![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনচাই এমন একটি ব্লক যেখানে থাকবে গল্প,ইতিহাস,কবিতা,প্রবন্ধ,নির্বন্ধ, কৌতুক,আলোচনা সমালোচনা আলাদা আলাদা কিন্তু করতে জানি নাতো এমন করতে। যিনি এই ব্লগে লেখার সূযোগ করে দিলেন তাঁকে চিনলাম নাতো! তথাপি অচেনা এই কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা চিত্তে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী-বাঙালী স্থায়ী অধিবাসীসহ দেশে-বিদেশে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী অন্যতম পক্ষ আওয়ামীলীগ বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ঠ্রীয় ক্ষমতায় আসীন।রাষ্ঠ্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর ইতোমধ্যে দ্বিতীয় মেয়াদের সাড়ে তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।বর্তমান মেয়াদে আর মাত্র দেড় বছর বাকী।তার মধ্যে শেষের একবছর তুঙ্গে উঠবে নির্বাচনী রাজনীতি। আর এদেশের রাজনীতি মানেই সংঘাতময়। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে অবহশিষ্ঠ ছয় মাসের মধ্যেই করতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে,আগামী ছয় মাসের মধ্যে কেউই সেই সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে না।সরকার হয়ত বলবে বা বলেই চলছে যে,সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক। ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ’মি বিরোধ নিঃ¯পত্তি চেয়ারম্যান পদে একজন অবসর প্রাপ্ত বিচারপতিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে,২০০১ সালের কমিশন আইনের বিরোধাত্মক ও অগণতান্ত্রিক ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে,পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের একজন পাহাড়ী সাংসদকে প্রতিমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রত্যাগত শরনার্থী ও আভ্যন্তরীন উদ্বাস্তু পূর্নবাসন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দুজন সাংসদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি পুনগঠন করা হয়েছে,একটি ব্রিগেড হেডকোয়াটার সহ ৩৫টি অস্থায়ী ক্যা¤প প্রত্যাহার করা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তার অব্যবহিত ধারাবাহিক কার্যকর উদ্দ্যোগগুলো যদি না নেয়া হয় তাহলে এসবের কোন কিছুরই মূল্য নেই।
ক.ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তির উদ্দ্যোগ
যেমন ভ’মি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সত্য,কিন্তু এই কমিশন আইনের বিরোধাত্মক ও অগণতান্ত্রিক ধারার সংশোধন বিগত সাড়ে তিন বছরেও স¤পন্ন হতে পারেনি।পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়,ভ’মি মন্ত্রনালয়ও আন্তঃমন্ত্রনালয় বৈঠকসহ সর্বশেষ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির সভায় কোনটায় বাদ নেই যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সুপারিশ অনুসারে এই আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়নি।সিদ্ধান্ত হয় কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। একটা রহস্যজনক জায়গায় এই আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া বারে বারে আটকে থাকে।তার সাথে যুক্ত হয়েছে ভ’মি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত খাদেমুল ইসলামের একতরফা,অবৈধ,অগণতান্ত্রিক ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত কার্যকলাপ।চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ব্যতীত ভ’মি কমিশনের অপরাপর সদস্যদের মতামতকে তোয়াক্কা না করে এক তরফাভাবে ভ’মি জরিপ ঘোষনা,ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তির দরখাস্ত আহবান,রাজনৈতিক কায়দায় পদযাত্রা-প্রচারনা আয়োজন,ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তি সংক্রান্ত মামলার শুনানীর উদ্দ্যোগ ইত্যাদি এমন কোন কাজই নেই যেখানে তিনি বিতর্কের সৃষ্ঠি করেননি বা ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তির প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেননি।তাহলে ভ’মি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে খাদেমুল ইসলাম কে নিয়োগ দিয়ে নিট ফল কি পাওয়া গেল? একেবারেরই শূন্য। উপরন্তু আরো জটিলতা ও অনাস্থা সৃষ্ঠি করা হয়েছে। তাই ভ’মি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের বিষয়টি চুক্তি বাস্তবায়নের যে ফিরিস্তি দেয়া হয় বস্তুতঃ তার কানাকড়ি মূল্য নেই।আইনমন্ত্রী বিভিন্ন সভা সমাবেশে প্রায়ই বলে থাকেন,ভ’মি কমিশনের পাহাড়ী সদস্যরা নাকি কমিশনের চেয়ারম্যানকে সহযোগীতা করছে না। কমিশনের চেয়ারম্যান যদি আগা-গোড়াই একতরফা ,বিধি-বর্হিভ’ত ও উদ্দেশ্য-প্রনোদিত কার্যকলাপে লিপ্ত থাকেন তা হলে সেই অবৈধ কাজে কমিশনের অপরাপর সদস্যরা সহযোগীতা দেবেন কোন যুক্তিতে?
