![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কোন সুপারহিরো নই|কেন না আমি মাটির তৈরি সাধারন মানুষ|
পর্বঃ ২
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে, ভর্তি পরীহ্মা দেওয়ার সময়|আবার তিশার সাথে লিলির দেখা হয়|তখন লিলি তার কিছু ছবি তিশাকে দেয়|তিশাও তার ভাইয়ার কিছু ছবি লিলিকে দেয়|পুলক যেদিন লিলির ছবি দেখে|সেদিন সে আরও অবাক হয়ে যায়|লিলি এত সুন্দর হতে পারে,এটা তার কল্পনাও ছিল না|এদিকে লিলিরও একই অবস্থা|ছবি পাওয়ার পর থেকে,লিলি সারাদিন ছবি গুলো চোখের সামনে নিয়ে থাকে|আর ভাবে কবে দেখা হবে তাদের| আর গুন গূন করে গান গাইতো| অবশ্য লিলি খুব ভাল গান গাইতে পারতো|লিলির কন্ঠ ছিল মিষ্টি প্রকৃতির|যেটা পুলকের সবচেয়ে বেশী ভাল লাগতো|লিলির কন্ঠে একটু গান শোনার জন্য,পুলক সবসময় ব্যাকুল হয়ে থাকতো|আর লিলিও গান শোনাতে খুব ভালবাসতো|পুলক কখনো গান শুনতে চাইলে,লিলি কখনো না করতো না|
লিলি ছিল, কিছুটা সহজ সরল প্রকৃতির মেয়ে|বাইরের জগৎ সর্ম্পকে তার ধারনা একটু কম ছিল|বাবা মার আদরের সন্তান হওয়ায়,সবার কাছে প্রিয় পাত্র ছিল| সে সহজ সরল ভাবে সবাইকে বিশ্বাস করতো|বাড়িতে ভাইবোনদের সাথে সবসময় দুষ্টিমীতে মেতে থাকতো |লিলির মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকতো|তার সহজ সরলতা যে, তা জীবনে একদিন ঘন অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে|লিলি কখনো এটা বুঝতে পারেনি|কোন একদিন কথার ফাঁকে লিলি তার ভালবাসার কথা, সহজসরল ভাবে তার আম্মুকে বলে দেয়|এটাও বলে যে, ছেলেটার সাথে এখনো দেখা হয়নি|তবে ছেলেটার ছবি তার কাছে আছে|পুলক সর্ম্পকে,তার মা সবকিছু জেনে নেয় এবং ছবি গুলো দেখে|
লিলিকে বলে, ছেলেটাকে অপছন্দ হওয়ার তেমন কিছু নেই|তবে তোমাকে এত দুর বিয়ে দিব না এবং ছেলেটা এখনো লেখাপড়া করছে|আমরা এতদিন অপেহ্মা করতে পারবো না|তোমার জন্য পাত্র দেখা হচ্ছে,ছেলে পছন্দ হলে, তোমাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে|এ কথা বলে ওর আম্মু চলে যায়|
সেদিন রাতে কথা বলার সময় লিলি অনেক কান্নাকাটি করে|লিলি সবকিছু পুলককে খুলে বলে ।পুলক তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে এবং বলে, তার আব্বু আম্মুকে বোঝানোর জন্য|পুলকের কথামত,লিলি সবকিছু তার আম্মুকে বোঝায়|কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়না|
হঠাৎ করে,লিলিকে না জানিয়ে, ওর বাবা মা একদিন পাত্র পহ্ম নিয়ে আসে|লিলি তাদের সামনে যায় না|পরিস্থিতি যখন আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছিল|তখন ওর আব্বু গিয়ে,ওকে বোঝায়। মা, দেখলেই তো বিয়ে হয়না|লোকজন চলে আসছে| তুমি আমদের সম্মানটুকু রহ্মা কর|
সেদিন লিলি ওর বাবার মুখের দিকে চেয়ে,পাত্র পহ্মের সামনে যায়|পাত্র পহ্ম লিলিকে পছন্দ করে ফেলে|
পাত্র ব্যাংকে চাকুরী করে, তাই লিলির বাবা মা পাত্রকে হাতছাড়া করতে চায় নি| বিয়েটা মোটামুটি,সেদিন তারা ঠিক করে ফেলে|
সেদিন রাতে,লিলির সাথে পুলকের কথা হয়|সব ঘটনা পুলককে খুলে বলে এবং কান্না করতে থাকে |লিলি, পুলককে কিছু একটা করার জন্য বলে|পুলক লিলিকে বোঝানোর চেষ্টা করে|কিছু একটা করবে বলে, আশ্বাস দিয়ে,লিলিকে শান্ত করে|
পুলকের এখনো লেখাপড়া শেষ হয়নি|
সে কি করবে,কিছু ভেবে পায় না|সব ঘটনা পুলকের ছোটবোন তিশাকে খুলে বলে|তিশা তার বাবা মার সাথে যোগাযোগ করে|ছেলের মুখের দিকে চেয়ে, পুলকের বাবা মা। লিলির বাবা মার সাথে কথা বলতে রাজি হয়ে যায়|এদিকে তিশাও লিলির আব্বু আম্মুর সাথে যোগাযোগ করে|কিন্তু,লিলির বাবা মা এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চায় না|তারা তাদের মেয়েকে যেখানে খুশি,সেখানে বিয়ে দেবে|এ বিষয় কথা বলতে তিশাকে নিষেধ করে দেয়|
লিলিকে দেখার এক সপ্তাহের মধ্যে,সেই পাত্রের সাথে লিলির বিয়ে হয়ে যায়|এর মধ্যে পুলকের সাথে লিলির আর যোগাযোগ হয়নি।
বিয়ের আগের রাতে শেষবারের মত,পুলকের সাথে লিলির বাবা মার কথা হয়|পুলক,লিলির বাবা মাকে বোঝানোর চেষ্টা করে|কিন্তু তাতে কোন লাভ হয় না|
পুলক কথা বলে যতটুকু বুঝতে পারে|লিলির বাবা মা, বিয়েতে লিলির কোন মতামত নেওয়ার চেষ্টা করে নি|লিলি আপ্রান চেষ্টা করেও তার বাবা মাকে বোঝাতে পারনি| লিলি সমাজ সংসার,পরিবার,বাবা মা র হেরে যায় |
আসলে আমাদের দেশের মেয়েরা,ইচ্ছে থাকলেও সবকিছু করতে পারে না|আজও তারা বন্দী শিকলে বাধা,চার দেয়ালের মাঝে|যেখানে তাদের ভালবাসার কোন মুল্য হয় না|
লিলির বিয়ে হয়ে যায়|হয়তো,লিলি হাসি মুখই থাকবে|
কিন্তু,তার হ্নদয়, প্রথম যে মানুষটিকে ভাল বেসেছিল|তাকে কি সে কখনো ভুলতে পারবে?
পুলকও হয়তো,তাকে ভুলতে পারবে না|
কিন্তু, জীবনতো কারও জন্য থেমে থাকে না|
শুধু,এই দুটি মানুষের হ্নদয়ের মাঝে, সারাজীবন নিভু নিভু করে যে দহন হবে।
সেটা হয়তো,কি কেউ কখনো বুঝতে পারবে না| কেউ বোঝার চেষ্টাও করবে না . . . .
©somewhere in net ltd.