![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজে যারে বড় বলে বড় সে নয়,লোকে যারে বড় বলে বড় সে হয়।নিজের সম্পর্কে আলাদা করে তাই কিছুই বলব না, আমি কিরকম মানুষ তা আমার লেখা পড়েই বিবেচনা করতে পারবেন। তবে কিছু কথা না বললেই নয়, আমি খুবি শান্ত একজন মানুষ যে সবসময় একে থাকতে পছন্দ করি। লেখা-লেখি করার অভ্যাস খুব ছোট থেকেই ছিল, এখনো আছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতেই আমি বিশি পছন্দ করি। মাঝে মাঝে ছোট খাটো কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আর কিছু মাথায় নেই, আশা করি ভবিৎষতে আরো কিছু অ্যাড করতে পারব :D
প্রায় এক ঘন্টা ধরে বসে আছি, অথচ নিশুর দেখা নাই। বিরক্ত লাগতেছে। অবশ্য নিশুরই বা কি দোষ, নির্দিষ্ট সময়ের আধঘন্টা আগেই আমি পৌছে গেছি এখানে। ভেবেছিলাম জ্যামের কারনে রাস্তায় আটকিয়ে থাকতে হবে, কিন্তু কিসের কি! ফাকা রাস্তায় খুব দ্রুতই চলে আসলাম টিএসসিতে, আর প্রথম বারের মত অপেক্ষা করছি নিশুর জন্যে। ওর পৌছতে হয়তো আর মিনিট দশেক লাগবে। ও পৌছার পর কি করব বুঝতে পারছি না। সবসময় তো আমাকেই বকাবকি করে, এবার কি আমি একটু বকাবকি করব? নাহ, বেচারির মন খারাপ করিয়ে লাভ নেই।
টিএসসিতে আজ কপোত-কপোতির মেলা। অবশ্য সবসময় মেলা বসে, তবে আজ ভীড় অনেক বেশী। প্রত্যেকেই এসেছে প্রিয় মানুষটির সাথে কিছুক্ষন সময় কাটাতে এই বিশেষ দিনে ! আমার কাছে ব্যাপারটা ক্যামন অদ্ভুত লাগে, ভালবাসাবাসির জন্যে আবার কোন দিবস লাগে নাকি? কাল রাতে যদিও ফোনে নিশু আমাকে অনেক বুঝিয়েছে এই ভ্যালেন্টাইন নিয়ে, কিন্তু বেচারিকে হতাশ করেছি আমি। একরাশ হতাশা নিয়েই আজ টিএসসিতে দেখা করার প্রমিস করিয়ে তারপর ঘুমিয়েছিল ও। ভয়ে আছি, আজ আমার সামনা সামনি নাকি আবার বুঝানো শুরু করে! নিশুর এই মাস্টারিমার্কা স্বভাবটাকে খুব বেশি ভয় পাই আমি। কোন কিছু একবার বুঝানো শুরু করলে, সেটা না বুঝানোর আগ পর্যন্ত বসেই থাকবে সে। তারপর একসময় বকাবকি, আর সবশেষে চিল্লাচিল্লি। তখন না বুঝলেও বুঝছি বুঝছি বলে সমস্যার সমাধান করা লাগে! একবার তো প্রায় দুইটার দিকে ফোন করে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে বলে একটা ধাধার সমাধান করে দিতে। অযথা ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়ায় কিছুটা ক্ষেপে গিয়ে কড়া কথা শুনাতে গিয়েই ভুল করে বসলাম আমি। এরপর সে গাল ফুলিয়ে টেনেটেনে যা বলল, তাতে আমার সারাসারাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল। সে বলেছিল, ধাধার সমাধান বের করে না দিলে নাকি সে সারারাত ঘুমাবে না! অগত্যা বাধ্য হয়ে নেটে ঘাটাঘাটি ও কিছু বন্ধুরে ঘুম ভাঙ্গিয়ে ডিস্টার্ব করে প্রায় ২ঘন্টা পর ওরে ধাধাটার উত্তর দিতে পেরেছিলাম!
নাহ, আর ওয়েট করা যায় না। ওর আসার সময় অনেক্ষন পার হয়ে গেছে। এবার একটা কল দেয়া দরকার। মোবাইলটা হাতে নিয়ে নিশুর নাম্বারে কল দিলাম। ওপাশে রিং হওয়া মাত্রই চমকে উঠলাম, আওয়াজটা আসছে ঠিক আমার পেছন দিক থেকে। পেছনে ফিরেই দেখি নিশু দাড়িয়ে আছে, মুখে চাপা হাসি। এতক্ষনে বুঝতে পারলাম, ইচ্ছে করেই আমাকে এতটা সময় বসিয়ে রেখেছে। মেজাজটা খারাপ হয়ে যেত, বাট ততক্ষনে ও আমার পাশে এসে বসে পড়েছে, মুখে তখনো চাপা হাসি! জিজ্ঞেস করলাম,
– এতক্ষন দেরী করলা কেন?
– ইচ্ছে করেই দেরী করেছি।
– কেন?
– অপেক্ষার কষ্টটা যেন তুমি বুঝতে পার।
– ও......
– বুঝছ?
– হুম।
– হুম বললে হবে না, বুঝছ কি না বল।
– হুম, বুঝছি তো।
– কি বুঝছ?
