![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের গনতন্ত্র শাস্ত্র !
যদি প্রশ্ন করা হয় গনতন্ত্র শাস্ত্র বলতে কি বুঝ, উত্তর সহজ “ যে শাস্ত্র পাঠ করলে গনতন্ত্র শুদ্ধ রুপে লিখতে বলতে ও পড়তে পারা যায় তাকে গনতন্ত্র শাস্ত্র বলে” তবে বঙ্গদেশীয় গনতন্ত্র শাস্ত্রের ব্যাখা একটু ভিন্ন হতে পারে, আওয়ামীপন্থী নিখুঁত গনতান্ত্রিয় শাস্ত্র, বিএনপিপন্থি বহুদলীয় গনতন্ত্র শাস্ত্র, বামপন্থিদের বোঝা দায় রাশিয়া না কি চায়না পন্থিশাস্ত্র এদেশে কেউই হয়তো এখনো ক্লিয়ার না, হালাল গনতন্ত্র শাস্ত্র তাদের জন্য যারা হারাম ও হালাকে পুঁজি করেছে বহু আগে। অন্য ভাবে চিন্তা করলে যেমন হাসিনাপন্থি গনতান্ত্রিক শাস্ত্র কিংবা খালেদাপন্থি গনতান্ত্রিক শাস্ত্র । আমাদের দেশে যে কেউ চাইলেই এই শাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করতে পারবেনা, মোট কথা সহজে এই শাস্ত্রে মহাজ্ঞাণী হতে পারবেন না, এমনকি সেই সুযোগও নেই, দল ও ব্যক্তিক প্রয়োজনে এবং ক্ষমাতায় আশা ও আশার অভিলাশে এর সুত্র ও ব্যাখ্যা পরিবর্তন ও পরিমার্জন যোগ্য, হিসেব সহজ সরকারি দলের কাছে যা ‘গনতন্ত্র রক্ষা’ বিরোধীদের কাছে তা ‘অগনতান্ত্রিক পক্রিয়া’। একবার ভাবুন যে মানুষটি ওনাদের গনতন্ত্র মন্ত্র পাঠ করেন নাই, সে কোন পক্ষে যাবে, কোনটা তাঁর কাছে সঠিক, ‘গনতন্ত্রের চর্চা’ না কি ‘অগনতান্ত্রিক পক্রিয়া’? কথা হল, গনতন্ত্রের চর্চা ও অগনতান্ত্রিক পক্রিয়া দুটি মূলদলের রাজনৈতিক কূটকৌশল, কূটকৌশল হল ক্ষমতা আগলে রাখা আর ক্ষমতার আভিলাশ, মিছিল, মিটিং, শুরু হয় রাজপথ দখল করে নিজ দলকে জাতির সামনে জাহির করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা, গাড়ি ভাঙ্গা, যাত্রীসহ গনপরিবহনে আগুন দেওয়া ককটেল হাত বোমা যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে মাঠে নেমে পরেন নেতা কর্মীরা, গনতন্ত্র রক্ষায় ! দু’ই দলের এই রক্ষা কবজে কত জন প্রান হারালো তা কিন্তু ইস্যু না, ইস্যু হলো গনতন্ত্র রক্ষা ! আশ্চর্য কি ! এরশাদ পতনে পর থেকে আমরা কোন স্বেরাচারির কাছে থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে এনে গনতন্ত্র রক্ষা করি নাই, তবুও গনতন্ত্র রক্ষায় প্রান ঝরছে, ৯৬, ২০০১, ০৬, ১৩’ বাস ড্রাইভার, কুলি, শ্রমিক বাবার কোলে ঘুমন্ত শিশু সবাই গণতন্ত্র রক্ষার বলি হয়েছেন। পক্রিয়াটা চলমান, কথা হল তবে কবে গনতন্ত্র পূর্ণপ্রতিষ্ঠা পাবে ? হালচিত্র সবার জানা ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মসুচি থাকলে মা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যেতে চায় না, বউটি তার প্রিয়তমার পথ চেয়ে থাকে, মা দুরুদ পরেন সন্তানের স্বভাবিক ঘরে ফেরার অপেক্ষায়, এই বুঝি কোন দু;সংবাদ ! যদি আবার “আল্লাহরমাল” আল্লাহতালা উনাদের উছিলায় নিয়ে যায়। সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি সাহেব কথাটা ভাল বলেছিলেন “ আল্লাহর মাল আল্লাহ নিছে”। আমার আল্লাহ্রই মাল, নিয়েছেন ও তিনি কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের গনতন্ত্র রক্ষাকারীদের আমাদের মৃত্যুর উছিলা ওনাদের বানিয়ে গেছেন । এদেশের রাজনৈতিক পটপরিক্রমায় শাসক বারবার শোষণের আশায়, মত ও বোধ পরিবর্তন করে নিরবোধের আচরন করেছেন, ৯০ এর দশকে কেউ বলছে তত্ত্বাবধায়কের অধিনে নির্বাচন হবে, আসুন গনত্রন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একযোগে আন্দলোন করি, বাঙ্গালি ঝাপ দিল, রক্তপাত এর মধ্যে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসল, আজ আবার সেই একই চিত্র তত্ত্বাবধায়কের অধিনে নির্বাচন দিতে হবে, আসুন গনতন্ত্র রক্ষায় রাজপথে আসুন, রক্তদিন আপনাদের রক্ত দিয়েই আমাদের গনতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।মাকসুদুল হক একবার গেয়েছিলেন “ গণতন্ত্র নামের ক্ষমতাতন্ত্র” মৌখিক এ অলিখিত ধারার নাম শুধুই ক্ষমতাতন্ত্র, নীতিহিনতাই এখন রাজনীতির একমাত্র নীতি, এমন কি জাতীয় ও জন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ও প্রধান দুই দল বিভক্ত হয়ে থাকে শুধু নিজেকে ও নিজের দলকে ক্ষমতার ধারায় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে, আবাক হতাম যদি কোনদিন শুনতে পারতাম যে কোন রাষ্ট্রীয়, রাজনৈতিক, অথবা জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে প্রধান রাজনৈতিক দল দুটি একই মতামত দিয়েছে, এমন সৌভাগ্য কোন বাংলাদেশির এই জীবনে হবে কি না তাতে সন্দেহ আছে। ভিন্নমত আর ভিন্নপথে শুধু বিভক্তি বেড়েছে আমাদের প্রধান দুই রাজনৈতিক পরাশক্তি কোথাও এক হতে পারে নাই, পানি বন্টন, যুদ্ধাপরাধী, নির্বাচনী পক্রিয়া, শিক্ষা, সামজিক নিরাপত্তা এমন কি পরিবেশ, অবাক হওয়ার বিষয় শিক্ষানীতি আর পরিবেশ নিয়ে দ্বিমত পোষণের নজীর দেখেছি আমরা। তবে একটা বিষয়ে মিল আছে ২ দলই জামাতের সাথে কোথাও না কোথাও জোটবদ্ধ ছিল বা আছে, দুই দলই এরশাদ কে কাছে টেনেছিলেন উদ্দেশ্য একটাই ক্ষমতা, পৃথিবীর কোথাও সাবেক স্বৈর শাসক কে গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বা সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে তা ঠিক যানা নেই। তবে, অন্তত একটি মিল খুঁজে পাওয়া যাবে ক্ষমতায় আসা ও আসার অভিলাষে নীতিহীনতার পরিচয়ে। ক্ষমতায় আসার লক্ষে প্রধান দুটি রাজনৈতিক পরাশক্তি যে কোন জনগনবিমুখ সিন্ধান্ত নিতে পিছপা হন না দেশের মধ্যে জেএমবির উত্থান কিংবা বিদেশী পাওয়ারপ্লাণ্ট সবই ক্ষমতায় আসার অভিলাষে প্রভু ভক্তির উত্তম উদাহরন। কতটা স্বাধিন আমরা এই স্বাধিন দেশে ? ঠিক যতটুকু স্বাধীনতা দিলে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা তৈরি হয় না। আর গনতন্ত্র ? ঠিক মামা বাড়ির গাছে পাকা আমের মতন যখন যেমন খুশি পেরে খেলেই হলো, নিশ্চিন্তে আয়েশি ভোগ তবে তা শুধু রাজনৈতিক কর্তা ব্যাক্তিদের জন্য। পুড়ছে, মরছে, ভাঙছে, এই আমাদের চলমান জীবনের অবিচ্ছেদ অংশ। প্রধান দুই দলের সম্মিলিত প্রয়াসে একটা লিখিত গনতন্ত্রনামা থাকলে হয়তো কিছু জীবনে বাঁচানো যেত।
(দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশিত )
©somewhere in net ltd.