নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রবাসে বাংলাভাষী

শফিকইসলাম

ঘর কুনো ছেলেটি আজ প্রবাসী। কেটে যাচ্ছে দিন,মাস, বছর। কিন্তু মানসপটে বঙ্গভূমি। সত্যকে সর্বদাই স্বাগতম মিথ্যা বড্ড অপছন্দনীয়।

শফিকইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে দেখা প্রবাস জীবনের কিছু কথা

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:১৮



প্রবাসে পাড়ি জমাব কখনো স্বপ্নেও ভাবি নি। জীবিকার তাগিদে গৃহ পরিজন ছেড়ে অগ্যতা পরবাসের খাতায় নাম লিখাতে হল। প্রথমদিকে ব্যাপেরটা বনবাসের মতই লাগত। একজন প্রবাসী প্রতিদিনই নিত্তনতুন ঘটনার সম্মুখীন হয় , অভিজ্ঞতার ভান্ডারও বৃদ্ধিপেতে থাকে সেই সাথে। এভাবেই কেটে গেছে বেশ কয়েকটি বছর।
প্রবাস জীবন শিখিয়েছ কিভাবে কিভাবে আশেপাশে ঘঠে যাওয়া অনেক কিছুকেই এড়িয়ে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যেতে হয়।
নিরাশার অতল গহ্বরে হারিয়ে যাওয়া ছেলেটা যাতে যাত চেপে, চোখের নোনাজলকে উপেক্ষা করে বলতে শিখিয়েছে “আমি ভাল আছি মা, তোমরা ভাল আছ তো?”
ভাল রান্নার খাবারও পছন্দ না করা সেই ছেলেই তামিল ইডলি, বডে এমনকি অনেক অখাদ্যকে অমৃতসুধা মনে করে খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে।


ঘর থেকে বেরুলেই যার রিক্সা লাগে, তাকে এখন স্বচক্র যানে বা দ্বিচক্র যানে পাড়ি দিতে হয় অনেক পথ।
মায়ের আচল তলে বেড়ে ওঠা ভীতু সন্তান হাজার মাইল দূরে নির্ভিক দিবানিশি কাটায় শুধুমাত্র প্রবাসী বলেই।
নরম বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়া তখন স্বপ্নের সম্ভব হয়। কারন নরম বিছানের জায়গা কাঠের তক্তা দখল করে নিয়েছে।

সকালে ঘুম থেকে উঠাতে যাকে বাড়ি শুদ্ধু লোককে ডাকা ডাকি করতে হত , প্রবাসী হবার কারনেই তাকে সূয্যিমামার আগেই জেগে উঠতে হয়।
জ্বর ঠান্ডাকে পিছনে ফেলে রোদ বৃষ্টিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যায় স্বউদ্দমে
একসময় বন্ধুদের নিয়ে অস্থির জীবন যাপনে অভ্যস্থ ছেলেকে অন্য এক অস্থিরতায় পেয়ে বসে, আর তা হল বিদেশে আসার ধার দেনা ফেরত দেওয়ার অস্থিরতা। প্রতিটি টাকা খরচ করতে তাকে দু’বার ভাবতে হয়।
দেশে যে ছেলে কোন কাজই করে নি, প্রবাসে তাকেই একটি রবিবার কাজে বন্ধ দিলে হতাশায় পেয়ে বসে এই ভেবে যে –এ মাসে টাকা কম আয় হবে। অথচ তাকে বেমালুমই ভুলে যেতে হয় যে সপ্তাহের ৬ টি দিন সকাল ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কাজ করেছে।
ছাত্ররাজনীতির মাঠে বীরদর্পে প্রদক্ষীণ করা ছেলেগুলোই রাজনীতির ভেদাভেদ ভূলে, প্রতিহিংসাকে পিছনে ফেলে “বাংলাদেশী” পরিচয়ে এগিয়ে চলে। বিপদে ভাই বন্ধুর মত পাশে দাঁড়ায়।
সারা দিন কাজের শেষে রাত জেগে পড়াশোনায়ও ক্লান্ত হয় না, ভোর না হয়েই বেড়িয়ে পরে কর্ম স্থলে। প্রবাসীর এ উদ্দম দেখে ঘড়ির কাটা নিজেই যেন ক্লান্ত হয়ে পরে।
শত কষ্ট, ব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসীদের খুশিহতে খুব বেশী কিছু লাগে না। দেশে সবাই ভাল আছে , তার হাসি মাখা কন্ঠস্বরই ভরিয়ে দেয় প্রবাসীদের প্রান।