এইতো, বিপদ শুরু। এখন যদি থামানো না যায় তাহলে একটার পর একটা প্রশ্ন চলতেই থাকবে। ইশ, একটা গোলাপ ফুল নিয়ে এলে ভাল হত। এখন যদি ওর হাতে ফুলটা দিতে পারতাম, তাহলে হয়তো অন্য প্রসঙ্গে চলে যেত। কিন্তু ফুল তো আনি নি সাথে। ইদানিং পকেটের অবস্থা মারাত্মক খারাপ যাচ্ছে, এমাসে টিউশনির টাকাটা পাই নি। বাসা থেকে যে টাকাটা পাঠায়, তা দিয়ে মেসের খরচ দেয়ার পর আর কিছু বাকি থাকে না। এসময় একটা টাকাও আমার জন্যে অনেক মূল্যবান, সেজন্যেই ইচ্ছে থাকা সত্বেও কোন ফুল কিনে আনতে পারি নি ওর জন্য। আমাকে অনেক্ষন চুপ করে বসে থাকতে দেখে এবার নিশু বলে উঠল,
– ঐ, চুপ করে আছ কেন? কি ভাব?
– কিছু না।
– এখানে কি চুপ করেই থাকবা নাকি?
– না তো!
– উহু, তুমি চুপ করেই থাক। আজ যা বলার শুধু আমিই বলব।
এবার আর না হেসে পারলাম না, হা হা করে হেসে উঠলাম। আমাকে হাসতে দেখে নিশু বলে উঠল, “এইত্তো, এতক্ষন পর আমার সোনাটার মুখে হাসি দেখতে পাচ্ছি! দাড়াও, এজন্যে তোমার একটা পুরষ্কার আছে, চোলহ বন্ধ কর তো।” জিজ্ঞেস করলাম,
– কেন?
– আররে, বন্ধ করই না...
আমি জানি, হয়তো কোন একটা গিফট নিয়ে এসেছে আমার জন্যে। অগত্যা চোখ বন্ধ করলাম। নিশু আমার হাতটা টেনে নিয়ে হাতে কিছু একটা পড়িয়ে দিচ্ছে, হয়তো ঘড়ি হবে, ব্রেসলেট হবার সম্ভাবনা কম। পড়ানো শেষ হলে নিশু চোখ খুলতে বলল। হ্যা আমার ধারনাই ঠিক, ঘড়ি ছিল এটা। কি বলব বুঝতে পারছি না, নিজেকে কেমন ছোট ছোট লাগছে। ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের প্রিয় মানুষটাকে কিছু না কিছু একটা দেয়ার চেষ্টা করে। আমার মেসের বন্ধু সবুজও গতকাল রাতে তার জিএফের জন্যে একটা রিং কিনেছিল আমাকে সাথে নিয়ে। রিংটার দাম পড়সছিল ৫,২০০ টাকা, স্বর্নের, খুব সুন্দর ছিল। আমিই সবুজকে ওটা পছন্দ করে দিয়েছিলাম। অথচ আমি নিজেই আমার প্রিয় মানুষটার জন্যে কিছু আনতে পারি নি আজ! হাতে হঠাৎ ঝাকি খেয়ে আবার বাস্তব জগতে ফিরে আসলাম, নিশু উদ্বিগ্ন মুখে আমার হাতটা ঝাকাচ্ছে আর জিজ্ঞেস করছে,
– কি হল? কেমন হল বললে না তো?
– কি কেমন?
– আরে, ঘড়িটা!
এতক্ষনে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,
– ও, হ্যা... ভাল হয়েছে।
– আমি জানি, পছন্দ হয় নি।
– সত্যি, পছন্দ হয়ছে।
– ৩ সত্তি?
– হুম, তিন সত্তি।
উত্তর না দিয়ে স্থির চোখে তাকিয়ে আছে নিশু আমার দিকে। ও হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার মনের কথা, তাই চুপ হয়ে গেছে। ওর এই চুপ করে বসে থাকাটা খারাপ লাগে আমার। কেমন যেন অস্বস্থিকর একটা মুহুর্ত। কি বলব বুঝতে পারছি না, বাট কিছু একটা করতে হবে। আস্তে করে ওর আরেকটু কাছে গিয়ে ওর গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসলাম। ওর কোলের উপর থেকে হাতটা আমার কোলের উপর নিয়ে এসে শক্ত করে ধরে থাকলাম। কেমন যেন কেপে উঠল ও। ও তখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে, চোকে একটু একটু পানি দেখা যাচ্ছে। হয়তো এখনই টপটপ করে কেদে ফেলব। ওর দিক থেকে চোখটা সরিয়ে নিলাম আমি, অন্যদিকে তাকিয়ে রইলাম। কেমন যেন একটা অনুভুতি হচ্ছে আমার, সুখের অনুভুতি! মাঝে মাঝে প্রিয় মানুষটার সাথে চুপ করে বসে থাকাটার মাঝেও যে এত সুখ আছে, এই প্রথম বুঝলাম......
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪
স্পাইক্র্যাফট বলেছেন: সার্থক
২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহা .. উহু... লোমান্টিক পেমানুভূতি
কত কালের পুরানো মনে হয়
প্রিয়ার কাছাকাছি, হাতে হাত রেখে সূখের সেইদিন
ফিরে কি আসবে কি কোনদিন
++++
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৫
স্পাইক্র্যাফট বলেছেন: হয়তো হ্যা, হয়তো না…
৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল লাগল
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
জাহিদ জুয়েল বলেছেন: ভাল লাগল