![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনৈতিক অবস্থানকে যতটা ক্রমশ শক্তিশালী করে চলেছে, মূলত তার সম পর্যায়ে আর কোনো কিছুই হতে পারেনা।
অথচ সেই চরম দুর্ভাগা প্রবাসীরা দেশে ফেরত আসাকালীন সময় প্রতিনিয়ত বিমানবন্দরে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তাদের অসদাচরণ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে নানান হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পেছনে তিনটি সেক্টরের বেশি অবদান রয়েছে। এগুলো হলো- গার্মেন্ট, সেবা এবং অভিবাসন খাত। সাধারণভাবে আমরা গার্মেন্টে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি।
এ খাতের কাঁচামাল আমদানির খরচ বাদ দিলে দেখা যায়, অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স থেকে নেট বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন গার্মেন্টের চাইতে তিনগুণ বেশি।
দেশে প্রবাহিত বৈদেশিক সাহায্যের তুলনায় এটি ছয়গুণ এবং ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টের বারো গুণ বেশি তাই এই কথা বলতে বাধা নেই যে ‘অভিবাসীর ঘামের টাকা সচল রাখছে দেশের চাকা’।
বিদেশে কর্মরত শ্রমিকরা প্রতিবছর দেশে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার পাঠায়। প্রতিবছর এ মুদ্রা পাঠানো বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চলতি অর্থবছরে এটি ৯ গুণ বেড়ে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।’
দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ১৩ জুন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনকালে এ তথ্য জানান।
২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চলতি অর্থবছরে এটি ৯ গুণ বেড়ে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ২২৮ বিলিয়ন ডলার; ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে আসে ১৫ দশমিক ৩১৬ বিলিয়ন ডলার; ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে ১৪ দশমিক ৯৩১ বিলিয়ন ডলার; ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে ১২ দশমিক ৭৬৯ বিলিয়ন ডলার; ২০১৭-১৮-তে আসে ১৪ দশমিক ৯৮১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০ মাসে প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠিয়েছে ১৩ দশমিক ৩০৩।
প্রবাসীরা যখন বৈধ পথে দেশে অর্থ পাঠান তখন ব্যাংকগুলো বাংলাদেশি মুদ্রায় ওই অর্থ স্থানান্তর করে দেশে অবস্থানরত পরিজনদের কাছে হস্তান্তর করে। আর ওই বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অর্থ হিসাবে জমা থাকে।
কিছু অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও জমা রাখে। এ অর্থ বৈদেশিক বাণিজ্য ও ঋণ পরিশোধে ব্যবহৃত হয়। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ আকারে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা থাকলে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ শর্তে বৈদেশিক ঋণ পেতে পারে। আমদানির ক্ষেত্রে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে দেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে।
অভিবাসন বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে দারিদ্র্য বিমোচনেও ভূমিকা রেখেছে। সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক অভিবাসী পরিবারে মাত্র ১৩ ভাগ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করেন। অনভিবাসী পরিবারগুলো প্রায় ৪০ ভাগই দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করছেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন হয় না এমন এলাকার তুলনায় অভিবাসন হয় এমন এলাকায় মজুরি বেশি, স্থানীয় বাজারের সম্প্রসারণ বেশি, প্রযুক্তি নির্ভর বিশেষায়িত পণ্যর ব্যবহার বেশি, কৃষি আধুনিকীকরণে বিনিয়োগ বেশি। অর্থাৎ অভিবাসীরা স্থানীয় অর্থনীতিতে পরোক্ষভাবে অবদান রাখছেন ‘মাল্টিপ্লায়ার এফেক্ট’ তৈরি করে।
এদিকে সাম্প্রতিক কালে প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে বিমান বন্দরে দুর্নীতি, চোরাচালান ও যাত্রী হয়রানির মতো ইত্যাদি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। বিদেশ প্রত্যাগত বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং মালয়েশিয়া প্রত্যাগত শ্রমিকদের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে থাকে।
আর পাসপোর্ট অফিসের সীমাহীন হয়রানীর কথা সকলের জানা। প্রয়াসীরা চান এ দুটি বিষয়ে সরকারি নজরদারি আরো জোরালো করা উচিত। যাতে কোন প্রবাসী হয়রানীর শিকার না হন।
©somewhere in net ltd.