নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Tanuj82

Tanuj

Tanuj 82

Tanuj › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্পদায় ।।।।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৩:০৯

স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশে জামায়াত শিবিরকে সংখ্যালঘু হিসাবে গণ্য করা হলে ও অমুসলিমদেরকে অলিখিত সংখ্যালঘু হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।
পাকিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক মতাদর্শে এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রশ্নে ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠিত হয়, তখনো বাংলাদেশের প্রধান টার্গেটে পরিনত হয়েছিল সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের প্রথম আদমশুমারি সাক্ষ্য দেয় যে, তখন বাংলাদেশে মাত্র শতকরা ১৩.৫ ভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল। অন্যরা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর মুসলমানদের কর্তৃত্ব ও চাপের কারণে সেই দেশ ত্যাগের ঘটনাটি নিরবে ঘটতেই থাকলো। ১৯৮১ সালে সেই সংখ্য নেমে আসে শতকরা ১২.১৩ ভাগে। আর ১৯৯১ সালে সেটি দাঁড়ায় শতকরা ১১.৬২ ভাগে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ও নির্বাচনকালীন সময়ে এই হামলা ও সহিংসতা বন্ধ না হবার কারণে, ২০০১ সালে এসে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র শতকরা ৯.৬ ভাগে। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, তখন বাংলাদেশে অন্তত ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজারের মত সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস ছিল। আর ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় শতকরা ৮ ভাগে নেমে আসে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যমান রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংখ্যালঘুদের উপর বারবার হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় এই সংখ্যা এখন প্রকৃত হিসেবে কত, সেটি বলা কষ্টকর হলেও, ধারণা করা যায়, এটি শতকরা ৫ ভাগের বেশি হবার কোনো যুক্তি নেই। কারণ, ২০১১ সালের আদমশুমারির পরেও দেশে নিরবে হিন্দু সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের অনেক ঘটনাই ঘটেছে। তাই বর্তমানে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা শতকরা ৫ ভাগের বেশি হবে না। তাছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখানোর জন্য বাংলাদেশের সরকারি তথ্য ও হিসেবে অনেক প্রকৃত তথ্যই এদিক সেদিক করার অভ্যাস মোটেও মিথ্যে নয়। প্রথম আলো।

তাহলে স্বাভাবিক প্রশ্ন জাগে যে, বাংলাদেশে কি শেষ পর্যন্ত এভাবে ধীরে ধীরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় একদিন নিশ্চিন্থ হয়ে যাবে? এখন যদি আমাকে কেউ এই প্রশ্ন করেন, আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে আগামী বিশ-পঁচিশ বছরের মধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় একটি নৃ-গোষ্ঠীতে পরিনত হতে যাচ্ছে। এর পেছনে রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য যেমন দায়ী। তেমনি বলপ্রয়োগ, রাজনৈতিক চাপ, নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায়ের এভাবে নির্মম বলিদান, ধন সম্পদ লুটপাট, মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার, দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের বংশবিস্তার, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিস্তার, দেশের সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক দলগুলোর এসব হামলার সময় নিরব দর্শকের ভূমিকা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর নির্লজ্ব ব্যর্থতা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা না দিতে পারার রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়ন, প্রতিবেশী মায়ানমারের জাতিগত দাঙ্গা, দেশের দুর্বল গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, দেশে বিদ্যমান অন্যের সম্পত্তি দখলের লাগাতার সংস্কৃতি, হিন্দু সম্প্রদায়ের নিজস্ব নিরাপত্তাহীনতা, মিডিয়ার পক্ষপাত আচরণ, আর দেশের মানুষের মানবতা বিরোধী নির্মম ঘটনার পরেও স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়ার সংস্কৃতি, এসব সম্মিলিত ধারার যুগপথ ধারার কারণেই ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় এক সময় নিশ্চিন্থ হয়ে যেতে পারে।

