![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মূল লেখকঃ Armaan Ibn Solaiman
ছোটবেলা থেকেই তাজমহল ব্যপারটাকে আমরা ভালবাসার প্রতীক হিসেবে জেনে এসেছি,সেই সাথে সাথে সম্রাট শাহজাহান কে একজন বীর-মহান প্রেমিক হিসেবেও কল্পনা করে ভেবেছি সত্যিই,কত মহান,কত মহত একজন প্রেমিক শাহজাহান সাহেব। একটা মানুষের পক্ষে নিজ স্ত্রীকে কত্ত ভালবাসা সম্ভব।বাহ! বাহ! কিন্তু আদৌ কি তাজমহল বা শাহজাহান সাহেব এত এত নায়কোচিত পদবি গ্রহন করার যোগ্যতা রাখেন?
তাজমহল তৈরি হয়েছে সারা এশিয়া এবং ভারত থেকে আনা বিভিন্ন উপাদান সামগ্রী দিয়ে। নির্মাণ কাজের সময় ১,০০০ এরও বেশি হাতি ব্যবহার করা হয়েছিল নির্মাণ সামগ্রী বহন করে আনার জন্য।এর নির্মাণে অংশ নেয় ২০,০০০ এর মত শ্রমিক। আলো-প্রবাহী অস্বচ্ছ সাদা মার্বেল পাথর আনা হয়েছিল রাজস্থান থেকে, ইয়াশ্ব্- লাল, হলুদ বা বাদামী রঙের মধ্যম মানের পাথর আনা হয়েছেল পাঞ্জাব থেকে। চীন থেকে আনা হয়েছিল ইয়াশ্ম্- কঠিন, সাধা, সবুজ পাথর, স্ফটিক টুকরা। তিব্বত থেকে বৈদূর্য সবুজ-নীলাভ (ফিরোজা) রঙের রত্ন এবং আফগানিস্তান থেকে নীলকান্তমণি আনা হয়েছিল। নীলমণি- উজ্জ্বল নীল রত্ন এসেছিল শ্রীলঙ্কা এবং রক্তিমাভাব, খয়েরি বা সাদা রঙের মূল্যবান পাথর এসেছিল আরব থেকে। এ আটাশ ধরনের মহামূল্যবান পাথর সাদা মার্বেল পাথরেরে উপর বসানো রয়েছে।
তৎকালীন নির্মাণ খরচ অনুমান করা কঠিন ও কিছু সমস্যার কারণে তাজমহল নির্মাণে কত খরচ হয়েছিল তার হিসাবে কিছুটা হেরফের দেখা যায়। তাজমহল নির্মাণে তৎকালীন আনুমানিক ৩২ মিলিয়ন বা $১০০০০০০ ডলার রুপি খরচ হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু শ্রমিকের খরচ, নির্মাণে যে সময় লেগেছে এবং ভিন্ন অর্থনৈতিক যুগের কারণে এর মূল্য অনেক, একে অমূল্য বলা হয়।
এখন প্রশ্ন হল এই টাকাটা কোথা থেকে এল? নিশ্চয় শাহজাহান সাহেব তার নিজের বাবার পকেট থেকে অথবা টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে এই টাকাটা জোগাড় করেননি। টাকাটা সাধারন জনগণের। জনগণের রক্ত আর ঘাম ঝরানো টাকা এটা। তার বাপের সম্পত্তি না যে মন চাইল আর খরচ করলাম।
কথিত আছে,এর মুল নকশাকারকদের হাত কেটে নেওয়া হয় এবং কোন কোন ইতিহাসবিদ বলে থাকেন তাদের চোখও উপড়ে ফেলা হয় যাতে করে তারা তাজমহলের নকশা পরবর্তীতে আর নকল করা সম্ভব না হয়।
'' পাপ বাপকেও ছাড়া না '' এ কথাটির সবচাইতে সুন্দর উদাহরন সম্ভবত তার পুত্র সম্রাট আওরঙ্গজেব। শাহজাহান তার পুত্রের হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় কারাগারেই মৃত্যু বরন করেন ১৬৬৬ সালে। কথিত আছে জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি কারাগারের ছোট্ট জানালা দিয়ে নির্বাক চোখে চেয়ে থাকতেন তার অভিশাপের প্রতিক তাজমহলটির দিকে।
এত এত মানুষের অভিশাপ,এ্ত এত মানুষের অসহায় চোখের জল কিংবা দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে আছে এই মহলটির সাদা মার্বেল পাথরগুলোর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে।এটা কি করে ভালবাসার প্রতীক হতে পারে? আমার মতে ''অভিশাপের প্রতীক'' ব্যতিত অন্য কোন উপমা তাজমহলের জন্য কখনোই যথাযথ হতে পারে না।
২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১১
আরুশা বলেছেন: এত এত মানুষের অভিশাপ,এ্ত এত মানুষের অসহায় চোখের জল কিংবা দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে আছে এই মহলটির সাদা মার্বেল পাথরগুলোর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে।এটা কি করে ভালবাসার প্রতীক হতে পারে?
