![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।
ঠাকুরমার ঝুলির একটি গল্প মোটামুটি এমন যে, সাধুচরন নামে এক ব্যাক্তি গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিতেছিলেন। এমন সময় একই রাস্তা দিয়ে রাজার প্রহরীদের ধাওয়া খেয়ে এক চোর পালাতে ছিল। সাধুচরন এবং চোরের চেহারা দেখতে একই রকম হওয়াতে চোর এক দুষ্ট বুদ্ধি আঁটল। চোর সাধুচরন কে গিয়ে তার পুঁটলিটা দিয়ে বলল ভাই অনেক পথ এসেছি তো খুব তেষ্টা পেয়েছে, তুমি আমার এই পুঁটলিটা রাখ আমি দেখি কিছু পানীয় পাই কিনা। সাধুচরন সহজেই চোর কে বিশ্বাস করছিল এবং চোর এই সুযোগে পালিয়ে গেল। রাজার প্রহরী এসে সাধুচরন কে ধরে রাজার কাছে নিয়ে গেলেন এবং রাজা চুরির অপরাধে সাধুচরন কে মৃত্যু দণ্ড দেন। সাধুচরন এর পরে ভুত হয়ে ফিরে এসে একে একে চোর, প্রহরী এবং অন্যদের উপর প্রতিশোধ নেয়।
এবার আসি আমাদের অনেকেরই জানা এক কালজয়ী নাটক, মুনির চৌধুরীর অমর সৃষ্টি কবর নাটকের পটভূমিতে। যেখানে তিনি পাকিস্তানী খুনি পুলিশের গুলিতে মাতৃভাষার দাবিতে আন্দোলনরত অনেক ছাত্র এবং বাঙ্গালীকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এর স্বীকার লাশদের নিয়ে এসেছিলেন তাদের দাবী আদায়ের মিছিলে। কাফন পরেই যেখানে লাস গুলো প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেছিল।
যদি এইরকম ভাবেই যদি গত ২ মাসে নিহত ১১৫ (৬২ জন পেট্রোল বোমাতে পুরে)ব্যাক্তি এমন কিছু প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল নিয়ে দেশের দায়িত্বশীল লোকদের বাসাতে গিয়ে গভীর রাতে তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর বা স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চায়তা চান তাহলে কি করবেন তারা?
মিজানুর রহমান (নোয়াখালীর চৌমহনির বড়পল এলাকার দোকান মালিক সংঘর্ষের সময় ৭/১/২০১৫ তারিখে গুলিবদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন), রহিমা বেগম, রহিম বাদশা, জেসমিন আক্তার, তসরিন বেগম (১৫/০১/২০১৫ তারিখে পুলিশের পাহারা তে চলাচল কালিন রংপুরে দেয়া আগুনে পুড়ে মারা যান এরা সকলে মারা যান) সকলেই তাদের পুড়া বা গুলিতে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দেহ নিয়ে কবর থেকে উঠে আসলেন এসে তারা মাননীয় আইজি মোহদয় এর বাসার গেঁটের কলাপ্সিবল গেঁট ধরে ঝাঁকুনি দিতেই তার বাসার দারোয়ানরা তাদের গুলি করার ভয় দেখাল শুনে মিজানুর রহমান তার গুলির ক্ষত দেখিয়ে বলে উঠল এখানেই করেন ভাই দেখি আবার মরতে কেমন লাগে? চেঁচামেচিতে আইজি সাহেবের ঘুমা ভাংতেই তিনি দেখলেন তার কোলে ঐ একই বাসে পুড়ে আঙ্গার হয়ে যাওয়া সেই শিশুটি (যার দেহ এমন ভাবে পুড়েছিল যে কেউ তাঁকে সনাক্ত করতেই পারলো না) শুয়ে আছে আর পুড়ে আঙ্গার হওয়া কাল মুখের মধ্যে দিয়ে সাদা দাত বের করে হি হি করে হাসছে আবার কিছুক্ষণ পরেই কাঁদছে। আইজি সাহেব হন্ত দন্ত হয়ে ছেলেটিকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে যখনই নিজের পিস্তল হাতে নিবেন তখনই ছেলেটিকে কোলে নিয়ে এসে একে