![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইসলামের জন্ম মক্কাতে না, বরং জর্ডানের পেট্রাতে, মুহাম্মদও মক্কায় জন্মগ্রহন করেন নি
দুনিয়ার মুসলমানদের দৃঢ় বিশ্বাস , মুহাম্মদ মক্কায় জন্ম গ্রহন করেছিলেন , আর ইসলামের পত্তন ঘটে মক্কাতেই। কিন্তু
কোরানে মক্কার যে প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ননা করেছে , তা কোন ভাবেই মক্কার সাথে মেলে না। শুধু তাই নয় , সেই সময়কালে যেসব ঘটনা ঘটেছে , তার যেসব ভৌগলিক বর্ননা দেয়া আছে ইতিহাসের গ্রন্থে তার কোনটার সাথেই মক্কার মিল নেই। চুড়ান্ত আশ্চর্য কথা হলো , ইসলামের পত্তনেরও ১০০ বছরের মধ্যে রোমান বা পারস্য বা এমন কি আরবের কোন ইতিহাসেই মক্কার নাম দেখা যায় না। যাইহোক, মক্কার প্রাকৃতিক পরিবেশের কি বর্ননা কোরান দিয়েছে তা জানার জন্যে প্রথমেই নিজের আয়াতটা পড়ে ফেলি ---
সূরা আল আনাম - ৬:১৪১: তিনিই উদ্যান সমূহ সৃষ্টি করেছে-তাও, যা মাচার উপর তুলে দেয়া হয়, এবং যা মাচার উপর তোলা হয় না এবং খর্জুর বৃক্ষ ও শস্যক্ষেত্র যেসবের স্বাদবিশিষ্ট এবং যয়তুন ও জলপাই সৃষ্টি করেছেন-একে অন্যের সাদৃশ্যশীল এবং সাদৃশ্যহীন। এগুলোর ফল খাও, যখন ফলন্ত হয় এবং হক দান কর কর্তনের সময়ে এবং অপব্যয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।( মাক্কি সুরা )
সুরাটা মাক্কি। তাই উক্ত আয়াত মক্কার প্রাকৃতির বর্ননা করছে , আর মক্কাবাসী নও মুসলিমদেরকে বলছে সেই বাগানের ফল গাছ থেকে ফল খেতে। আরও বলছে মক্কার আশে পাশে শস্যক্ষেত্র ছিল। শস্যক্ষেত বলতে বুঝি গম , যব , ভুট্টা ইত্যাদির ক্ষেত। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কোরানে বর্নিত এই মক্কার সাথে বাস্তব মক্কার কোন মিল নেই। সেই ১৪০০ বছর আগে না , কোন কালেই মক্কায় ফলের বাগান ছিল না , ছিল না ফলের গাছ বা শস্যক্ষেত্র। মক্কা অঞ্চলটা নিরেট পাহাড়ী মরু অঞ্চল যেখানে প্রতি বছর বৃষ্টিপাতের পরিমান খুবই কম। মক্কার মাটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে , সেই মাটিতে গাছ পালার কোন চিহ্ণ নেই অতীত কালের। শত শত বা হাজার হাজার না , লক্ষ লক্ষ বছর আগেও কোন অঞ্চলে গাছ পালা ছিল কি না , সেটা সে অঞ্চলের মাটি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা হুবহু বলে দিতে পারে। এমন কি বলে দিতে পারে , কি ধরনের গাছ ছিল। সবাই জানলে অবাক হবেন , ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও প্রচারেরও প্রায় ১০০ বছর পর পর্যন্ত রোম বা পারস্য সাম্রাজ্যের কোন ইতিহাসে মক্কা নামের কোন নগরীর খোজ পাওয়া যায় না , এমন কি মুসলিম ইতিহাসবিদের ইতিহাসেও মক্কা নামের কোন নগরের নাম পাওয়া যায় না।