ভ’মি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর মেয়াদ (তিন বছর) গত ১৯ জুলাই শেষ হয়েছে।এপ্রেক্ষিতে ভ’মি মন্ত্রনালয় থেকে চেয়ারম্যান পদে অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি গোলাম রাব্বানী ও খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।বিচারপতি গোলাম রাব্বানী কে প্রস্তাব করা বস্তুতঃ লোকদেখানো ও প্রতারনামুলক বৈ কিছু নয়। বিচারপতি গোলাম রাব্বানী কমিশনের চেয়ারম্যান পদে যোগ্য ও গ্রহন যোগ্য হলেও বয়সের কারনে তিনি ইতিমধ্যে প্রায় অচল। সুতরাং তিনি কমিমনের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানাবেন এটা জেনেই ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তার নাম ও প্রস্তাব করা হয়েছে। জনাব গোলাম রাব্বানী দায়িত্ব না নিয়ে আলটিমেটলি যাতে খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ছাড়া কোন বিকলপ থাকে না সেই দুরভিসন্ধি নিয়ে এই ধরনের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে ধারনা করা যায়।এই দুরভিসন্ধিমুলক প্রস্তাবের পেছনে ভ’মি মন্ত্রনালয়ের কিছু অসৎ ও সাম্প্রদায়িক কর্মকর্তা এবং চিহ্নিত একটি বিশেষ প্রভাবশালী কায়েমী স্বার্থবাদী মহলসহ সরকারের নীতি-নির্ধারকদের হাত রয়েছে বলে নিঃসন্দেহে বলা যায়।
যেখানে বিগত তিন বছর মেয়াদের মধ্যে খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ব্যাপক বির্তকের জন্ম দিয়েছেন,যাদের ভ’মি সমস্যা নিরসনের জন্য এই ভ’মি কমিশন গঠিত তাদের আস্থা ও বিশ্বাস স¤র্পূনভাবে হারিয়েছেন,যার এক তরফা , দুরভিসন্ধিমূলক ও বিধি-বর্হিভূত কার্যকলাপের জন্য তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারনের জন্য পার্বত্যবাসী দীর্ঘদিন ধরে জোরালো দাবী জানিয়ে আসছে সেখানেই খাদেমুল ইসলাম কে দ্বিতীয়বারের জন্য কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের প্রস্তাবের অর্থ হচ্ছে ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তি তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে আরো জটিল করে তোলা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে,খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে দ্বিতীয়বারের জন্য চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে আগুন জ্বলবে। এসব দেখে শুনে -জেনে ইচ্ছাকৃত ভাবেই ভ’মি মন্ত্রনালয় থেকে খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করার পেছনে মূল লক্ষ্যই হল পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক ভ’মি বিরোধ সি¯পত্তি তথা জুম্মদের ভ’মি প্রর্ত্যপনের কাজকে স¤র্পূনভাবে বাধাগ্রস্থ করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে অচলাবস্থা সৃষ্ঠি করা। এভাবেই আজ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দুরভিসন্ধিমুলকভাবেই এই সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলা হয়েছে।
খ.পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ভ’মিকা
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে একজন পাহাড়ী সাংসদকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়াকে চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর অন্যতম হিসেবে সরকার দেশে –বিদেশে প্রায় গর্ব করে ফিরিস্তি তুলে ধরে। কিন্তু প্রতিমন্ত্রী বা তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রনালয় পার্বত্য চট্টগ্রামের স¦ার্থরক্ষায়,উন্নয়নে ও চুক্তি বাস্তবায়নে কি ভ’মিকা রাখছেন?