নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দাহ কালের প্রণয়

মনিরুল ইসলাম রানা

কিছু বলার নাই

মনিরুল ইসলাম রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানহীন মানদণ্ড

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৯

ছোটবেলা থেকে অ্যাভারেজ ছাত্র থাকার কারনে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বিপদে পরতে হয়েছে, স্কুলে স্যারদের ফাঁপর ছাত্র ভালো না, আব্বার নাম নিয়ে অনেক শিক্ষক আফসোস করতো অমুকের পোলাডা দিয়া কিচ্ছু হবে না।

আব্বা ও আম্মার সাথে তাদের অফিসের অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে কম্পেয়ার করতো অন্য আংকেল আণ্টির ছেলে মেয়ের সাথে, তাদের ছেলে মেয়েরা দক্ষিন এশিয়ার সর্বচ্চ শিশুতোষ ডিগ্রি পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণিতে 'বিত্তি' নামক দুর্লভ ডিগ্রি অর্জন করেছেন । সকল অনুষ্ঠানের শিরোমণি সেই সব ক্ষুদে সেলিব্রেটি।
আব্বা আম্মার একটা কষ্ট ছিলো অন্য সবার ছেলে মেয়ে যখন প্রশংসায় ভেসে যেত তখন আমাকে নিয়ে ... ! যাই হোক সে কথা বাদ দেই। সরকারি অফিসের বার্ষিক পিকনিকে সব বাচ্চাকাচ্চা যখন রোষ্ট আর কাচ্চি বিরিয়ানি খাইতো আমি সভা থেকে দূরে সবার থেকে দূরে দাড়িয়ে চোখ মুছতাম। আব্বা সেই সকাল থেকেই হয়তো গালির উপরে রেখেছেন । চোখের মধ্যে তখন একটা সার্চ ছিল সাদিক অঙ্কেলের মেয়ে যেন দেখে না ফেলে, ইসস ! কতই ভালো লাগত তারে !!

কলেজ শেষ করে এবার বিএম কলেজের পালা, ভর্তি পরীক্ষা দিলাম কিন্তু আব্বার পছন্দের সাবজেক্ট হিসাব বিজ্ঞান পাচ্ছি না, কি আর করা বাধ্য হয়ে তখনকার এক ছাত্রদল নেতাকে ফেন্সিডিল খাওয়াতে হইল। ফেন্সি আই মিন ডাইল খাইয়া ভাই আমরা হিসাব বিজ্ঞানে ভর্তি করে দিলেন।

বোর্ডস্ট্যান্ড নেই, আহামরি কোন রেজাল্ট নেই, অ্যাভারেজ ছাত্র হলে যা হয় কর্ম জীবনেও অ্যাভারেজ ক্যারানীর জীবন, আফসোসের কিছু নেই; আমার ভালো লাগত না ম্যাথ, আমি বুঝলাম না অ্যালজাবরা, শতকরা হিসেবে নিয়ে কি হবে আমি তো বেহিসেবি !

এতো বললাম আমাদের এ্যানালগ দিনের কথা,

দিন বদলেছে ডিজিটাল হয়েছে সব কিছু; আগে পরীক্ষায় নকল করলে বহিষ্কার করা হইত এখন নকল না করলে বহিষ্কার করা হয় ! কোন ছেলে মেয়ের খারাপ ছাত্র হওয়ার সুযোগ নেই এখন পুরো স্কুল খুজেও একজন অ্যাভারেজ ছাত্র পাওয়া যায় না। আমাদের বাপ চাচাদের ঐতিহ্য ব্যাক বেঞ্চার হওয়ার সুযোগ ও নেই । কাউকে খারাপ ছাত্র হওয়ার কারণে পারিবারিক ও সামজিক চাপ নিতে হয় না, কেউ ভৎর্সনা করে না। দেশে প্রথম বারের মতন শিক্ষায় সকল বৈষম্য দূর হয়েছে, এখন গ্রামের যে কোন স্কুলেও গড়ে ৯০ ভাগ পাশের হার।

আমার গ্রামের একটা ছোট গল্প; পরীক্ষার ফলাফল এসেছে মস্তান টাইপ এক ছেলে রাতের বেলা মিষ্টি নিয়ে স্যারের বাড়ি গেছেন সুখবর দিতে, কিন্তু স্যার ঘরের দরজা খুলছেন না। দরজার ভিতর থেকে ছাত্র আর স্যারের কথা হচ্ছে;
স্যার বিশ্বাস করেন আমি এ গ্রেড পাইছি,
স্যার; বাবারে আমি তোকে ফেল কারাই নাই, আমার উপরে তোর এত রাগ কেন ?
ছাত্রঃ স্যার বিশ্বাস করেন, আমার বাপ মায়ের কসম আমি পাশ করছি সেই মিষ্টি নিয়ে আসছি।
স্যার এ গ্রেডের কথা শুনে আর ভয় পেলেন যে ছেলে পাশ করবে না তিনি সিওর সে এ গ্রেড পেয়েছে! তিনি ভয় পেয়ে গেলেন এই ছেলে নিশ্চয় ফেল করে আমাকে মারতে এসেছে, ইংরেজি পরীক্ষায় তার খাতা ১০ মিনিটের জন্য স্যার নিয়েছিলেন তার পর আর স্যারের ওই কেন্দ্রে আর পরীক্ষার ডিউটি করতে হয়নি কারণটা এখনো অবশ্য যানা যায়নি।
তবে এইটুকু জানা গেছে উক্ত কেন্দ্রে সকল পরীক্ষায় মাত্র একজন ছাত্রের শাস্তি হয়েছে তা হল ১০ মিনিটের জন্য খাতা জমা নেওয়া !!

--- জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদের দীর্ঘায়ু কামনা করি, ততটুকু বেঁচে থাকেন আপনি যেন দেখে যেতে পারেন এই জাতিকে মেধাশুন্য করার দায় কতটুকু আপনার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৬

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: খুব অবেগী লেখা। আমিও ভাই অ্যাভারেজ, সেই ছাত্র জীবন থেকে কর্ম এবং সংসার জীবনে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.