একে রহিমা, রহিম, জেসমিন এবং তসরিন এসে দাঁড়াল দাড়িয়ে তাদের সকলের পোড়া দেহ গুলো নিয়ে এক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। হাঁসতে হাঁসতে রহিমা বেগম বললেন আজ ৬০ বছর বয়সে আমাকে কেন পুড়ে মরতে হইল আইজি সাহেব? আপনাকে তো আমাদের ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব দিয়েই এই পদে আসীন করা হয়েছিল, তাহলে আপনি জীবিত থাকতে আমরা পুড়ে মরলাম কিভাবে আইজি সাহেব?আইজি সাহেব কোন উত্তর খুজে পাচ্ছিলেন না। আইজি সাহেবকে কিংকর্তব্যবিমুড় দেখে জেসমিন আক্তার বলল জনাব আপনার পিস্তলের গুলি নষ্ট করার দরকার নাই ওইটা সরকারী টাকাতে ক্রয় করা, আমরা আপনার কোন ক্ষতি করব না কারন আমরা সাধারণ জনগণ আপনাদের দেশের সম্পদ মনে করি তাই আপনার ক্ষতি মানে দেশেরই ক্ষতি। পাশ হতে রহিম বাদশা বলে উঠলেন কিন্তু যাদের জন্য উনারা সম্পদ সেই সকল সম্পদের মালিকদেরই পুড়ে মরতে হয় এই কথাটুকুনই আপনাকে আমরা বলতে এসেছি, আমরা চলে যাচ্ছি আপনারা শান্তিতে ঘুমান। স্ত্রীর ডাকে ঘুম হতে উঠে আইজি সাহেব দেখলেন তিনি পিস্তল হাতেই ঘুমিয়ে আছেন কিন্তু তিনি কিছুতেই মনে করতে পারলেন না পিস্তল নিয়ে তিনি কেন ঘুমাতে গেলেন?
মোঃ ইউসুফ (অবরোধ কারিদের ধাওয়াতে নিহত ৮/০১/২০১৫), মহিউদ্দিন (সংঘর্ষে ৭/০১/২০১৫ তারিখে নিহত) এবং পারভেজ মিয়া (১৫/০১/২০১৫ তারিখে গাইবান্ধাতে গাড়িতে আগুন দেখে লাফিয়ে পরে ট্রাকের নিচে পরে মারা যান) দের নেতৃত্বে একদল লোক মিছিল নিয়ে গেলেন সমাজ কল্যান মন্ত্রী মহসিন আলীর বাসাতে গেলেন। গভীর রাত মন্ত্রী মহোদয় গানের রেওয়াজ সেরে মাত্র ঘুমিয়েছিলেন এমন সময় গেঁটে হওয়া স্লোগান শুনে তিনি ধড়ফড় করে উঠলেন। দৌরে নিচে নামলেন দেখলেন গেঁটের সামনে একদল লোক রক্তমাখা কাফনের কাপড় পড়ে বিক্ষোভ করছেন। তিনি বের হয়ে বললেন কি হয়েছে তোমাদের, একজন মুক্তিযোদ্ধার বাসার সামনে এমন হইচই করতেছ কেন? মোঃ ইউসুফ বললেন আমরা তো গ্রামে শান্তিতে চারটা ডাল ভাত খেয়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম, আমাদের কেন আপনাদের এই ক্ষমতার ভাগাভাগির বলি হইতে হইল? মন্ত্রী মহোদয় বলে উঠলেন এই সকল বিরোধী জোটের কাজ আমার কাছে কেন এসেছ? সাথে সাথেই পারভেজ মিয়া বলে উঠলেন থামেন, আপনি না বলেছেন “শুট এট সাইট” তাহলে এই শুটে আমরা সাধারণ মানুষ কেন মরব? এর আমি কি জানি এমন কথা তো আরও অনেকেই বলেছেন তাদের কাছে না যাইয়া আমার কাছে কেন? বুঝেছি ঐ মিডিয়ার লোক গুলই তোমাদের আমার মত একজন দেশপ্রেমিক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে খেপিয়েছে। এই কথা শুনে ইউসুফ বললেন আমাদের জিন্দা থাকতেই কেউ কোথাও পাঠাতে পারে নাই সেখানে মরার পর কে পাঠাবে? এইকথা বলেই তারা অন্যদিকে হাটা দিল।