বিগত সাড়ে তিন বছরে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে অহস্তান্তরিত গুরুত্বপূর্ন বিষয় সমূহ যেমন,জেলার আইন-শৃঙ্খলা,ভ’মি ও ভ’মি ব্যবস্থাপনা,পুলিশ(স্থানীয়),মাধ্যমিক শিক্ষা,যুব কল্যান,রক্ষিত নয় এমন বন সহ পরিবেশ,জন্ম-মৃত্যু ও অন্যান্য পরিসংখ্যান ইত্যাদি হস্তান্তরে কি কোন কার্যকর উদ্দ্যোগ নিয়েছেন? মোটেই না। সর্বশেষ জেলা পুলিশ (স্থানীয়) বিষয়টি হস্তান্তরের জন্য মন্ত্রনালয়ে লোক দেখানো একটি সভা আয়োজন করা হয়েছে যেখানে পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিনিধিসহ আমলারা এমন সব অভ’তপূর্ব অজুহাত খাড়া করেছেন যেন সরকারের চুক্তি সই করাটাও ছিল প্রচলিত আইন ও সংবিধান পরিপন্থি বা চুক্তি স্বাক্ষরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার চরম রাজনৈতিক অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছিলেন। তাদের যুক্তি হলো, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী নাকি একক পুলিশ বাহিনী। এটাকে খন্ডিত করার কোন সূযোগ নেই।প্রশ্ন জাগে,তা হলে সরকার কীভাবে মেট্রোপলিটন পুলিশ,রেলওয়ে পুলিশ,শিলপ পুলিশ,র্যাব ইত্যাদি গঠন করল? আর সেসব উর্বর মস্তিস্কের আমলাদের হয়তো স্মরন থাকবে কিনা জানি না,পার্বত্য চট্টগ্রামে সেই ১৮৮১ সালে ফ্রন্টিয়ার পুলিশ রেগুলেশনের অধীনে পাহাড়ীদের নিয়ে স্বতন্ত্র পুলিশ বাহিনী ছিল।বস্তুতঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের দূর্বল অবস্থানের কারনেই এই ধরনের অতিশয় দেশপ্রেমিক আমলারা চুক্তি বিরোধী এত ¯পর্ধা দেখানোর সাহস পাচ্ছেন বলে প্রতীয়মান হয়। খুটির জোর না থাকলে ছাগল কখনোই এতজোরে নাচে না। এই হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে বিষয় হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রাথমিক উদ্দ্যোগের একটা নমুনা।
শুধু তাই নয়,এই মন্ত্রনালয় থেকে গত ২৮জানুয়ারী ২০১০তারিখ “উপজাতীয়“ সম্প্রদায়গুলোকে “আদিবাসী“ হিসেবে অভিহিত করার অপতৎপরতা এবং পার্বত্য সন্ত্রাসকে মুসলিম বসতি স্থাপনকারীদের জঙ্গীবাদ হিসেবে চিহ্নিতকরনের অপচেষ্ঠা“ শীর্ষক এমন দুটি চিঠি তিন পার্বত্য ডেপুটি কমিশনার সহ বিভিন্ন সরকারী কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে যা ছিল স¤র্পূনভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত,সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক ও জাতি বিদ্বেষী।দ্বিতীয়ত্বঃ পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের স্বার্থরক্ষাকারী এই মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত-নির্ধারনী ভ’মিকায় এই অঞ্চলের জনগণের প্রতিনিধিত্ব একেবারেই গৌণ। এই মন্ত্রনালয় যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বার্থরক্ষায়,উন্নয়নে ও চুক্তি বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ ভ’মিকা রাখবে সেখানে এই মন্ত্রনালয়কে নানা নেতিবাচক ও ষড়যন্ত্রমূলক ভ’মিকায় থাকতে সবচেয়ে বেশী দেখা যায়।
গ.চুক্তি বাস্তবায়নের অন্যান্য উদ্দ্যোগ
অনুরূপভাবে টাস্কফোর্সেও চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দলের দুজন পাহাড়ী সাংসদকে নিয়োগ (প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা স¤র্পন্ন) বা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক পদে সংসদ উপনেতাকে নিয়োগ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধনে কোন ভ’মিকায় রাখতে পারেনি।মূলতঃ যত না পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে,ততধিক হলো ক্ষমতাসীন দলের দলীয় সাংসদদের প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার পদবী উপহার দেয়া ও জনমতকে প্রশমিত করার উদ্দেশ্যেই এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এই সরকারের আমলে চুক্তি বাস্তবায়নের কিছুটা প্রশংসনীয় পদক্ষেপ বলা যায় সেটা হলো কাপ্তাই ব্রিগেড হেডকোয়াটারসহ ৩৫টি অস্থায়ী ক্যা¤প প্রত্যাহার করা।কিন্তু চুক্তি অনুসারে অস্থায়ী ক্যা¤প প্রত্যাহারের উদ্দ্যোগটাও সেই পর্যন্তই থেমে যায়। আর কোন অগ্রগতি লাভ করেনি। চুক্তি অনুসারে যে ছয়টি সেনানিবাস তিন পার্বত্য জেলায় থেকে যাবে(অন্য কোন জেলায় দুটি করে সেনানিবাস নেই)সেই ছয়টি ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো প্রায় চারশতাধিক অস্থায়ী ক্যা¤প রয়েছে। আর “অপারেশন উত্তরন“ নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে এক প্রকার সেনা কর্তৃত্ব জারী করা হয়েছে তাও প্রত্যাহারের কোন উদ্দ্যোগ নেয়া হয়নি বিগত সাড়ে তিন বছরের মেয়াদে।
