![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০ টার দিকে আমীর আলী আবাসিক হলের পার্শ্বের রাস্তায় প্রাধ্যক্ষ বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তুহিনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । হাতবোমার আঘাতে আহত হয় ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শামসুজ্জামান শাওন । তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ।
তুহিনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাত ১২ টায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় ।
ছাত্রলীগের দাবী হামলার সাথে মৌলবাদী ‘ইসলামী ছাত্র শিবির’ জড়িত। ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। সম্ভব্য হামলা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্ত্বরে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।
ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে সৈয়দ আমির আলী হলে শোক দিবসের আলোচনা শেষে মাদার বখশ হলের দিকে ফিরছিলেন তৌহিদ আল তুহিন ও তার কয়েকজন কর্মী।
এ সময় মোটরসাইকেল যোগে অন্তত ৬-৭ জন ইসলামী ছাত্র শিবিরের চিহিৃত সন্ত্রাসীরা এসে অন্তত দুইটি হাতবোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে আতংক তৈরি করে ত হামলা চালায় তারা। এই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তুহিনের মাথায় জখম করে বাম হাত ও ডান পায়ের রগ কেটে দেয়। হাতবোমার আঘাতে শাওন নামের আর এক নেতা আহত হন।
এদিকে এই ঘটনায় পর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সারওয়ার জাহান সজল, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফীন রামেক হাসপাতালে তুহিনকে দেখতে যান।
সেখান থেকে উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দীন বলেন, তুহিনের অবস্থা খুব সংকটময়। এই ধরনের ঘটনা কখনো সভ্য মানুষ করতে পারে না। আমরা এই ঘটনার তীর্ব নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হাসান তুহিনের উপর ছাত্রশিবিরই বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে রাবি শাখা ছাত্রলীগ। শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন, “তুহিনের উপর এমন পৈশাসিক ও বর্বরোচিত হামলা জঙ্গিবাদী ইসলামী ছাত্রশিবির ছাড়া আর কেই করতে পারেনা ।
রাতের অন্ধকারে হাত-পায়ের রগ কাটার রাজনীতি একমাত্র শিবিরই করে থাকে। তারা বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে আসছিল। রাবি শিবির সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন ফোন করে বলে আপনারা তুহিনকে আর কত দিন বাচিয়ে রাখবেন”।
তিনি বলেন, “শিবিরের হামলাকে ছাত্রলীগ ভয় পায়না। আমরা ক্যম্পাসে আছি এবং থাকবো। ছাত্রশিবিরকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে টিকে থাকবে। সকল ছাত্রসংগঠনকে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রতি একাত্মতা ঘোষনার আহ্বান জানাচ্ছি”। তিনি তুিহনের উপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রসাশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের প্রতি আহ্বান জানান।
এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পর আমাদের সকল শুভাকাঙ্খী ঢাকায় অবস্থান করায় মামলা করতে পারেনি। আজ-কালের মধ্যেই মামল করা হবে বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক খালিদ হাসান নয়ন, আমানুল্লাহ রনি, সদস্য সাইদুল ইসলাম রুবেল, ফিরোজ সরকার, রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান, সরকার ফারহানা আক্তারসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
শনিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রচার সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেছেন, “ছাত্রলীগের গত ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত ২৪তম কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের পরোক্ষ মদদে হামলা হতে পারে বলে আমাদের ধারণা।”
বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাসে আমীর আলী হলের পাশের রাস্তায় তুহিনের ওপর হামলা চালিয়ে তার বাম হাত, ডান পায়ের রগ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ছাত্রলীগ নেতারা ওই হামলার জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে আসছেন এবং তাদের সেই বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়।
শিবির নেতা বলেন, “ঘটনার তদন্ত না হওয়ার পরও শিবিরকে হামলার জন্য দায়ী করা সঠিক হয়নি।”
বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে শিবির নেতাদের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া গিয়েছিল।
বিষয়টি জানানো হলে জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, “মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা শিবিরের রাজনৈতিক কৌশল।”
তুহিনের ওপর হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ ও ‘পৈশাচিক’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে যথপোযুক্ত শাস্তি দিতে না পারলে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে তুহিনের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ১৫ জন যুবকের মধ্যে নয়জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে মতিহার থানার ওসি আবদুস সোবহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এদিকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে তুহিনের বড় ভাই শাহিনুর রহমান শাহিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তুহিনের সংজ্ঞা ফিরেছে।
“তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছে, তার ডান পায়ের ক্ষতটা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এই জন্য তাকে পঙ্গুত্বও বরণ করা লাগতে পারে।”
©somewhere in net ltd.