![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
*special post* Women right Christan AND Islam
নারীর অধিকার ও মর্যাদা
প্রাসঙ্গিক
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ আবার গঠন, প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের কারণে দু’টি প্রজাতিতে বিভক্ত-নর ও নারী। বিশ্বে মানুষের ভূমিকায় নারীর অবস্থান ও অবদান অপরিহার্য বিষয়। তাই নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রসঙ্গটি অত্যন্ত গুরুত্বসহ মানব ইতিহাসে বহুলভাবে আলোচিত হয়ে অসেছে। তবে জ্ঞানী সুধিজন স্বীকৃত সত্য যে, নারী সম্বন্ধে ভুল ধারণা তথা স্বার্থন্বেষী মহলের প্রতারণার কারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে নারী বিষয়টি বিভিন্ন মতাদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গিতে আলোচিত হলেও তুলনামূলক ধর্মদর্শনের আলোকে মূল্যায়ন হয়নি বললে অতুক্তি হবে না। বর্তমান খ্রীষ্টান বিশ্ব নারী জাতির একমাত্র ত্রাণকর্তঅর ভূীমকায় অবর্তীণ। তারা নারী প্রগতি তথা মুক্তির নিজস্ব শ্রেষ্ঠ দর্শন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামে নারী মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে অপপ্রচার ও অপব্যাখ্যা দিয়ে আসছে। অথচ তারা নিজ ধর্মে নারীর অবস্তান সম্পর্কে কতটুকু অবগত? তুলনামূলক পর্যালোচনার বৈধ অধিকারের প্রেক্ষাপটে খ্রীষ্ট ধর্ম ও ইসলামের মূল উৎস বাইবেল ও কুরআনে নারীর প্রকৃত অবস্থান জেনে নেয়া প্রয়োজন। এতে একদিকে যেমন উভয় ধর্মালম্বীর ভ্রান্তির অবসান হবে, অন্যদিকে নিজ নিজ ধর্মে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে অবহিত হতে পারবে। আসুন বিশ্বাসীগণ, উভয় ধর্মে নারীর অধিকার ও মর্যাদা জেনে নিই।
বাইবেলে নারীর অধিকার
১) শিক্ষা
বাইবেলে নারীর ধর্ম ও চর্চা ও বিদ্যা শিক্ষার অধিকার অত্যন্ত সীমাবদ্ধ। যেমন বলা হয়েছে: ‘আর যদি তাহারা (নারীগণ) ১ কিছু শিখিতে যায়, তবে নিজ নিজ স্বামীকে ঘরে জিজ্ঞাসা করুন’। (করিন্থীয় ১৪ : ৩৫)।
২) বিবাহ
বাইবেলে বিবাহের স্ববিরোধী বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। যেমন: ‘অতএব যে আপন কুমারী কন্যা বিবাহ দেয়, সে ভাল করে; এবং যে না দেয় সে আরো ভাল করে।’ (২ করিন্থীয় ৭ : ৩৮)।
বিবাহ বিচ্ছেদ: বাইবেলে বিবাহ বিচ্ছেদ অনুৎসাহিত করা হয়েছে (মার্ক ১০ : ৯),
তবে মোশির গ্রন্থে বলা হয়েছে অপছন্দ হলে: ‘সেই পুরুষ তাহার জন্য এক ত্যাগ পত্র লিখিয়া তাহারা হস্তে দিয়া আপন বাটি হইতে তাহাকে বিদায় করিতে পারিবে।’ (দ্বিতীয় বিবরণ ২৪ : ১)।
