![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আইএসআইএস এর স্বীকারোক্তি ও ট্রাম্পের অস্বীকার। (লাস ভেগাস হামলা)
গতকাল রাতে আমেরিকার লাস ভেগাস স্ট্রেটের নামকরা ক্যাসিনো ও নাইটক্লাব মান্দালয় বে ক্যাসিনো সংলগ্ন উন্মুক্ত স্থানে জনপ্রিয় এক সঙ্গীত গ্রুপ ও সংগীতশিল্পী জ্যাসন আলদিয়ান এর কনসার্ট চলার সময় রুট নাইনটি ওয়ান হারভেস্ট নামের অনুষ্ঠানে সমবেত প্রায় ২২০০০ দর্শকের উপর বেপরোয়া গুলি চালায় এক বন্দুকধারী। স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওই বন্দুকধারী মান্দালয় বে’তে অবস্থান নিয়ে কনসার্টে সমবেতদের উপর গুলি চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। স্থানীয় সময় রোববার (অক্টোবর ০১) দিবাগত রাতে সংঘটিত এ হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৮ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গুলো। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫১৫ জন (স্কাই নিউজ সংবাদ)। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে ধারণা করা হচ্ছে। স্টিভেন প্যাডক নামে ৬৪ বছর বয়সী এক হামলাকারীকে পরে মান্দালয় বে’র ৩২ তলায় কোণঠাঁসা করতে সক্ষম হয় পুলিশ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বন্দুকধারী বলে পুলিশ জানলেও সংবাদ মাধ্যম গুলো জানাচ্ছে সে নিজেই আত্তহত্যা করছে।
আমার কাছে এখন পুরা ঘটনা টম ক্রুজের ২০১২ সালের মুভি “জ্যাক রিচার্ড নেভার গো ব্যাক” এর মতো মনে হচ্ছে। ঘটনার সাথে সাথেই বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে হামলার ভিডিও সরাসরি দেখা যায় উপস্থিত দর্শকদের ক্যামেরাতে। এবং অল্প সময়ের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। ঘটনার পর এক টুইট বার্তায় ডোনাল্ড জ ট্রাম্প বলেন, লাস ভেগাসের ভয়াবহ হামলার হতাহতদের এবং তাদের পরিবারকে গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি জানাচ্ছি। ঈশ্বর আপনাদের সহায় হোন। এই ব্যাপারে ইনভেস্টিগেশন চলছে এবং ইসলামি জঙী গোষ্ঠি আইএসআইএস এর মধ্যেই স্বীকার করেছে এই হামলার কথা। আরো প্রমান পাওয়া যাচ্ছে যে স্টিভেন প্যাডক নামে ৬৪ বছর বয়সী ওই হামলাকারীকে কয়েক মাস আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে এবং একটা সময় সে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশেই সেনা সদস্য হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তাই ইসলামি জঙী সংগঠনের সাথে তার সম্প্রিক্ততা থাকা অস্বাভাবিক কিছুই না। কিন্তু শুরু থেকেই ট্রাম্প সরকার ও আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা গুলি জানিয়ে আসছে এটা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে।
আসলে আমাদের ভাবার বিষয় এখানে। দেখুন ট্রাম্প ইলেকশনে জয়ী হবার পর থেকে বিশ্ববাসীকে নানান গল্প শুনিয়ে এসেছেন। আসলে ট্রাম্প হচ্ছে একজন খাটি বা ১০০% ব্যবসায়ী মানুষ। মাথার হ্যাট থেকে শুরু করে জাহাজের ব্যবসা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ছড়ানো আছে তার। আজ পর্যন্ত সে তার ব্যাক্তিগত সম্পতির পরিমান সাধারন জনগনের কাছে প্রকাশ করেনি। আচ্ছা বাদ দিলাম, এগুলা সবই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার আর সে প্রেসিডেন্ট হবার আগে থেকেই একজন বিলিয়নিয়ার। কিন্তু নির্বাচিত হবার আগে ওবামা সরকারের সময় সে, যে বয়ান গুলা দিয়েছিলো সেগুলা কি সে রাখতে পেরেছে একটাও। ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠি আইএস দ্বারা গতকাল যে হামলা লাস ভেগাসে হয়েছে এবং তাতে যে রক্তের হলিখেলা হয়েছে এটা যদি সে বা তার সরকার বা আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই যদি তা প্রকাশ করে তাহলে ট্রাম্পের জবাব দেবার যায়গা থাকে না। তাই সে কৌশলে এই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে নাকি ভেবে দেখুন।
