নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বৈরাচারী মানুষের গণতান্ত্রিক সরকার কামনা যেন আষাঢ়ে গল্পের মতই শোনায়

০২ রা জুন, ২০১৫ ভোর ৬:২০

একটি জাতীর বেশীরভাগ মানুষ যেমন তাঁদের শাসনকর্তারাও তেমনি হয়। এটি আমার কথা না অনেক মনিষীই এই ব্যাপারে একমত। আমরা কথায় কথায় একটি কথা বলি সরকার স্বৈরাচারী, সরকার বাক স্বাধীনতা খর্ব করছেন ইত্যাদি। আসলে আমরা জনগণও যে কম স্বৈরাচারী নয়। বিশ্বাস হইল না এই তো! অথবা ছাকুনি দিয়ে যা নিচে পরে তাই বিশ্বাস করবেন? তাহলে একটি গল্প বলি এই গল্পটি অনেকটা স্বৈরাচার পরিমাপের লিটমাস পেপার স্বরূপ।

আক্কাস সাহেব এবং সাহাবায সাহেব একই অফিসে চাকুরী করেন। বিভিন্ন বিষয়ে আক্কাস সাহেব সাহাবায সাহেবের উপর ক্ষিপ্ত এবং নুন থেকে চুন খসলেই দুজনে ঝগড়াতে লিপ্ত হন। একদিন আক্কাস সাহেব ফেসবুকে বসে টাইমলাইন চেক করার সময় দেখলেন রাতুল নামের ওনার এক ফেসবুক বন্ধু এমন এক স্ট্যাটাস দিয়েছে যার রেফারেন্স দিয়ে সাহাবায কে ভালই ধোলাই দেয়া যাবে। তিনি রাতুলের ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্ট চেক করে দেখলেন সাহাবায ও রাতুলের ফ্রেন্ড তাই তিনি রাতুলের স্ট্যাটাস এ সাহাবাযের গায়ে লাগে এমন করে এক মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে মনের সুখে ঘুমাতে গেলেন। পরদিন অফিসে এসে বিভিন্ন কথার ছুতোতে তিনি রাতুলের স্ট্যাটাসটির ভাবার্থ সাহাবায সাহেবকে শুনীয়ে সহকর্মীদের বর্ণনা করলেন।

দুদিন পরে একটি জাতীয় দৈনিকে রাতুলের একটি কলাম বের হল। আক্কাস সাহেব এই কলাম পরে তো এতই আনন্দিত যে তা বাঁধাই করে তার ডেস্কের সামনে রেখে দিলেন। কারন এই কলামের অনেক বিষয় ই সাহাবায এর থোতা মুখ ভোতা করতে কাজে লাগবে। এর পর হইতে যেদিন ই সুযোগ পান রাতুলের স্ট্যাটাস বা তার লেখার সহায়তা নিয়ে সাহাবায সাহেবকে এক হাত দেখে নিতে লাগলেন।

সাহাবায সাহেব এক রাতে ফেসবুক এ লগ ইন করে দেখলেন রাতুলের একটি স্ট্যাটাস আক্কাস সাহেবের এই গুণাবলীকে কটাক্ষ করতে ভালই কাজে লাগবে। সাথে সাথেই তিনি ঐ স্ট্যাটাসে আক্কাস সাহেব কে কটাক্ষ করে মন্তব্য করে বসলেন। সেই মন্তব্য দেখে আক্কাস সাহেবের মনটা খারাপ হয়ে গেল। পরদিন অফিসে তিনি আর রাতুলের উদাহরণ দিয়ে কিছু বলেন না। এই সময় সাহাবায রাতুলের উদাহরণ দিয়ে আক্কাস সাহেব কে কিছু কথা শুনালেন। আক্কাস সাহেব তো পারলে রাতুলকে ধরে মারেন কেন এই লোক এমন কিছু লিখল? অথচ এই আক্কাস সাহেবই গতকাল পর্যন্ত রাতুলের অন্ধ ভক্ত ছিল।

আক্কাস সাহেবের আবার টেবিলের নিচে দিয়ে হাত পাতার খুব খ্যাতি ছিল। পরদিন পত্রিকাতে রাতুল এই বিষয়ে একটি বড় কলাম লিখল সেখানে আবার সে ধর্মীয় কিছু হাদিস কোরআনের উদ্রিতিও দিল। পত্রিকা পড়তে পড়তে এই অংশে এসে সাহাবায সাহেব একটু জোড়ে জোড়ে আরেক সহকর্মীকে পড়ে শুনাচ্ছিলেন। শুনে আক্কাস সাহেবের মেজাজ বিগড়ে গেল। উনি বলল আসলে আজ কালকের কলামিস্টরা এরা দু-কলম পড়তে শিখলেই নিজেদের খুব জ্ঞানী ভাবতে থাকে। যা মুখে বা কলমের ডগাতে আসে তাই লিখে যায়। এদের আসলে অভিজ্ঞতার বড়ই অভাব। এই সব অজ্ঞ লোকের লেখা কেন যে পত্রিকাতে ছাপায়? এই টুকুন শুনে ওনার সহকর্মী নিলাঞ্জনা বলল তাহলে এই অজ্ঞ লেখকের লেখা যে আপনার ডেস্কে বাঁধাই করে রেখেছেন সেটার কাহিনি কি? থতমত খেয়ে আক্কাস সাহেব বললেন আসলে লেখকেরা তো অনেক কিছুই লিখবে জ্ঞানী মানুষ তার মধ্য থেকে ফিল্টার করে তাঁদের দরকারি অংশ গুলো নিবে। আমি তাই করি আমি কি নির্বোধের মত সব লেখা নিয়ে কথা বলি নাকি? এই কথা শুনে নিলাঞ্জনা ম্যাডাম হেসে কুটি কুটি হলেন। এই হাসি দেখে আক্কাস সাহেবের রাগ বহু গুণে বেড়ে গেল তিনি বাঁধাই করা লেখাটা ভেঙ্গে পা দিয়ে মাড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন।