‘আর যীশু বলেন ব্যভিচারী না হওয়া পর্যন্ত তালাক দিতে পারবে না; ‘আর আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যকে বিবাহ করে, সে ব্যাভিচার করে।’
(মথি ১৯ : ৮-৯)।
পুনঃ বিবাহ বাইবেলে তালাক প্রাপ্তা নারীর পুনঃ বিবাহ সম্পর্কে স্ববিরোধী বক্তব্য বিরাজমান। বাইবেলে বলা হয়েছে: ‘আর (পরিত্যাক্তা) স্ত্রী তাহার বাটী হইতে বাহির হইবার পর গিয়া অন্য পুরুষের ভার্ষ্যা হইতে পারে।’ (দ্বিতীয় বিবরণ ২৪ : ২)।
বিপরীত বলা হয়েছে: ‘যে ব্যক্তি বিধবা, কি ত্যাক্তা; .... ইহাদের কাহাকেও বিবাহ করিবে না।’ (লেবীয় ২১ : ১৪)।
৩) অর্থনৈতিক ও সম্পত্তির উত্তারাধিকার
বাইবেলের মতে মৃতের স্ত্রী, মাতা, বোন, বিমাতা নারীর জ্ঞাতির সম্পত্তি পাবে না। তবে শর্ত সাপেক্ষে কন্যঅ সম্পত্তি পাবে, যা চূড়ান্তভাবে পুরুষের হাতেই চলে যাবে: ‘কেউ যদি অপুত্রক হইয়া মরে, তবে তোমরা তাহার অধিকার (সম্পত্তি) তাহার কন্যাকে দিবে।’ (গণনাপুস্তক ২৭ : ৮)।
‘আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ প্রত্যেকে যেন আপন আপন পৈত্রিক অধিকার ভোগ করে, এই জন্য ইস্রায়েল সন্তানগণের কোন বংশের মধ্যে অধিকারিনী প্রত্যেক কন্যা আপন পিতৃ বংশীয় গোষ্ঠীর মধ্যে কোন এক পুরুষের স্ত্রী হইবে, এইরূপে এক বংশ হইতে অন্য বংশ অধিকার যাইবে না।’ (গণনাপুস্তক ৩৬ : ৮-৯)।
বাইবেলে নারীর মর্যাদা
১) কন্যা হিসেবে
বাইবেলে কন্যাকে দাসীরূপে বিক্রি করতে পারে উল্লেখ রয়েছে: ‘আর কেহ যদি আপন কন্যাকে দাসীরূপে বিক্রয় করে’ (যাত্রাপুস্তক ২১ : ৭)।
‘কন্যা সন্তান জন্মদান ক্ষতিকর’ (বেন-সিরা ২২ : ৩, কাথলিক বাইবেল)
২) স্ত্রী হিসেবে
বাইবেলে নারীর কত প্রথম পাপ ও স্বামীর প্রতি আসক্তির কারণে পুরুষ তার উপর কর্তৃত্ব করবে বলা হয়েছে: ‘আমি উপদেশ দিবার কিম্বা পুরুষের উপরে কর্তৃত্ব করিবার অনুমতি নারীকে দিই না, কিন্তু যৌনভাবে থাকিতে বলি। কারণ প্রথমে আদমকে, পরে হবাকে নির্মাণ করা হইয়াছিল। আর আদম প্রবঞ্ছিত হইলেন না, কিন্তু নারী প্রবাঞ্চিত হইয়া অপরাধে পতিতা হইলেন।’ (১ তীমথিয় ২ : ১২-১৩)।
‘স্বামীর প্রতি তোমার (নারীর) বাসনা থাকিবে; ও সে (পুরুষ) তোমার উপর কর্তৃত্ব করিবে।’
(আদি পুস্তক ৩ : ১৬)।
৩) মাতা হিসেবে
বাইবেলে যাকোবের ছেলে রূবেণ, পিতার অনুপস্থিতিতে তার মাতাকে ধর্ষণ করে। পিতা সন্তানের এই বদমাশির জন্য একটুও রাগ করেননি, এমনকি ঈশ্বরও তাকে সামান্য তিরস্কার করেননি: ‘সেই দেশে ইস্রায়েলের (যাকোবের) অবস্থিতি কালে রূবেন (যাকোবের প্রতমজাত পুত্র) গিয়া আপন পিতার বিল্হা নাম্মী উপপতœীর (স্ত্রীর) ২ সহিত শয়ন (সঙ্গম) করিল’ (আদিপুস্তক ৩৫ : ২২)।
বাইবেলে মাতার প্রতি যীশু উদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার করে বলেন: ‘হে নারি, আমার সঙ্গে তোমার বিষয় কি?’
