![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নামে মানুষ কামে নই, অগোচালো ভাবনা, নিজে কে মানুষ হিসাবে পরিচয় দিতে আছে সংশয়
স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আমরা ৪৪ বছর অতিক্রম করেছি। এই চৌচল্লিশ বছরে ঘটন-অঘটন দেখা-অদেখার অনেক কিছুর সংমিশ্রণ ও প্রতিফলন হয়েছে আর আমরা তারই সাক্ষী। স্বাধীনতার সময় যারা দেশদ্রোহী ছিলেন বর্তমান সরকার তার বিচার করেছে এবং কিছু বিচার অসমাপ্ত আছে। চার দশকের পর ও মানুষের প্রতি নির্যাতন-নিগ্রহ করা মাবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করেছে। এই পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী কয়েক জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। যেহেতু তৎকালীন আমলে যারা পাকিস্তানের সাথে হাত মিলিয়ে নিরহ মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচার করে ছিল বিধায় স্বাধীনতা বিরোধীর বিচার করা হয়েছে। সুতরাং তার জন্য বর্তমান সরকার কে স্বাগত ও অভিনন্দন জানায়।
যে দেশের (পাকিস্তানের) সাথে আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকে শত্র“তার শুরু অথচ সে দেশের (পাাকিস্তানের) পতাকা কিভাবে এই স্বাধীন রাষ্ট্রে বিচরণ করে। ভাবনার বিষয়? বিশেষ করে সুন্নী দাবীকারী মতাদর্শের কিছু লোক আরবী মাসের ১২ই রবিউল আওয়াল কে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (যাকে তাহারা সব চাইতে বগ ঈদ ) নামে সারা দেশের দু’পাশের রাস্তায় পাকিস্তানি পতাকা ও ঝান্ডা উড়াতে থাকে। যার পতন হয়েছে মুক্তিযোদ্ধ করে অথচ তার ঝান্ডা দেশ জুড়ে এমন দৃশ্যে এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ শোকাহত। যার ফলশ্র“তিতে স্বাধীন রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ত্রিশ লক্ষ্য শহীদের রক্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত। ১২ই রবিউল আওয়াল আসলে মনে হয় এটি কোন বাংলাদেশ নয়, যেন পাকিস্তানি রাষ্ট্রে রূপান্তর হয়েছে।
পাকিস্তানি আলেমের আগমন (অর্থাৎ আল্লামা তাহের শাহ্) তিনি কোন রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক ব্যক্তি নয়। যাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরাপত্তার আবরণে ঢেকে দিতে হবে কিংবা দেশের জনগণ তাকে বাহ্ বাহ্ এবং সংবর্ধনা দিতে বাধ্য নয়। তবে তিনি আমাদের জন্য একজন অতিথি কেবল। একজন বিদেশী অতিথির জন্য যত টুকু প্রয়োজন তা করা উচিত। অতিরিক্ত কোন কিছু করা ভাল নয়। আমাদের দেশে ও আলেম সমাজ রয়েছে। কয় কখনো তাদের কে নিয়ে কারো কোন উৎসবের আমেজ বা এ ধরণের সমাবেশ কিংবা জুলুসের আয়োজন করা হয়েছে কি? বাংলাদেশের আলেম সমাজ কি ইসলামী জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ। ভিনদেশী আলেম দ্বারা এই বাংলাদেশের মানুষ কে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। তাই যদি হয় তবে পাকিস্তানি বংশ্বোদ্ভুত কেন? অন্য যে কোন রাষ্ট্রের আলেম দ্বারা হয় না !! আর যিনি ইসলামের জ্ঞান সম্পর্কে প্রচার প্রসার করার জন্য আসবেন তাতে রাস্তার দু’পাশে সে দেশের (পাকিস্তানি) পতাকা-ঝান্ডা কেন? তিনি তো ইসলাম সম্পর্কে জানাবেন, তার দেশ সম্পর্কে নয়। আল্লামা তাহের শাহ্ এর আগমনী উপলক্ষ্যে পুরো দেশ জুড়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। আর গণমাধ্যম তো তা নিয়ে সংবাদের হিড়িক সৃষ্টি করে। আমাদের গণমাধ্যম একবার ও বলেছে কি পাকিস্তানি রাষ্ট্রের পতাকা আমাদের দেশের শহীদের প্রতি অশ্রদ্ধা বা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বরং গণমাধ্যমের প্রচারে আরো বেশি পাকিস্তানের বিস্তার হওয়ার সুযোগ হয়েছে।