আরও দেখা গেছে মুহাম্মদের সময় থেকে পরে প্রায় ১৩০ বছর পর্যন্ত যত মসজিদ নির্মান করা হয়েছে , তাদের কিবলা ছিল জর্ডানের পেট্রার দিকে মুখ করে , মক্কার কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নয়। তার মানে মুহাম্মদ থেকে শুরু করে উমাইয়া রাজত্বের পুরা সময় জুড়ে পেট্রার দিকে কিবলা করে নামাজ পড়া হতো। খোদ কোরানেও কিন্তু মক্কার কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার কথা বলাও নেই। বলা হয়েছে মসজিদে হারামের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে। সেই সময় মসজিদ বলতে বুঝাত জমায়েত স্থান, আজকের মত দালান কোঠা না। সুতরাং মসজিদে হারাম বলতে বুঝাত , যে জমায়েত স্থানে কোন রকম মারামারি কাটাকাটি হত্যা ইত্যাদি হারাম বা নিষেধ। জর্ডানের পেট্রা ছিল সেরকমই নিষিদ্ধ যায়গা যেখানে কোন রকম মারামারি কাটাকাটি হত্যা যুদ্ধ নিষিদ্ধ ছিল। ইসলামের আবির্ভাবেরও প্রায় ৮০০/৯০০ বছর আগ থেকে সেখানে নাবাতিয়ানরা মন্দির বানিয়ে সেটাকে একটা পবিত্র স্থান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল আর সেখানকার অন্যতম দেবতার নাম ছিল হুবাল যার উল্লেখ হাদিসেও আছে যে কুরাইশদের প্রধান দেবতার নাম ছিল হুবাল। আরবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সেখানে প্রতি বছর লোকজন তীর্থ করতে যেত , যেটাকে হজ্জ বলা হতো।
মুহাম্মদের জীবনি লেখেন সর্ব প্রথম ইবনে ইসহাক। ৭০৪ খৃষ্টাব্দে মদিনাতে তিনি জন্মগ্রহন করেন , মারা যান ৭৭০ খৃষ্টাব্দের দিকে , মুহাম্মদ মারা যায় ৬৩২ খৃষ্টাব্দে। তার মানে দেখা যাচ্ছে, মুহাম্মদ মারা যাওয়ার প্রায় ১০০ বছর পর ইবনে ইসহাক মুহাম্মদ সম্পর্কে লেখেন , আর তাতেই মক্কা নগরীর কথা লেখেন। কিন্তু তার চাইতে বিস্ময়কর বিষয় হলো যে কোন ভাবে হোক , ইবনে ইসহাকের সেই মুহাম্মদের জীবনির আসল পান্ডুলিপি পাওয়া যায় না , তবে এ বিষয়ে জানা যায় ইবনে হিসামের কিতাবে। তার জন্ম ৮৩৩ খৃষ্টাব্দে। মুহাম্মদ মারা যাওয়ার ২০০ বছর পর। আর ততদিনে উমাইয়া খিলাফতের পতন ঘটে গেছে , ক্ষমতায় এসেছে বাগদাদ কেন্দ্রিক খিলাফতের আব্বাসীয়দের হাতে। এখানে যে বিষয়টা গুরুত্বপূর্ন তা হলো ৬৮০ খৃষ্টাব্দে মুয়াবিয়ার পুত্র ইয়াজিদের হাতে হযরত আলী নিহত হয় কুফার কারবালায়, তারপরই ইয়াজিদ নিজেকে খলিফা হিসাবে ঘোষনা দেন। খেয়াল করতে হবে ইয়াজিদ তার রাজধানী বানায় কুফায়, মক্কা বা মদিনায় নয়। আর সেখান থেকেই সে নিজেকে খলিফা হিসাবে ঘোষণা দেন। কথিত আছে হযরত ইমাম হোসেইন মক্কা থেকে তার দলবল নিয়ে ইয়াজিদের সাথে আলোচনার জন্যে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা হলে কুফার কাছাকাছি কারবালাতে তাকে ইয়াজিদ সবংশে হত্যা করে।
এখন প্রশ্ন হলো ইমাম হোসেন আজকের মক্কা থেকে নাকি পেট্রা থেকে কুফার উদ্দেশ্রে রওনা হয়েছিলেন।
মুসলমান ইতিহাসবিদরাই লিখে গেছেন ইমাম হোসেন ০৯ সেপ্টেম্বর/ ৬৮০ খৃষ্টাব্দে মক্কা থেকে রওনা দেন , আর কারবালায় পৌছেন ০২ অক্টোবর / ৬৮০ খৃষ্টাব্দে। তার মানে ইমাম হোসেন মাত্রই ২৩ দিনে মক্কা থেকে কুফায় পৌছেছিলেন। মক্কা থেকে কুফা- এর মধ্যে আকাশ পথে সোজা উড্ডয়ন দুরত্ব - ১২৬৭ কি মি। আর স্থলপথে গাড়ীতে গেলে ১৭৮৯ কি মি। ইমাম হোসেন নিশ্চয়ই উড্ডয়ন দুরত্বের সোজা রুট অনুসরন করেন নি , করেছেন স্থল পথের রুট। আর সেটা অবশ্যই ১৭০০ কিলোমিটারের নিচে হবে না। সেই কালে একটা উটের বানিজ্য কাফেলা দৈনিক মাত্রই ৩০ থেকে ৪০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারত। কিন্তু ইমাম হোসেনের দলে ছিল নারী ও শিশু। সুতরাং তাদের গতি ছিল আরও কম। তবুও ধরে নিলাম সেটা গড়ে ৩৫ কি মি প্রতি দিন।।