নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

শীত বরফে জীবন যাপন

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৬



শীতের শুরু আজ থেকে। উত্তর গোলার্ধের বড়দিন গুলোর শেষ দিন আজ। এই জাকিয়ে বসা শীত চলবে আগামী পাঁচ মাস নির্দ্বিধায়।এমনিতে গত কমাস ধরেও চলছে শীতের সাথেই বসবাস। নামকরণে শরত থাকলেও কার্যকরণে শীতের শীতল তুষারপাতের কম্বল জড়িয়ে আছে।
শীত শুনলেই আমরা বাবা গো মা গো বলি।আগুন জ্বালিয়ে বসে থাকি। কিন্তু এই হীমাঙ্কের নীচের শীতে অভ্যস্থও হয়ে উঠি। শীতের যে অপরূপ সৌন্দর্য তা যেমন নতুন মাত্রা যোগ করে হৃদয়ে। তেমনি দিনে দিনে অবাক হয়ে দেখা বাদে অভ্যস্থও হয়ে যাই শীতের সাথে চলায়, নানা রকম শীতের খেলায়।
উত্তরের শেষ প্রান্তের শহর জুড়ে হীমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা থাকে মোটা মুটি অল্প কয়েকটি মাস বাদে সারা বছর। বরফ জমে থাকে গলা পর্যন্ত। কখনো তারচেয়েও বেশী। এক সময় বরফের ভিতর বরফ কেটে ঘর বানিয়ে থাকত মানুষ, যাকে ইগলু বলা হয়।
সে সব এলাকায় দিনের আলো থাকে মোটে কয়েক ঘণ্টা। তারপরও সে সব জায়গায় বাস করা মানুষ নিজের আদি বাস ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে যায় না। মানুষের জীবনে জন্ম থেকে বেড়ে উঠার পরিবেশ প্রকৃতি অভ্যস্থতার গুরুত্ব অনেক। যে যেমন জীবন শুরু করে তা আকঁড়ে ধরেই থাকতে চায় বাকি জীবন।
এ দেশের মানুষ শীত এলে হাতপা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকে না। দিব্যি প্রতিদিনের কাজ চলছে। সাথে বিশাল আয়োজন বড়দিনের উৎসব। কেনাকাটায় বাইরে যাওয়ার প্রযোজন আরো বেশী হয়। এছাড়া নানা রকম খেলার আয়োজন আছে তা নিয়ে মেতে উঠে। বরফ না পরলে ওদের মন খারাপ হয়। এবার শীতের খেলাধূলা বেশ জমবে মনে হচ্ছে। বরফ পরছে ভালো। নানা রকম রির্স্টোট গড়ে উঠেছে। এই শীতের খেলার উপর ভিত্তি করে। বরফ না হলে তাদের ব্যবসা হয় না।
উইন্টার ভ্যাকেসনে অনেকে চলে যায় এই খেলার আনন্দ উপভোগ করতে। ঠাণ্ডা তাদের কাবু করতে পারে না।
কুকুর টানা স্লেজ গাড়ি আদি যুগে চলার সুবিধার জন্য আবিস্কার হয়েছিল মনে হয়। কিন্তু বর্তমানে এটা শখ করে চড়ে বেড়ানোর বিষয় অনেকের কাছে।
আইস ফিসিং আরেকটা প্রয়োজনীয় বিষয় ছিল। বর্তমানে খেলার আনন্দ যোগায়। বরফ জমে যখন নদী, হ্রদ সব সমান তুষার আবৃত্ত মাঠ হয়ে যায়। নদী, হ্রদের উপরের অংশ বরফ জমা। নিচে পানি আর তাতে মাছ সাঁতার কাটছে। সে মাছ ধরার জন্য ছোট ছোট গর্ত খুঁড়ে বড়শি ফেলে বসে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ।


মাছ যে তারা খাবারের জন্য ধরে তা নয়। আনন্দের জন্য ধরে। নদী হ্রদের উপর ছুটে বেড়ায় আনন্দে মাতে।



অনেক জায়গায় ঘেরা দেয়া ছোট ছোট ঘর বানিয়ে রাখা হয়। তাতে তাপ পাওয়ারও ব্যবস্থা থাকে। পোর্টেবল এই ঘরগুলো ভাড়া করে তার ভিতরে বসে মাছ ধরে থাকেও কয়েকদিন ধরে সেখানেই থাকা খাওয়া। একটা শেডের ভাড়া পাঁচশ থেকে হাজার ডলার। যারা ভাড়া করতে পারে না তারা বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে বসে থাকে মাছের আশায়।