সহমত আপনার সাথে। +++++্
৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
এম ই জাভেদ বলেছেন: আগের যুগের সব রাজা বাদশাহ দের কাহিনী প্রায় এক এবং অভিন্ন।
জমিদারি চলেই তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায়।
ভাগ্যিস শাহজাহানের আমলে দুদক ছিলনা। থাকলে উনি ফেঁসে যেতেন স্বজনপ্রীতিতে সরকারি অর্থ অপচয়ের মামলায়।
৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯
রাখালছেলে বলেছেন: শাহজাহান আরেকটি তাজমহল বানানোর ইচ্ছা পোষন করতেন । তাজমহলের দৃষ্টিশীলতা তাকে মুগ্ধ করেছে । তিনি ভাবতেও পারেনি যে এত সুন্দর একটি জিনিস তিনি তৈরি করতে পারবেন । তাই তিনি কালো রংয়ের তাজ বানানোর জন্য কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু পুত্র আওরঙ্গজেব দেখে যে তাজমহল তৈরিতে যে খরচ এবং সময় দেয়া হয়েছে তাতে রাজ্যে হাহাকার লেগে গেছে । তারপর আবার নতুন করে আরেকটি তাজ বানানো মানে হয় চরম পরিনতি । তাই বাধ্য হয়েই আওরঙ্গজেব তার পিতাকে আটকে রাখে ।
বি:দ্র: আওরঙ্গজেব তখন ক্ষমতায় আরোহন করেছিল এবং সর্ব ক্ষমতার অধিকারী ছিল । তাই আমরা আর দ্বিতীয় তাজমহল দেখতে পেলাম।
আর যদি বলেন যে, এত এত লোক আর এত এত টাকা কেন লাগানো হয়েছিল তাহলে বলব , মুঘলরা এদেশে বহুদিন রাজত্য করেছে ।তাদের টাকা পয়সা কোন ব্যপার ছিল না । তাদের বড় সমস্যা ছিল বিশ্বাসযোগ্য লোক পাওয়া । কারন তারা বারবার নিজ লোক দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন ।তাই তারা নিজ ভাইকে খুন করত ক্ষমতায় যাবার পর । এটাই নিয়ম ছিল। তার প্রমান মির্জা হিন্দাল আর মির্জা কামরান। একজনের চোখ তুলে নেয়া আর আরেকজনকে হাতির পায়ের নীচে পিষ্ঠ করে মারা হয় তাদের কৃতকর্মের জন্য । তখন ক্ষমতায় ছিল বাদশাহ হুমায়ুন ।
৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬
ব্লগার রানা বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ সত্যি
৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: এম ই জাভেদ বলেছেন: আগের যুগের সব রাজা বাদশাহ দের কাহিনী প্রায় এক এবং অভিন্ন।
জমিদারি চলেই তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায়।
ভাগ্যিস শাহজাহানের আমলে দুদক ছিলনা। থাকলে উনি ফেঁসে যেতেন স্বজনপ্রীতিতে সরকারি অর্থ অপচয়ের মামলায়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩
আহমেদ আলিফ বলেছেন: "জনগণের রক্ত আর ঘাম ঝরানো টাকা এটা। তার বাপের সম্পত্তি না যে মন চাইল আর খরচ করলাম। "
সহমত !