(যোহন ২ : ৪)।
অপ্রিয় সত্য যে, এই ‘নারী’ শব্দটি যীশু একজন পতিতার জন্য ব্যবহার করেছেন (যোহন ৮ : ১০)।
৪) ধর্মীয় অধিকার
বাইবেলে আরাধনা ও প্রার্থনা তথা ধর্ম প্রচারের বিষয়ে নারীকে নীরবতা পালনের নির্দেশ করে বলা হয়েছে: ‘স্ত্রীলোকেরা মন্ডলীর নীরব থাকুক, কেননা কথা কহিবার অনুমতি তাহাদিগকে দেওয়া যায় না, বরং যেমন ব্যবস্থাও বলে, তাহারা বশীভূত হইয়া থাকুক। কারণ মন্ডলীতে স্ত্রীলোকের কথা বলা লজ্জার বিষয়।’ (করিন্থীয় ১৪ : ৩৪-৩৫)।
অন্যান্য
১) পাপ: খ্রীষ্ট ধর্মে নারীকে পাপের মূল কারণ ও প্রথম পাপ কারীনী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কারণ বাইবেলের বর্ণনা মতে স্বর্গে শয়তানের প্ররোচনায় সর্বপ্রথম নারীই প্রলোভিত হয় এবং সদাপ্রভূর নিষিদ্ধ ফল ভোজন করে এবং আদমকেও খেতে প্ররোচিত করে। তাই স্রষ্ট তাকে প্রসব বেদনার অভিশাপ দেন (আদিপুস্তক ৩ : ৬)।
‘পরে তিনি (সদ্যপ্রভু) নারীকে কহিলেন, আমি তোমার গর্ভবেদনা অতিশয় বৃদ্ধি করিব, তুমি বেদনাতে সন্তান প্রসব করিবে’ (আদিপুস্তক ৩ : ১৬)।
এই অভিশাপ হতে মুক্তির জন্য : ‘তথাপি যদি আতœসংযমের সহিত বিশ্বাসে, প্রেমে ও পবিত্রতায় তাহারা স্থির থাকে, তবে নারী সন্তান প্রসব দিয়া পরিত্রাণ পাইবে।’ (১ তীমথিয় ২ : ১৫)।
বিপরীতে পৌলের মতে আদমের কারণে সকল মানব জাতি পাপী হয়ে জম্মায়। আর এই ক্ষমাহীন পাপ হতে পরিত্রাণের জন্য একমাত্র যীশুতে বিশ্বাসই অত্যাবশ্যক যিনি নিজ জীবন বলী দিয়ে পাপের প্রায়শ্চিত করেছেন (ইফিসীয় ৫ : ২, গালতীয় ২ : ১৬)।
২) ব্যাভিচার: বাইবেলে নারীকে বিভিন্ন ন্যাক্কারজনক ব্যাভিচার ও পাপাচারে লিপ্ত বর্ণিত হয়েছে। যেমন: লোট ভাববাদীর দু’কন্যা পিতাকে মদ পানে মাতাল করে যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে গর্ভবর্তী হয় (আদিপুস্তক ১৯ : ৩৩-৩৮)। একইভাবে পুত্র বধু তামর শ্বশুরের সাথে ব্যাভিচারের ফলে গর্ভবর্তী হয় (আদিপুস্তক ৩৮ : ১৫-১৮, ২৯-৩০)।
যে অজাচারের* ফসল জমজ সন্তানই খ্রীষ্টানগণের একমাত্র পবিত্রতম পরিত্রাণের মহাপুরুষ যীশুর পূর্বপুরুষ (মথি ১ : ১)।
একইভাবে দায়ুূদ ভাববাদী কর্তৃক সেনাপতি উরিয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণের বর্ণনা রয়েছে (২ শমূয়েল ১১ : ২-৫)।
এই দায়ূদের অপকর্মের জন্য বাইবেলের ঈশ্বর দায়ূদের স্ত্রীকে সন্তান দ্বারা জনসমক্ষে ধর্ষণ করিয়ে শাস্তি দেন (২ শমূয়েল ১২ : ১১-১২)।