তথ্যমন্ত্রী জনাব ইনু সাহেবের মেজাজটি ভাল ছিল না তাই ঘুম ও ভাল হচ্ছে না। এমন এক সময় বাসার বাইরে চেচামেচি তে তার ঘুম একেবারেই ভেঙ্গে গেল। বিরক্তি নিয়েই তিনি চেঁচামেচির কারন জানতে নিচে গেলেন। গিয়ে তিনি তো অবাক এ যেন মুনির চৌধুরীর কবর নাটকের সফল মঞ্চায়ন হচ্ছে তার বাসার সামনে, কিন্তু একটা জিনিস তাঁর খটকা লাগলো তিনি চিন্তা করলেন লাশগুলো যারা সেজেছে তাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে এমন সত্যিকারের রক্ত বাহিত হচ্ছে কিভাবে? আমি কোন স্বপ্ন দেখতেছি নাতো বলেই তিনি নিজেকে চিমটি করেই উঃ করে চিৎকার দিয়ে উঠলেন। তাঁর আর্ত চিৎকারে এক গেঁটম্যান দৌড়ে এসে বললেন স্যার কি হইল? তিনি উল্টা প্রশ্ন করলেন এত হট্টগোল কীসের? গেঁটম্যান বললেন স্যার একদল লাশ এসেছে আপনার সাথে দেখা করতে। হন্তদন্ত হয়ে মন্ত্রী মহোদয় এগিয়ে এসে গেঁটের ভিতর থেকে লাশগুলোকে জিজ্ঞেস করলেন এই তোমরা কি চাও? লাশের ভীর হতে ইলিয়াস আলীর কণ্ঠ ভেসে আসল “মন্ত্রী মহোদয় আপনি বলেছেন এক সপ্তাহে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাহলে আজও কেন তা হচ্ছে না? আজও কেন আমার মতই সালাউদ্দিন ও নিখোঁজ, মন্ত্রী মহোদয় বললেন এসবের আমি কি জানি? পারভেজ মিয়া বলে উঠলেন জাতীয় দৈনিক প্রথম আল যেখানে সংবাদ করল (২৩/০১/২০১৫) জিঞ্জিরা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর হোসেন এবং একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বি এন পির জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি মোঃ কামাল পুলিশের হাতে পেট্রোল বোমা এবং ককটেল সহ ধড়া পরল এবং এমন আরও অনেক ঘটনা গণমাধ্যমে আসলেও আপনি তথ্যমন্ত্রী হয়ে শুধু বি এন পি জামাতের কর্মীদেরই সকল নাশকতার জন্য দায়ী করলেন কেন? মন্ত্রী মহোদয় এম উম এগুলো আসলে এমন কথা বলতে বলতেই ঘুম থেকে উঠে বসলেন এবং মুচকি হাসলেন যাই হক স্বপনই দেখতে ছিলাম। কিন্তু লাইট জ্বালাতেই তিনি দেখলেন তাঁর গায়ের শাদা পাঞ্জাবিটা কেন যেন রক্তের ছোপ ছোপ দাগে ভরা।
একই ভাবে মিছিল গেল জনাব রিজভি আহমেদের বাসাতে গিয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে তারা মুখরিত করে তুলল চারদিক। তারা মিছিল করতেছিল আমাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দাও আমরা বেঁচে থাকতে চাই। রিজভি সাহেব এসে বললেন স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চায়তা দেওয়ার আমি কে এই দায়িত্ব তো সরকারী দলের। মিছিলের থেকে যুবদল কর্মী মহিউদ্দিন এবং হবিগঞ্জের ছাত্রদল নেতা মতিউর সমশ্বরে বলে উঠলেন, আপনাদের এই অজ্ঞাত স্থান হতে অবরোধ হরতাল সফল করতে গিয়ে আমার মত হাজারো মহিউদ্দিন প্রান দিচ্ছি। তাদের রেখে যাওয়া পরিবার পরিজন বা আত্মীয় স্বজনদের কি কোন খোঁজ আপনারা নিয়েছেন? কেন আজ পর্যন্ত এমন আন্দোলনে আপনাদের মত বা আপনাদের চেয়ে কিছু ছোটখাট নেতাও মরল না? রিজভি সাহেব বললেন এগুলো নিয়ে আমি নেত্রির সাথে আলাপ করে ব্যাবস্থা নিব।বলেই তিনি হাত বাড়িয়ে তাঁর সাথে হ্যান্ডশেক করতে গিয়েই তাঁর গা শিউরে উঠল কারন হাতটা বরফের মত ঠাণ্ডা। ভয় পেয়ে তিনি ধড়ফড় করে উঠে বসলেন ঘুম থেকে উঠেই তিনি হাফ ছেড়ে বাঁচলেন যা হোক তাহলে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখতেছিলাম, কিন্তু একি আমার ডান হাতে এই পুরনো কালশিটে রক্ত এলো কোথা হতে?
