নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুরে এলাম চেগুয়াভারের স্বপ্ন সফল কিউবায় পর্ব: তিন

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:৫৬

আজ সকালে উঠে আমরা ভেরেডেরো শহরে যাওয়ার জন্য বেরুলাম। শহরে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ডাবলডেকার। পাঁচ পেসোর একটা টিকেট কিনে নিলে সারাদিন বারবার উঠা নামা করে ঘুরাফেরা যায়। যে কোন স্টেশনে নেমে কাজ সেরে আবার গাড়িতে চড়ে বসলেই হলো। লাল এবং নীল রঙের দুই কোম্পানির গাড়ি চলছে ভেরেডেরো শহরের শেষ সীমানা থেকে রিসোর্ট এলাকা পর্যন্ত। লাল নীলের কোন অসুবিধা নাই যে কোনটায় চড়া যাবে।
সকাল দশটা নাগাদ আমরা হেঁটে আমাদের হোটেলের কাছে গাড়ির শেষ আস্তানায় হাজির হলাম। মিনিট পাঁচের মধ্যেই গাড়ি নড়ে চড়ে উঠল। গাড়ির ভিতরই টিকেট কাউন্টার। একজন মহিলা টিকেট বিক্রি করছে। আমরা টিকেট কিনে উপর তলায় গিয়ে বসলাম। ছাদ খোলা দোতলা গাড়ি চলার সাথে সাথে সমুদ্র বাতাসের মধুর পরসে শরীর জুড়াতে লাগল। আকাশ আজও ভয়ানক উজ্জ্বল। রোদ ঝলমল করছে চারপাশ। গরম উত্তাপ সহনীয়। কোন শীত বস্ত্রের প্রয়োজন নাই। প্রয়োজন নাই ভারি শীত কাপড়েরও কিন্তু সময়টা শীতকাল। ছয় ঋতুর দেশ থেকে চার ঋতুর দেশে জীবন যাপন শুরু হলো আর এবার হাজির হলাম দুই ঋতুর দেশে। কিউবাতে শীত এবং গ্রীষ্ম এই দুই ঋতু। শীতে যদি এমন গরম অবস্থা গ্রীষ্মে কেমন থাকে তাহলে? এর চেয়ে চার ছয় ডিগ্রি বেশী হয়। বাহ কি মজার দেশ। মোটামুটি সারা বছর ধরে একই রকম থাকে উত্তপ তবে। শীতে পাতা ঝরে যায় সাধারনত গাছের। কিন্তু আমি দেখছি চারপাশ সবুজে সবুজ শুধু নয় নানা রকম ফুলের সমারোহে ভরপুর গাছগুলো। থোকা থোকা লাল, হলুদ এবং আরো নানা রঙের সমাহার গাছে গাছে। তথ্য শুনে, ভালো করে লক্ষ করে দেখলাম হঠাৎ কিছু পাতা ন্যাড়া গাছ দাঁড়িয়ে আছে কোথও কোথাও। এ বছর আর সব জায়গার মতনই গ্লোবাল ওর্য়ামিং এর প্রভাবে শীতের প্রকোপ কম জানা গেলো।
রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা হঠাৎ দুচারটা ট্যাক্সির দেখা মেলে। আর বড় এই ডাবল ডেকারগুলো। অনেকে গাড়ি ভাড়া করেছে হোটেলের পার্কিং এ সাজানো দেখি বিভিন্ন রকম গাড়ি। বেশীর ভাগ আধুনা টয়োটা, হুন্ডাই মূলতো এশিয়ায় বানানো গাড়ি তবে পুরানো আমেরিকার গাড়ি ওল্ডসমোবাইল, ক্যাডিলাক, স্যাভি, জীপ বিভিন্ন রকম এবং রাশান গাড়ি যাদের বয়স হয়েছে ৬০/৭০ এর বেশী এমন ক্ল্যাসিক গাড়ি কিউবার জীবনের সাথে বেশ একটা সম্পর্ক স্থাপন করে আছে। পুরানো গাড়ি ঠিকঠাক মতন চলছে। দেখতেও ভাড়ি ভালোলাগছে। অন্য রকম একটা আবহো। কিউবান চিত্র শিল্পীর আঁকারও বিশেষ একটা বিষয় এই পুরানো গাড়ি গুলি। বাস্তবে রাস্তার চেহারা ভিন্ন দেখাচ্ছে অন্য দেশের চেয়ে। এই বৈচিত্র ভালোলাগল আমার।