কিন্তু এরকম একটা সময়ে আবার জঙী গোষ্ঠী আইএসআইএস এই হত্যা কান্ডের দ্বায় স্বীকার করে ট্রম্পের ভাষ্যকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করলো। আইএস এর যে ওয়েবসাইট আছে তা সাধারনের জন্য উন্মুক্ত নয় তাই আমরা সরাসরি তা দেখতে পারি না। প্রচলিত সার্চ ইঙ্গিন গুলোর কোনটাই আইএস এর সাইট শো করে না কারন আইএস জঙ্গীরা তাদের নিজস্ব ভিপিএন সার্ভার ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু জঙ্গী গোষ্ঠি আইএস যে তাদের ওয়েবসাইটে এই হামলার কথা স্বীকার করেছে তা বর্তমানে গার্ডিয়ান, ইনডিপেন্ডেন্ট, নিউ ইয়র্ক পোস্ট, দা সান, সিএনএন সহ আরো অনেক মিডিয়া তা প্রকাশ করেছে।
এখন কথা হচ্ছে দুই দিন আগেই আমারা শুনেছিলাম চীন ইসলাম ধর্মানুসারীদের প্রধান ধর্মীয় কিতাব পবিত্র কোরান শরিফ কে একটি জঙ্গী ও উস্কানি মূলক বই হিসেবে চিহ্নিত করে সেই পবিত্র গ্রন্থ কাছে রাখা ও বহন করা বা সংরক্ষন করা সম্পুর্ন নিষেধ ঘোষনা করেছে এবং সকল কোরান শরিফ মুসলিম নাগরিকদের নিকটস্থ পুলিশ ষ্টেশনে জমা দিতে বলেছে। তাদের ধারনা মুসলমান জাতী এই কোরান শরিফ পড়ে আরো বেশি সন্ত্রাসী আর জঙ্গী হচ্ছে। কারন সেখানে লেখা আছে জিহাদই হচ্ছে একমাত্র বেহেস্তে যাবার পথ। জিহাদ করলে সরাসরি জান্নাত পাওয়া যায়। এমন ধারনা থেকে তারা এই জাতীয় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আজকের এই লাস ভেগাসের হামলাকারী আবার কি প্রমান করলো সেটা সত্য হতে পারে ? বা আইএসআইএস জঙ্গীরা মুসলিম নাও হতে পারে ?
লাস ভেগাসের পুলিশ জানিয়েছে স্টিভেন প্যাডক নামে ৬৪ বছর বয়সী ওই হামলাকারী মাত্র কয়েক মাস আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিলো। সে মূলত আমেরিকার নেভাডা স্ট্রেটের একজন বাসিন্দা ছিলো সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার পর সে লাস ভেগাসে এসে বসবাস করছে। এখন কথা হচ্ছে সে যদি কোন মানুষিক রোগী হতো বা তার অন্য কোন সমস্যা থাকতো তাহলে একই সাথে প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি সে হইতো করতে পারতোনা সেই ৩২ তলার একটি হোটেলের কক্ষ থেকে। যেখানে পুলিশ সর্বোমোট ১০ টি আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছে। পুলিশ দাবী করছে তাকে নাকি তারা গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু এখানে বলে রাখি অনেক সংবাদ মাধ্যম তার আগেই জানিয়েছে যে সে গুলি করে মানুষ হত্যা করার পর নিজেই আত্তহত্যা করেছে। সেটা সাধারনত জঙ্গী বা জিহাদি আত্তঘাতীরা করে থাকে। আর এভাবেই তারা মনে করে তাদের সারা জীবনের পাপ মুক্ত হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করলো।
আরো কিছু তথ্য দিচ্ছি একটু ভেবে দেখবেন। স্টিভেন প্যাডক নামে ৬৪ বছর বয়সী ওই হামলাকারী তার কর্ম জীবন অতিবাহিত করেছে সেনা সদস্য হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে। এই জাতীয় সরকারী চাকুরীজীবিরা ধারনা করে যে তারা সারা জীবন যে পাপ করেছে তা থেকে মুক্ত হতে হবে। একটা সময় জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তদের ভেতরে মৃত্যু ভয় কাজ করতে থাকে। আর সেই মৃত্যু ভয় থেকে তারা বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় বিশ্বাসে তাদের বিশ্বাস স্থাপন করতে থাকে। কারন ধর্ম গুলি এটা দেখায় যে মানুষ সারা জীবনে যে পাপ নামক কোন এক বস্তু করবে তা থেকে মুক্তির উপায় আছে। আর সেই মুক্তি লাভের জন্য তারা এই জাতীয় ধর্ম একটু গুরুত্ব দিয়ে পালন করতে থেকে। এটাই হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের একটি বড় ধরনের প্লাস পয়েন্ট। তারা এই সময় ব্যক্তির সম্পুর্ন মানুষিকতা পরিষ্কার বুঝতে পারে এবং তাকে দিয়ে যে কোন ধরনের কাজ করিয়ে নিতে পারে। যেমন মুসলমান জাতী বিশ্বাস করে যে জিহাদ, কিতাল, কিসাস, আল-কাতল সবই হচ্ছে জান্নাতে যাবার সহজ পথ। তারা এটা মানে তলোয়ার এর নিচেই হচ্ছে জান্নাত তাই তারা জিহাদ করতে বলে।
আসলে এই ঘটনাটি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একটি বন্দুকধারী হামলা বলা হচ্ছে। কারন এর আগে সেদেশে একটি হামলায় সর্বোচ্চ ৪৯ জন এর মৃত্যু হয়েছিলো। কিন্তু এটি তা ছাড়িয়েছে। পা্ঠক এখানে আমার কথা ভুল থাকতে পারে বা আপনাদের দ্বিমত থাকতে পারে যা আপনারা জানাতে পারেন। আমি এই হামলায় নিহত সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ও শোক প্রকাশ করছি।
©somewhere in net ltd.