ইম্রুল কায়েস (বাড়ি নড়াইল বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বীকার গায়ে ১৯ টি গুলি ছিল। সুত্রঃ ২০/০১/২০১৫ প্রথম আলো), জনি (গায়ে ১৬ টি গুলির চিহ্ন সুত্রঃ ২১/০১/২০১৫ প্রথম আলো) অপরিচিত ১ ও ২ (বন্ধুক যুদ্ধে নিহত সুত্রঃ ২৩/০১/২০১৫), আল আমীন (নিখোঁজ হবার ৮ দিন পড়ে ৫/০২/২০১৫ তারিখে গুলিবিদ্ধ অবস্থাতে উদ্ধার হওয়া), সাহাব উদ্দিন (কুমিল্লা বাড়ি), সাহাবুদ্দিন (রাজশাহী), সহিদুল (যশোর এবং এরা সবাই এবং ৭/০২/২০১৫ তারিখে “বন্ধুক যুদ্ধে” নিহত), যুবদল নেতা আরিফ হোসেন, রাজমিস্ত্রি পারভেজ (বন্ধুক যুদ্ধে নিহত ১৬/০২/২০১৫) ব্যাবসায়ী অদুদ ব্যাপারী, অপরিচিত ৩(২২ টি গুলি), অপরিচিত ৪ (১৯ টি গুলি) এবং অপরিচিত ৫ (১৫ টি গুলি এবং হিন্দু)[ এরা সবাই গণপিটুনিতে মারা যান সুত্রঃ ২৪/০২/২০১৫ প্রথম আলো] এরা একটি মিছিল নিয়ে র্যাবের সম্মানিত ডিজি বেনজির আহমদ সাহেবের বাসভবনের সামনে চলে গেল। এদের মধ্যে ইম্রুল, জনি, আরিফ গেঁট থেকে ডিজি সাহেবের সাথে দেখা করতে চাইলেন তাদের বুলেট বিদ্ধ দেহ হতে তখনো রক্ত ঝরছিল। ডিজি সাহেব মাত্রই অফিস থেকে ফিরেছেন চেঁচামেচিতে তিনি দৌড়ে আসলেন তাঁর রিভলভার হাতে নিয়েই জিজ্ঞেস করলেন কে এমন করছে রে? জনি এবং আরিফ হোসেন উত্তর দিলেন আমরা যারা বিচার এর আওতার বাইরে থেকেই মৃত্যু বরণ করেছি যার ফলে আমাদের অনাগত সন্তান জন্মের আগেই এতিম হয়ে গেল। আমরা আপনার কাছে এসেছি কেন আমাদের বিচারের পুরবেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হইল? বাংলাদেশের কোন আইনের আওতাতে আমরা মরলাম? বেনজির সাহেব উত্তর দিতে যাবেন এমন সময়ই পিছন থেকে রাজমিস্ত্রি পারভেজ এবং ব্যাবসয়ী অদুদ ব্যাপারী সমস্বরে বলে উঠলেন এরা নাহয় রাজ নৈতিক কর্মী বা কোন কোন মামলার আসামি কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ কেন মারা গেলাম বন্ধুক যুদ্ধে? তাদের সাথেই স্বর মিলিওএ অপরিচিত ৩ বলে উঠল আপনারা থাকতে কিভাবে আমরা ২২ টি গুলি নিয়ে গণপিটুনিতে মারা যাই? একজন মানুষকে মারতে একটা গুলি ই যথেষ্ট তাহলে জনি ভাই আমার সাথের অপরিচিত ৪ এদের গায়ে এত গুলো ফুটো করার কি দরকার ছিল? এই হিংস্রতার শেষ কোথায়? রাজমিস্ত্রি পারভেজ বলে উঠলেন গুলিবিদ্ধ জীবিত ১৫ জনের ৯ জনই অরাজনৈতিক (প্রথম আলো ১৭/০২/২০১৫), স্যার দয়া করে বলবেন আপনার “অপরাধ দমনের জন্যই সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অস্ত্র দিয়েছে “হা ডু ডু” খেলার জন্য নয়” এই কথার অনুসারে তো আমাদের জীবন রক্ষা করা বা অপরাধীকে আদালতের কাছে হস্তান্তর করাই আপনাদের আইন প্রয়োগ কারী সংস্থা গুলোর কাজ তাইনা স্যার। বেনজির সাহেব হ্যা তাই তো আমরা করছি। অদুদ সাহেব বলে উঠলেন তাহলে আমার বুকের বা পাশে একটু হাত দেন তো স্যার। অদুদের গায়ে হাত দিতেই তিনি ডেড বডির শীতল স্পর্শে এক লাফে বিছানাতে উঠে বসলেন। উঠেই তিনি খুব পানি পিপাসা বোধ করলেন, তিনি একটু পানি খেতে টেবিলে রাখা গ্লাস নিতে যেমনি বেডরুমের ফ্লোরে পা রাখলেন ওমনি তিনি দেখলেন তাঁর পা রক্তে ভিজে যাচ্ছে সারা বেডরুমে তাজা রক্ত দিয়ে ঢাকা।
