![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবিষ্কারঃ
নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র তখন নেপচুন গ্রহের কক্ষপথ কে পুরোপুরি ব্যাখা করতে পারছিলো না । বিজ্ঞানীরা পড়ে গেলেন মুশকিলে। তাহলে কি এতদিনের নিউটনের সূত্র ভুল?? গ্রহগুলো কি অন্য কোনো সূত্র মেনে চলে??তখন Percival Lowell নামে একজন জ্যোতির্বিদ বললেন হয়তোবা আরো কোনো গ্রহ আছে যেটার প্রভাব হিসেবে ধরা হয়নি। গ্রহটার নাম দিলেন “প্ল্যানেট-এক্স”, শুরু হয়ে গেলো অজানা গ্রহের সন্ধান। কোথায় গ্রহটি থাকলে সবকিছুর সমাধান হবে আকাশের সে জায়গা অঙ্ক কষে বের করা হলো, দূরবীক্ষণ তাক করা হলো, কিন্তু নাহ.....“প্ল্যানেট এক্স” আর পাওয়া গেলো না।১৯০৬ থেকে ১৯১৬ পর্যন্ত Percival Lowell তার নিজস্ব পর্যবেক্ষণাগার থেকে খুজতে থাকলেন “প্ল্যানেট-এক্স” কে। অঙ্কে কোথাও ভুল আছে নাকি খোজা হলো , নাহ নাই, পাওয়া গেলো না । মজার ব্যাপার যে, সেসময় তার তোলা দুটি ছবিতে প্লুটোও ছিলো, কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন নাই। ধরা দিয়েও দিলো না প্লুটো। এরপর লম্বা বিরতি...
১৯১৬ সালে Percival Lowell মারা যান এবং এরপর নানা কারণে এই খোজ বন্ধ থাকে। মাঝখান দিয়ে চলে যায় ১৩ বছর!!!
১৯২৯ সালে Clyde Tombaugh আবার শুরু করেন “প্ল্যানেট-এক্স” এর খোজ। এবার খুব বেশীদিন অপেক্ষা করতে হয়নি তাকে। সেসময় গ্রহ আবিষ্কার করা হতো আকাশের একই জায়গার কয়েক রাতের তফাতে তোলা দুটি ছবির ভেতর তুলনা করে। যদি কোনো বিন্দু একটুও এদিক থেকে সেদিকে সরে তাহলেই বুঝতে হবে কোনো গ্রহ!! Clyde Tombaugh
উপরে যে দুটি Photographic Plate এর সাহায্যে প্লুটো আবিষ্কার করা হয় । মাউস পয়েন্টার দিয়ে প্লুটো দেখানো হয়েছে
প্লুটো আবিষ্কারের পর খবরের কাগজের Headline এবং একপাশে Article
১৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৩০ সালে এরকম দুটি ছবি থেকে তিনি বুঝতে পারলেন যে “প্ল্যানেট-এক্স” কে তিনি খুজে পেয়েছেন নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র বেচে গেলো বিলুপ্তির হাত থেকে ।
“প্ল্যানেট-এক্স” এর এখন একটা সুন্দর নাম দরকার। দুনিয়াভর মানুষ নানা নাম পাঠাতে থাকে নতুন গ্রহের জন্যে, এর ভেতর থেকে শেষ পর্যন্ত ১১ বছরের এক ছোট মেয়ের দেওয়া নামটি শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত হয়। আর Pluto নাম নির্বাচনের পেছনে আরো এক কারণ এর আদ্যক্ষর P আর L , যা দিয়ে Percival Lowell কেও মনে রাখা যাবে।
প্লুটোঃ
সূর্য থেকে এত দূরের (গড়ে প্রায় ৫৯০ কোটি কি.মি) গ্রহ প্লুটো স্বাভাবিক ভাবেই ঠান্ডা বরফ আর রহস্যে ঘেরা । খুবই ছোট একটি গ্রহ ,আমাদের চাদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশের সমান আবার এর ও রয়েছে ৫টি চাঁদ! ১৯৯১ সালের অক্টোবর এ যখন আমেরিকায় সব গ্রহ নিয়ে স্ট্যাম্পকার্ড ছাপানো হলো , সেগুলোতে সব গ্রহের ছবির পাশে ছিলো যে যান টি সে গ্রহ থেকে ঘুরে এসেছে তার ছবি। কিন্তু প্লুটোর স্ট্যাম্প টাতে লেখা হলো Not yet explored ! আর ছবিটাও আসল প্লুটোর না! বেচারা প্লুটো!
