নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সদা সত্য বলিব

আমি আমাকে ভালবাসি, আমার পছন্দ মতই চলি।

স্পাইক্র্যাফট

নিজে যারে বড় বলে বড় সে নয়,লোকে যারে বড় বলে বড় সে হয়।নিজের সম্পর্কে আলাদা করে তাই কিছুই বলব না, আমি কিরকম মানুষ তা আমার লেখা পড়েই বিবেচনা করতে পারবেন। তবে কিছু কথা না বললেই নয়, আমি খুবি শান্ত একজন মানুষ যে সবসময় একে থাকতে পছন্দ করি। লেখা-লেখি করার অভ্যাস খুব ছোট থেকেই ছিল, এখনো আছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতেই আমি বিশি পছন্দ করি। মাঝে মাঝে ছোট খাটো কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আর কিছু মাথায় নেই, আশা করি ভবিৎষতে আরো কিছু অ্যাড করতে পারব :D

স্পাইক্র্যাফট › বিস্তারিত পোস্টঃ

কামারুজ্জামানের শাস্তি কি যৌক্তিক ছিল?

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

কামারুজ্জামানের জম্ম ১৯৫২ সালের ৪ জুলাই, সেহিসেবে যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল প্রায় ১৯ বছর। একাত্তরে মাত্র উনিশ বছর বয়সেই সে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ (বর্তমানে ছাত্রশিবির) -এর ময়মনসিংহ জেলার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পায়। এরপর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় জামালপুরে গরে উঠা আল বদর বাহিনীর সংগঠক হিসেবেও তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। (সূত্রঃ দৈনিক সংগ্রাম, ১৬ই আগস্ট ১৯৭১)

জামালপুরে আলবদর বাহিনীর ক্যাম্প ছিল মোট সাতটি, যার মধ্যে শেরপুরে সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে গড়ে উঠা ক্যাম্পটি ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর। এই ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিল আলবদর কমান্ডার কামারুজ্জামান, জামালপুর আলবদর সাবডিবিশনের প্রধান আব্দুল বারি, আলবদর সদস্য নাসির ও কামরান।প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে আহত মুক্তিযুদ্ধাদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে এসে দিনের পর দিন অন্ধকার কুঠুরিতে আটক রেখে পৈশাচিক ভাবে নির্যাতন করা হত। অন্তত ৮০-৯০ জন মুক্তিযুদ্ধা ও নিরীহ বাঙ্গালীকে কামারুজ্জামানের তত্বাবধানে এই ক্যাম্পেই হত্যা করা হয়েছিল। এছাড়া একাত্তরের ২৫ জুলাই সকালে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুর নামে গ্রামে কামারুজ্জামানের পরামর্শে আলবদর ও রাজাকাররা পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় ও নারীদের ধর্ষণ করে। ওই হত্যাযজ্ঞে সোহগপুর গ্রামের ১৬৪ জন পুরুষকে হত্যা করে পুরুষশূণ্য করা হয়। তারপর থেকে গ্রামটি ‘বিধবাপল্লী’ নামে পরিচিত। দেশ স্বাধীন হবার পর আবদুল বারির ব্যাক্তিগত ডায়েরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, বন্দি ও হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেন, উনারা রাজাকার হলে যুদ্ধের পরপরই কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হল না। তাদের উদ্দেশ্যে, দেশ স্বাধীন হবার পর অর্থাত ১৯৭২ সালের দুই মে শেরপুর জেলার বাসিন্দা ফজলুল হক তাঁর ছেলে বদিউজ্জামানকে হত্যার জন্য কামারুজ্জামানকে দায়ী করে বদিউজ্জামানের বড় ভাই হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ১৮ জন আসামির অন্যতম ছিলেন কামারুজ্জামান। মামলাটির নম্বর ২(৫) ৭২ ও জিআর নম্বর ২৫০ (২) ৭২। অতএব, এখন আর বলার সুযোগ নেই যে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পর কোন মামলা দায়ের করা হয় নি। এরপর বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যাকান্ডের পর এক এক করে সকল রাজাকার মুক্তি পেয়ে যেতে শুরু করে এবং সেই ফাকে কামারুজ্জামানও মুক্তি পেয়ে যায়। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গনতন্ত্রের ফায়দা তুলে এই কামারুজ্জামান সরাসরি জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে।

