এবং আমাদের সবাইকে যে যার জীবনে নিরাপদ এবং নিজের কর্ম নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার তৌফিক দান করুন...আমিন ।



ধন্যবাদ ।

:|

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:০৮

সদয় খান বলেছেন: আমি লিখতে চাই কিন্তু আমার পাঠক কই ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.