![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুক ভরা ব্যাথা নিয়ে বেহায়ার মত হাঁসতে পারি ।
-- এই ঘুম থেকে ওঠো ...
-- আজ ছুটির দিন গো একটু ঘুমাই।।
-- নামাজ পরে আবার ঘুমিয়ে যেও।।
-- পরে পড়বো ওকে...
হঠাৎ কানের মধ্যে টান অনুভব করলাম যা অতি থেকে অতি তীব্র হতে লাগল চোখ খুলে দেখি বাঘিনী আমার দিকে চেয়ে আছে।। বেয়াকুফের মত একটা হাঁসি দিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেলাম এরেই বলে কপাল। ছুটির দিনেও শান্তি নাই।। এই টাইগারনীর নাম হল আফরান। নাম যেমন সুন্দর
দেখতেও পরীর মত কিন্তু কথা বার্তা বাঘিনীর মত।। বাকি সবার সাথে কি মধুর আচরণ আর আমারে হরিণ মনে করে।। আম্মু-আব্বু ক্যান আমার জন্য সুন্দর বন থেকে বাঘিনী ধরে আনল সেটা বুঝতেছিনা।। বিয়ার রাতেই টের পাইছিলাম মেয়ে তো নয় যেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার।।।
নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম ৯টার দিকে আবার ধুম-ধাম শুরু হল।
-- কি হল এবারতো ঘুমাতে দেও।
-- ওঠো নাস্তা খাবা।।
-- না আমি এখন খাবো না।।
-- পরে কিন্তু আর পাবা না,না খেয়ে থাকবা।।
-- এইটা কোন কথা হল,,দূর বউ গুলা এইরাম ক্যারে??আর আমি বিয়া করুম না।।
-- কি তুমি আরো বিয়া করার স্বপ্ন দেখো।।আজতো তোমার অবস্থা শেষ।।
-- না না মুখ ফসকাইয়া বের হয়ে গেছে। তুমি আমার কত্ত সুইট বউ।।আমি ওঠে গেছি এই দেখো।।
নাস্তা খেয়ে আর ঘুমাতে পারলাম না এই সেই করে জুম্মার নামাজ পরে বাসায় আসলাম।।।
-- এই তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হও (আফরান)
-- কেন??
-- বেড়াতে যাবো।।
-- আমি কোথাও এখন যাবোনা।। আমি ঘুমাবো।
-- তুমি যাবা কিনা??
-- যাবোনা??
-- তুমি কি করে ঘুমাও আমিও দেখবো আজ।।।
যাই হউক খেয়ে ঘুমাতে গেলাম।। ঘুমটা ঠিকঠাক ভাবে চলে আসছে এর মধ্যে আমি অনুভব করলাম আমার শরীরে এক বালতি পানি ছাড়া হইছে।। মেজাজ গেল খারাপ হইয়া উঠেই ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।।। আর কিছু কথাও শুনিয়ে দিলাম..
-- কি পেয়েছো সব কিছুতে বাড়াবাড়ি।। তোমার কথায় আমি চলবো নাকি।। এর পরও যদি বাড়াবাড়ি করতে হয় নিজের বাপের বাড়ি করো।।
-- সরি।।
এইটা বলেই আফরান আমার সামনে থেকে চলে গেল।। আর আমিও ঘুমিয়ে গেলাম। বিকেল ৪ টায় ঘুম ভাঙ্গলো।। চড় টা মারার জন্য কষ্ট হচ্ছে ইশ এভাবে না মারলেও পারতাম।। ও যা অভিমানী মনে হয় বাপের বাড়ি চলে গেছে কিন্তু অন্য রুম থেকে ওর কথার আওয়াজ আসছে তার মানে এখনো যায়নি বাঁচলাম।।।।
আম্মুর মুখ থেকে শুনলাম ও নাকি বিকেলে খায়নি মন খারাপ করে বসে আছে...আমিও মাঝে মাঝে একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলি...তাই ওর সামনে গেলাম।।
-- তুমি খাওনি কেন??(আমি)
-- এমনি খিদা নেই।(আফরান)
-- আসলে আমি সরি... মাথাটা বেশি গরম হয়ে গেছিলো।। প্লীজ খেয়ে নাও।।
-- না খাবোনা।।
-- ওকে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো এবারতো খাও।।
-- তুমি খাইয়ে দিবাতো??
