নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোট্ট শহরের সাধারণ ছেলে । পড়তে ভালোবাসি, নতুন কে ভালোবাসি আর ভালোবাসি জ্ঞানচর্চা ।

মোঃ মেহেদী হাসান সজীব

1 2 3 Start

মোঃ মেহেদী হাসান সজীব › বিস্তারিত পোস্টঃ

The Story of Palestine and Israel

২০ শে মে, ২০২১ রাত ১:০৫

আমাদের তখন কাঠের ফ্রেমের সাদাকালো একটা Panasonic টিভি। আমি তখন হাফ প্যান্ট পরি। বিটিভি তে রাত ৮টার সংবাদ... সেই প্রথম শুনলাম গাজা, ফিলিস্তিন, ইসরাইল নাম গুলি। খবরে দেখলাম চলছে যুদ্ধ। সেই যুদ্ধ সেই গ্যঞ্জাম আজো চলছে। রিসেন্টলি ইসরাইল ফিলিস্তিনে কি হচ্ছে সে বিষয়ে আমরা মোটামুটি সবাই জানি। কিন্তু আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যে এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ কি নিয়ে এবং কেনোই বা শত শত বছর ধরে এই দুটি দেশে লড়ে যাচ্ছে তার কারণ আমরা ৯৯%ই জানিনা। বেশিরভাগই একদিন সকালে ফেসুবুকে ঢুকে দেখলাম ফেসবুকের পেজ গুলোতে ট্রেন্ডিং রয়েছে ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধ আর ক্যাপশনে লেখা "মুসলমানের বাচ্চা হলে লাইক কমেন্ট না দিয়ে যাবেননা, আর বেশী বেশী করে আমাদের পেজটি শেয়ার করে ফিলিস্তিন কে সাপোর্ট করুণ"। কয়েকদিন পর আবার আসলো মুসলমান হলে হ্যাস ট্যাগ মেরে, লাইক কমেন্ট করে ফিলিস্তিন কে সাপোর্ট জানান।

কিন্তু আমি হুট করে ফেসবুক জিহাদে লেগে পড়িনি। আমি আগে ঘটনাটা কি জানতে চাচ্ছিলাম। হ্যাঁ... আমি অবশ্যই ফিলিস্তিনে যুদ্ধের নামে ইসরাইলের এখন পর্যন্ত ৬১টি শিশু হত্যা ১৫১ জন মানুষ হত্যা ও মানুষের জান মালের ক্ষয়ক্ষতির তীব্র নিন্দা জানাই। গতদিন টেলিভিশনে ফিলিস্তিনে একটি বাচ্চা ছেলের তার বাবার লাশের সামনে দাঁড়িয়ে কন্নার দৃশ্য দেখে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আমি মন থেকে সর্বচ্চ ভাবে চাই... এই যুদ্ধ যতো দ্রুত সম্ভব শেষ হোক এবং সবাই একটি শান্তিপূর্ণ জায়গায় আসুক...।

কিন্তু কিভাবে এই যুদ্ধ থামবে? কিভাবে এই দুই দেশ একটি শান্তিপূর্ণ জায়গায় আসবে? এই প্রশ্নের উত্তর যদি দিতে হয় তাহলে সবার আগে এই দুই দেশের ইতিহাস জানতে হবে। সবার আগে পুরো ঘটনাটা জানতে হবে...। ইহুদিরা কি চায় জানতে হবে। মুসলিমরা কি চায় জানতে হবে। সবকিছু... সব ঘটনা জানার পর হয়তো আমরা কোনো সমাধানে আসতে পারবো।

এজন্য আমি গত কয়েকদিন ধরে ইসরাইল, ফিলিস্তিনের ইতিহাস ঘাঁটছিলাম এবং চাচ্ছিলাম সবকিছু জেনে বুঝে তারপর কিছু বলতে।

কিন্তু... O......M......A আমার লাইফে আমি এতো পেচিদা ধর্মীও এবং একই সাথে পলিটিকাল বিরোধ দেখিনাই, এখন পর্যন্ত। সবকিছু জানার পর আমি প্রথমে সবকিছু যতোটা সহজ ভেবেছিলাম এবং মনে করেছিলাম যে যেকোনো একটা দেশের ঘাড়ে সব দোষ পড়বে আর সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এটা অতোটা সহজ না। এই দুই দেশের যে ইতিহাস তাতে এই দুই দেশে যুদ্ধ, খুনোখুনি হানাহানি হওয়া অনিবার্য।

তো... এখানে আমার ব্যক্তিগত মতামত কি এবং কিভাবে এই সমস্যার সমাধানে আসা যেতে পারে সেটা বলার আগে আমি এই দুই দেশের মধ্যকার ইতিহাস কি এবং কেনো এরা শত শত বছর ধরে যুদ্ধ করে আসছে তার ইতিহাস বলবো। শুরু করছি...