এই হল খ্রীষ্টীয়ান বাইবেলে নারীর প্রতি ঈশ্বরের ন্যায় বিচারের নমূনা। দোষ করেছে পুরুষ শাস্তি ভোগ করতে হলো নারীকে, তাও সন্তানকে দিয়ে জনসমক্ষে মাতাকে ধর্ষণ। বাইবেলে নারীর প্রতি এসকল ঘৃন্য অবিচার-ব্যাভিচারের জন্য সদাপ্রভু কাউকে শাস্তি প্রদান করেনি। অথচ পুত্র বুধ এবং মাতা ও পরস্ত্রীর সাথে ব্যাভিচারের শাস্তি মৃত্যু দন্ড ঘোষণা দিয়েছে (দ্বিতীয় বিবরণ ২৩ : ২; লেবীয় ২০ : ১০)।
* ঘনিষ্ট আত্মীয় দু’জনের মধ্যে যৌন সংযোগ (অক্সপোর্ড এ্যাডভান্স লার্নার্স ডিকশেনারী)। উদাহরণ স্বরূপ: পিতা ও কন্যার মধ্যে, পুত্র ও মাতার মধ্যে, শ্বশুর ও পুত্রবধুর মধ্যে, ভাই ও বোনের মধ্যে ইত্যাদি।
৩) নারীর সতীত্ব: বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী নারীর ব্যাভিচার নিরূপণ হল ‘কৌমার্যের চিহ্ন’ দেখে। অর্থাৎ সতীত্বের চিহ্ন হল সতীচ্ছেদ। কুমারীকে বিয়ে দেয়ার পর স্বামী স্ত্রী সঙ্গমের ফলে ঐ কন্যার সতীচ্ছেদ (কুমারী ঝিল্ল বা যোনি মুখের পাতলা পর্দা) ছিন্ন হয়ে রক্তপাতকে বুঝায়। কন্যা হতে তা না পাওয়া গেলে ধরে দিতে হবে ঐ নারী অসতী অর্থাৎ আগে অন্য কারোর সাথে মিলিত হয়েছে।
অথচ বর্তমান বিজ্ঞানের এই যুগে এই সতীচ্ছেদ নানা কারণে হতে পারে অনেকের সঙ্গমের পরও ছিন্ন হয় না বলে প্রমাণ মিলে। বাইবেলের ঘোষনা মতে এই সঙ্গীত্বের চিহ্ন পাওয়া না গেলে: ‘তবে সেই কন্যার নগরের পুরুষেরা প্রস্তরাঘাতে তাহাকে বধ করিবে।’ (দ্বিতীয় বিবরণ ২২ : ২০-২১)।
বাইবেলে নারীর কুমারীত্ব নির্ণয়ের একটি বর্বরোচিত দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় । সদা প্রভু মোর্শিকে ইস্রায়লের সকল প্রণীকে হত্যা করে শুধু কুমারীকে জীবিত রাখতে আদেশ দেন । এই নির্দেশ অনুযায়ী কুমারী পাওয়া যায়। বত্রিশ সহস্র মনুষ্য, অর্থাৎ ‘শয়নে পুরুষের পরিচয় অপ্রাপ্ত ছিল’ ‘তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বত্রিশ প্রানী।’
(গণনাপুস্তক ৩১ : ১৭-১৮.৩৫.৪০,)।
এখান চরম প্রশ্নোদয় হয় যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যরা এই কুমারীত্ব কীভাবে নির্ণয় করল, যদি না তাদেরকে পাইকারী ধর্ষন করে কৌমার্যের চিহ্ন আবিস্কার না করে? তখন তো আধুনিক কুমারীত্ব নির্ণয়ের বৈজ্ঞানিক পরিক্ষার পদ্ধতি আবিস্কার হয়নি ।
বাইবেলে আরও উল্লেখ রয়েছে , ব্যাভিচারে ধরা পড়লে ‘আর বাগদত্তা কুমারীকে ভুলাইয়া তাহার সহিত শয়ন করে, তকে সে অবশ্যই কন্যা পন দিয়া তাহাকে বিবাহ করিবে। যদি সেই ব্যাক্তির সহিত আপন কন্যা বিবাহ দিতে পিতা নিতান্ত অসম্মত হয় ,....তুমি (পিতা) মায়াবিনীকে (কন্যাকে) জীবিত রাখিও না।’
(যাত্রা পুস্তক ২২ : ১৬-১৭)।