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার 'রাম মন্দির' বিতর্ককে কেন্দ্র করে ১৯৮৯ সালে একটি হিন্দু বিরোধী প্রোগ্রাম শুরু হয় যার ফলশ্রুতিতে অত্যন্ত বৃহৎ পরিসরে হিন্দুদের মন্দির ধ্বংস ও হিন্দুদের উপর নির্যাতন শুরু হয়।
১৯৯০ সালের ২৯ অক্টোবর,বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী অর্থায়িত সংবাদপত্র ' দৈনিক ইনকিলাবের' শিরোনাম ছাপায় ' বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে'। ফলে সমগ্র বাংলাদেশ ব্যাপী বাবরী মসজিদ ধ্বংসের গুজব রটানো হয়। আর এতেই সবার দুশ্চিন্তার পারদ সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে যায়।
১৯৯০ সালের হিন্দু নিধন প্রোগ্রাম ছিল বাবরী মসজিদ ইস্যুকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ইসলামী মৌলবাদী শক্তির একটি পরিকল্পিত ঘটনা।এই ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮৯ সালে হলেও ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকে।এসময়ে হিন্দু সুম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের পাশাপাশি অন্যান্য সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীও আক্রান্ত হয়। এছাড়া ১৯৯০ ও ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির ঢাকেশ্বরী মন্দির আক্রান্ত হয়।১৯৯২ সালে চার জাতির সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে পারেনি আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশ।তাছাড়া ঢাকার ভারতীয় দুতাবাসেও আক্রমণ করে মুসলিমরা। ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।
১৯৯০ সালে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচারের ফলে অনেক জায়গা
হিন্দু শুন্য হয়ে যায় এবং বহুস্থানের হিন্দুরা বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর হিন্দুরা সহায়-সম্বল,বাড়ি-ঘর সব হারিয়ে পাহাড়ের উপর কৈবল্যধাম মন্দিরের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহন করে।সেখানে কমপক্ষে ৫০০ টি হিন্দু পরিবার আশ্রয় নিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করে। ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের নলগোড়া গ্রামের সাধু সিংয়ের বাড়িতে ছয়টি পরিবার ছিল যারা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ভারতে পাড়ি দিয়ে জীবন ও সম্মান রক্ষা করে।১৯৯০ ও ১৯৯২ সালের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ভোলা জেলার হাজার হাজার হিন্দু বাস্তুচ্যুত হয় এবং পালিয়ে চলে যায়।ফলে হিন্দু অধ্যুষিত ভোলা জেলা প্রায় হিন্দুশূন্য বর্তমানে।

২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬২৫টি। এর মধ্যে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ৩৫৫টি এবং লুটপাট, অগি্নসংযোগ, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, গুরুতর আঘাত, চিরতরে পঙ্গু করা, সম্পত্তি দখল ও অন্যান্য গুরুতর অভিযোগ ৩ হাজার ২৭০টি। ধর্তব্য নয় উল্লেখ করে ১ হাজার ৯৪৬টি অভিযোগ বাতিল করারও ঘটনা ঘটে। তদন্ত করা ৩ হাজার ৬২৫টি ঘটনায় ১৮ হাজারেরও বেশি লোক জড়িত বলে চিহ্নিত হয়। ২০০১ সালে নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় যেসব ব্যক্তির ওপর হামলা, লুটপাট, গণধর্ষণ করা হয়েছিল, তারা থানায় বা আদালতে অভিযোগ দায়ের পর্যন্ত করতে পারেননি। কেউ অভিযোগ করতে পারলেও রাজনৈতিক কারণে তদন্ত হয়নি। রাষ্ট্রীয় আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন-সন্ত্রাস চালিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না সংশ্লিষ্টরা। জোট সরকারের আমলে হামলা-সন্ত্রাস লুটতরাজসহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাবলিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়ে ৫ হাজার ৮৯০টি মামলা প্রত্যাহারও করা হয়। ফলে এসব মামলার ১২ হাজার অপরাধী শাস্তি ছাড়াই বীরদর্পে ঘুরে বেড়াতে থাকে।
কিন্তু ২০১২-১৩ সালে নির্যাতনের পরিধি বেড়েছে। দেশের ৪৩ জেলায় ব্যাপক হারে নির্যাতন ঘটে চলেছে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৬ সংখ্যালঘু সদস্য। সাম্প্রতিক সহিংসতায় ৪৩ জেলায় সংখ্যালঘুরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম, কঙ্বাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, গাইবান্ধা, সিলেট, মৌলভীবাজার, ঠাকুরগাঁও, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, জয়পুরহাট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, গাজীপুর, বরিশাল, দিনাজপুর, চাঁদপুর, খুলনা, মুন্সীগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, শেরপুর, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, ফেনী, নাটোর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, ঝিনাইদহ ও রাজশাহী। তবে কয়েকটি জেলায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষও নিহত এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি দফতর, যানবাহন অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।
মহাজোট সরকারের গত মেয়াদে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামুতে ১২টি বৌদ্ধ বিহারে এবং ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধ ও হিন্দু জনগোষ্ঠী ও তাদের উপাসনালয়ের ওপর তাণ্ডব চালানো হয়। রামুতে বৌদ্ধ মন্দির, মঠ পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বান্দরবানে বৌদ্ধ মন্দির ও সংলগ্ন বৌদ্ধপল্লী হামলার শিকার হয়। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জ, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও গফরগাঁওয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় প্রায় ৪০০ নারী-পুরুষ আহত হয়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর এলাকা খ্যাত পিরোজপুরের বিভিন্ন স্থান সংখ্যালঘুদের জন্য রীতিমতো মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে। প্রথম আলো।
২০১৩ সালে পাবনার সাথিয়া উপজেলার বনগ্রাম বাজারে ধর্মীয় অবমাননার ভুয়া অভিযোগে অর্ধশত হিন্দু বাড়ীঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।বনগ্রাম বাজারে স্থানীয় ব্যবসায়ী বাবলু সাহার ছেলে রাজীব সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ফেসবুকে ইসলামের কটূক্তি করে পোস্ট দেয়ার। বনগ্রাম হাটের দিনে শত শত লিফলেট বিলিয়ে সাধারণ জনগণকে উত্তেজিত করা হয়।কিন্তু পরে পুলিশের তদন্তে দেখা যায় রাজীব এরকম কোনো পোস্ট দেয়নি।
অথচ ধর্মীয় অবমাননায় উসকানি পেয়ে সেদিন হাজার হাজার লোকজন সাহাপাড়ায় হামলা করে। এলাকার প্রায় ৩০-৩৫টি হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর এবং বাজারে কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরসহ বাবলু সাহার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালায়। বাড়ীতে ভাঙচুর করে পারিবারিক মন্দিরে আগুন দেয় আর প্রতিমা ভাঙচুর করে। বিবিসি বাংলা।
২০১১ থেকে ২০১৬ পযন্ত
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে গত ৫ বছরে বাংলাদেশে ২৮০৩টি হিন্দু বাড়ীঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।অথচ পুলিশের হিসেবে দেখা যায় এই পাঁচ বছরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে মাত্র ২৭৩টি।২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০৭ জন হিন্দুর লাশ উদ্ধার, ২৫ জন ধর্ষণের শিকার, ২৩ জনকে ধর্মান্তরের চেষ্টা, ১৭২ জন দেশত্যাগ, ৬১০ জনকে দেশত্যাগের হুমকি, ৭৭৫ জনকে জখম ও আহত করার হুমকি, ২৩৫টি মন্দিরে হামলা, ভাংচুর, ৩১ জন নিখোঁজ, চার হাজার ১১ জনকে নির্যাতন, ভীতি প্রদর্শন, পূজা বন্ধের হুমকি, মারধর, চুরি, চাঁদাবাজি এবং ৪৬৫টি লুট, হামলা, আগুন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। দৈনিক সমকাল।
২০১৬ সালে মোট ৭৭টি মন্দিরে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭ জন। এ ছাড়া অপহৃত ২৮ ব্যক্তির সঙ্গে নিখোঁজ হয়েছে ২৪ জন। একই সঙ্গে বসতবাড়ি ও জমিজমা দখলের হাজার খানেক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজারের মতো। প্রথম আলো।