পার্ট-১: পৃথিবীর সবচাইতে ঘৃণিত ধর্ম
--------------------------------------------------
পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যে ধর্মের মানুষদের উপরে সবচাইতে বেশী অত্যাচার ও নির্যাতন করা হয়েছে সেটি হচ্ছে ইহুদী ধর্মের লোকজনদের উপর। মনোথিয়েস্টিক যে তিনটি সবচাইতে বড় ধর্ম আছে খ্রিষ্টান, ইসলাম এবং ইহুদী এদের কেউই একজন আরেকজন কে দেখতে পারে না। আর এর মধ্যে ইহুদীদের সংখ্যা তুলনামূলক বাকিদের চাইতে কম এবং বাকি ধর্মগুলোর দ্বারা এরা সব সময়ই অত্যাচার ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছে। মুসলিমদের ইহুদিদের ঘৃণা করার নিজস্ব কারণ আছে এবং খ্রিষ্টানদেরো আছে।

যদিও জিশু খ্রিষ্টের জন্ম ইহুদির ঘরে কিন্তু খ্রিষ্টান ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে জিশু খ্রিষ্টকে শূলে চড়ানো ও হত্যা করার পিছনে ইহুদীদের ষড়যন্ত্র ছিলো। ইহুদীরা ষড়যন্ত্র করে রোমান সম্রাটকে দিয়ে জিশু কে শুলে চড়িয়েছিলো। এই কারণে খ্রিষ্ট ধর্মের শুরু থেকেই খ্রিষ্টানরা ইহুদীদের ঘৃণা করে আসছে।

পবিত্র স্থান দখলের নামে ১০৯৫ অব্দে খ্রিষ্টানরা যে যুদ্ধে নেমেছিলো তাকে বলা হয় "ক্রুসেইড"। ক্রুসেইড এর সময় খ্রিষ্টানরা ধর্ম যুদ্ধের নামে হাজার হাজার ইহুদী হত্যা করেছিলো। সেই সময় খ্রিষ্টানরা ইহুদীদের নামে অনেক গুজব ছড়ায় এবং সেই সব গুজবের জন্যেও তাদেরকে বারংবার হত্যা করা হয়। খ্রিষ্টানরা গুজব ছড়ায় যে ইহুদীরা খ্রিষ্টান বাচ্চাদের রক্ত খায়। ইহুদিরা ধর্মিও রিচুয়ালে খ্রিষ্টানদের জবাই করে বলি দেয়।

সমগ্র ইতিহাস জুড়েই ইহুদীদের উপর বিভিন্ন ধর্মের অত্যাচার নির্যাতন চলতেই থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নির্দেশে ৬০ লক্ষ ইহুদী নির্বিচারে হত্যা করা হয়। প্রাণের ভয়ে সেই সময় ইহুদীরা বিভিন্ন দিকে পালাতে থাকে।

১৮শ সালের পর থেকে ইহুদীদের শুধু একটা আলাদা ধর্ম হিসেবেই ঘৃণা করা হতোনা এমনকি তাদেরকে একটা আলাদা জাতি হিসেবেও আলাদা করে দেওয়া হতে লাগলো। অর্থাৎ ইহুদীদেরকে আফ্রিকান, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, ইউরোপিয়ান সাদা চামড়া এরকম একটা আলাদা জাতে বিভক্ত করে দেওয়া হলো।

