![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৌদি অারবও অামাদের দেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কবে দিয়েছে জানেন তো? ১৬ই অাগস্ট ১৯৭৫। অর্থাৎ ১৫ই অাগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে মারা যাওয়ার ঠিক পরদিন। কিছু বুঝলেন? বুঝার দরকার নাই। চুপচাপ থাকেন। সেই স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে অামাদের দেশের উন্নয়নে সৌদি অারবের কোন অবদান নেই। রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, স্কুল কলেজ, হসপিটাল লাইব্রেরী সহ ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ক্ষেত্রে সৌদি কোন সহায়তা করেনি। তারা বরং মাঝে মাঝে কিছু মসজিদ বানিয়ে দিয়েছে এবং ফ্রি কোরানের কপি সরবরাহ করেছে। অামরা মহানন্দে সে গুলো নিয়েছি। বর্তমান সরকারের অামলেও শোনেছি তারা ৫০০ মসজিদ বানিয়ে দেবে। চুক্তি নাকি অলরেডি কমপ্লিট। কাম কাজ বোধহয় শুরু। অালহামদুলিল্লাহ।
সিরিয়ায় অাইএসের তান্ডবের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়ে একটু নিরাপদ অাশ্রয়ের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ছুটে পালাচ্ছিল। তখন সৌদি অারব তাদের বর্ডারকে এত শক্ত ভাবে সিলগালা করেছিল যে ভুলেও যেন একজন রিফিউজি তাদের দেশে ঢুকতে না পারে। যদিও সিরিয়া থেকে তাদের দেশটিই ছিল কাছে এবং যাতায়াতের জন্য উপযুক্ত। তাই সেদিকে যেতে না পেরে লক্ষ লক্ষ রিফিউজি সাগর সাতরে ইউরোপে অাশ্রয় নিয়েছিল। ইউরোপও তাদের বর্ডার খুলে দিয়েছিল সেই অসহায় মানুষ গুলির জন্য। ইউরোপিয়ানরা কিভাবে দলে দলে হাতে খাবার নিয়ে সেসব শরণার্থীদের স্বাগত জানিয়েছিল সে দৃশ্য অামরা টিভি পর্দায় দেখে চোখের পানি মুছেছি। অবশ্য পথিমধ্যে অনেকের সলিল সমাধিও হয়েছে। অাইলান কুর্দির কথা অাজও কেউ ভুলেনি। যে শিশুটির ছবি সারা বিশ্বকে কাঁদিয়েছিল, অবশ্য সৌদি অারব ছাড়া। সম্ভবত এরা বর্তমানের এ সভ্য পৃথিবীর সদস্য নয়। অন্য কোন গ্রহের এলিয়েন প্রজাতি। যা হোক জার্মান যখন প্রায় ১৫ লক্ষ শরণার্থীকে অাশ্রয় দিল তখন সৌদি অারব অাসল তাদের সহায়তা নিয়ে। তারা প্রস্তাব দিল তারা শরনার্থীদের জন্য ৫০০ মসজিদ বানিয়ে দেবে এবং কয়েক হাজার কোরান শরীফ দেবে। জার্মান সরকার অবশ্য তাদের এই মহতি উদ্যোগকে নাকচ করে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকার এখন রোহিঙ্গাদের নিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। অাশ্রয় দেওয়াটা যত সহজ পুনর্বাসন তত সহজ নয়। এজন্য সারা বিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। যাতে বাংলাদেশ সরকার এসকল অসহায় মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। তবে অামি অপেক্ষায় অাছি সৌদি অারব কবে রোহিঙ্গাদের জন্য মসজিদ তৈরির প্রস্তাব ও ফ্রি কোরান শরীফ নিয়ে অাসে?
অামাদের একজন হুজুর উপদেশ দিতেন যে যদি কাউকে কোন কিছু গিফ্ট বা দান করতে চাও তাহলে বুদ্ধি করে তাকে এককপি কোরান শরীফ দান করে দিও। তহলে সব সমস্যার সমাধান। কেননা তখন অার সে এর চেয়ে বড় গিফ্ট চাইতে পারবেনা। কারণ কোরানের চেয়ে বড় অার দামি কোন জিনিস এ জগতে নাই। অামরা হা করে শুধু শোনতাম। অার ভাবতাম হুজুরের মাথায় এত বুদ্ধি? শালার, অামাদের মাথায় তো খালি গোবর অার গোবর। এখন বুঝলাম সৌদি অারবের মাথাও অনেক বুদ্ধি। তারা জানে তারা যা দেবে, তার চেয়ে বড় অার দামি জিনিস কেউ দিতে পারবেনা। তাই সবসময় তারা থাকবে সবার উপরে। দান খয়রাতের দিক দিয়ে তাদের উপরে যাওয়ার সাধ্য কারো হবেনা।
একজন দক্ষ ব্যবসায়ী তো অবশ্যই সিজন মতো সুযোগ বুঝে তার ব্যবসায় বিনিয়োগ করবে। এটাই স্বাভাবিক। সৌদির চেয়ে বড় বিনা পুঁজির ব্যবসায়ী অার কে অাছে?
অতএব এখনো যারা সৌদি অারবের অবদান চোখে দেখেনা, তারা স্পষ্টতই পথভ্রষ্ট।
©somewhere in net ltd.