৪) সূচী-অশুচী: বাইবেলে নারীর সূচী সর্ম্পকে এক অমানবিক নির্দেশ হল: ‘আর যে কেহ তাহাকে (রজস্বলা নারীকে ) স্পর্শ করে সে স›দ্ধ্যা পর্যন্ত অশুচি থাকিবে। আর অশৌচিকালে সে যে কোন শয্যায় শয়ন করিবে তাহা অশুচি হইবে:ও যাহার উপর বসিবে, তাহা অশুচি হইবে। আর যে কেহ তাহার শয্যা স্পর্শ করিবে, সে আপন বস্ত্র ধেীতি করিবে ,জলে স্মান করিবে এবং স›দ্ধ্যা পর্যন্ত অশুচি থাকিবে।’ (লেবীয় ১৫ : ১৯-২১)।
‘আর অশৌচিকালে যে পুরুষ তাহার সহিত শয়ন করে, ও তাহার রজঃতাহার গাত্রে লাগে, সে সাত দিবস অশুচি থাকিবে ; এবং যে কোন শয্যায় শয়ন করিবে ,তাহাও অশুচি হইবে।’ (লেবীয় ১৫:২৪।
৫) পর্দা: বাইবেল অনুযায়ী নারীদের পর্দা করা অত্যাবশ্যক। যেমন বলা হয়েছে : ‘স্ত্রী যদি মস্তক আবৃত না রাখে,সে চুল কাটিয়ে ফেলুক; কিন্তু চুল কাটিয়া কি মস্তক মুন্ডন করা যদি স্ত্রীর লজ্জার বিষয় হয় তবে মস্তক আবৃত রাখুক।’
(১ করিন্তীয় ১১
কুরআনে নারীর অধিকার
১) শিক্ষা
কুরআনে পুরুষ হউক বা নারী উভয়ের জন্য শিক্ষা ফরম অত্যাবশ্যক । কুরআনের প্রথম ওহীতেই শিক্ষার মূল দুই উপাদানের নির্দেশ রয়েছে:
পড় তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে ......আর তোমার প্রতিপালক মহান যিনি কলমের সাহায্যে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন; যা সে জানতো না’।-আলাক ৯৬ : ১-৫
২) বিবাহ
কুরআনে বলে বিবাহ মানবের একটি স্বভাবগত ব্যবস্থা:
এবং তিনিই (আল্লাহ ) মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি হতে; অতপর তিনি তাদের মধ্যে বংশগত ও বৈবাহিক সম্পর্ক সৃষ্টি করেছেন ।-ফুরকান ২৫ : ৫৪,
তোমাদের মধ্যে যারা (বিধবা, বিপতœীক, অবিবাহিত ), তাদের বিবাহ সম্পাদক কর।-নুর ২৪ : ৩২
বিবাহ বিচ্ছেদ: কুরআনে বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাককে অনুৎসাহীত করা হয়েছে:
তাদের (স্ত্রীদের ) সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করবে; তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর,তবে এমনও হতে পারে যে; আল্লাহ তাতে অনেক কল্যান রেখেছেন, তোমরা (স্বামীর ) তাকেই অপছন্দ করেছ।-নিসা ৪: ১৯
তবে অনুন্যপায় হলে, নারীরও তালাকের দেওয়ার অনুমতি রয়েছে:
কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশংকা করে ,তবে তারা আপোস-নিস্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোন দোষ নেই এবং আপোস নিস্পত্তিই শ্রেয়।
-নিসা ৪ : ১২৮
পুনঃ বিবাহ: কুরআনে তালাক প্রাপ্তা নারী পুনঃ বিবাহ করব কোন বাধা নেই:
আর তোমরা যখন স্ত্রীদের তালাক দাও এবং তারা তাদের আপন খুশীমত জন্য স্বামী গ্রহন করতে বাধা দিও না
