![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছাত্র আন্দোলনের মুখে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধে রয়েছে দেশের অন্তত ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ উপাচার্য বা প্রক্টরের বিরুদ্ধে। অস্থিরতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ছাত্র আন্দোলনের মুখে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে গোপালগঞ্জ শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তবু উপাচার্যে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
নানা অনিয়মের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেমে থেমে আন্দোলন চলছে। উত্তেজনা বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে কয়েক মাস ধরে নিয়মিত উপাচার্যই নেই। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ও উপাচার্যহীন প্রায় চার মাস। অস্থিরতা চলছে জাহাঙ্গীরনগর ও কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও।
শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক দলীয় লেজুড়বৃত্তি, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যবোধের অভাব, টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি এবং এক ধরনের দলীয় রাজনীতির কুপ্রভাব পড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।”
ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষা প্রশাসন সর্বত্র এক ধরনের মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থায়।”
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি অচলাবস্থায় পড়ে যায়, তাহলে উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে, যা দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করবে। ”
বর্তমানে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে সামগ্রিকভাবে তার মূল কারণ আস্থার সংকট, বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্কট।”
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে। এই অবিশ্বাসের কারণ কোথাও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, কোথাও ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ, কোথাও আবার স্বজনপ্রীতি ইত্যাদি।”
বন্ধ হলেও চলছে আন্দোলন
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে গত ১১ সেপ্টেম্বর এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের কারণে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠলে বহিষ্কারাদেশ তুলে নেন উপাচার্য। তবে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি থেকে সরে আসেনি শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে ২১ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।“
উপাচার্য স্যারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি করে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিউটি পারলারের ব্যবসা চালু করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিও রয়েছে।”
তিনি নিজের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করান। এতে কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
অস্থিরতার মূলে অডিও রেকর্ড
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সরকার সমর্থক এই ছাত্রসংগঠনের একাংশ।
৪০ লাখ টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদকের পদ নেওয়ার বিষয়ে অডিও ফাঁস হলে তাঁকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ
উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের প্রেক্ষাপটে উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন ঢাকার অদূরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। তবে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বুধবারও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়মের ‘তিরস্কারনামা’ পাঠ ও কালো পতাকা প্রদর্শন করা হয়।
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম উপাচার্যের অনিয়মের বিরুদ্ধে ‘তিরস্কারনামা’ পাঠ করেন। এতে তিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মামলা, উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য ই-টেন্ডার আহ্বান না করা, সুনির্দিষ্ট কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা ভাগাভাগি করে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে উপাচার্যকে তিরস্কার করেন।
পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি করানোর অভিযোগ
সম্প্রতি ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তি করানোসহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বর্তমানে যিনি অনির্বাচিত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের অন্যতম প্রধান এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে থেমে থেমে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন চলছে।
এদিকে আড়াই মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্যানেল মনোনীত করে সরকারের কাছে পাঠায়। সরকার-সমর্থক এই প্যানেল থেকে ভোটাভুটিতে প্রথম হয়েছেন উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান উপাচার্য। তবে সরকার প্যানেল থেকে কাউকে উপাচার্য নিয়োগ দেয়নি।
©somewhere in net ltd.