ধরা যাক, মরুভূমির উপর দিয়ে তারা বিমানের সোজা উড্ডয়ন পথ ১২৬৭ কিমি পথই পাড়ি দিয়ে কুফায় পৌছেছিলেন , তাহলেও সময় লাগবে কমপক্ষে ৩৬ দিন। এর চাইতে কমে কোনভাবেই তিনি মক্কা থেকে নারী , শিশু সহ একটা উটের কাফেলা নিয়ে কুফায় পৌছতে পারবেন না। যদিও বাস্তবে তাদের পক্ষে প্রতিদিন ৩৫ কি মি পথ সেই দুর্গম মরুপথে অতিক্রম করা সম্ভন নয় বিশেষ করে সাথে যখন নারী ও শিশু আছে তখন। অথচ তিনি মক্কা থেকে রওনা হয়ে কুফায় পৌছেন মাত্রই ২৩ দিনে। তার মানে কঠিন রুক্ষ পাহাড়ী মরুপথ তিনি প্রতিদিন ৫৫ কি মি গতিতে পাড়ি দিয়েছিলেন ? তাও সাথে করে নারী , শিশু নিয়ে ? যা অসম্ভব। এখানে আরও লক্ষ্যনীয় যে , ইমাম হোসেন কথিত মক্কা থেকে পৌছেছিলেন কুফার উত্তরে , কিন্তু যদি সত্যিই আজকের মক্কা থেকে কুফায় যেতেন , তাহলে তিনি কুফার দক্ষিন দিকে পৌছতেন , উত্তরে না। কারন উত্তরে যেতে গেলে কুফাকে অতিক্রম করেই যেতে হবে। তিনি কুফায় যাচ্ছেন , অথচ কুফাকে অতিক্রম করে চলে গেলেন কারবালায় , এটা কি সম্ভব ? এটা সম্ভব যদি তিনি পেট্রা থেকে কুফায় যান , তাহলেই তিনি কারবালাতেই প্রথমে পৌছতে পারেন , তারপর পৌছবেন কুফায়। বিষয়টা বুঝতে হলে , একটু ম্যাপের দিকে নজর দিতে হবে।
এখন যদি পেট্রা থেকে কুফার উড্ডয়ন পথ বিবেচনা করি তা মাত্রই ৮৭৩ কি মি। প্রতিদিন যদি সেই ৩৫ কি মি গতিতে তারা যান , তাহলে কুফায় পৌছতে কতদিন সময় লাগে ? আশ্চর্যরকম ভাবেই ২৪ দিন লাগে। আর বাস্তবে ইমাম হোসেনের কাফেলার লেগেছিল ২৩ দিন। কারন তারা আসলে কুফায় যান নি , পৌছেছিলেন কারবালায় , আর কারবালা হলো কুফার চেয়ে ৭০-৮০ কি মি, আগে। তাই সময়ও তাদের কম লেগেছিল। সুতরাং দেখা যাচ্চে , ইমাম হোসেন মক্কা থেকে নয় , বরং পেট্রা থেকেই রওনা হয়ে কারবালা পৌছেছিলেন ।
যাইহোক , ১০ অক্টোবর / ৬৮০ খৃষ্টাব্দে ইমাম হোসেন কারবালায় মারা যাওয়ার পর , ইয়াজিদ নিজেকে যখন খলিফা হিসাবে ঘোষনা দেন , তখন ইমাম হোসেনের অনুগত ইবনে আল জুবায়ের ইয়াজিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নিজেকে খলিফা হিসাবে ঘোষনা দেন। তিনি সিরিয়া , মিশর , ইরাকের কিছু অংশের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেন। আর এসব অঞ্চল থেকে মক্কা কিন্তু অনেক দুরে। অথচ বলা হচ্ছে তিনি মক্কা দখল করেই নিজেকে খলিফা হিসাবে ঘোষনা করেন। তা তাই যদি হয়, তাহলে কোন মক্কা দখল করেছিলেন তিনি ?কারন ইতিহাসবিদেরা যা বলেছেন , তাতে তো বর্তমান মক্কার ধারে কাছেও তার অবস্থান ছিল না। ফলে ইয়াজিদের সাথে তার সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইবনে আল জুবায়ের পরাজিত হয়ে মক্কা থেকে হঠে যান। প্রশ্ন হলো , তিনি কোন মক্কা থেকে হঠে যান? আজকের মক্কা নাকি পেট্রা থেকে ?
এসব বিষয়ের পূর্ন বিবরন ও উত্তর পাওয়া যাবে , এই ডকুমেন্টারীতে : Click This Link
ইমাম হোসেনের যাত্রাপথ সম্পর্কে জানতে : https://en.wikipedia.org/wiki/Battle_of_Karbala
©somewhere in net ltd.