ডাবল ডেকারের খোলাছাদ দোতালার গাড়িতে বসে সমুদ্রের উত্তাল বাতাস আর সূর্যের বন্যায় স্নান করতে করতে প্রথমদিনের আলোয় পুরো এলাকা দেখার সৌভাগ্য হলো। মশৃন রাস্তা আসা যাওয়ার জন্য আলাদা। এই রাস্তা পুরো কিউবা জুড়ে তৈরী করা হয় স্বৈরাচারি বাতিস্তা সরকারের পতনের পর। চের রাষ্ট্র উন্নয়নের পরিকল্পনা অনুয়ায়ী। সবুজের সমারোহ অনেকদিন পর মন ভরিয়ে দিল। আমাদের দেশে যেখান থেকে এলাম সেখানে তো এখন খটখটে ন্যাড়া গাছের সারি। এবছর যদিও বরফের আস্তর পরেনি ধরনী জুড়ে। তবু শীত বড় অন্যরকম চিত্র দেখা যায়। প্রাণহীন মনে হয় পাতা ছাড়া গাছ দেখে।
ভেরেডেরো সিটিতে যাওয়ার পথে অনেকগুলো হোটেলে গাড়ি থামল। কেউ উঠল, কেউ নামল। প্রতিটি হোটেল ভিন্নমাত্রার সাজসজ্জায় নিজস্ব বৈশিষ্ঠ নিয়ে অনেক সুন্দর। কোথাও দেখলাম গাছের সমারোহ। কোথাও দালানের বৈচিত্র। কোনটায় কিউবান পামপাতার ছাউনি দিয়ে ছাদ নিয়ে আদি অকৃত্তিম স্বকিয়তা বজায় রেখেছে। পাঁচতারা থেকে তিন তারা মানের মধ্যে সবগুলো হোটেল। ভেরেডেরো শহরের পঞ্চান্নটি হোটেল আছে। কাজেই সবার বৈচিত্রময় বিবরণ দেয়া সম্ভব না। দেখাও হয়নি সব। ভেরেডেরো হোটেল শহর।



একটা মল আছে নাম এ্যামেরিকানো এটা সবচেয়ে বড় মল। এবং আধুনিক সব কিছুই এখানে পাওয়া যায়। মানুষ জনের বেশ আগ্রহ দেখলাম এই মলের প্রতি। তবে আমাদের কারোরই মলে যাওয়ার ইচ্ছা হলো না।