শিবগঞ্জের আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে রাজন আলি, যশোরের নুরুজ্জামান সাহেব এবং তাঁর মেয়ে পুলিশ লাইন্স বিদ্যালয়ের দসম শ্রেণীর ছাত্রি মাইশা, নরসিংদীর পলাশের আসমা বেগম এবং তাঁর ছেলে শান্ত, এই নাসকতাতে নিহত ১০ শিশু, গাইবান্ধার স্কুল শিক্ষক আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে গেলেন। এদের কেউবা পুড়ে আঙ্গার হওয়া, কেউ রক্তাক্ত কাফন পরেই মিছিলে যোগদান করেছেন। কারো বাঁধাই তাদের বেগম খালেদা জিয়ার কাছে যাওয়া ঠ্যাকাতে পারলনা। মাইশা খালেদা জিয়াকে বলল, আমি তো বাংলাদেশেরই একজন নারী যে দেশের নারী হয়ে আপনি তিন তিন বার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, আমাকে কেন আমার এর চেয়ে ছোট কিছু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেয়া হইল না? আলতাফ সাহেব সাথে যুক্ত করলেন এই অবুজ শিশুদের কেন হত্যা করা হল? কেনইবা আমার মত জাতীর বিবেকরা আপনাদের ক্ষমতার লড়াইয়ের বলি হব? এমন সময় ভিড় থেকে আসমা বেগম এসে জনির ছেলে কে বেগম খালেদা জিয়ার হাতে দিয়ে বললেন পারবেন আপনি এই অবুঝ শিশুর পিতাকে ফিরিয়ে দিতে? বেগম জিয়া ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠে বললেন আমার কাছে কেন এসেছেন জনগণের নিরাপত্তা দেবার দায়িত্ব তো সরকারের। সাথে সাথেই নুরুজ্জামান সাহেব বললেন আমরা এত কিছু বুঝি না আপনারা এসব বন্ধ করেন এবং আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দেন। সাথে সাথেই রাজন আলি তাঁর পীঠের ক্ষত বের করে বেগম জিয়ার হাতদিয়ে তা ছুঁয়ে দেখাল এবং বলল রাজনীতি তো আমার বাবা করত এর বলি কেন আমি হব? হাতে এমন চটচটে রক্তের ছোঁয়াতে খালেদা জিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তিনি উঠে হাতের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন কারন তাঁর হাত থেকে তখনো ঝরছিল তাজা রক্ত।
আলতাফ সাহেব এই সকল লাশের মিছিল নিয়ে (১১৫ জন) চলে গেলেন বঙ্গ ভবনে। সেখানে তারা দেখা করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে। এবার নাম না জানা এক মেয়ে শিশু বলে উঠল আপনি আমাদের অভিবাবক, আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, দেশের ১৬ কোটি মানুষের অভিভাবক আপনি, আমারও এমন একজন অভিবাবক হবার ইচ্ছা ছিল, আপনি কি বলতে পারবেন কোন অপরাধে আমার সেই ইচ্ছা মুকুলে থাকতেই ক্ষমতার লড়াইয়ে মুখ থুবরে পড়ল? সাথে সাথেই আসমা বেগম বলে উঠলেন আপনি কি জানেন আমি কেন আমার নিজের জিবনের