এভাবে চলতে থাকার পর ইহুদিরা বুঝতে পারলো যে এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে খুব শিগ্রই তারা এই পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিনহ হয়ে যাবে। ১৮শ সালের পর থেকে সমগ্র বিশ্বের ইহুদীরা বেচে থাকার জন্য শুধুমাত্র ইহুদিদের জন্য আলাদা একটা দেশের কথা চিন্তা করতে থাকে। বাইরের পৃথিবীর কোনো দেশই তাদেরকে আপন করে নেয়নি তাই বাচতে হলে তাদের নিজেদের দেশ দরকার। তারা যেখানেই গেছে সেখানেই তাদেরকে অত্যাচার, নিপীড়ন করা হয়েছে এবং বিতাড়িত করা হয়েছে। সেই চিন্তাধারার ফল সরূপ একজন আস্ট্রো-হাংগেরিয়ান ইহুদী সাংবাদিক.... নাম "থিয়েডোর হার্জেল" ১৮৯৬ সালে একটি রাজনৈতিক মুভমেন্ট শুরু করেন যার নাম জৈইনইজম। থিয়েডর বলেন যে ইহুদীদের এভাবে একদেশ থেকে আরেক দেশে যাযাবরের মতো ঘুরে না বেড়িয়ে তাদের একটি আলাদা দেশ বা মাদারল্যান্ড থাকা উচিৎ সেখানে সকল ইহুদীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করবে। থিয়েডর ইহুদীদের জন্য একটি আলাদা দেশ নিয়ে এতোটাই উদ্বেগ ছিলেন যে তিনি ইহুদীদের জন্য আলাদা দেশ হিসেবে আফ্রিকাকেও চিন্তা করেছিলেন। তিনি প্রয়োজন হলে ইহুদীদের নিয়ে আফ্রিকার জঙ্গলেও বসতি শুরু করতে রাজি ছিলেন। কিন্তু... তার এই আইডিয়া তার জীবনকালে ফলপ্রসূ হয়নি এবং ইহুদী বসতি দেখার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। যদিও... থিয়েডর সর্বপ্রথম ব্যাক্তি ছিলেন না যিনি ইহুদী রাষ্ট্রের কথা চিন্তা করছিলেন। তার আগেও অনেক ইহুদী সংগঠন আলাদা ইহুদী রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা নিয়ে কাজ করছিলেন। এজন্যই ১৮৮১ সাল থেকেই ইহুদীরা বিভিন্ন দেশ ছেড়ে ফিলিস্তিনের দিকে চলে আসতে থাকেন।

প্রশ্ন আসে ফিলিস্তিন কেনো?
থিয়েডর আলাদা রাষ্ট্রের খোজে আফ্রিকা যেতেও রাজি ছিলো। কিন্তু ইহুদীরা এমন একটি এলাকায় যেতে চাচ্ছিলো যে এলাকার সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক আছে। আর... ফিলিস্তিনের জেরুজালেম ছিলো ইহুদীদের জন্য পৃথিবীর সবচাইতে পবিত্র স্থান। তাদের বিশ্বাস, জেরুজালেমের সাথে তাদের নাড়ির সম্পর্ক। এজন্যই তারা ঝাঁকে ঝাঁকে ফিলিস্তিনের এসে বসতি শুরু করে। সেই সময় ইসরাইল বলে কোনো দেশ ছিলো না। ইসরাইল, গাজা, ওয়েস্ট ব্যাংক পুরোটাই ছিলো একটাই দেশ... ফিলিস্তিন।

ফিলিস্তিনে সেই সময় অটোমান সাম্রাজ্য চলছিলো। ফিলিস্তিনে তখন অটোমান সাম্রাজ্যের আন্ডারে খ্রিষ্টান, মুসলিম, ইহুদী এই ৩ ধর্মের মানুষই শান্তিপূর্ণ ভাবে একসাথে বসবাস করছিলো। আর ওদিকে... মাইগ্রেট হয়ে আসা ইহুদীদের আসার ফলেও তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছিলো না কারণ ফিলিস্তিনের তখন মোট জনসংখ্যা খুবই কম ছিলো এবং ফিলিস্তিনের অধিকাংশ জমি মালিকানাহীন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলো। ইহুদীরা এসে ফ্রি ফ্রি সেই জমি গুলোতে থাকতে শুরু করে অথবা খুবই সামান্য অর্থের বিনিময়ে তারা জমি গুলোর মালিকানা পেয়ে যায়।

আর... এভাবেই ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি বাড়তে শুরু কর।।

To be continued.....

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মে, ২০২১ রাত ১:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:




যীশুর ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যার আদেশ কি রোমান সম্রাট থেকে এসেছিলো?

২| ২০ শে মে, ২০২১ রাত ১:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:



যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যার আদেশ কি রোমান সম্রাট থেকে এসেছিলো?

৩| ২০ শে মে, ২০২১ রাত ২:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি কোথায় গেলেন, রোমান সম্রাট আপনার পেছনে লাগলো নাকি?

৪| ২০ শে মে, ২০২১ রাত ৩:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে- আগে প্যালেসটাইন ধ্বংস হবে। তারপর হামাস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.