- বাকারা ২ : ২৩২
৩) অর্থনৈতিক ও উত্তারাধিকার
কুর’আনে নারীর অর্থনৈতিক ও উত্তারাধিকার সম্পর্কে ঘোষণা দিয়েছে:
পুরুষ যা র্অজন তা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ।-নিসা ৪ : ৩২
পিতা মাতা এবং আত্বীয় স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে-নিসা ৪ : ৭
৪) ধর্মীয়
কুরআনে নারী পুরুষের আধ্যাতিœক মর্যাদা সর্ম্পকে বলে:
মু‘মিন হয়ে পুরুষ ওনারীর মধ্যে যে কেহ সৎকাজ করবে,তাকে আমি (আল্লাহ) অবশ্যই পবিত্র জীবনদান করবো, এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেব।- নাহল ১৬ : ৯৭
কুরআনে নারীর মার্যাদা
১) স্ত্রী হিসেবে: কুরআনে পুত্র ও কন্যার মর্যাদায় পার্থক্য করা হয়নি । যেমন বলা হয়েছে:
তিনি (আল্লাহ ) যাকে ইচ্ছা কন্যাদান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র দান করেন। অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি করে দেন বন্ধ্যা। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।-শূরা ৪২ : ৪৯-৫০
২) স্ত্রী হিসেবে: নারী পুরুষ পরিপুরক ও গভীর সম্পর্ক যুক্ত এবং সমান বলা হয়েছে :
তিনি (আল্লাহ (তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গীনীদের, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।-রুম ৩০ : ২১
তোমরা একে অপরের সমান- নিসা ৪ ২৫;
কুরআনে নারীর উপর পুরুষের কর্তৃব্য পারিবারিক খোরপোষনের দায়-দায়িত্বের কারণে। মুলত এ দায়দায়িত্ব হতে নারী মুক্ত:
পুরুষ নারীর পুরুষ নারীর কর্তা কারন, আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্টত্ব দান করেছেন এবং শ্রেষ্টত্ব এই জন্য যে, পুরুষ (স্ত্রীর জন্য) ধন সম্পদ ব্যায় করে।
-নিসা ৪ : ৩৪
৩) মাতা হিসেবে: কুরআনে বলা হয়েছে:
আমি (আল্লাহ) মানুষকে মাতা পিতার প্রতি সদ আচারণের নির্দেশ দিয়েছে।-লুকমান ৩১ : ১৪
তিনি আমাকে (ঈসাকে ) নির্দেশ দিয়েছেন .....আর আমার মাতার প্রতি অনুগত করেছেন- মরিয়ম ১৯ : ৩১
অন্যান্য
১) পাপ
কুরআনে নারীকে প্রথম বা একক পাপের জন্য দায়ী করে না বনং আদম ও হাওয়া উভয়েই প্রলুব্ধ হয়ে ভুলটি করেছিলো বলা হয়েছে:
সে (শয়তান) তাদের উভয়ের কাছে শপথ করে বলল, আমি তোমাদের হিতাকাংখীদের একজন, এইভাবে সে তাদেরকে প্রবঞ্চনা দ্বারা অধঃপতিত করল
-আরফ ৭ : ২১-২২
এবং কুরআনে আরো বলা হয়েছে উভয়ে তওবা করে ক্ষমা লাভ করেন-বাকারা ২ : ৩৭
২) ব্যাভিচার
কুরআনে সকল প্রকার ব্যাভিচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে:
প্রকাশ্য হোক অথবা গোপনে হোক, অশ্লীল কাজের কাছেও যেও না।- আয়াম ৬ : ১৫১