প্লুটোর স্ট্যাম্পকার্ড
২০০৬ সালে যখন গ্রহ এর নতুন সংজ্ঞা তৈরী করা হলো তখন প্লুটো আর গ্রহ থাকলো না, হয়ে গেলো বামনগ্রহ। একে তো প্লুটো অনেক ছোট তারপরে এর কক্ষপথ অন্যে গ্রহ গুলো থেকে কিছুটা আলাদা, যেমন সে মাঝে মাঝে নেপচুনের থেকেও সূর্যের কাছে চলে আসে, আবার চলে যায় অনেক দূরে। এই ছোট গ্রহের ছোট জীবনে (১৯৩০ থেকে) বয়ে গেছে কত ঝড়!
এবার প্লুটোর জন্যে ছোট খুশির খবর...
New Horizons Mission:
প্লুটো পর্যবেক্ষণ করার জন্যে অনেক অভিযান প্রস্তাবিত হয়ে আসছে অনেক বছর ধরে, কিন্তু সবগুলোই বাতিল হয়ে যাচ্ছিলো কোনো না কোনো জটিলতায়।সব জটিলতা পার করেঅবশেশষে ২০০৬ সালের ১৯ জানুয়ারী প্লুটোকে দেখতে পাঠানো হয় New Horizons স্পেস প্রোব কে। ভর মাত্র ৪৭৮ কেজি , New Horizons স্পেস প্রোব এর আকার বড়-সড় এক পিয়ানোর মতো। এটি প্রতি সেকেন্ডে ১৬.৭৬ কি.মি বেগে পৃথিবী ত্যাগ করে যা সর্বোচ্চ। মাত্র ৯ ঘন্টায় অতিক্রম করে চাঁদের কক্ষপথ যেখানে এপোলো-১১ এর লেগেছিলো ৩ দিন!!১৩ মাসে পৌছে যায় বৃহস্পতি গ্রহে, সেখানে বৃহস্পতির মহাকর্ষ থেকে কিছু সাহায্যে নিয়ে(নয়তো আরও ৫বছর বেশী সময় লাগতো) যাত্রা শুরু করে প্লুটোর দিকে। এর মূল উদ্দেশ্যে প্লুটো কে কাছ থেকে একটা ‘Hi’ দিয়ে আসা,কাছে থেকে ছবি তোলা,তথ্য সংগ্রহ ,এরপর কুইপার বেল্ট পর্যবেক্ষণ এবং তারপরে হারিয়ে যাওয়া আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাশূন্যে। প্লুটোর আবিষ্কারক ক্লাইড টমবাউ প্রতি সম্মান স্বরূপ তার কিছু দেহাবশেষ দিয়ে দেওয়া হয়েছে স্পেস প্রোবটিতে । সাড়ে ৯ বছর শেষে আগামী ১৪ জুলাই, ২০১৫ (পরশু) এর প্রাথমিক উদ্দেশ্যে সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। প্লুটো কে সবথেকে কাছ থেকে দেখতে পারবে মানব জাতি।প্লুটো কে ঘিরে জমে থাকা এত রহস্যে, উদ্বিগ্ন, আকাংক্ষা, সব কিছুর পর্দা উঠবে এই ১৪ জুলাই এ।প্লুটো এর এপর্যন্ত কোনো পরিষ্কার ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। সবগুলোই ঝাপসা অথবা শিল্পীর ধারণা। এবার প্লুটোর আসল রূপ দেখা যাবে। উপরে ৯ জুলাই এ তোলা New Horizons এর পাঠানো প্লুটোর ছবি।
আমাদের জানা জিনিসগুলো হবে আরো সমৃদ্ধ , সৌরজগৎ এবং সূর্যকে ঘিরে গ্রহগুলো কিভাবে তৈরী হয়েছে সে সম্পর্কে পাওয়া যাবে আরো পরিষ্কার ধারণা। না জানি রহস্যের চাদর ফেলে সবার জন্যে কি চমক নিয়ে অপেক্ষা করছে প্লুটো!!!
মিশনের সব আপডেট , তোলা ছবি , কাউন্ট ডাউন সব পাওয়া যাবে এই ওয়েবসাইটেঃ http://pluto.jhuapl.edu/
আরো বিস্তারিত জানতে চাইলেঃ
http://www.space.com/27989-new-horizons-pluto-mission-explained-infographic.html
http://www.space.com/18377-new-horizons.html
https://en.wikipedia.org/wiki/Pluto
https://en.wikipedia.org/wiki/New_Horizons
http://www.nasa.gov/mission_pages/newhorizons/news/jupiter_flyby.html
http://ircamera.as.arizona.edu/NatSci102/NatSci102/lectures/pluto.htm
২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২
হাসান রাজু বলেছেন: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা ।
৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯
পথিক সৌরভ বলেছেন: হ্যা আর মাত্র কয়েক ঘন্টা!!
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১৪
ইমরান আশফাক বলেছেন: ধন্যবাদ, আপডেট যথাসময়ে জানাবেন।