এরপর ধীরে ধীরে ৩৪ বছর পার হয়ে যায়। অন্যান্য রাজাকারের মত কামারুজ্জামানও দেশের রাজনীতিতে জামায়াতের মোড়কে গুরুত্বপূর্ন একজন নেতা হয়ে উঠে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে একের পর এক অপমান করে যেতে থাকে। কামারুজ্জামানের দুই পুত্র মুক্তিযুদ্ধাদের অপমান করার পাশাপাশি দেখাতে থাকে তাদের দাম্ভিকতা। এসব দেখে নিরবে সহ্য করা ছাড়া বাঙ্গালীদের আর কিছুই করার ছিল না। সবাই যখন ভেবেছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একেবারেই সম্ভব না, ঠিক তখমই ২০০৯ সালে নিরুঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জাতীয়প সংসদ নির্বাচনে আওয়ামিলীগ পাশ করে। এরপর ২০১০ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে সংগঠিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৩ জুলাই, ২০১০ তারিখে কামারুজ্জামানকে পল্লবী থানা এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৯ই মে ২০১৩, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেয়।তার বিরুদ্ধে আনীত ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় এবং এর মধ্যে ২টি তে তাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ও খালাস চেয়ে ২০১৩ সালের ৬ জুন আপিল করেন কামারুজ্জামান। ২০১৪ সালের ৫ জুন থেকে আপিলের শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর সোহগপুরে গণহত্যার দাযে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখে।

এবং অবশেষে ২০১৫ সালের ১১ই এপ্রিল ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারে কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়। মাত্র দুই জন রাজাকারের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পেরেছি আমরা, আরো অনেকে এখনো বাকি আছে। আশা করি খুব শীঘ্রই তাদেরও শাস্তির ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে পারব আমরা। তবে এমুহুর্তে যে কামারুজ্জামানের রায় কার্যিকর করা গিয়েছে, তাতেই পুরো বাংলাদেশ অনেক সুখি। চিতকার করে বলতে ইচ্ছে করছে, জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭

ইলুসন বলেছেন: মানুষ এমনভাবে কথা কয় মনে হয় ১৯ বছরের পোলাগো বিচি থাকে না!

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

স্পাইক্র্যাফট বলেছেন: যারা বলে, তারাতো মানুষ নাহ! ছাগুর দল।

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:২০

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
ইলুসন বলেছেন: মানুষ এমনভাবে কথা কয় মনে হয় ১৯ বছরের পোলাগো বিচি থাকে না!

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৩২

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: বিএনপি জামাত কিংবা রাজাকার নিয়া টান দিবেনা এইটা জানাকথাই।

কিন্তু ৯৬ এও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলো। তখন এমন তোরজোর দেখিনাই। আবার সাইদীরে ক্যান ছাড়লো? সে কি তুখোড় রাজাকার হিসেবে নিজেরে প্রমান করতে ব্য্রর্থ হইছে?

বঙ্গবন্ধুর সাধারন ক্ষমার মানে এই ছিলনা যে ঢালাও দায়মুক্তি। বিচার চাইবার অধিকার সবারই ছিলো। ইত্তেফাকের হেডিং এর প্রথম কলাম তার অকাট্য প্রমান। ঘাদানিক সেই কবে থাইকাই বিচার চাইয়া মাইর খাইছে, আমার মনে হয় ঘাদানিকই আসল পথিকৃত যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে। এতো সময় পার করাটা জাতি হিসেবে আমাদের কিছুটা ব্য্রর্থ্যতাই। বিচার হইতেছে ঠিকই, সময়টা একটু বেশিই লাগলো। সময় অবশ্য কাউকেই ক্ষমা করেনা।

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:৫১

স্পাইক্র্যাফট বলেছেন: ১৯৯৬এ ক্ষমতায় আইসা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারিক কার্যক্রম হাতে নিছজিল আওয়ামিলীগ, যা পরবর্তীতে বিএনপি আইসা বন্ধ কইরা দেয়। ২০১৪ এর নির্বাচনে যদি বিএনপি কোনভাবে সরকারে আসত, তাআইলে এই বিচারটাও বন্ধ কইরা দিত।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৩৫

ওয়ালী আশরাফ বলেছেন: ফাঁসি দেওয়া আমার মতে কোন শাস্তি নয়; বরং শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়ার মাধ্যম।

জেলের মধ্যে বন্দি রেখে, ডেইলী রিমান্ডে নিয়া চেঁচা দরকার ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে নির্যাতন করেছে তদ্রুপ নির্যাতন করে তিলে তিলে মৃত্যু দন্ড কার্যকর করা উচিৎ ছিল।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৫৫

তপ্ত সীসা বলেছেন: জয় বাংলা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.