-- হিঁ,,,হিঁ লজ্জার ব্যাপার কেউ দেখলে কি বলবে!!
-- তাহলে আমিও খাবোনা তুমি না খাইয়ে দিলে।।
পড়লাম মহা বিপদে যাই হউক নিজেই ওকে তুলিয়ে খাওয়াতে হল।।
৫ টার দিকে ওকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম।। একটা পার্কে গেলাম কিছু সময় এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি, ফুচকা এসব খেলাম আর একটা জিনিস বুঝলাম আসলে ওতো টাইগারনী না।। এমন সময় শুরু হল বৃষ্টি। আমার আবার বৃষ্টিতে ভিজলেই জ্বর এসে যায়।।
-- এই চলো বৃষ্টিতে ভিজি।।(আফরান)
-- বৃষ্টিতে ভিজলে আমার জ্বর চলে আসে।।(আমি)
-- আরে আসবেনা প্লীজ চলোনা।
অতএব ম্যাডামের কথা রাখতে ভিজতে হলো।। বাসায় ফিরেই মাথা ব্যাথা শুরু হলো।। যা হবার তাই হলো প্রচন্ড জ্বর আসলো। আমিতো শেষ এই বুঝি পরপারে গেলাম চোখটা ঠিক করে মেলতেও পারছিনা।। রাত ২ টা আমার জ্বর কিছুটা কমেছে তাই চোখটা খুললাম। খুলে দেখি আমার মাথার পাশে বসে আছে আফরান চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরছে আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে নয়তো কপালে কাপড় ভিজিয়ে দিচ্ছে।
-- এই তুমি কাঁদছো কেন?(আমি)
-- এখন তোমার কেমন লাগছে?(আফরান)
-- হুম ভালো।। কিন্তু তুমি এভাবে কাঁদছো কেন??
-- আমার জন্যেই তোমার এমন হল।।
-- দূত্তরি এটা এমনি হয়।। এখানে তোমার দোষ কি?? কান্না থামাও নইলে কিন্তু খুব খারাপ হবে। আম্মু-আব্বু কি ঘুমিয়েছেন?
-- এখানেই ছিলেন,, একটু আগে আমি জোর করে রুমে পাঠিয়ে দিয়েছি।।
-- জ্বর আসায় কিন্তু ভালোই হয়েছে??
-- কি???????
-- আরে হুম,,আমার এত্ত সুইট বউটা যে কাঁদতে পারে আর আমাকে এতোটা ভালবাসে বুঝতে পারলাম।।
-- হুহহহহ,,, আমি কি তোমাকে ভালবাসি না। হুহহহহ,,, এখন থেকে আর একটুকুও বাসবোনা।।
-- বাসতে হবেনা রয়েল বেঙ্গল টাইগার।।
-- কিইইইইইইইই.....
মাগো ধুমধাম করে আমার উপর পরতাছে। কি পরতাছে এইটা বলিয়া আপনাদের লজ্জা দিতে চাই না।।।
তবে ব্যাপার একটা বুঝলাম তা হলো মেয়েরা যতই রাগী বা রয়েল বেঙ্গল টাইগার হবে ততই তার ভালবাসাটা তীব্র হবে।। আমার বেলাও তাই হয়েছে শাসন যত ভালবাসাও তার থেকে অনেক গুণ বেশি।। যাই হউক আমার রয়েল বেঙ্গল টাইগার বউটাই বেষ্ট মুই আর বিয়া করুম না।
--
--
Written By: হলদে হিমুর নীল কাব্য (নীল আদনান)
©somewhere in net ltd.