বিনিময়ে ও আমার ছেলে শান্ত এর জীবন বাঁচাতে পারলাম না? প্রধানমন্ত্রী বললেন আমিতো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দিয়েই রেখেছি তারা সব নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে। এই কথার সাথে সাথে এক অপরিচিত আগুনে মুখ ঝলসানো মহিলা আরিফ হোসেনের সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানটিকে প্রধান মন্ত্রির কোলে এনে দিলেন, বাচ্চাটির মুখের দিকে দেখে তিনি ডুকরে কেদে উঠলেন। এমন সময় শিক্ষক নুরুজ্জামান বললেন আপনি দেশের অভিবাবক আপনি আমাদের দয়া করে স্বাভাবিক মৃত্যুর একটু গ্যারান্টি দেন। আমরা আর বেশি কিছু চাইনা। আমরা যেন আমাদের ছেলে মেয়েদের মানুষের মত মানুষ করে স্বাভাবিক ভাবে মারা যেতে পারি, তাঁর সাথে সুর মিলিয়ে নুরুজ্জামান সাহেব ও বললেন অন্তত আমরা যেন আমাদের জীবন দিয়ে হইলেও আমাদের সন্তানদের জীবন বাঁচাতে পারি। এমন সময় মাইশা এসে প্রধানমন্ত্রীর কোলে ঢুকরে কেদে উঠল এবং প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সান্ত্বনা দিতে তাঁর পিঠে হাত বুলাতেই সব হাওয়া তে মিলিয়ে গেল। তিনি ঘুম থেকে উঠে বুঝলেন এতক্ষণ তিনি স্বপ্ন দেখতেছিলেন। কিন্তু একই তাঁর হাতে এই কালি কোথা থেকে আসল এবং রুমটার মধ্যে কেমন যেন এক মানুষের পোড়া মাংসের উৎকট গন্ধে ভোরে আছে। তিনি স্পষ্ট শুনতে পেলেন তাঁর কানে কে যেন বার বার বলছে আপনি দেশের অভিভাবক আপনি দয়া করে আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর এবং দেশে শান্তি ফিরানোর ব্যাবস্থা করুন।
বিদ্রঃ আমার এই গল্পের চরিত্রগুলো বাস্তব হলেও কাহিনীগুলো কিন্তু স্বপ্নে ঘটেছে তাই বাস্তবের সাথে মিল খুজা উচিৎ হবে না। তবে এই গল্পের মৃত মানুষগুলোর সাথে সাথে আমরাও বলতে চাই কি করলে হবে জানিনা কিন্তু আপনারা আমাদের একটি স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি সমৃদ্ধ, শান্তি সুখের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে দেন। যেখানে থাকবেনা কোন পেট্রোল বোমা থাকবেনা কোন বিচার বহির্ভূত হত্যা কাণ্ড।
গত দুই মাসে মৃত ব্যাক্তিদের সংখ্যা। পি সিঃ প্রথম আলো
২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
শেখ এম উদ্দীন বলেছেন: আল্লাহ্ এর কাছে তো সর্বদাই চাইতেছি। কিন্তু আল্লাহ ততক্ষণ কোন জাতীর ভাগ্য পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ তারা নিজেরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেন, বা করার চেষ্টা করেন।
আমরা বছরের পর বছর ধরে এই সকল অযোগ্য ব্যাক্তিদের ভোট দিয়ে আসতেছি। তাই আজকের এই অবস্থার জন্য আমরাও দায়ী।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:১৮
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারিন্টি এখন কেবল আল্লাহর কাছে চাইতে পারেন