নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাযাবরের ভুবনে সবাইকে স্বাগম

পথহারা যাযাবর

পথহারা যাযাবর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট: হাজার বছর ধরে মানুষ যা খুঁজছে

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্টক মূলত একটি সিন্দুক বা বাক্স। এটি একটি প্রাচীন আমলের সিন্দুক। এই সিন্দুকটি সম্পর্কে জানার পর যারা গুপ্তধনের পিছনে আগে ছুটে বেড়িয়েছে এখন তারা এই সিন্দুকটির খোঁজে ছুটে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এখনো কেউ এই সিন্দুকটির খোঁজ পায় নি। কি এমন ধন-দৌলত আছে এই সিন্দুকে? যার কারণে মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী এটি খুঁজে বেড়াচ্ছে। এই সিন্দুকের মধ্যে কোনো ধন দৌলত নেই। ভেতরে সযত্নে রাখা আছে সৃষ্টিকর্তার ১০টি অনুশাসনের বাণী। এ নিয়ে কারো মধ্যে কোনো রহস্য নেই। কিন্তু মূল রহস্য হলো সিন্দুকটি এখন কোথায় আছে তা নিয়ে।



ইতিহাস:

বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে এই জিনিসটি সম্পর্কে মানুষ জানার পর এর অস্তিত্ব সম্পর্কে মানুষ খুঁজে বেড়িয়েছে বছরের পর বছর। ফলে তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানান রহস্যের। বলা হয় এই সিন্দুকটি ঈশ্বরের প্রেরিত একটি সিন্দুক। হাজার বছর ধরে মানুষের কাছে এটি এক অপার রহস্যের বিষয় হিসেবে আলোচিত হয়ে আসছে। হিব্রু, বাইবেল আর অন্যান্য প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে এই আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট হচ্ছে ঈশ্বরের নির্দেশে নির্মিত হয়েছে।



পেন্টাটিউক অনুসারে সিনাই পর্বতে টানা ৪০ দিন থাকার পর সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে নবী মুসা (আঃ) এই আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট নির্মাণের নির্দেশ পান। প্যালেস্টাইনে তৈরি হওয়ার কারণে আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্টকে ইসরায়েলের সৌন্দর্য নামেও অভিহিত করা হয়। পবিত্র বাইবেলে বলা হয়েছে, সিন্দুকটি ঈশ্বরের নির্দেশেই বানানো হয়েছিল।



গঠনগত বৈশিষ্ট্য:

এটি লোহার তৈরি কোনো সিন্দুক নয়। মিসরের ‘একাসিয়া’ নামক একটি পবিত্র গাছের কাঠ দিয়ে সিন্দুকটি তৈরি করা হয়েছে। কাঠ দিয়ে তৈরি করা হলেও সোনা দিয়ে সিন্দুকটি মোড়ানো হয়। সিন্দুকটি লম্বায় ১.১৫ মিটার, প্রস্থে ০.৭ মিটার আর উচ্চতায় ০.৭ মিটার। এটি বহন করার জন্য রয়েছে দুটি হাতল।



আধ্যাত্মিক ক্ষমতা:

নির্মাণের পর থেকে বহু বছর ইহুদিরা এটি তাদের কাছে সযত্নে রেখেছিল। ইহুদিরা যখন ’ল্যান্ড অব ক্যাননে’ এসে পৌছায়, তখন তাদের সেখানে আসার পথ দেখিয়েছিল এই সিন্দুকটি। বলা হয় এই সিন্দুকের কারণেই জর্ডান নদী দুই ভাগ হয়ে রাস্তা করে দিয়েছিল তাদের জন্য। মুসলমান ধর্মশাস্ত্রবিদদের মতে আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্টের ইতিহাস ইসলামের সাথে সবচেয়ে বেশী সংযুক্ত। পবিত্র আল কুরআনে এই বিষয়ে সূরা আল-বাকারাতে বর্ণনা করা হয়েছে।



মতপার্থক্য:

খুঁজে না পাওয়া এই সিন্দুকটি নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে পৃথিবীতে এই সিন্দুক একটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেলেও অন্য একটি মতানুসারে আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট তৈরি হয়েছিল মোট দুটি। এর মধ্যে একটি নির্মাণ করেন হযরত মুসা (আঃ) এবং অপরটি নির্মাণ করেন বেজালিল। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ বিভিন্ন মত প্রদর্শন করলেও সবকিছুর ঊর্ধ্বে মূল কথা একটাই যে, এটি একটি পবিত্র এবং সৌভাগ্যের প্রতীক। এতে রয়েছে স্রষ্টার অনুশাসনের বাণী। আর এই আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট যার কাছে থাকবে, সেই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী।



কিন্তু কোথায় আছে এই সিন্দুক?