পথে একটি ঘন গাছে ছাওয়া জায়গায় গাড়ি থামল। একটু দূরে দেখলাম একটা গেইট। ওখানে পাখি পর্যবেক্ষক এবং কিউবান গাছগাছালি দেখতে যাওয়ার জন্য উৎকৃষ্ট জায়গা তৈরী করে রাখা হয়েছে। ঐতিহাসিক ছোটখাট একটি মিউজিয়ামও আছে গহীণ অরণ্য মাঝে। একজন বয়স্ক সাদা মহিলা একাকী সেই অরণ্যে হারাতে নেমে গেলেন আমাদের বাস থেকে। যেতে যেতে চোখ পরল একটি উঁচু জায়গায় গোল একটি ইমারত দাঁড়িয়ে আছে। পরে জেনেছি ওটা দূর্গ ছিল। আসে পাশে অনেকটা জুড়ে প্রচীন দালানকোঠাও ছিল। কিন্তু রেভুল্যেসনের পরপর সময়ে অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে কিউবা দখল করে নেয়ার। বোমা ফেলে ধ্ংস করে দেয়া হয়েছে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দেয়ার জন্য।
চিনি একটি বড় আয়ের উৎস কিউবায়। অনেক চিনির কারখানা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে সে সময়। একটি দেশকে অন্যদেশের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির কত রকমের খেসারত যে দিতে হয়!
আমরা কোথাও না নেমে শহরে চলে এলাম। শহর ভাগ করা আছে রাস্তাগুলো এক থেকে ত্রিশ পয়ত্রিশ এমন রাস্তার নামদিয়ে। গাইড আমাদের বলে দিয়েছিল ভালো খাবারের দোকান বা দেখার জায়গা গুলো কোন কোন নাম্বারে ।
আমরা ১৫ নাম্বারে মেনে গেলাম। ভেরেডেরোর রিসোর্ট এলাকার শান্ত পরিবেশ থেকে এখনে অনেকটা ব্যস্ত। এবং লোকের দেখা পাওয়া গেলো। স্থাানী লোকজন এবং তাদের ঘরবাড়ি আসেপাশে। সাধারন ঘরবাড়ি যেখানে আছি তেমন না। গাড়ি থেকে নেমে ফুটপাতে দাঁড়তেই দেখলাম একপাশে খোলা আঙ্গিনার মতন জায়গা। পাথরের বাঁধানো জায়গা। আর বহুদিন পর ছোটবেলায় আমাদের পুকুর পারে দেখা টিকটিকির বড় ভাইয়ের মতন প্রাণিটির সাথে স্বাক্ষাত হলো। আমাদের সাড়া পেয়ে ঘাসের আড়াল থেকে লাফ দিয়ে যেয়ে পাথরের উপর বসল। রঙিন লিজ্যার্ড।

সেখান থেকে উল্টা পাশে। পামপাতার ছাওনি দেয়া ছোট ছোট ঘরের কুটির শিল্পীর বাজার। অনেকটা আমাদের দেশের গ্রামের বাঁশের ঘরের মতন পাশাপাশি দোকান সাজানো। প্রতিটি দোকানে বিভিন্ন রকম হাতে তৈরী জিনিস। পরিচ্ছন্ন ছিমছাম পরিবেশ। একটা জিনিস ভালোলাগল কোথাও ছেঁড়া কাগজ, ময়লার স্তুপ নাই।

অনেক অনেক চে গুয়েভারার ছবি আঁকা ক্যানভাস। চাবির রিং, টি সার্ট, র্সাট, জুতা, ছাতা, চে সব জায়গায়। দারুণ মুখ ভঙ্গিমার অনেক নতুন ধরনের ছবি দেখলাম চের। লোকটার চেহারায় অদ্ভুত একটা মায়া আছে তার হৃদয়ের মতন, উপলব্ধী করলাম নতুন করে, বিভিন্ন ভঙ্গিমার ছবিগুলো দেখে।
অলংকার হাতে গড়া পুতি, কাঠ, বেত, সুতা থেকে পাথর এবং মুক্তার। সাগর সেচা মুক্তা ওরা অনেক সহজে পায়। বড় বড় ঝিনুকের মাঝে মুক্তা লেগে আছে কয়েকটা। একটা ঝিনুকে যে অনেকগুলো মুক্তো হয় আমার জানা ছিল না। তার এবং কাঠ দিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর সোপিস তৈরী করে ওরা। একটা মজার বিষয় হলো কোক স্প্রাইটের টিনের তৈরি জিনিস। হ্যাট থেকে গাড়ি পুতুল টেবিল ম্যাট। অলংকার যাবতিয় সব। এবং খুবই সুন্দর দেখতে সব। কাঠের কারুকার্যময় পুতুল, খুদাই করা ভাস্কর্য। নানা বৈচিত্রের সমাহার। মাছ এবং গরুর হাড়ের তৈরী জিনিস। তার মধ্যে আমার খুব পছন্দ হলো একটি লাঠি। অসম্ভব সুন্দর কাজ করা। তবে এখনই লাঠি হাতে হাঁটতে চাইনা বলে নিলাম না। রাঙ্গামাটিতে বহুবছর আগে এমন কারুকার্যময় হাতির দাঁতের জিনিস দেখেছিলাম। তবে অসম্ভব দামী ছিল। একটা ছোট্ট জাপানী হাতপাখার দামছিল দশ হাজার টাকা সে আমলে এখন নিশ্চই কয়েক লাখ হবে। তবে এখানে সে তুলনায় দাম কম মনে হলো।
চামড়ার তৈরী খাটি জিনিসও দেখলাম অনেক স্যান্ডেল, ব্যাল্ট হ্যাট. ওয়াল ম্যাট কিউবার ছবি আঁকা। একরকম তারপরও ভিন্নতা আছে মনে হলো প্রতিটি দোকানের জিনিসপত্র দেখে। আর কাপড় সেতো আছেই হাতে বোনা কুরশি কাটার কাজের ফ্রক, ড্রেস খুব জনপ্রিয় মনে হলো বিদেশীদের কাছে। তবে কাপড়ের কোয়ালিটে খুব ভালো। নট মেইড ইন চাইনিজ।