এমনিতর এক অবস্থায় আওয়ামীলীগের নের্তৃত্বে বর্তমান মহাজোট সরকারের শেষ মেয়াদে এসে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোকে পরিনত করা হয়েছে দুনীতির আখড়ায়।ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ শাসন ব্যবস্থা এখনো গড়ে উঠতে পারেনি। চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় অধ্যুষিত বৈশিষ্ঠ সংরক্ষনের বিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে প্রতি পদে পদে।অব্যাহত ভাবে সমতল অঞ্চল থেকে বহিরাগতরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ঢুকছে ও বসতি গড়ে তুলছে। তারা পাহাড়ী-বাঙালী স্থায়ী অধিবাসীদের জায়গা-জমি জবর দখল করছে।আভ্যন্তরীনভাবে উদ্বাস্তু পাহাড়ীদের পুনবার্সনের উদ্দ্যোগ বর্তমানে বিস্মৃতির অতলগর্ভে নিমজ্জিত হয়ে পড়ছে। জুম্ম শরনার্থী ও আভ্যন্তরীন পুনবার্সন সংক্রান্ত টা¯ক ফোর্সকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কোটি কোটি টাকা ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সদস্যদের স্বার্থ পুরনসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভোটার তালিকা প্রনয়ন এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। এই হচ্ছে বর্তমান সরকারের শেষ মেয়াদে এসে চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত হিসাবের উদ্বেগজনক সারসংক্ষেপ বা পরিনতি।
ঘ.সুপ্রিম কোটে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সংক্রান্ত মামলা
উদ্বেগজনক অবস্থায় ঝুলে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের বিরূদ্ধে হাইকোটে দায়ের করা মামলা রায়,যা সুপ্রীম কোটের আপীল বিভাগের বিচারাধীন রয়েছে। আপীল শুনানী যদি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে মোকাবেলা করা না হয় তাহলে এটা নিয়ে দেখা দেবে এক চরম রাজনৈতিক সংকট। কিন্তু এই মামলা মোকাবেলায় সরকারকে অধিকতর কার্যকর উদ্দ্যোগী ও সক্রিয় ভ’মিকায় থাকতে দেখা যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয় না।পক্ষান্তরে হাইকোটের রায়কে কেন্দ্র কওে বর্তমান সরকার একটা রাজনৈতিক ফায়দা লুটার মতলবে রয়েছে বলে বাহ্যতঃ দৃষ্ঠিগোচর হয়। আর বি,এন,পি –জামাতের নেতৃত্বে বিরোধী জোটতো শ্যেনদৃষ্ঠিতে তাকিয়ে রয়েছে এই মামলাকে কেন্দ্র করে যথোপযুক্ত সময়ে রাজনৈতিক ফায়দা ঘরে তোলার জন্য। এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতি সরকারের যে আশঙ্কাজনক উদাসীনতা দৃষ্ঠিগোচর হচ্ছে তাতে ¯পষ্ঠভাবে বুঝা যায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কতটা আন্তরিক ও সদিচ্ছাপূর্ণঃ যদিও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি –নির্ধারকরা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে একের পর এক আন্তরিকতার প্রতিশ্রুতি আওড়িয়ে যাচ্ছেন। বস্তুতঃ মামলা মোকাবেলায় সরকারের অব্যাহত উদাসীনতাই প্রমাণ করে যে,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় নেই।আরো হাস্যকর বিষয় যে,একদিকে সরকারের মন্ত্রী-আমলারা চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন,অন্যদিকে আবার চুক্তির অধিকাংশ বিষয়ই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তারা স্ববিরোধী ও বিভ্রান্তিকর বুলি আওড়িয়ে চলেছেন।বস্তুতঃ এটা তাদের দুর্বলতাকে ধামাচাপা দিতেই বা তাদের অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার লক্ষ্যেই তারা এমনতর উদ্দেশ্য-প্রণোদিত বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। কিন্তু এটা তাদের বুঝা দরকার যে,চোখ বন্ধ করলেই প্রলয় বন্ধ হয় না। চুক্তি বাস্তবায়নের ভান করলে চুক্তি বাস্তবায়ন হয় না বা প্রবল জনমতকে প্রশমিত করা যায় না।