ব্যাভিচারকারীদের জন্য প্রকাশ্যে একশত বেত্রাঘাত করিবে-নূর ২৪ : ২
যদি তারা তওবা করে এবং নিজদেরকে সংশোধন করে নেয়, তবে তাদের রেহাই দেবে। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু-নিসা ৪ : ১৬
নারীগণের প্রতি ব্যাভিচারের মিথ্যে অপবাদকারীদের কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়ে বলা হয়েছে:
যারা সতী সাব্বী রমনীর প্রতি অপবাদ দেয এবং চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না; তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে।- নূর ২৪ : ৪
৩) নারীর সতীত্ব
কুরআনে নারীর সতীত্ব নির্ণয়ে অমূলক ‘কৌমার্যের চিহ্নের’ কোন কথা বলা হয়নি।
সূচী-অশুচী: কুরআনে নারীর সূচী-অসূচী সম্পর্কে অমানবিক কোন বিধিনিষেধ নেই। এ বিষয়ে বলা হয়েছে:
লোকে (হে মুহাম্মদ) তোমাকে রজঃস্রাব সম্বন্ধে জিজ্ঞাস করে, বল তা অসূচী। সুতরাং তোমরা রজঃস্রাবকালে স্ত্রী সঙ্গম বর্জন করবে এবং পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী সঙ্গম করবে না।- বাকারা ২ : ২২২
৪) পর্দা
কুরআনে দষ্টি, মন ও শারীরীক পর্দার হুকু দিয়েছে:
মু’মিন নারীদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে ও তাদের লজ্জা স্থানের হিফাজত করে, তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ছাড়া তাদের আবরণ প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে।-নূর ২৪ : ৩১
হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে কন্যাদেরকে ও মু’মিনা নারীদেরকে বল, তারা যে তাদের চাদরের কিছু অংশ (বাহির হবার সময়) নিজেদের উপর টেনে দেয়
- আহযাব ৩৩ : ৫৯
খ্রীষ্টান পন্ডিতগণের সুচিন্তিত রায়
‘ইসলামের আইনের আওতায় নারীর পদ মর্যাদা বর্তমানে প্রচলিত আইনের ধারণার চেয়ে অনেক বেশী।’ লেভী উইলিয়াম মিকাইন গুডজেভিচ, লা. ভি. জুবিতিক ডেস পিউপিলস সংখ, ৭ম সংস্করণ পেরিস, ১৯৩৯, পৃষ্ঠা ১৫৪
ইপগক সিরিজ ৪০
এই রচনায় সকল খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রন্থের বাক্য বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি, ঢাকা- ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত পবিত্র বাইবেল হতে উদ্ধৃত।
১. বুঝার সুবিধার্থে ( ) ব্রাকেটে অতিরিক্ত শব্দ দেওয়া হয়েছে যা মূল পাঠে নেই।
২. বুঝার সুবিধার্থে ( ) ব্রাকেটে সহজ অতিরিক্ত অনুবাদ দেওয়া হয়েছে যা মূল পাঠে নেই।
ইসলাম প্রচার ও গবেষণা কেন্দ্র
স্মৃতি নীড়, উত্তর বাহারছড়া, কক্সবাজার, বাংলাদেশ
©somewhere in net ltd.