এছাড়া হাভানা চুরুট যা কিউবার বিখ্যাত। তবে লোকজন খুব একটা টানে বলে মনে হয় না এখন। হঠাৎ কখনো দু একজনকে চুরট মুখে যেতে দেখলাম। মিষ্টি একটা গন্ধ আমাকেও বেশ আকৃষ্ট করল। ইচ্ছে হলো টেনে দেখি। সিগারেট বা বিড়ির গন্ধে যেমন বিরক্ত হয়ে যাই তেমন লাগল না। চুরুট মুখে মানুষ দেখলে আমার ছোটবেলায় দেখা বাবার এক বন্ধুর কথা মনে পরে যায়। স্কিনের বিখ্যাত ডাক্তার ছিলেন তিনি। কিন্তু তার মুখে সারাক্ষণ একটা চুরুট লেগে থাকত। চুরুট ছাড়া উনার মুখ মনে করতে পারি না।
বেশ খানিক সময় ঘুরে ফিরে আমাদের ক্ষিদা লেগে গেলো। খাবারের দোকানের খোঁজে বেশ খানিক হাটা হাটি করতে হলো। প্রথমে খুব চালু একটা দোকানে ঢুকে পরলাম। ভীষণ ব্যস্ত, বসার জায়গা নাই এবং ফাস্টফুডের দোকান। আমরা কিউবান অন্যরকম খাবারের স্বাদ নেয়ার জন্য ওখানে অপেক্ষা না করে অন্য জায়গয় এলাম। খুব সুন্দর পরিপাটি এবং বড়সর একটা দোকানে ঢুকে পরলাম অনেকখন ঘোরাফেরার পর।

বেশ শান্তিতে খাবার খেলাম। ভালো এবং সস্তা। অনেক কিছু মিলে খেয়ে দেয়ে টিপস সহ খরচ পরল বিশ পেসো। তিনজনের জন্য। তবে খাবার সার্ভ করতে অনেক বেশী সময় নিল। সেই সময় নিজেরা গল্পে কাটালেও ইচ্ছে হচ্ছিল তাড়াতাড়ি খেয়ে আরো একটু ঘোরাফেরা করি বাইরে গিয়ে, সে সময়টা নষ্ট হচ্ছিল। বিশাল রেস্তোরায় শুধু আমরা বসে আছি। আর ওরা খাবার দিতে এত দেরী করছে দেখে অনেক হাসাহাসি করছিলাম ওদের মন্থর চলাচলের জন্য। পরে দেখলাম ওদের প্যাটিওতে ছাদে বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো অনেক লোক। আমাদের বাইরে বসব কিনা জানতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা ঘরে বসাই পছন্দ করেছিলাম বাইরের পোকা মাছি, রোদের আলোয় বসে খাবার খাওয়ার চেয়ে।অবশ্য একটা দুটো মাছি মসা ছাড়া অগনিত ভনভন অবস্থায় পরতে হয়নি।
খেয়ে দেয়ে বেড়িয়ে আমরা ঘুরতে ঘুরতে একটা জায়গা পেয়ে গেলাম ওটা চে ম্যামরিয়াল। আমি খুঁজছিলাম চে'র স্ট্যাচুর সাথে কিছু ছবি তুলতে। কিন্তু সেরকম স্ট্যাচু এই শহরে নাই।