যে লেখক কিছুক্ষণ পূর্বেও আক্কাস সাহেবের শত্রুকে ঘায়েল করার প্রধান অস্ত্র ছিল সে শুধু আক্কাস সাহেবের খারাপ একটি গুন সম্পর্কে শুধরানোর জন্য লেখা এক কলামের জন্য মুহূর্তেই আক্কাস সাহেবের নিকট নর্দমার কীট হয়ে গেল। যদিও রাতুল নিজেই জানে না সে কবে আক্কাস সাহেবের হৃদয়ের মণিকোঠা তে স্থান নিয়েছিল আবার কবেই বা সে তার পায়ের নিচে পিষ্ঠ হল।

লেখকদের উদাহরণ এই জন্য দিলাম কারন তারাই সর্বপ্রথম আপনার ভিতর কার স্বৈরাচার কে চিনতে পারে। এবার বলুন আক্কাস বা সাহাবায এরা যদি নির্বাহী ক্ষমতা পেত তাহলে এরা কত বড় স্বৈরাচার হইত? এরা হয়তবা স্বৈরাচারীতে লে যে হু মু এরশাদ বা মুসলিনি কেও ছাড়িয়ে যেত। আমরা অধিকাংশ বাংলাদেশীই এই আক্কাস বা সাহাবাযের মত চরিত্রের অধিকারী। আমরা যেহেতু স্বৈরাচারী আমাদের শাসক কীভাবে স্বৈরাচারী হবে না?

ইতিপূর্বে আমি একটি কথা বলেছিলাম আর তা হল “শিয়ালের মত ধূর্ত এবং ছাগলের মত বলদ মানুষগণ কীভাবে নিজেদের নেতা হিসেবে এই দুই শ্রেণী বাদে অপর কোন ভালো মানুষকে আশা করে?” এখন সেই কথাটার সাথে সুর মিলিয়ে বলব স্বৈরাচার জনগনের শাসক স্বৈরাচার হবে না তো কি ওমর (রাঃ) এর মত ভালো শাসক হবে? কিংবা অন্য কোন ভালো শাসকের মত? সূর্য যেমন পশ্চিম দিক দিয়ে উঠে না তেমনি যত দিন আপনি আমি এই স্বৈরাচারী মনোভাব, শিয়ালের মত ধূর্ততা, ছাগলের মত আচরণ না ছাড়ব তত দিন এই শ্রেণীর মানুষদের শাসনই বহাল থাকবে। তাই সরকারকে বা রাজনৈতিকদের একছত্র দোষারোপ না করে আমাদের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ের কত টুকুন অংশ নিজেদের কাঁধে পরে তাও একটু ভেবে দেখুন জনাব।

মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের মধ্য হইতে এই সকল স্বৈরাচারী মনোভাব, শিয়ালের মত ধূর্ততা, ছাগলের মত বলদামি দূর করে দিন। এগুলো দূর করতে পারলেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এক অনুকরণীয় দেশ এবং বাংলাদেশীরা বিশ্বের বুকে অনুকরণীয় জাতী হিসেবে পরিচিতি লাভ করা সময়ের ব্যাপার হবে মাত্র। আর তা না হলে আমরা তলিয়ে কৃষ্ণ গহ্বরের ন্যায় অন্ধকারের গভীরতাতে যেখান থেকে ফিরত আশা মুশকিল নয় অসম্ভব।

বিদ্রঃ এই গল্পের আলোকে নিজের কৃত কাজ গুলো বিবেচনা করলেই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনি স্বৈরাচারী স্বার্থপর নাকি ভালো মানুষ। এই লিটমাস সকলের জন্য ফ্রি তবে একটি অনুরোধ যদি পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ হয় অর্থাৎ আপনি স্বৈরাচারী বা স্বার্থপর হণ তা হলে পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হওয়ার আগ পর্যন্ত পরীক্ষা চালিয়ে যান এবং নিজেকে একজন গনতন্ত্রমনা নিঃ স্বার্থ মানুষে পরিণত করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.