২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৩৩০ দিনে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সরকার দলীয় নেতা কর্মীসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থকদের দ্বারা হামলা লুটপাট, অগ্নি সংযোগসহ ১৭৯২টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। অনেক ঘটনার সাথে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদের অভিযোগও রয়েছে। এসব ঘটনায় ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার সংখ্যা কমপক্ষে ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজারটি) এবং ২৭৩৪.৮১ একর ভূমি জবর দখল হয়েছে। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ৮৮ জন, হত্যার হুমকি ২৮৭ জনের ওপর, হত্যা চেষ্টা ৬৮ জনের ওপর, জখম ও আহত করা হয়েছে ৩৪৭ জনকে, নিখোঁজ হয়েছে ৪৮ জন, চাঁদাবাজী, মারধর, আটক রেখে নির্যাতন হয়েছে ১১১ ঘটনা, চাঁদাবাজী হয়েছে ৪০ লাখ টাকা, পরিবার ও মন্দির লুট এর ৯২ টি ঘটনা ঘটেছে। বসতবাড়ী ও সম্পত্তির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৩৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, ২৭৩৪.৮১ একর সম্পত্তি দখল হয়েছে। এবিপি নিউজ।
রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজ স্বার্থের জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, হত্যা ও নির্যাতন করছে। কিন্তু প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করেছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনার বিচার না হওয়ায় এই সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে ও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
এএলআরডি থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও উচ্ছেদের একটি সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়। দৈনিক সমকাল।
২০১২ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ১১টি ঘটনার বিশ্লেষণ করে বলা হয়, রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজ স্বার্থের জন্য হামলা, হত্যা ও নির্যাতন করেছেন। প্রশাসন প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নীরব ভূমিকা পালন করে। এসব ঘটনার বিচার না হওয়ার কারণে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে ও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এক গোলটেবিলে ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ১১টি ঘটনার বিশ্লেষণ করে এ কথা বলা হয়। প্রথম আলো।

চলতি বছর ২০১৯ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে ২৫০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই সময়ে হত্যার শিকার হয়েছেন ২৩ জন এবং মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৬ জনের। এ ছাড়া হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ১০টি।
বাংলাদেশ প্রতিদিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.