প্রবাসে চরিত্র গুলো ভিন্ন হতে পারে কিন্তু তাদের জীবন যুদ্ধ, গল্পকথা মোটামুটি একই রকম। প্রতিটি জীবনই প্রবাসে এসে বদলে যায়, সজ্জিত হয় সম্পুর্ন এক নতুন ধাচে।
প্রবাস জীবন শিখায় জীবনকে উপলব্ধি করতে, শত বাধা উপক্ষা করে এগিয়ে চলতে। আর “আদু ভাই” এর মত আমি / আমরা শিখে যাচ্ছি বছরের পর বছর। এ শিক্ষা জীবনের শেষ কোথায় কে জানে।

আরও দেখুন

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সকল প্রবাসির জন্য শুভ কামনা :)

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫

শফিকইসলাম বলেছেন: শুভকামন বাংলাদেশ ও দেশবাসীর জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৫

আরমিন বলেছেন: মনিরা সুলতানা বলেছেন: সকল প্রবাসির জন্য শুভ কামনা

:)

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

শফিকইসলাম বলেছেন: শুভকামন বাংলাদেশ ও দেশবাসীর জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১১

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: প্রথম ভাল লাগা পোষ্টে।




এই কষ্টটুকু যদি দেশে করার ক্ষেত্র থাকত এবয় আমারা করতে পারতাম তবে দেশের চিত্রটা কেমন হত।



সবচেয়ে ভাল লাগা লাইন

ছাত্ররাজনীতির মাঠে বীরদর্পে প্রদক্ষীণ করা ছেলেগুলোই রাজনীতির ভেদাভেদ ভূলে, প্রতিহিংসাকে পিছনে ফেলে “বাংলাদেশী” পরিচয়ে এগিয়ে চলে। বিপদে ভাই বন্ধুর মত পাশে দাঁড়ায়।




এটা এখন বড্ড প্রয়োজন।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

শফিকইসলাম বলেছেন: মাঝে মাঝে আমিও তাই ভাবতাম, কিন্তু পরক্ষনেই ভাবনায় উকিদেয় আমাদের রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, ঘুষ আরো কত কি।

কেউ কি ভেবেছে প্রবাসীরা সবাই সবাই দেশে ফিরলে কোথায় ঠাই হবে আমাদের??

৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: " ভাল রান্নার খাবারও পছন্দ না করা সেই ছেলে...", "ঘর থেকে বেরুলেই যার রিক্সা লাগে"
" মায়ের আচল তলে বেড়ে ওঠা ভীতু সন্তান " , " সকালে ঘুম থেকে উঠাতে যাকে বাড়ি শুদ্ধু লোককে ডাকা ডাকি করতে হত " " একসময় বন্ধুদের নিয়ে অস্থির জীবন যাপনে অভ্যস্থ ছেলে " - এদের জন্য প্রবাসী জীবন পারফেক্ট । তরুণ বয়সে বাপের হোটেলে খেয়ে আমরা যে পরিমান ফুটানি আর বাউন্ডেলাপনা করি তাতে বাংলার সব বাবা মার উচিত তাদের ছেলদের প্রবাসে শ্রমিক হিসেবে পাঠিয়ে দেওয়া ।

তবে " ছাত্ররাজনীতির মাঠে বীরদর্পে প্রদক্ষীণ করা ছেলেগুলো" এদের জন্য প্রবাসে শ্রমিকের জীবন যথেষ্ট নয়, এদেরকে হাসবী ক্রীতদাস হিসেবে আফ্রিকায় বা মধ্যপ্রাচ্যে চালান দেওয়া যেতে পারে !!!!