আল্লামা তাহের শাহ্ ১২ই রবিউল আওয়াল কে ইস্যু করে আগমন প্রসঙ্গে আমাদের কিছু প্রশ্ন উঠে। তা হলো তিনি তো পাকিস্তানের নাগরিক অর্থাৎ নাগরিক হিসেবে তার সর্বপ্রথম দায়িত্ব তার চার পাশের মানুষ কে ধর্ম সম্পর্কে অবহিত করা তিনি তা না করে বাংলাদেশে কেন? উনার হক রয়েছে সর্বপ্রথম তার এলাকার মানুষ কে হেদায়ত প্রাপ্ত করার কিন্তু তিনি তা না করে বাংলাদেশে উড়াল দিয়ে আসে। এটি আমাদের জনসাধারণের প্রশ্ন বটে। আমাদের দেশের মানুষের চেয়ে বেশি হানাহানি নৈরাজ্য চলে পাকিস্তানে অথচ তিনি সে দেশের মানুষের চিন্তা বা ইসলামে উদ্ধুদ্ধ না করে বাংলাদেশের মানুষের হেদায়ত প্রাপ্ত করার জন্য আসা কেন? বিষয় টি কেমন যেন রহস্যময়।
সুন্নী মতাদর্শের সম্প্রদায় বলে তিনি (আল্লামা তাহের শাহ্) আওলাদে রাসুল(স) এর বংশধর। বিষয় টি ভাবতে আমাদের একটু খটকা লাগে। প্রকৃতিপক্ষে যদি তিনি আওলাদে রাসুল(স) এর বংশধর হয় তাহলে তিনি পাকিস্তানের মানুষের কাছে কত টা পরিচিত মুখ? আল্লামা তাহের শাহ্ বাংলাদেশে যত বেশি পরিচিত কিংবা সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে তার আগমন হয়। সত্যিকারার্থে তিনি কি পাকিস্তান বা অন্যান্য রাষ্ট্রে তেমন সুনামের ব্যক্তি? এর প্রকৃত সূত্র খতিয়ে বের করার জন্য আমাদের গণমাধ্যমের সাংবাদিক ভাইয়েরা যারা পাকিস্তানে আছেন তাদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আহবান সত্যি ঘটনার উদঘাটন করে বাংলার মানুষ কে এই অন্ধ বিশ্বাস থেকে চিরতরে মুক্তি দেয়া। কেননা এ ভ্রান্ত ধারণা লালন পালনের মধ্যে দিয়ে অনেক সম্প্রদায়ের মতবিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে, যা দ্বারা আমাদের দেশের গোত্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব উদ্ভব হয়েছে। তা স্পষ্ট করে দিতে পারলে হয়তো কিছু টা এ মতবিরোধ হ্রাস পাবে। এ ব্যাপারে শুধু মাত্র আমাদের গণমাধ্যমের পক্ষে সম্ভব হবে সত্যিকার ঘটনা উম্মোচন করতে। আল্লামা তাহের শাহ্ প্রকৃতি পক্ষে তিনি কে? যদি আওলাদে রাসুল (স) এর বংশ হয় তবে তাও আবার পাকিস্তানি নাগরিক। সৌদি আরবের কোরাইশ বংশ কোথায়? কেউ যদি আওলাদে রাসূল(স)এর বংশধর দাবি করে তাকে অবশ্যই সৌদি আরবের কোরাইশ বংশ হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু অন্য কোন রাষ্ট্রের নাগরিক আওলাদে রাসূল(স)এর বংশধর না হয়ে শুধু মাত্র পাকিস্তানি নাগরিক আওলাদে রাসূল(স) এর বংশধর কিভাবে? আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান দিয়ে যতদূর জানা আছে কোরাইশ বংশ হল আল্লাহ রাসূল(স) এর বংশধর। কিন্তু পাকিস্তানি নাগরিক কিভাবে আওলাদে রাসূল(স) এর বংশধর হল তাতে আমার বোধগম্য নয়। আওলাদে রাসুল(স) এর বংশধর নাকি কেবল একজন পাকিস্তানি নাগরিক। যার বিচরণ যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষের মনের আস্তাভাজন হয়ে আছে। যা পরর্তী সময়ে তার উত্তরসূরি তার কর্ণধার।
দেশের কিছু বিত্তবান ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যাদের অনুদানে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনের সমস্ত ব্যয় ভার বহন করার অধির আগ্রহের সহিত বসে আছে। যারা আল্লামা তাহের শাহ্ বা তার বংশের যে কেউ উত্তরসূরি আছে তার সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে বসে রয়েছে। যার ফলস্বরূপ দেখা যায় যে, দ্বীনিশিক্ষার নামে একধরণের বাণিজ্য চলছে। এতে কোটি কোটি টাকা পাচার হচ্ছে পাকিস্তানে অথচ তার প্রতি কারো কোন খেয়াল নেই।
বিজয়ের মাসে যদি তা হয় তবে আমাদের স্বাধীনচেতা মানুষের অর্জিত বিজয় কে কলুষিত করা হবে না ? হয়তো এতে অনেকে দ্বিমত পোষণ করবে কিন্তু এর সাথে ইসলাম ধর্ম কিংবা অন্য কোন মতার্দশের সাংর্ঘষিক বিষয় নয় যেহেতু এখানে আল্লামা তাহের শাহ্ কে নিষেধ করার জন্য উদ্দেশ্য নয় শুধু পাকিস্তানি পতাকার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যাদের সাথে আমাদের জন্মলংগ্ন থেকে বিরোধ রয়েছে তাদের পতাকা এইভাবে প্রসার হতে বা উড়তে দেয়া যেতে পারে না। আমাদের দেশের মানুষ যেহেতু ধর্মপ্রাণ বিধায় পাকিস্তান তার অবস্থানে থাকার জন্য ধর্মের দোহায় দিয়ে নতুন কৌশলে পাকিস্তানের অবস্থান শক্ত করছে যা ১২ই রবিউল আওয়াল কে সামনে রেখে সারা বাংলাদেশে বিশেষভাবে প্রভাব বানিজিৎ নগরী চট্টগ্রামে জুডে পতাকার আগ্রাসন।
(সংগৃহিত)
©somewhere in net ltd.