লম্বা একটা রাস্তা পূর্ব পশ্চিমে চলে গেছে। তাকে কেটেছে ছোট ছোট নাম্বার দেয়া রাস্তা। পনেরো থেকে আমরা পঁচিশের কাছে চলে এলাম। বড় একটা মার্কেটের ভিতর দিয়ে ঢুকে পেছনে হেঁটে চলে গেলাম একটা পার্কে সেখান থেকে সমুদ্র পাড়ে। বিকালের মনোরম আলোয় ঝলমল করছে দিগন্ত বিস্তুৃত নীল জল। অনেক পর্যটক। এখানের বালুতট মনে হলো অনেক বেশী মশৃণ মাখনের মতন। পানি এবং সমুদ্রের আহ্বান কিযে মায়ায় আমাকে টানে। একটু একটু করে জলের মাঝে নামতে লাগলাম। যদিও জানি কাপড় সাথে নেই ভিজা যাবে না। তাও অনেকটাই নেমে গেলাম জলে, ঢেউ এসে অনেকটাই ভিজিয়ে দিল। সূর্যাস্ত দেখে সন্ধ্যাবেলা আমরা ফেরার জন্য পা বাড়ালাম। ডাবলডেকার শেষ চলবে রাত আটটায়। সাড়ে সাতটায় আমরা স্টপে অপেক্ষা করতে লাগলাম। যদি শেষ বাস মিস করি তা হলে ট্যাকিসি করে ফিরতে হবে। অনেকগুলো পেসো গুনে। তাও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। এখানে লোকজন বড় আরামে আয়েশে তাগিদ বিহীন ধীর স্থির চলাফেরা করে। আর বড় আনন্দ করে। ক্ষণে ক্ষণে এখানে ওখানে দেখতে পাচ্ছি স্প্যানিস সঙ্গীতের উচ্ছলতা সাথে দূরন্ত নাচ। এরা খুব জমানো আড্ডাবাজ।



অপেক্ষার সময়টা একটু বেশী মনে হচ্ছিল। ধীরে ধীরে রাস্তা দোকানপাটের ব্যস্ততা কমছিল। রাস্তায় চলা ঘোড়ার গাড়ি গুলিও কমে যাচ্ছিল। এ সময় গাড়ি আসল। যথারীতি আমরা খোলাছাদে বসলাম আকাশের তারাদের সাথী করে। লবন বাতাসের ঝাপটায় শরীর কেমন আদ্রো এবং আঠালো মনে হচ্ছিল। কিন্তু এই ওজনের হাওয়াটা দারুণ স্বাস্থকর। এই হাওয়ার ভিতর দিয়ে যখনই ঘুরে আসি আমি যেন জীবন সঞ্জিবনী সুধা পান করে আসি। অনেকদিন বেশ সুস্থ সতেজ অনুভবে থাকি। ইচ্ছে করে যদি বরাবর এমন হাওয়ার ঘরে বাস করতে পারতাম। দ্বীপটা ধূয়ে মুছে পরিস্কার করছে সারাক্ষণ চারপাশের সমুদ্র বাতাস। ঘরে ফিরে শরীর মনে হলো আরো বেশী মশৃন মোলায়েম হয়ে গেছে। আর হোটেলের সুমিংপুল এরিয়ায় বারবিকিউ খানা পিনা আর উন্মাতাল নৃত্য গীতের আসর বসেছে জমজমাট মধ্যরাত পর্যন্ত। প্রকৃতির আলো নিভে গেছে কিন্তু নানারঙের আলোর খেলার বিরাম নেই মন চাঙ্গা রাখার। আপনমনে গানের সুরে দুলুনী উঠছে শরীরে মনে। মন খারাপ করে বসে থাকার কোন অবস্থা নেই, সুযোগ নেই ক্লান্ত হওয়ার। বেড়াতে এসেছো ফূর্তি করো আনন্দে থেকো। এমন ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে পর্যটকের জন্য।
চলবে.........

