নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমর হবার ইচ্ছা শারীরিক ভাবে অসম্ভব হলে আমি আমার লিখার মাধ্যমে সবার মাঝে বেঁচে থাকতে চাই

সাজ্জাদ_৪৯

More than 50% Sapiosexual

সাজ্জাদ_৪৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অজিত আর অনুরাধার কোয়ারেন্টাইনঃ

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

একদিন সকালে অনুরাধা হুট করে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়াতে সে উঠে কিছুক্ষনের জন্য বসে রইল খাটের এক পাশে। বাম পাশে তার বর অজিত নাক ডেকে ঘুমচ্ছে। অনুরাধার ঘুম ভেঙ্গে যাবার মুল কারন হলো অজিত এই নাক ডাকা । অজিতকে অনুরাধা খুব ভালবাসলেও অজিতের এই নাক ডাকা একেবারেই পছন্দ নয় তার।
বাঙ্গালি মেয়েরা সুন্দরী হলেও বেশ বুদ্ধিমতী ও হিংসুটে বটে। অজিত তার ঘুম ভেঙ্গেছে আর এখানে অজিত নিজেই নাক ডেকে ঘুমচ্ছে এটা তার মোটেও সহ্য হয় নি। অনুরাধা যেহেতু বাঙ্গালি মেয়ে তার মাথায় প্রচন্ড ভারী বুদ্ধি কাজ করে। সবসময় সে ভাবতে থাকে কিভাবে অজিতকে বিরক্ত করা যায়। যদিও বিরক্ত করা তাদের ছোট একটা সংসারে ভালবাসার একটা অংশ। সে কি করবে ভাবতে থাকে , কিছুক্ষন ভাবার পর সে আবিষ্কার করল কিভাবে তার বর কে বিরক্ত করা যায়। শুধু বিরক্ত করবে নাহ সে আরো কল্পনা করল তার বর কে সে কিছু বই উপহার দিবে। অজয়ের আবার বই খুব পছন্দ। তারা টানা ২০ দিন বদ্ধ ঘরে থেকে একেবারেই বিরক্ত হয়ে গিয়েছে। তারা আদৌ জানেনা আর কতদিন পর তারা আবারও মুক্ত আকশের নিচে একসাথে হাতে হাত ধরে হাটতে পারবে , বেচে থাকা যেখানে অনিশ্চিত সেখানে হাঁটতে চাওয়ার ইচ্ছা করা তোহ বিলাসিতা। এখন সে চিন্তা করল তার বর অজিতের মুখে পানি ঢেলে দেই কিন্তু তার মনে একটা কথা বার বার বাধা দিচ্ছিলো যে "পানি দিয়ে বরকে ঘুম থেকে উঠানো তোহ একটু সাধারন বিষয় হয়ে গেল নাহ? সবার মত সে কেন তার স্বামীকে ঘুম থেকে উঠাবে" , কারন অনুরাধা তোহ অনেক বুদ্ধিমতী মেয়ে। সে ভাবতে ভাবতে চিন্তা করল একটু অসুস্থতার ভান করি দেখি আমার বর আমাকে ভালবাসে কিনা। সে আবার তার স্বামীর পাশে শুয়ে "ওমাগো, ওমাগো এই অজিত আমার পেটে ব্যাথা হচ্ছে প্রচুর" বলে চিৎকার দিয়ে উঠল । বাঙালি মেয়েরা হিংসুটে হলেও বাঙালি ছেলেরা কিন্তু খুব যত্নশীল হয়। হুট করে ঘুম ভেঙে গেল অজিতের, সে উঠে বলল এই তোমার কি হয়েছে?
অনুরাধাঃ আমার প্রচন্ড পেটে ব্যাথা করছে , আমার মনে হচ্ছে আমি শ্বাস নিতে পারছি নাহ, দম বন্ধ হয়ে আসছে।
অজিতঃ কি বলো! কথা বলতে হবে নাহ তোমার আমি দেখছি কি করা যায়।
অজিত দৌড়ে গিয়ে ফোন করল তার এক ডাক্তার বন্ধুকে বলল আমার স্ত্রীর পেটে ব্যাথা শুরু হয়েছে এখন কি করা যায়? বাহিরে তোহ লকডাউন চলছে আমি কিভাবে ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব? তার বন্ধু বলল আমাকে ভাবীর সাথে কথা বলিয়ে দে, দেখি কি সমস্যা!
অনুরাধাকে ফোন দেয়ার পর অনুরাধা ফোন কেটে দিয়ে বলল ডাক্তার লাগবে নাহ, কিন্তু অজিত স্পষ্ট তার মুখে লুকায়িত মুচকি হাসি খেয়াল করছিলো। অনুরাধা যে তাকে বিরক্ত করার জন্য এসব করতেছে তা অজয় অস্পষ্ট হলেও কিছুটা বুঝতে পারছিলো। অনুরাধার দিকে অজয় একটু হাসি মুখে তাকিয়ে রইল কতক্ষন ধরে , তার বরের তাকিয়ে থাকা দেখে হুট করে হেসে দিল অনুরাধা। ভারী মিষ্টি হাসি অনুরাধার, অনুরাধার মিষ্টি হাসি দেখে অজয় তার প্রতি কোন রাগ করতে পারল নাহ। বরং কপালে হালকা একটু চুমু খেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো অজিত। অজিত কে কান্না করতে আগে কখনও দেখে নি অনুরাধা, অনুরাধা তখন বুঝতে পারল অজিত তাকে কতটা ভালবাসে। এখন তোহ অনুরাধার চোখেও হালকা জল কিন্তু তার থেকে বেশি অজিতের ভালবাসায় মুগ্ধ সে।
অজিতের প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ, অজিতকে "বই পোকা" নাম দিয়েছিলো অনুরাধা। যদিও সবার সামনে "বইপোকা" নামে ডাকা যায় নাহ তাই সবার সামনে অজিত বলেই ডাকে তার বরকে। হুমায়ুন আহমেদ এর "মিসির আলি সমগ্র" বইটি উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য কিনে এনে রেখেছিলো অনেক দিন আগে। কিন্তু সুযোগের অভাবে তার বরকে দেয়া হয়নি বইটি। অনুরাধা যেহেতু প্রচন্ড পরিমানে বুদ্ধিমতী মেয়ে তাই এই সুযোগটি আর হাতছাড়া করে নি। সে খাট থেকে উঠে গিয়ে বইটি এনে তার স্বামীকে দিয়ে বলে , "এই বইটাকে কিন্তু আমি আমার এই দোষটাকে ঢাকার জন্য দেই নি, আমাকে আবার ভুল বুঝো নাহ"। তার অর্ধাঙ্গিনীর এই কর্মকান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসছে আজয়। আর মনে মনে বলছে, " বিয়ে করে জীবন যাপন করাটা আসলেই কোন কঠিন এডভেঞ্চার থেকে কম নয়"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.