![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[চরমোনাইয়ের মরহুম পীর এসহাক সাহেব লিখিত "ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা" বই থেকে কিছু অংশ ফেসবুকের বিজ্ঞ পাঠকদের সমীপে]
{{{{{{{{{{ পীরের মুরিদ হওয়ার উপকারিতা কি? }}}}}}}}
হযরত থানবী (রঃ) সাহেব লিখিয়াছেন, কোন এক দেশের একজন কাফন চোর ছিল। (মুর্দারের কাফন কবর থেকে নেওয়াকে কাফন চুরি বলে) ঐ দেশে একজন কামেল ওলিআল্লাহ বাস করিতেন। একদা কাফন চোর তাহার সম্মুখ দিয়া রওয়ানা করিলে হুজুর তাহাকে ডাকিয়া একশত টাকা তাহার হাতে দিলেন। চোরা জিজ্ঞাসা করিল, হুজুর ইহা কিসের? হুজুর উত্তর দিলেন বাবা তোমার অভ্যাস কাফন চুরি করা তাই আমি তোমাকে অগ্রিম একশত টাকা দিলাম এই জন্য যে, তুমি আমাকে যেন কবরে উলঙ্গ করিয়া না ফেল। কারন, তুমি যদি আমাকে কবরে উলঙ্গ করিয়া রাখ এবং ফেরেশতাগণ আমাকে এই অবস্থায় দিখিতে পায় তবে ইহা আমার সহ্য হইবে না তাই-তোমাকে এহেন কাজ হইতে বিরত থাকার জন্য নগদ একশত টাকা দিলাম। এই টাকার কথা স্বরণ করিয়া আমাকে উলঙ্গ করিবা না। চোর বলিল, হুজুর কি বলেন? অন্যদের সাথে যাহা ইচ্ছা তাহাই করি বলিয়া কি আপনার সঙ্গেও বেয়াদবি করিব? দরবেশ সাহেব বলিলেন--বাবা হুজুর (সঃ) ফরমাইয়াছেন, যদি পাহাড় এক স্থান হইতে অন্য স্থানে সরিয়া যাওয়ার কথা শুন, তবে উহা বিশ্বাস করিও, কিন্তু একটি দুষ্ট লোকের চরিত্র সংশোধনের কথা শুনিলে তাহা বিশ্বাস করিও না। তাই তোমাকে এই টাকা দিলাম, তুমি আমকে উলঙ্গ করিবা না। দরবেশ সাহেব এন্তেকাল করিলেন। রাত্রে কাফন চোরা আর ঘুমাইতেছে না। স্ত্রী কারণ জিজ্ঞাসা করিলে উত্তর করিল, দরবেশ সাহেবের কাফন না আনা পর্যন্ত আমার স্বস্তি নাই, ঐ কাপড় বেহুদা নষ্ট হইয়া যাইবে। স্ত্রী ঐ টাকার কথা স্বরণ করাইয়া দিয়া বলিলেন, এহেন কাজ থেকে বিরত থাকার জন্যই তো ঐ টাকা দিয়াছিলে, তাহার পরও আপনি ফিরিবেন না? চোরা স্ত্রীর কথা না মানিয়া খোন্তা-কোদাল নিয়া রওয়ানা হইল। অতঃপর কবর খুড়িয়া কাফন খুলিতে লাগিল। ছিনা পর্যন্ত খোলা মাত্রই দরবেশ সাহেব চোরের হাত ধরিয়া বসিলেন। গভীর অন্ধকার রাত্রে মুর্দার হাত ধরিয়া বসার ফলে ঐ ব্যক্তি ভয়ের চোটে চিৎকার মারিয়া বেহুঁশ হইয়া পড়িয়া মারা যায়। দরবেশ সাহেব ঐ রাত্রে তার এক খলীফাকে স্বপ্নযোগে বলিলেন যে, আমার কবরে শায়িত চোরকে তুমি গোসল দিয়া আমার পার্শ্বে দাফন দাও। স্বপ্নের ভিতর খলীফা সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, হুজুর! আপনি টাকা দেওয়া সত্বেও যখন চোর এই কাজ থেকে ফিরে নাই তখন তাহাকে এত সম্মান করার আবশ্যক কি? দরবেশ সাহেব বলিলেন- বাবা, আমার বড় চিন্তা হইল যে, কাফন চোরের হাত আমার হাতের সঙ্গে লাগিয়াছে, এখন কেয়ামত দিবসে ওকে ছাড়িয়া আমি কেমনে পুলছেরাত পার হইয়া যাইব?” (ভেদে মারেফাতঃ ২৭-২৮ পৃঃ)
*****বিশ্লেষন: ******
হযরত থানবী (রঃ) সাহেব এ রকম অবাস্তব, আযগুবি ও জঘন্য আকীদা সম্বলিত ঘটনা বর্ননা করবেন- এটা কি করে বিশ্বাস করি? আর যদি তা মেনেও নেই তবে এসহাক সাহেবের এই ঘটনা ঊল্লেখ করবার হেতু কী? তিনি কি অধিক সংখ্যক মুরিদ পাওয়ার জন্য তাদের আকৃষ্ট করতে এই আযগুবি কাহিনী টেনে এনেছেন? আর বর্তমান পীর সাহেব ই বা কেন এইসব গাজাখুরি কাহিনীতে ভর্তি চটি বইগুলো ভক্ত মুরিদদের পড়ার জন্য আদেশ দিচ্ছেন?
এই 'কাফন চোর'-এর ঘটনাটুকুর মাঝেই যে কতগুলো বাতিল আকীদা লুকিয়ে রয়েছে তা আমি নিজেও এতদিন ভাল করে দেখিনি। একটা বানোয়াট কথাকেও হাদীস বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে এখানে।( হুজুর (সঃ) ফরমাইয়াছেন, যদি পাহাড় এক স্থান হইতে অন্য স্থানে সরিয়া যাওয়ার কথা শুন, তবে উহা বিশ্বাস করিও, কিন্তু একটি দুষ্ট লোকের চরিত্র সংশোধনের কথা শুনিলে তাহা বিশ্বাস করিও না।) একটা মৃত মানুষ যে কাউকে ধরে ফেলতে পারে, স্বপ্ন দেখাতে পারে, স্বপ্নে কথোপকথনও করতে পারে- এতকিছু দেখার পরেও চরমোনাইর আলেম(!)রা নীরব!
পাঠক, একজন মৃত পীরের হাতে হাত লাগার দরুনই যদি এই অবস্থা হয়, তবে জীবিত পীরের হাতে হাত লাগলে কি অবস্থা হবে, চিন্তা করেছেন?
চরমোনাইয়ের মুরিদ, ভক্ত, সমর্থক যারা আছেন, আমি কি ধরে নেব যে আপনারা এই আকীদাগুলো বিশ্বাস করেন:
১. পীরের হাতে হাত পড়লেই নাজাত পাওয়া যাবে, মুরিদ যতই গোনাহগার হোক।
২. একটা মৃত মানুষ যে কাউকে ধরে ফেলতে পারে, স্বপ্ন দেখাতে পারে, স্বপ্নে কথোপকথনও করতে পারে।
৩. একজন দুষ্ট লোকের চরিত্র কখনো সংশোধিত হতে পারেনা।
আশা করি কমেন্টে আপনারা আপনাদের আকীদা স্পস্ট করবেন।
©somewhere in net ltd.