![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারন মানুষ, অতিসাধারন হতে চাই।
বিকেল ৩ঃ১৫, বগুড়া থেকে বাসে উঠলাম গন্তব্য ঢাকা। ২০ মিনিট পর শেরপুর, বগুড়া বাসস্টপেজ থেকে একজন যাত্রী উঠবে। বাস থামল, যাত্রী উঠলো। আমার দৃষ্টি জানালা দিয়ে বাহিরে, যারা যাত্রীটিকে বিদায় জানাতে এসেছে, যাত্রীর প্রতি তাদের বিদায় বেলার আদেশ-নিষেধ জাতীয় কথাবার্তা শোনায় ব্যস্ত। কথোপকথন গুলো এরকম- দেখেশুনে যেও, রাস্তায় কারও দেওয়া কিছু খাবে না, ঢাকায় পৌছিয়েই ফোন করবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বাসে ওঠার আগে থেকেই আমার পাশের ছিটটা খালি ছিল এখন হয়ত ঐ যাত্রীটি এখানে বসবে। যাত্রীকে দেখার পরপরই আমার মনে হল সে এখানে বসবে এবং আমার আরামের যাত্রা আজ নষ্ট করবে। (এখানেই বলে নেই- যাত্রী একজন মেয়ে এবং সুন্দরীও) যথারীতি যাত্রী আমার ছিটের পাশে আসলেন এবং খুব মিষ্টি শুরে বললেন- ভাইয়া আমি জানালার পাশে বসবো। আমি বললাম জানালার পাশটা আমার প্রিয়। মেয়েটি মনে হয় একটু মনঃক্ষুণ্ণ হল, তারপর আমার পাশের ছিটেই বসলো। জানালার পাশের ছিটের টিকেট আমিই কেটেছি আর ছিটটা মেয়েটিকে ছেড়েও দিতাম কিন্তু দিলাম না মেয়েটির চাওয়ার ধরন ভাললাগেনি বলে। একরকম অধিকার মার্কা কথা- ভাইয়া আমি জানালার পাশে বসবো। বগুড়ার মেয়েরা ফাস্ট জানি বাট এতটা অনুমান করিনি। যাইহোক, কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিলাম আর চোখে সানগ্লাস। মিনিট দশেক পর সানগ্লাস খুলে দেখি মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম- কি দেখেন?
মেয়ে- আপনার কান খুব সুন্দর।
আমি- কান সুন্দর নাকি হেডোফোনও?
মেয়ে- দু'টোই।
আমি- গান শুনবেন?
মেয়ে- শুনবো।
আমি- হেডফোনের এক অংশ মেয়েটিকে দিলাম। অপূর্ণতায় পূর্ণ By DOT Band এর গানটা বাজছিল তখন। আমি বললাম চলবে নাকি চেঞ্জ করব?
মেয়ে- চলুক।
গাড়ীতে কোথাও ভ্রমণ করলে আমি মূলত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যাই আর ফোনে গান প্লে করি এলোমেলো। গান বাজছিল, আমার একটু ঘুম ঘুম আসছিলো ঠিক তখনই মেয়েটির ডাক- ভাইয়া, ভাইয়া, গানটা চেঞ্জ করে দিন। আমি একটু বিরক্ত আর সে মনে মনে খুশি। মনে হচ্ছে জানালার পাশে বসতে না দেওয়ার খেসারত দিতে হবে আজ। গান চেঞ্জ করে দিয়ে বললাম- বাস না থামা পর্যন্ত আমাকে আর ডাকবেন না আর চেঞ্জ করতে হলে হেডফোনের এখানে চাপ দিলেই হবে।
মেয়ে- আচ্ছা ঠিক আছে।
||মধুর বিরম্বনা ও ভাললাগা-শেষ অংশ||
সিরাজগঞ্জ ফুড ভিলেজ এ এসে গাড়ী থামলো, আমার ঘুম ভাঙলো। বললাম কিছু খাবেন?
মেয়ে- চিপস। আপনি কিছু খাবেন?
আমি- পানি।
আমি- ক্যান্টিনে গিয়ে দু'টো চিপস আর এক বোতল পানি নিলাম। একটা সিগারেটও নিলাম (সিগারেট খাওয়া মোটামুটি বাদ, বাহিরে কোথাও গেলে খাওয়া হয় এক আধটা) সিগারেট শেষ করে বাসে উঠে দেখি উনি জানালার পাশে বসেছেন। মেজাজটা মোটামুটি খারাপ হল কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না। চিপস দিয়ে শুধু বললাম বাকী রাস্তায় নো বকবক, আমি ঘুমাবো।
মেয়ে- আচ্ছা।
ঘুম ভাঙলো যখন, তখন আমি গাজীপুর। মেয়েটিও বোধহয় ঘুমিয়েছিল। এরপর আব্দুল্লাহপুর, দেখতে দেখতে এয়ারপোর্ট চলে আসলাম আর আমার নেমে যাওয়ার সময় হয়ে আসলো। কিছু একটা বলা দরকার এখন। বললাম- আমি সামনের স্টপেজ এ নেমে যাব, আপনার নাম কি, কি করেন, কোথায় থাকেন, কই যাবেন?
মেয়ে- এত প্রশ্ন?
আমি- হুম সবগুলা একসাথে করলাম আপনি বলতে থাকেন।
মেয়ে- মিথিলা আক্তার, বিবিএ ২য় ইয়ার, বাসা বগুড়া, যাবো আপুর বাসায় ঢাকা। আর কিছু?
আমি- নো থ্যাংকস, নাইস নেম।
মেয়ে- আর আপনি?
যদিও মেয়েটির স্টাডি নিয়ে সংশয় ছিল বাট বলা হয়নি কারণ হেল্পারের আমাকে নেমে যাওয়ার ডাক আর মেয়েটির প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন।
আমি- জব করি, সেলিম। বাই, ভাল থাকবেন সবসময়।
ভাললাগার ঘোরটা বাস থেকে নেমে যেতেই কেটে গেল তবে এর রেশ রয়ে গেল। মেয়েটির নম্বর নেওয়া যেত বাট আমি চাইনি কারণ ভাললাগার দ্বিতীয় পর্বের প্রতি আমার কোন আগ্রহ ছিল না। আর এরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি এর আগেও দু একবার হয়েছি আমি। সো ভাললাগার লাগাম টেনে আমি আমার গন্তব্যে চলে গেলাম।
রুমে যাওয়া পর্যন্ত ঘোরের মধ্যেই ছিলাম, আসলেই এরকম কিছু হইল নাকি আজ!! সেযাইহোক এটা স্বপ্নের মত, আপনি কল্পনা করতে পারেন।
...........................................................................................-স্পর্শনীল
©somewhere in net ltd.