![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের শীর্ষ রবি তপস্বী, ঠাকুর দেবতার সেবা-দাসী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা লন্ডনে যেয়ে আকুতি জানিয়েছেন প্রবাসীরা যেন আর মাদ্রাসায় টাকা-টুকা না পাঠায়। এর পরিবর্তে রবি ঠাকুরের তপস্বাকারীদের হাতে রেমিটেন্সের চেকগুলো তুলে দিলে ঘরে ঘরে ঠাকুরের সেবাদাস পয়দা হবে। তার পাশাপাশি দেশের কোনাকাঞ্ছিতে মুক্তমনের আদমীদের সংখ্যাও প্রশাংসাতুল্য উপায়ে বৃদ্ধি পাবে।
আমি নিজে মাদ্রাসায় পড়ি নাই, আমার চৌদ্দগুষ্টিতে আমার জেনারেশনের কেউ মাদ্রাসায় পড়ে নাই, ভবিষ্যতেও পড়ার চান্স নাই। মাদ্রাসায় পড়লে লোভনীয় চাকরি-বাকরি পাওয়া যাবে না, সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো যাবে না ইত্যাদি কারনেই সমাজের সুবিধাবাদী অংশের আমার মতো ছেলে মেয়েরা মাদ্রাসায় পড়ে না, ভবিষ্যতেও পড়বে না। এই বাস্তবতা মেনে নিতে আমার লজ্জা নাই।
তবে আমার লিবারাল এডুকেশন আমাকে শিখিয়েছে যে, একজন অতি সংকীর্ন মনের মানুষের পক্ষেই কেবল মাত্র সম্ভব ঢালাও ভাবে অন্য একটা শ্রেনীর হাজার হাজার মানুষের মন খোলা না বন্ধ সেই বিষয়ে জাজমেন্ট সমৃদ্ধ বক্তব্য দিতে পারা।
দুনিয়াতে আপাত দৃষ্টিতে কোন ফায়দা পাওয়ার ধান্দা নাই এমন বেশ কিছু লাইনের পড়াশুনা আছে। যেমন ধরেন, চায়নাতে বক্সার নামে একতা জাত ছিল। বক্সাররা হোস্টেলে থাকতো, শিক্ষকের কাছে কুং ফু শিখতো। কুং ফু মুভিতে এই বক্সারদের নিয়ে অনেক ঘটনা দেখানো হয়। এরা অন্য পড়াশুনা কতদুর কি শিখতো জানি না, তবে এদেরকে মারাত্মক ফিলোসফিকাল টিচিং দেয়া হতো। এই বক্সাররাই চীনের বিখ্যাত বক্সার রেভুলূশন করেছিল। যদিও লাখে লাখে বক্সার মারা গিয়েছিল সেই রেভুলুশনে। বেচারারা বিশ্বাস করতো যে তাদের কুং ফুর জোড়ে তারা গোলা বাড়ুদকে হারিয়ে দেবে।
ভারতের পাহারে এখনো যোগীরা ছাত্র নিয়ে বসে। এরা নানা ধরনের ব্যায়াম আর শারীরিক কসরত শিখায় ছাত্রদের।
তিব্বতের দালাই লামার আশ্রমে হাজার হাজার ছাত্ররা একসময় থাকতো। তারা জাগতিক কি পড়াশুনা করতো, আর সেই পড়াশুনা দিয়ে শাংহাই শহরে কেউ এম-বি-এ বি-বি-এর চাকরী পাইতো কিনা আমার জানা নাই। কিন্তু যতদূর জানি অয়েস্টার্ন সেকুলার মানুষজন দালাই লামার শিক্ষা নিবাস গুলোকে খুব শ্রদ্ধা করে।
থাইল্যান্ড-ভিয়েতনাম এলাকায় নানা ধরনের বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষালয় আছে। সেখানে গেরুয়া জামা পড়ে হাজারে হাজারে ছাত্র বৌদ্ধ ধর্মের দীক্ষা নেয়। এরাও এমবিএ বিবিএর পড়াশুনা করে বলে মনে হয় না।
এই বক্সার, দালাই লামা, হিন্দু যোগী, কিংবা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভাগ্য অনেক ভালো। কারন তাদের দেশ গুলোতে ছোট মনের মানুষ মনে হয় বেশি নাই। কেননা এদেরকে নিয়ে এদের দেশিয় কোন আবাল বিচার বসায় না যে এদের মন কদ্দুর কি ছোট নাকি মুক্ত।
রবি তপস্বী বন্যা দিদি তার নিজের সাথে মাদ্রাসার ছাত্রদের একটা মারাত্মক সাদৃশ্যের কথাও বেমালুম ভুলে গেছেন।
মাদ্রাসার ছেলেগুলো মনোযোগ দিয়ে তাদের রাসুলের বানী মুখস্ত করে। তাদের আল্লাহর কিতাব মুখস্ত করে। শুদ্ধ করে পাঠ করার চেষ্ঠা করে। ভোর বেলা সুরেলা গলায় একই বানী বার বার, বার বার তেলোয়াত করে। কে কার থেকে ভালো করে, শুদ্ধ করে সেই একই বানী আওড়াতে পারে তার প্রতিযোগিতা করে। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে তাদের প্রিয় রাসুল কি বলেছেন, কি করেছেন তা নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা, আর রাসুলের বিধান নিজেদের জীবনে প্রতিফলনের চেষ্ঠা করে।
সম্পুর্ন সেকুলার দৃষ্টিকোন থেকে চিন্তা করলে, রবি তপস্বী বন্যা দিদির ঠাকুর তপস্বার সাথে মাদ্রাসার ছাত্রগুলোর রাসুল নিয়ে পড়াশুনার অনেক মিল আছে। কেননা রবি তপস্বীরাও তাদের ঠাকুর দেবতার ১০০+ বছরের পুরনো গান, কবিতা, নাটক মুখস্ত করে। ভোর বেলা হারমনিয়াম নিয়ে বসে সেই একই গান বার বার বার বার চর্চা করে। কে কার থেকে ভালো করে গাইতে পারলো তার প্রতিযোগিতা করে। মাদ্রাসার ছাত্ররা যেমন সহি কুরআন তেলোয়াত করে, রবি তপস্বীরাও বিশুদ্ধ ভাবে ঠাকুর দেবতার গান গাইতে চেষ্ঠা করে। এই বিশুদ্ধতার নাম তারা দিয়েছে "রবিন্দ্র ঢং" (হ্যা, আসলেই, নিজেরাই বলে এইটা নাকি রবিন্দ্র ঢং!)।
মাদ্রাসার ছেলেরা যেমন জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে তাদের রাসুলের বানী নিয়ে ঘাটাঘাটি করে, রবি তপস্বীরাও জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে ঠাকুর কি বলেছেন, তা আউড়ায়। প্রেম, জন্ম, বিবাহ, মৃত্যুতে ঠাকুরের বানী যপে রবি তপস্বী বন্যা দিদির দল।
খালি পার্থক্য হলো, মাদ্রাসার ছেলে গুলো রবি তপস্বীদের মন ছোট নাকি মুক্ত সেই বিষয়ে কথা বলে নিজেদের মনের কদর্যতা দেখাতে পারে না। এই কদর্যতা দেখানোর সাহস রবি ঠাকুর দিয়ে গেছেন শুধু তার সেবা দাসী একদল মেধাহীন তোতা পাখিকে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:১৪
দোদূল্যমান বলেছেন: Collected from Shafquat Rabbee Anik