নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোলা পাতা...

সাফকাত আজিজ

বাংলাদেশের মানুষের জন্য

সাফকাত আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ থেকে ছয় বছর আগে...

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৩

কলেজের প্রথম ক্লাস। ক্লাস টিচার এক স্টুডেন্ট এর সাথে পরিচিত হচ্ছেন..



- কি নাম?

- যুগল কিশোর রায়

- আগে এই স্কুলেই ছিলে?

- মানে স্যার?

- এসএসসি কোন স্কুল?

- গ্রামের স্কুল



প্রতি বছর গ্রামের স্কুলে যারা ভালো রেজাল্ট করে তাদের কেউ কেউ আমাদের কলেজে ভর্তি হয়। এরা হয় খুবই সহজ সরল। যুগল কিশোর ছিলো তেমনই একজন। গোটা ক্লাস বেঞ্চের কোনায় চুপচাপ বসে থাকতো।



ছেলেটা একা থাকতো। কারো সাথে মিশতো না। মিশতে পারতো না। শহরে যে মেসে থাকতো সেখানের মেস মেটদের সাথেও সম্পর্ক ভালো ছিলো না।



এত চাপ সহ্য করতে না পেরে সে একদিন ঝরে পড়লো। প্রথম পর্ব পরীক্ষার কিছু আগে থেকে হঠাত তাকে আর ক্লাসে আসতে দেখলাম না। শুনলাম সে গ্রামে চলে গেছে। লেখাপড়া বাদ ! গ্রামে গিয়ে কৃষিকাজ শুরু করে দিয়েছে !



এক বছর পর..



শোনা গেলো যুগল আবার কলেজে ফিরে এসেছে! সে এখন আমাদের জুনিয়র। ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস শুরু করে দিয়েছে। টুকটাক কথা হতো দেখা হলে।



আরো একবছর পর...



আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। একদিন শুনলাম সেই যুগল কিশোর নাকি কলেজের ফার্স্ট বয় হয়ে গেছে !



তার পরের বছর..



আমাদের পরের ব্যাচের এডমিশন টেস্টের রেজাল্ট বের হয়েছে। শুনলাম কলেজ থেকে যুগল কিশোর নামের গোল্ডেন এ+ পাওয়া ছেলেটা নাকি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে গেছে!!



ছয় বছর পর, দুই দিন আগের কথা...



যুগল কিশোরের সাথে দেখা। আমার হলের সামনে। দেখেই চিনলাম। সে রাজশাহী বেড়াতে এসেছে। তাই দেখা করতে এসেছে আমার সাথে।



রাজশাহীর বিখ্যাত বেলদার পাড়ার শিক বার্গার খাওয়াতে নিয়ে গিলাম। এত দিনের কৌতুহল মেটাতে জিজ্ঞেস করে বসলাম সেই এক বছরের কথা। যেটা আমি জানি না।



- তুই কৃষিকাজ শুরু করলি। এরপর কি এমন হলো? কিভাবে ফিরে আসলি?

- আমি পড়াশুনা করবো না ঠিক করেছিলাম। পড়াশুনা ভয় পেতে শুরু করেছিলাম।

- তারপর

- একদিন আমার এক বন্ধু আমার সাথে কথা বললো। তার কথা আমি জীবনেও ভুলবো না।

- কি বলছিলো সে?

- সে বলছিলো-যুগল নিজের কথা ভুলে যা আজ থেকে। শুধু মা বাবার কথা ভাব। শুধু মা বাবার জন্য পড়াশুনা কর।



সহজ সরল একটা কথাও বদলে দিতে পারে আপনার জীবনকে। তবে সেই কথাটা খুঁজে নিতে হবে আপনাকে। তাতে বিশ্বাস করতে হবে।



যুগল তার জীবনকে বদলে দেওয়া কথা খুঁজে নিয়েছিলো তার বন্ধুর এই কথাটার মধ্যে। এরপর শুধুই মা বাবার জন্য চিন্তা। কোনোদিকে না তাকিয়ে মা বাবার জন্য পড়াশুনা...



বন্ধু একদিন অনেক বড় ডাক্তার হবে এই শুভকামনা রইলো। যুগল কিশোর হতে পারে আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।



By শাহজাহান সিরাজ

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৩

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাল লাগল, এভাবে ভাবিনি কখনো...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.