ঙ.চুক্তি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা
গত ৬জুলাই ২০১২রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত হেডম্যান সম্মেলন চলাকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হেডম্যানদের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেছেন। উক্ত ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সকলের সহযোগীতা চেয়েছিলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে,জুম্ম জনগণসহ পার্বত্যবাসী পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে রাজনৈতিক ও শান্তিপুর্ণভাবে সমাধানের স্বার্থেই বরাবরই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে পার্বত্যবাসীর আন্তরিকতার কোন ঘাটতি আছে বলে মনে হয় না। পার্বচট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর আজ প্রায় ১৫ বছর এবং আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে সাড়ে ৩ বছর ধরে চরম ধৈর্য ও ঐকান্তিক সহযোগীতা দিয়ে চলেছে। তারই অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সরকারের সরকারের সকল বৈঠকে অংশ গ্রহন করে আসছে। এ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির অনুষ্ঠিত ৫টি সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা আন্তরিকতার সাথে অংশ গ্রহন করেছেন এবং উদ্দ্যোগ নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। এই সরকারের আমলে পূণগঠিত প্রত্যাগত শরনার্থী ও আভ্যন্তরীন উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের অনুষ্ঠিত সকল সভায় (মোট তিন সভা অনুষ্ঠিত)পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি ও প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থী প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহন করেছেন। এর আগে চাকমা রাজা ব্যারিষ্ঠার দেবাশীষ রায় ও গত ২রা মে ২০১১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত ও পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য কতিপয় সুপারিশমালাও প্রধানমন্ত্রীর নিকট জমা দিয়েছেন।
খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তি কমিশনের মাত্র একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৭জানুয়ারী ২০১০(খাদেমুল ইসলাম দেড় ডজনের মতো সভা অনুষ্ঠানের যে দাবী করছেন তা মূলতঃ তিন জেলায় সফরকালে জেলার সরকারী কর্মকর্তা ও গণমান্য ব্যক্তিদের সাথে অনুষ্ঠিত সভা-যেগুলো তিনি ভ’মি কমিশনের সভা হিসেবে গণ্য করেছেন। এসব সভা তিনি জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ডেকেছেন যা ছিল বিধি-বর্হিভ’ত,কারন জেলা প্রশাসকেরা ভ’মি কমিশনের সাথে সরাসরি যুক্ত নয়)। ২৭ শে জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ভ’মি কমিশনের একটি মাত্র সভায় ও ভ’মি কমিশনের সদস্য হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান,তিন সার্কেল চীফ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণ যোগদান করেন।