![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২য় বিশ্ব যুদ্ধে নাৎসী বাহিনী ইহুদি নিধন শুরু করলে উইঘুর মুসলমানরা তাদের ধর্মমতনুযায়ী সমর্থন দেয় নাৎসীদের । ফলশ্রুতিতে তাদের সমর্থন জাপান জার্মান জোটের প্রতি হয় এবং তা চীনের স্বাধীনতা বিরোধী হয়ে উঠে। এছাড়া চীনের হান জনগোষ্ঠীর উপর সশস্ত্র হামলা করে উইঘুররা যা চীনা সরকার রীতিমতো তাদের দেশের সার্বভৌমত্বের আঘাত হিসেবে নগণ্য করে।
চীনের সর্ব পশ্চিমের এবং সর্ববৃহৎ প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের বসবাস। তাদের আদি নিবাস ছিল পূর্ব তুর্কিস্থানে। তুর্কিস্থান বলতে যে সকল দেশে তুরস্কের বংশোদ্ভুত জনগোষ্ঠীর বসবাস। চীনের বিভিন্ন প্রদেশে উইঘুররা বসবাস করে থাকেন। তবে সংখ্যার দিক দিয়ে জিনজিয়াংয়েই সর্বোচ্চ। সিআইএর ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুকের তথ্য মতে, জিনজিয়াংয়ে মোট ১ কোটি ২০ লাখ উইঘুর বসবাস করেন।
চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে উইঘুর মুসলিমদের বিরোধের ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে। একসময় পূর্ব তুর্কিস্থান স্বাধীন ছিল। কিন্তু ১৯১১ সালে স্বাধীন তুর্কিস্থানে মাঙ্কু সাম্রাজ্যের পতনের পর সেখানে চীনা শাসন চালু হয় এবং এই অঞ্চলকে চীনের জিনজিয়াংয়ের সাথে একীভূত করা হয়। তবে সেটা স্থায়ী করতে চীনাদের বেশ বেগ পেতে হয়। চীনের সৈন্যদের বিপক্ষে উইঘুর মুসলিমরা অস্ত্র তুলে নেয় এবং ১৯৩৩ ও ১৯৪৪ সালে দুইবার তারা স্বাধীনতাও অর্জন করে।
কিন্তু চীন একেবারেই হাল ছেড়ে দেওয়া পাত্র ছিল না। ১৯৪৯ সালে চীনের কমিউনিস্টদের কাছে উইঘুররা আবারো পরাজিত হয় এবং সেখানে স্থায়ীভাবে চীনা শাসন কায়েম হয়। তবে উইঘুর সংখ্যাগরিষ্ঠ জিনজিয়াংকে স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান করে কমিউনিস্টরা।
উইঘুর মুসলিমদের প্রতি চীন সরকারের খড়গহস্ত হওয়ার বড় কারণ ২০০৯ সালে জিনজিয়াংয়ের দাঙ্গা। সেবছর চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ হানদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উইঘুররা।
২০০৯ সালের সেই দাঙ্গায় প্রায় ২০০ এর কাছাকাছি মানুষ মৃত্যুবরণ করে, যার অধিকাংশই ছিলেন "হান" জনগোষ্ঠীর। পরবর্তীতে চীনের সরকারি বাহিনী উইঘুরদের ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি ও নির্যাতন চালানো শুরু। এরপর ২০১৪ সালে এরকম আরো কিছু ঘটনায় প্রায় একশ মানুষের প্রাণ যায়। তখন থেকেই চীন উইঘুরদের প্রতি নির্যাতনের মাত্রা কঠোর থেকে কঠোরতর করে। যা সম্প্রতি সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুরকে বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক করে নির্যাতন করছে চীনের নিরাপত্তা বাহিনী। যা চীনের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হলেও উঠে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগ যেভাবে নাগরিকদের ডিএনএ ডাটাবেজ তৈরি করেছে। ঠিক একইভাবে উইঘুরদের ডিএনএ ডাটাবেজ তৈরি করছে চীন।
চীনে উইঘুরদের এমন নির্যাতন ও ডিএনএ সংগ্রহের উদ্দেশ্য হলো তাদের উপর নজরদারি চালানো এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি অনুগত করে তোলা। ডিএনএর নমুনার মাধ্যমে একজন উইঘুর মুসলিমকে খুব সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। ফলে উইঘুরদের পক্ষে আন্দোলন করা সম্ভব হবে না।
প্রতি দুই মাসে প্রতিটি উইঘুর পরিবারকে পাঁচদিন করে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের দাওয়াত করতে বাধ্য করা হচ্ছে। চীন সরকার একে বলছে 'মেকিং ফ্যামিলি'।
চীনের উইঘুর মুসলিমদের ডিএনএ সংগ্রহে কারিগরি ও বিশেষজ্ঞ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন চললেও এই বিষয়ে তাদের মধ্যে কোনো মতভেদ দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিএনএ সংগ্রহের সকল যন্ত্রপাতি কেনার পাশাপাশি সেখানকার বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীও নিয়োগ দিয়েছে চীন সরকার। মূলত আমেরিকার দুইটি প্রতিষ্ঠান চীনকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এদের একটি হলো ম্যাসাচুসেটসের 'থার্মো ফিশার', আর অন্যটি হলো সান ডিয়েগোর 'ইলুমিনা'।
চীনা সরকার কখনো বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে মাথা তুলে দাড়াতে দিবে না। কারণ চীনারা স্বাধীনতা অর্জন করেছে আর বাংলাদেশ স্বাধীনতা উপহার পেয়েছে ভারতের থেকে।
২য় বিশ্ব যুদ্ধে উইঘুর মুসলমানরা চীনা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরে (১৯৪৪-১৯৪৯) পাঁচ বছর নিরলস ভাবে কাজ করে উইঘুর মুসলমানদের নিরস্ত্র করতে সামর্থ্য হয় চীনা সরকার।
তথ্য সুত্রঃ রোয়ার বাংলা, দ্যা ডেইলি সান, প্রথম আলো ও বাংলাদেশ প্রতিদিন।
©somewhere in net ltd.