স্নো ষ্লাইডিং,, স্নোবোর্ডিং , টোবগান, স্নো স্কেইটিং এসব খেলায় এদেশের বাচ্চারা সে যে দেশেরই হোক না কেন অভ্যস্থ হয়ে উঠে অল্প দিনে। স্কুলে খেলে। অতি ছোট বাচ্চা যারা ডে কেয়ারে যারা যায়। প্রবল শীতের মধ্যে তাদের বাইরে হাঁটতে নিয়ে যাওয়া নিয়ম। খোলা হাওয়ায় এক একটা গরম কাপড়ের পোটলা হেঁটে যায়। তারা আবার বাঁধা থাকে একজনের সাথে আরেক জন। সাথে তাদের ডে কেয়ারের তথ্যবধায়ক। এরা যে স্কুলের বা ডে কেয়ারের গণ্ডির মধ্যে হাঁটে তা নয় পুরো এলাকা চক্কর দিয়ে আসে। প্রকৃতির সাথে অভ্যস্থ হওয়ার সাথে হাঁটায় ও অভ্যস্থ হয়ে উঠে বাচ্চারা। তাদের সঙ্গ দোয়ার জন্য ছুটির দিনে বাচ্চাদের বাবা মা বরফ ভরা মাঠে নামে। বরফ ছুঁড়াছুড়ি খেলে, বরফে গড়াগড়ি খায়, স্নো এ্যাঞ্জেল বানায়। বরফের মানুষ বানায়। সাথে স্লাডিং টেনে, টোবাগনে গড়িয়ে যেয়ে এক বেলা কাটায়। ধীরে ধীরে ভিনদেশের বরফ না দেখা মানুষরাও এই দেশের স্নো খেলার সাথে অভ্যস্থ হয়ে যায়।
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে মাইলের পর মাইল চলে কেউ ক্রস-কান্ট্রি স্কিইং করে। মাঝে মাঝে শরীরটাকে শূন্যে তুলে নানা কসরতে ঘুরিয়ে নিচের ঢালে নেমে আবার চলে। এক একজন এমন পারদর্শী এসব খেলায় দেখে মনে হয় খুব তুচ্ছো একটা বিষয়। তবে অনেকে হাড় ভাঙ্গে, ভয়ানক রকম আহত হয়। তারপরও কী এক দুর্দমনীয় আর্কষণে আবারও ফিরে এসব খেলায়। আইস হকি এদেশের জাতিয় খেলা। স্নো স্কেটিং এর অদ্ভুত করিওগ্রাফি দেখে নিজের পাও নাচতে শুরু করে। ইচ্ছে হয় এমন হালকা ভাবে নিজের শরীরটাকেও যদি ঘুরাতে পারতাম ওদেরে মতন।
শীতকালিন কার্নিভাল চলে অনেক শহরে। স্নো স্কল্পচার বরফ কেটে অসম্ভব সুন্দর সব আকৃতি তৈরী করা হয়। রঙিন আলোর ঝলকানিতে আসে চমৎকার আবহো।
অরো আছো আইস হোটেল বরফের ঘরে থাকার জন্য কেউ চলে যায় ছুটির সময়টা কাটাতে। অথবা সারাদিনের বরফের সাথে খেলা শেষে খোলা আকাশের নীচে গরম পানিতে সাঁতার কাটা।স্টীম বাথ নেয়া, যা শীত প্রধান দেশগুলোতে খুব প্রিয়। বন্ধ ঘরে উষ্ণ তাপে শরীরে ঘাম ঝরানো। তারপর শাওয়ার সেরে খোলা হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেয়। শরীরটাকে চাঙ্গা করে নেয়ার জন্য অনেক ভালো।
অনেক জায়গা এত দূর্গম যে সব জায়গায় রাস্তা তৈরী করা সম্ভব নয়। শীতকালে সে সব জায়গায় বরফের উপর দিয়ে ট্রাক চলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে, প্রয়োজনীয় সামগ্রি সরবরাহ করতে। মাঝে মধ্যে বরফের স্তর ফেটে গেলে ট্রাক আটকে যায়। ভয়াংকর দূর্ঘটনাও ঘটে। পানিতে তলিয়ে যেতে পারে যান। আর একটা ভয়াবহ বিষয় পিচ্ছিল বরফ। গাড়ি মানুষ সব পিছলাতে পারে ব্ল্যাক আইসে। সাধারনত বরফ পরার পর হালকা উষ্ণতা পেয়ে বরফ গলে যাওয়ার পর আবার যখন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পরে তখন এই ব্ল্যাক আইস হয়। এমন আইসে নৃত্য করে কেউ মানুষের মন জয় করে আর কেউ বেকায়দায় পিছলে গিয়ে হাড় ভাঙ্গে। বরফে অনেকক্ষণ থাকলে ঠাণ্ডায় ফ্রস্টবাইট হওয়া খুব স্বাভাবিক। আঙ্গুল থেকে শুরু হয় সাধারনত। সে জায়গাটি ঘষে, তাপ দিয়ে বা উষ্ণ জলের ধারায় হাত রেখে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরিয়ে আনা জরুরি। নয় তো শরীরের এই অংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এত কিছুর পরও বরফ নিয়ে আনন্দ বরফ ছুড়ে খেলা চলতে থাকে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: লেখা ভাল হয়েছে।কিন্তু কোন দেশের কথা বললেন সেটা বুঝলাম না। স্থানের নাম দিলে ভাল হত

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ মোস্তফা সোহেল। আসলে নামদিয়ে একটি জায়গা নিদৃষ্ট করা যায় কিন্তু মোটামুটি উত্তর গোলার্ধের শীত প্রধানদেশের চিত্র একই রকম।

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হৃদের উপরের অংশ বরফ জমা। নিচে পানি আর তাতে মাছ সাঁতার কাটছে। সে মাছ ধরার জন্য ছোট ছোট গর্ত খুঁড়ে বরশি ফেলে বসে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ।

মনে হচ্ছে আইসল্যান্ডের গল্প পড়লাম। অচেনা প্রকৃতির কাহিনী পড়ে ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ বোন রোকসানা লেইস।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১০

প্রামানিক বলেছেন: মজার মাছ মারার কাহিনী পড়লাম। ধন্যবাদ

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা প্রামানিক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.