২০০১ সালে প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ’মি বিরোধ নি¯পত্তি কমিশন আইনের বিরোধাত্মক ধারা সংশোধনের জন্য এ সরকারের আমলে আন্তঃমন্ত্রনালয় বৈঠকসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় ও ভ’মি মন্ত্রনালয়ে এ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত প্রায় ডজন খানেক সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধি যোগদান করেছেন এবং উদ্দ্যোগ নিয়ে বিরোধাত্মক ধারা গুলো সংশোধনের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। এমনকি এই আইন সংশোধনের জন্য ভ’মি মন্ত্রীর সভাপতিত্বে ১০ অক্টোবর২০১০রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রনালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সভায় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান,তিন সার্কেল চীফ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত করেন। সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারী ২০১২প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার ও বৈঠক করেন।
সুতরাং উল্লেখিত তথ্য থেকে এটা ¯পষ্ঠ বুঝা যায়,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পার্বত্যবাসী অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সহযোগীতা প্রদান করে চলেছে। চুক্তি বাস্তবায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি বা সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা সহযোগীতা প্রদান করছেন না বা ভ’মি কমিশনের সভায় কমিশনের পাহাড়ী সদস্যরা যোগদান করেন না বলে সরকারের কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল থেকে যে অপপ্রচারনা চালানো হয় বা জন সংহতি সমিতি বা সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য -প্রণোদিতভাবে যে কুৎসা রটানো হয় সেই ষড়যন্ত্রকারীদের অপপ্রচারনায় প্রভাবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কথা বলেছেন কিনা তা যথেষ্ঠ ভাববার অবকাশ রয়েছে। বলাবাহুল্য,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্দ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। এক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ,পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত প্রতিষ্ঠান সহ পার্বত্যবাসীর সহযোগীতা দেয়া না দেয়ার প্রশ্নই আসে না বা সহযোগীতা দিলেও তা কোন কাজেই আসবে না। বিগত সাড়ে তিন বছরে সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তি বাস্তবায়নের কোন কার্যকর উদ্দ্যোগ না নিয়ে এভাবে উল্টো পার্বত্যবাসীর সহযোগীতা চাওয়ার অর্থ হলো পার্বত্য বাসীর উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দেয়ার একটা কৌশল বৈ কিছু হতে পারে না।
চ.কেবল প্রতিশ্রুতি নয়,প্রকৃত বাস্তবায়ন চাই
বলাবাহুল্য যে, বর্তমান সরকার তথা দেশের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে চরম অগণতান্ত্রিক ধারা পরিব্যাপ্ত থাকার কারনেই আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চরম প্রতারনা করা হচ্ছে বা বিগত সাড়ে তিন বছরের দীর্ঘ সময়েও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। এই সরকার যদি গণতান্ত্রিক হলে বা রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল থাকলে কিংবা জনগণের ন্যায্য অধিকার ও আশা-আকাঙ্কার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মতো একটি জনদলিলকে যার উপর এই দলিল বাস্তবায়রের গুরু দায়িত্ব রয়েছে সেই সরকার কখনোই প্রথম মেয়াদের সাড়ে তিন বছর(২০০৯-২০১২)দীর্ঘ সাত বছর ধরে অব্যাহতভাবে প্রতিশ্রুতির ফাইলে বস্তাবন্দী করে রাখতো না।
গত ২৮মে ২০১২জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির ৫ম সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ¯পষ্ঠই বলেছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ সরকারের প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতে কান্ত ও বিক্ষুদ্ধ। তারা আর প্রতিশ্রুতি নয়,পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগন চুক্তির প্রকৃত বাস্তবায়ন চায়। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন দৃশ্যমান হতে হবে বলে তিনি জোরালো মত তুলে ধরেন। অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।