![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তাসমিয়া। সংক্ষেপে সবাই তাসমি বলে ডাকে। মানুষজন আজকাল কেমন সংক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে শহুরের মানুষ। গত সামার ভ্যাকেশনে প্রথমবারের মত আমাদের গ্রামের বাসায় গিয়ে দেখেছি, আমার সমবয়সী মেয়েরা বাসায়ও কেমন লম্বা লম্বা সালোয়ার-কামিজ পরে, আর আমি জিন্স-টি’শার্ট পরে দিব্যি শহর ঘুরে বেড়াই। ভাবি, এত গরমে ওরা ওভাবে থাকে কেমন করে! তবে একটাসময় আমাকে ওড়নাটা ঠিক পরতেই হয়; যখন আমার টিউটর, প্লাবন ভাইয়া আমাকে পড়াতে আসেন। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ও বেশকয়েকজন টিউটর আমাকে পড়িয়েছেন, তখন ওড়না পরতাম না। দশম শ্রেণিতে ওঠা মাত্র বিশেষ কতক সময়ে আমার গলায় মুখখোলা কাপড়ের এই মালাখানি পেঁচিয়ে দেওয়া হয়। বুঝলাম, বেশ বড় হয়ে গেছি!
বড় হওয়ার ব্যাপারটা আরো ক্লিয়ার হলো যখন আবিষ্কার করলাম, কারণে-অকারণে শুধু প্লাবন ভাইয়াকে মনে হয়। একবার ভাবলাম, প্রিয় বান্ধবী কণা’র সাথে ব্যাপারটা শেয়ার করি। আবার ভাবলাম, না থাক।
ভাইয়া আজ সাদা শার্ট পরে এসেছেন। চোখে মোটা লেন্সের কালো ফ্রেমের চশমা। ছেলেদের যে এমন সৌন্দর্য হয়, এমন আকর্ষণ শক্তি থাকে, আগে ত কখনো বুঝিনি! গত পাঁচ মাস যাবৎ ভাইয়া আমাকে পড়িয়ে যাচ্ছেন, কখনো আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়েছেন বলে মনে হয় না। আমি নিশ্চিত নই, রাস্তা-ঘাটে হঠাৎ আমাকে দেখলে উনি চিনতে পারবেন কি না?
কিছু কিছু বিষয় আমাকে বেশ কষ্ট দিচ্ছে। ভাইয়া যখন কলম চান, আমি দিতে গেলে এমনভাবে হাত বাড়ান যেন আমার হাতের সাথে উনার হাত ছুঁয়ে না যায়। আমি কী এতটা অচ্ছুত? আমার হাত ছুঁলে উনি অপবিত্র হয়ে যাবেন! আমি সব বুঝি, একটা বিশেষ ফোনকল আসলে আপনি মুচকি হেসে কেটে দেন অথবা চুপটি করে বলেন- আমি একটু ব্যস্ত, ট্যিউশনিতে আছি, একটু পরে ফোন দিচ্ছি। ওমা কী আবেগ!
আপনাকে কী করে বোঝায়, ওরকম বিশেষ ফোনকল ত আমারো দিতে খুব... খুব ইচ্ছে করে! আপনাকে মনে করে কী ভীষণ কান্নাটাই না করি, একান্ত গোপনে। তপ্ত দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে উপলব্ধি করি, বয়সের সাথে সাথে কান্নারও কারণ ও ধরণ দুটোই কেমন বদলে যায়!
©somewhere in net ltd.