![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার কাছে লেখালেখি করা দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিনতম কাজ! আর নিজের সম্পর্কে লেখা তো আরও কঠিন!! :) :) শূন্য পথিক-অবাক জোছনার সন্ধানে!
এক.
মেয়েটার নাম অস্তিত্ব। বয়স ৯ বছর। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই সে তার বাবামাকে ঝগড়া করতে দেখে আসছে। এমন দিন খুব কমই আছে তারা ঝগড়া করে না। একজন আরেক জনকে সহ্যই করতে পারে না। ছোট তুচ্ছ বিষয় নিয়েও চলে তুমুল ঝগড়া। বাবা মা যখন ঝগড়া করে তখন অস্তিত্বর খুব কষ্ট লাগে। তখন সে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে কান্না করে। তার ধারনা বাবা মা দুজন দুজনকে অপছন্দ করলেও শুধু তার কারনেই এক সাথে থাকছে। মাঝে মাঝে তার মরে যেতে ইচ্ছা করে! অস্তির এক বান্ধবী লুবনার কাছে শুনেছিল হারপিক খেলে নাকি মানুষ মারা যায়। তাই আগে যখন সে হারপিকের বোতলের দিকে তাকাত তখন তার কেমন জানি ভয় ভয় করত, কিন্তু এখন আর তার তেমন ভয় করে না!
দুই.
বাসা থেকে স্কুলটা দুরেই। গ্রামের রাস্তায় কোনো গাড়িও চলে না। মাঝে মাঝে নিরিবিলি রাস্তাতে একা একা স্কুলে যেতে আসতে সাথীর ভয় করে। সামনে তার জেএসসি পরীক্ষা। ক্লাস-কোচিং শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাস্তায় এলাকার বকাঠে ছেলেরা খুব বিরক্ত করে। ওকে দেখলেই ওরা শিস দেয়, রাস্তা আগলে দাঁড়ায়, আজেবাজে কথা বলে। সাথীর চোখে পানি চলে আসে। বাড়ি ফিরে মাকে বলে আর শুধু কাঁদে! মেয়ে হয়ে জন্ম নিয়ে সে যে পাপ করেছে, একদিন আত্মহত্যা করে তার প্রায়শ্চিত্ত করবে! আচ্ছা সে মরে গেলে কি তার মা খুব কষ্ট পাবে?
তিন.
শিপলু ঠিক করে রেখেছে একদিন সে রেললাইনে শুয়ে থাকবে, ট্রেন এসে তার উপর দিয়ে চলে যাবে! ছোট বেলায় তার বাবা-মা প্রায়ই বলতেন যে, শিপলুকে নাকি তারা হাসপাতালের বারান্দায় কুড়িয়ে পেয়েছিলেন! কথাটা শুনে সে কান্না শুরু করে দিত। তখন বাবা-মা খুব হাসাহাসি করতেন। ওর কান্না দেখে মা বলতেন যে, তারা মজা করেছেন! আশ্বস্ত হয়ে সে তখন চোখ মুছে ফেলত।
এই তো কয়েকদিন আগে ক্লাস সেভেনের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হল। সে শেষ পরীক্ষাটা না দিয়ে বন্ধুদের সাথে মাছ ধরতে গিয়েছিল। এই খবরটা তার বাবার কান পর্যন্ত পৌছুতে সময় লাগে নি। সন্ধ্যা বেলা বাসায় ফেরার পর তার বাবা তাকে বেদম পিটিয়েছিলেন। তার বাবার প্রচন্ড রাগ। রাগের সময় অনেক বকুনিও দেন। বাবার কাছে মার আর বকুনি খেতে খেতে তার অভ্যাস হয়ে গেছে! কিন্তু সমস্যা হল, সেদিন বকুনি দেওয়ার সময় তার বাবা তাকে কয়েকবার 'শালা' বলে গালি দিয়েছেন! তখন থেকেই শিপলুর ধারনা সে আসলেই তার বাবামায়ের সন্তান না! তাকে তারা সত্যি সত্যি কুঁড়িয়েই পেয়েছেন। সন্তানকে বাবা কখনই 'শালা' বলতে পারেন না। আর ঠিক সেই দিন থেকেই তার মনোজগৎ উল্টা-পাল্টা হয়ে গেল।
বিঃ দ্রঃ শেষ কাহিনীটার মত ঠিক এমন একটা ঘটনা পত্রিকায় পড়ার পর পরিচিত একজন আমার সাথে এমন কিছু শেয়ার করেছিল। আর 'কুড়িয়ে পাওয়া কাহিনী' শুনে শুনে মন খারাপ করা এমন এক পিচ্চির খাতাতে তার নিজের কিছু লেখা পড়ে খুব অবাক হয়েছিলাম! এত অল্প বয়সে তার মনোজগৎ এর কত বড় পরিবর্তন হয়েছে দেখে শিউরে উঠেছিলাম!