আর এজন্য সরকারকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও তিনি সর্তক করে দেন।তার এই সর্তকবাণী নিছক কোন রাজনৈতিক বুলি হিসেবে ভাবলে সরকার বা শাসকগোষ্ঠী ভ’ল করবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে,শ্রী লারমা এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন নির্ধায়ক পক্ষ। কিন্তু তার পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখা সম্ভব নয় যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগনকে চরম বঞ্চনার মধ্যে রাখা হয়,চরম প্রতারনার মধ্যে ঠেলে দেয়া হয় বা আন্দোলনের একটা অনুকুল পরিস্থিতি তৈরী করে রেখে দেয়া হয়। এই অঞ্চলের প্রবল জনমতের বিরুদ্ধে তার যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
দেশে ১/১১ এর মাধ্যমে জারীকৃত জরুরী অবস্থার সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতির নেতৃত্বের উপর যে চরম দমন –পীড়ন চালানো হয় তারপর থেকে দৃশ্যতঃ প্রতীয়মান হয় যে,বর্তমান সরকার সহ কতিপয় কায়েমী স্বার্থবাদী মহল সন্তু লারমাকে তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতিকে দুর্বল হিসেবে বিবেচনা করছে। ফলশ্রুতিতে সন্তু লারমার সর্তকবানীকে ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই নয় বলে তারা বিবেচনা করছে।তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না করলেও চলবে এমন ধরনের ধারনা তারা পোষন করে চলেছে। কিন্তু বিষয়টাফল সন্তু লারমা বা পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি কতটা দূর্বল বা সবল হয়েছে সেটা নয়,বিষয়টা হচ্ছে জনগনের অধিকার ও আশা আকাঙ্খা শাসক গোষ্ঠীর তরফ থেকে কতটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বা কতটা ভ’লন্ঠিত করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অব্যাহত প্রতারনার মাধ্যমে যদি জনগনকে চরম বঞ্চনার মধ্যে রেখে দেয়া হয় তা হলে এটা ইচ্ছা-নিরপেক্ষভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যা কখনই হতে দেয়া যায় না।
বস্তুতঃ অনেক কালক্ষেপন হয়েছে, আর দেরী নয়। সরকার যদি দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসে তাহলে অবশিষ্ঠ মেয়াদের মধ্যে ও চুক্তির অবাস্তবায়িত অনেক বিষয় বাস্তবায়ন করা যাবে।দরকার শুধু সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক উদ্যোগ এবং সেই সাথে সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা চুক্তি বিরোধী মহলকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না দেয়া। তাই অবশিষ্ঠ মেয়াদের মধ্যেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির স¤পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য সরকার এগিয়ে আসুক এবং এলক্ষ্যে সময়সুচী ভিক্তিক কর্মপরিকলপনা ঘোষনা পূর্বক কার্যকর উদ্দ্যোগ গ্রহন করুক এটাই এখন পার্বত্য বাসীসহ দেশের অসাম্প্রদায়িক,গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা।
তারিখঃ২২জুলাই২০১২.
(লেখাটি সেবাচিত্র সাময়িকীর জন্য সংগৃহীত কিন্তু প্রকাশনার অনিশ্চয়তার কারনে ব্লকে প্রকাশ করা হল-উচ্চতমনি তঞ্চঙ্গ্যা).
২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৯
বিপদেআছি বলেছেন: ভীতু সিংহ বলেছেন: কথা সত্যি, কিন্তু এসব বাস্তবায়ন করবে কে? বাঙ্গালীরা আছে নিজেদের হাজারো সমস্যা নিয়ে। তবু চাই পাহাড়ি-বাঙালী একসাথে মিলে মিশে থাকুক। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, সবারই সমান অধিকার আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫১
ভীতু সিংহ বলেছেন: কথা সত্যি, কিন্তু এসব বাস্তবায়ন করবে কে? বাঙ্গালীরা আছে নিজেদের হাজারো সমস্যা নিয়ে। তবু চাই পাহাড়ি-বাঙালী একসাথে মিলে মিশে থাকুক। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, সবারই সমান অধিকার আছে। পোস্টে++++