![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারন মানুষ, অতিসাধারন হতে চাই।
হারামজাদা। চোখে দেখোস না রিকশা চালানোর সময়?
মতিঝিলের ব্যস্ত রাস্তায় ঠিক এভাবেই প্রচন্ড জোরে একজন ভদ্রলোক রিকশাচালকের উপরে চড়াও হয়ে গেলেন।
ভদ্রলোকের নাম আকবর সোবহান। স্যুট টাই পরে বাসায় ফিরছিলেন। বাজার থেকে বিশাল একখান মাছ কিনে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন। এমন সময় এক রিকশার চাকা তার দামি প্যান্টে সামান্য ধূলো লাগিয়ে দেয়।
"**** পোলা, মা***। তোর রিকশা চালানো ছুটাবো আজকে।
-স্যার, আমি দেখি নাই, স্যার।
স্যুট টাই পরিহিত একজন ভদ্রলোক রিকশাওয়ালাকে প্রচন্ড জোরে চড় মারছেন, কিল ঘুষি মারছেন, খুবই ইন্টারেস্টিং দৃশ্য। অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে দেখছে, কেউ ঠেকাতে যাচ্ছে না। ব্যস্ত রাস্তায় অনেক আওয়াজ। আকবর সোবহানের চড়ের আওয়াজ তাই শোনা যায়নি। রিকশাওয়ালার গায়ের রং কালো। তাই আকবর সোবহানের হাতের ছাপ পরেনি গালে।
যা এইখান থেকে, এই এলাকা ছাইড়া যা শু*** বাচ্চা।
আকবর সোবহান থামছিলেন না। রিকশাওয়ালা করিম মিয়া দ্রুত রিকশা নিয়ে চলে গেলেন সেখান থেকে। করিম মিয়ার শার্ট ছিরে গেছে। তার গাল বেয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছিল। সেটা অশ্রু না ঘাম বোঝার উপায় নেই। চোখের নিচ থেকে রক্ত পড়ছিল। আকবর সোবহান সাহেবের গায়ে যে অনেক শক্তি।
বড় একটা মাছ আনছি, বেশি করে মশলা দিয়ে এইটা রান্না করো তো।
আকবর সোবহান সাহেব হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন। আজ পেট ভরে খাবেন তিনি।
দুপুরে খাওয়ার পর মাথাটা ঝিম ঝিম করতে থাকে আকবর সোবহান সাহেবের। কেমন জানি খুব দুর্বলভাবে তিনি স্ত্রী কে ডাকলেন।পুরানো হার্টের সমস্যাটা আবার জেঁকে ধরেছে।
মোটামুটি দুই মিনিটের মাঝে আকবর সোবহান সাহেব জ্ঞান হারালেন। হন্তদন্ত হয়ে তাকে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করছিলেন তার স্ত্রী।
এরপর............................................................................................
বিকালের দিকে মতিঝিলের রাস্তায় একটা রিকশাকে দ্রুত ছুটে চলতে দেখা যায়। ছেঁড়া শার্ট পরা রিকশাচালকের নাম করিম মিয়া। যার ডান চোখের নিচের দিকটা ফোলা। করিম মিয়ার রিকশায় আকবর সোবহান নামক একজন ভদ্রলোক চোখ বন্ধ করে তার স্ত্রীর পাশে পড়ে আছেন। করিম মিয়া খুব দ্রুত রিকশা চালাচ্ছেন। খুব দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। এই লোকটাকে বাঁচাতে হবে। সুস্থ হবার পর আকবর সোবহান সাহেব কিচ্ছু জানবেন না।
এরকম হাজারটা করিম মিয়ার কথা কেউ জানে না, দেখে না কেউ। আকাশের উপরে একজন আছেন। শুধু তিনিই দেখেন, তিনিই জানেন।
করিম মিয়ারাই তাই শত কষ্টের মাঝেও সুখী আর আকবর সোবহানরাই তাই শত আনন্দের মাঝেও দুঃখী।।
______________________________________________________-স্পর্শনীল
ফেসবুকে আমি_ https://www.facebook.com/sparshonil
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৯
উত্তরের উপাখ্যান বলেছেন: ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ।
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: বাস্তবতাটা প্রায়ই ওরকম হয়না, করিমরা আজকাল উল্টো ধরে পিটায়, ট্রাই! ওদের সাথে সবাই যোগ দেয়, অভিজ্ঞতা থেকে বলছি!
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৩
উত্তরের উপাখ্যান বলেছেন: হুম, আপনার অভিজ্ঞতার প্রতি সহমর্মিতা রেখেই বলছি- বাস্তবে বেশিরভাগ সময় উপরোল্লিখিত ঘটনাই ঘটে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮
মহা সমন্বয় বলেছেন: করিম মিয়ারাই তাই শত কষ্টের মাঝেও সুখী আর আকবর সোবহানরাই তাই শত আনন্দের মাঝেও দুঃখী।
হ্রদয় ছুঁয়ে গেল।