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০২
শূন্য পথিক বলেছেন: এমন সমস্যাতে কখনো পড়ি নি। তবে আশেপাশে অহরহ দেখে আসছি। বিজনেসের সমস্যা, চাকুরীর সমস্যা, বাইরের রাগ গুলো অনেক মানুষ পরিবারে সদস্যদের উপর দেখান। আপনাদের দুই ভাই-বোন যে সমস্যা ভোগ করেছেন, সেই একই সমস্যা ভাইয়ের সন্তানটাও ভোগ করছে। আমার মতে, যে বাবা-মা তাদের সন্তানকে বড় করার জন্য নিজেদের সামর্থের মধ্যে যোগ্য পরিবেশ দিতে পারেন না, তারা বাবা-মা হওয়ার যোগ্য নন।
২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ইহা একটি পৌণপুনিক রুপক................
যাহা আদি থেকে চলছে এবং চলবে অবিরত
হয়ত আমার ঘরে নয় কিন্তু অন্যের ঘরে
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৪
শূন্য পথিক বলেছেন: কথাটা ভালো বলেছেন। তবে একটা বয়স পর্যন্ত বাবা-মা-পরিবারের সদস্যদের এই সব পিচ্চিদের ব্যাপারে আলাদা ভাবে সতর্ক থাকা উচিৎ
ধন্যবাদ।।
৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
বয়স হিসেবে অনেক পরিণত লেখা। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫২
শূন্য পথিক বলেছেন: ভাই, এই লেখাটা পিচ্চির খাতার না। তবে এক পিচ্চি তার হোমওয়ার্ক খাতায় এমন কিছু কথা লিখে রেখেছিল যেটা পড়ার পর টিচার বাধ্য হয়ে তার বাবা-মাকে ডেকেছিল। সেখান থেকে আমি খাতাটা পড়ি। অগোছালো ভাবে দিনে দিনে লেখা। মূল ভাবটা এমন- সে খুব গরীব, তার বাবা-মা নেই, কুড়িয়ে পাওয়া ছেলে সে, বাবা-মা তাকে ভালোবাসে না, সে একদিন হারিয়ে যাবে, তার একটা বন্ধু আছে (নামটা ভুলে গেছি, তবে বাবা-মা জানালেন- সেই নামে তার কোনো বন্ধু নেই), অন্ধকার ভয় লাগে, মা মেরেছে, বাবা মেরেছে, মরে যাবো এই সব।
৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫
সুমন কর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯
শূন্য পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এরকম চিত্র হরহামেশাই দেখা যায়, মাঝে মাঝে হয়তো সংবাদমাধ্যমে চলে আসে।
বড়োদের বড় হওয়া খুব জরুরি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮
স্বপনচারিণী বলেছেন: ছোট বেলায় রেগুলার বাবা-মায়ের ঝগড়া দেখেছি। বাবা মাকে বটি নিয়ে তাড়া করতো। আমি বেশ শান্ত ছিলাম কিন্তু আমার বড় ভাই প্রায়ই মার খেত এমনকি ঘুমের মধ্যেও। আর কুত্তার বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা তো ডাল ভাত মার্কা গালি। ভীষণ অসহায় লাগতো তাই বাথরুমে গিয়ে কাঁদতাম।আজ যখন দু ভাই বোনেরই সংসার হয়েছে তখন শুনতে পেলাম ভাইও তার সন্তানকে ঘুমের মধ্যে মেরে বউয়ের উপর রাগ ঝাড়ে। তাহলে কেন আদরের সন্তানকে পৃথিবীতে আনা??