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:১৫

বীরেনদ্র বলেছেন: I guess you should mention CUC in place of Peso. National Peso and CUC have gulf of difference. When I visited there 1 US dollar was about 85 cents in CUC. Next the open hood doble deckers are of two colours blue and red not green.

However I appreciate your writing skill. It is a good read. Thank you.

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: পেসো বলতে ভালোলাগছে আমার কিউবান মুদ্রা। বাকিটা সময় মতন হবে।
লাল নীল তো লিখেছিলাম সবুজ হলো কখন। দেখছি.......শুভেচ্ছা

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:২৫

অশ্রুত প্রহর বলেছেন: বাহ !! ভালই লাগল। সুন্দর পোস্ট। :)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ ভালোলাগল পড়ার জন্য
শুভেচ্ছা অশ্রুত প্রহর

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৯

আজমান আন্দালিব বলেছেন: ঘুরে এলাম আপনার সাথে। সাবলীল বর্ণনায় ভালোলাগা।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২১

রোকসানা লেইস বলেছেন: সাথে নিয়ে যেতে পারলাম যেনে ভালোলাগছে।
অনেক শুভেচ্ছা আজমান আন্দালিব

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব ভালো লাগলো প্রথম ছবিটা। ছাদ খোলা টুরিস্ট বাসের পাশে সমুদ্রের বয়ে চলা। আর শেষের ছবি গুলোও সুন্দর। বর্ণনাও বেশ লাগলো। এসব ভ্রমণ কাহিনী পড়লে নিজেরও যেতে ইচ্ছে করে সেখানে

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২১

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক সুন্দর মন্তব্য মন ভরে গেলো একজন সুন্দর পাঠক পেয়ে অনেক শুভেচ্ছা অপর্ণা মন্ময়।

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২২

আবু শাকিল বলেছেন: এইবার ভ্রমণ পোষ্টের স্বাদ পেলাম।
ছবি এবং ভ্রমনের বর্ণনা চমৎকার।
দুইডা প্রশ্ন আছিল আফা-
কিউবা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন??
হাভানার চুরুট নামডাক বেশ শুনি। এইটার দাম কত??

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: আমি যতটুকু পেয়েছি ভালো মনে হলো, নিরাপত্তা।
মেযেরা ফ্রি চলাচল করছে করতে পারে।
বিভিন্ন রকম দাম ।
পর্যটকেদের বেশী দামেই কিনতে হয় একটু।
শুভেচ্ছা

৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৬

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: পোস্টে ++++++্

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: :D :D :D শুভেচ্ছা নাজমুল হাসান মজুমদার

৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: চমৎকার পোস্ট!
ছবি, বর্ণনা, বর্ণনার সাবলীলতা সব মিলিয়ে উপভোগ্য একটা পোস্ট। খুব ভাল লাগল।
কিউবা নিয়ে অনেক পড়েছি। তবুও আপনার লেখায় নতুন করে দেখলাম যেন দেশটার সামান্য অংশ।
শুভকামনা

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ভালোলাগল জেনে । আশা করি বাকি পর্বগুলোর সাথে থাকবে আরণ্যক রাখাল
শুভেচ্ছা আরণ্যক রাখাল

৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৮

অগ্নি সারথি বলেছেন: ভাললাগা। চলুক সাথে আছি।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য অগ্নি সারথি

৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩৩

শাহরীন মাহাদী বলেছেন: খুব ভাল লাগল।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:২০

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শাহরীন মাহাদী

১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপু পরের পর্ব চাই :)

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: পরের পর্ব দিয়েছি দেখেছেন আশা করি মনিরা সুলতানা
শুভেচ্ছা রইল

১১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৯

দ্য েস্লভ বলেছেন: সন্দির সাবলীল বর্ণনা। ঝরঝরে মসৃন বর্ণনা যেন আপনার দেখা সাগরের সুবাতাশ......ঝরঝরে মনে পড়লাম। সুন্দর লেখার কারুকাজ। এগিয়ে যান :)

১২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.