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৩৬

শফিকইসলাম বলেছেন: আমার দেশের মোটামুটি বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের কৈশোর কাটে পিতামাতার ছায়াতলে এবং অনেকটা আমুদেই। শিক্ষা জীবন শেষ করতেই পেরিয়ে যায় ২৫ বছর আর ছাত্র নামক লেবাস থাকা মানে যেন তাকে আর কিছুই করতে মানা। আর তার পর শুরু হয় হতাশার জীবন।

৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
প্রবাস জীবন শিখায় জীবনকে উপলব্ধি করতে, শত বাধা উপক্ষা করে এগিয়ে চলতে। আর “আদু ভাই” এর মত আমি / আমরা শিখে যাচ্ছি বছরের পর বছর। এ শিক্ষা জীবনের শেষ কোথায় কে জানে ।

আজ ৩২ বছর প্রবাস জীবন যাপন করছি ।
প্রবাসীই জানে প্রবাস জ়ীবন কী ?

প্রিয় শফিক ইসলাম-এর প্রতি সুভেচ্ছ রইল ।
প্রবাসীদের জীবনে কিছু সাইড-এফেক্ট আছে সে ব্যাপারে সচেতন হওয়ার অনুরোধ র'ল ।
আপনার উদ্দেশ্য ও জীবন সফল হোক কামনা করি ।

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৩

শফিকইসলাম বলেছেন: এ কে এম রেজাউ করিম ভাই , নিয়তই অনেক লোকের সাথে দেখা হচ্ছে , পেশাগত কারনে তাদেরকে বয়ানও দিতে হয়। বাংলার ভাইদের (যারা এখানে নতুন) প্রতিনিয়তই সাইড-এফেক্ট সম্পর্কে সতর্ক করতেছি কিন্তু সিঙ্গাপুরে অনেকেই পা বাড়াচ্ছে ভিন্ন পথে। আর শেষবেলায় বাড়ি ফিরছে শুন্য হাতে ।নিজেই শুনে নিন তাদের কথা-
https://www.facebook.com/video.php?v=403804856438352&set=vb.153966014755572&type=2&theater

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৪

শফিকইসলাম বলেছেন: লিঙ্ক টি তে বিপথগামী প্রবাসীর হতাশার কথা

৬| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

শত কষ্ট, ব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসীদের খুশিহতে খুব বেশী কিছু লাগে না।
দেশে সবাই ভাল আছে , তার হাসি মাখা কন্ঠস্বরই ভরিয়ে দেয় প্রবাসীদের প্রান।

ভাল লিখেছেন।

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৫

শফিকইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

শত কষ্ট, ব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসীদের খুশিহতে খুব বেশী কিছু লাগে না।
দেশে সবাই ভাল আছে , তার হাসি মাখা কন্ঠস্বরই ভরিয়ে দেয় প্রবাসীদের প্রান।

ভাল লিখেছেন।

৮| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৮

নীল লোহীত বলেছেন: হলুদ যেমনি প্রতি তরকারিতে দরকারি, তেমনি প্রবাসী জীবনে আশা আর মনবল। এই দুটি হারালে প্রবাসে টিকে থাকা অসম্ভব।

তাই মনকে শক্ত রাখা উচিৎ। আপানার ত্যাগ কত গুলো মুখে হাসি ধরে রেখেছে। এইবা কম কিসের।

মায়ের আচল তলে বেড়ে ওঠা ভীতু সন্তান হাজার মাইল দূরে নির্ভিক দিবানিশি কাটায় শুধুমাত্র প্রবাসী বলেই
---- সত্যি কথা।

ভাল লেখেছেন।

শুভকামনা।।।।




২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৭

শফিকইসলাম বলেছেন: হুমম ।। বেশির ভাগ প্রবাসির শেষ বেলার সান্তনা এটাই যে তারা অন্যের জন্য নিজের জীবনকে উতসর্গ করছে।

৯| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার শেয়ার । সকল প্রবাসীদের জন্য দোয়া এবং শুভকামনা ।

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৭

শফিকইসলাম বলেছেন: শুভকামন বাংলাদেশ ও দেশবাসীর জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.