এই সিন্দুকটির অস্তিত্ব নিয়ে কারো মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এই সিন্দুকটি খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কেউ খুঁজে পায় নি এই সিন্দুকটি। কোথায় আছে এই সিন্দুক? এই প্রশ্নটি সবার মনের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু কেউ এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারে নি।



কারো কারো মতে, অমূল্য এই সিন্দুকটি ব্যবিলন সভ্যতার কাছেই রয়ে গেছে। কারো মতে, রাজা সলোমন সিন্দুকটির খারাপ ভবিষ্যৎ আন্দাজ করতে পেরে নিজেই সিন্দুকটি ’ডেড সি’র কাছে কোনও একটি গুহায় সযত্নে রেখে দিয়েছিলেন। অপরদিকে লেম্বা সম্প্রদায়ের (দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে) লোকদের দাবি, তাদের পূর্বপুরুষরাই সিন্দুকটি বহন করে নিয়ে এসেছে। আর ইথিওপিয়ান খ্রিস্টানদের দাবি এই যে, সিন্দুকটি ইথিওপিয়ার মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। এরকম আরও অনেকে অনেক রকম দাবি করেছে। কিন্তু কোথাও এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি।



পাপীদের এর ধারে কাছে যাওয়া মানা:

সাম্প্রতিক সময়ে এই সিন্দুকটি সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা শোনা যায়। সিন্দুকটির নাকি প্রকৃত খোঁজও মিলেছে। কিন্তু কেউ সেভাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চায় না। শোনা যায় কোনো পাপী ব্যক্তি সিন্দুকটি স্পর্শ করতে পারবে না। এমনকি দু চোখ মেলে সিন্দুকটির দিকে তাকাতেও পারবে না। তাহলে তার যথাযথ শাস্তি সে সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে পেয়ে যাবেন। তারপরও তাবৎ দুনিয়ার মানুষ সিন্দুকটি খোঁজার কাজ অব্যাহত রেখেছেন।



তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে এসে থেমে নেই সেই প্রচার-প্রচারণা:

বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অনেকেই এই বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেবেন না। কিন্তু সেই সব তথ্য প্রযুক্তির বোদ্ধাদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে হাজার হাজার বছর পরও এ নিয়ে আগ্রহের কোনো কমতি নেই। রহস্যময় এই সিন্দুকটি নিয়ে প্রচার মাধ্যমের প্রচার প্রচারনা থেকেই বোঝা যায় এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ২০০৮ সালে ’চ্যানেল ফোর’ এ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রচার করে।বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এ নিয়ে প্রচার হয়েছে বহু তথ্যচিত্র। এই সিন্দুককে ঘিরে নির্মিত হয়েছে বহু চলচ্চিত্রও। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে-১৯৫১ সালের ’ডেভিড এন্ড বাথশিবা’, ১৯৫৬ সালের ’দ্য টেন কমান্ডমেন্টস’, ১৯৫৯ সালের ’সলোমন এন্ড শিবা’ ১৯৮৯ সালের ’ইন্ডিয়ানা জোনস এন্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড’, ২০০৮ সালের ’ইন্ডিয়ানা জোনস এন্ড দ্য কিংডম অব দ্য ক্রিস্টাল স্কাল’, ২০১০ সালের ’মেগামাইন্ড’ প্রভৃতি।





চাইলে আরও দেখতে পারেন:

* গাড়িতেই কাটিয়ে দিলেন সংসার জীবনের ১৩টি বছর

* অদ্ভুত ঘটনা: একসাথে হারিয়ে গেলো পুরো গ্রামবাসী

* অউকিগাহারা: এ যেনো এক আত্মহত্যার অভয়ারন্য

* মার্স ওয়ান: মৃত্যু নয়, তবু যে প্রকল্প না ফেরার দেশে যাওয়ার

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৮

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। পোস্টে ভালো লাগা এবং প্রিয়তে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.