নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াসেত সাহিন

ওয়াসেত সাহিন

পেশায় একজন প্রকৌশলী । গান শুনতে , বই পড়তে এবং বেড়াতে ভালবাসি ।

ওয়াসেত সাহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাইওয়ে সত্যিকার হাইওয়ে উঠার জন্য করনীয়

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৬



বাংলাদেশ আকারে ছোট । তবে এর জনসংখ্যা বিশাল । ছোট একটি ভূখন্ডে গাদাগাদি লোকের বাস । ভাগ্য ভাল যে অনেক সমস্যা থাকার পরও দেশটি সহজ বাসযোগ্য । প্রাকৃতিক জরুরী উৎস সমুহ পযার্প্ত বিদ্যমান রয়েছে । এর অধিকাংশ ভূমি সমতল । রয়েছে নদী, অফুরান পানি , উত্তম চাষযোগ্য ভূমি । নরম মাটির পাহাড় । এতে জুম চাষও সহজ । কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা আমাদের সকল কর্ম কান্ডের গতিকে স্তন্ধ করে দিচ্ছে । যাতায়াতের সবগুলো পথই এদেশে চালু আছে । সড়ক পথ, রেলপথ, আকাশপথ ও নদী পথ । তবে সড়ক যোগাযোগই তুলনামূলক সহজ ও সহজ প্রাপ্য । অথচ সহজে গন্তব্যে পৌঁছার এ ব্যবস্থাটাই বর্তমানে খুব নাজুক পরিস্থিতিতে পতিত হয়েছে । মাঝে মাঝে ধীর গতির লঞ্চ-ষ্টীমারেরও পেছনে পড়ে যাচ্ছে এটি । শুধু শহর আর নগরের ভেতরের ট্রাফিক জ্যামের জন্যই নয় । বরং দূরপাল্লার যাতায়াতের বেলাও প্রায় একই । জেলা সমূহের মাঝে বা নগর সমূহের মাঝে যোগাযোগেও প্রচুর সময় অপচয় হয়ে থাকে । নতুন রাস্তা নির্মান করা হচ্ছে । বিদ্যামান রাস্তাকে প্রশস্ত করা হচ্ছে । নদী পারাপারের ফেরী বাদ দিয়ে নির্মিত হয়েছে ব্রীজ । বড় বড় শহরের পাশ দিয়ে বাইপাস সড়ক তৈরী হয়েছে । ফলে দূরত্ব কমে আসছে । তাত্ত্বীক ভাবে সময় সাশ্রয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে । বিশ্বমানের আরামদায়ক বাস এসে গেছে । কিন্তু এসবের কোন আশাপ্রদ ফলাফল দেখা যাচ্ছেনা । আগে এক শহর থেকে আরেক শহরে যেতে যতটুকু সময় লাগত এখন লাগে তার চেয়ে বেশি । সময়ের অপচয় বাড়ছে । এর সাথে বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি । মানুষ অবশ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে । সেই সাথে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে । এটি একটি কারন হতে পারে তবে মূল কারন নয় । মূল কারন হচ্ছে রাস্তার গা ঘেসে অথবা স্থান বিশেষে এর উপরেই বাজার বসে যাওয়া । এটি হাইওয়ের থিম বা উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ অন্তরায় । উন্নত দেশের কথা বাদ দিলাম, এটি অবশ্য দেশ থেকে দেশে বিভিন্ন হয় , তবে আমাদের দেশের অবস্থাতো কল্পনাতীত করুন। কোন কোন দেশে পঞ্চাশ কিলোমিটার ,একশত কিলোমিটার বা এর চেয়েও অধিক দূরত্বের ব্যবধানে হাইওয়েতে ক্রসিং , ডিভাইডারে ওপেনিং বা ইউ টার্নের ব্যবস্থা রাখা হয় । অবশ্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন । কিন্তু তাই বলে এত করুন অবস্থা মেনে নেয়া যায় না । এখানে একশো/ দুশো/ পাঁচশো মিটার পর পর দোকান, বাজার , ব্যবসা প্রতিষ্ঠান । বিদ্যমান পাকাটুকু সম্পূর্ণ রাস্তার অংশ মাত্র । এর আওতায় দুপাশে শোল্ডারএ সহ বেশ খালি জায়গা রয়েছে । কোথায় কতটুকু জায়গা আছে সেটি অবশ্যি সড়ক বিভাগের জানা রয়েছে । এই সরকারি জমিতে বাজার হয়েছে অথবা প্রাইভেট জমিতে থেকে শুরু হয়ে রাস্তা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে । মোট কথা রাস্তা হচ্ছে এসব দোকান মার্কেটের উঠান বা আংগিনা । ফলে মানুষ সারি সারি বাজার হাট করছে, রিক্সা ভ্যানে চলাচল করছে, রাস্তা পারাপার হচ্ছে । এটি কোন ক্রমেই হাইওয়ের বৈশিষ্ট হতে পারেনা । এটি বজায় রেখে রাস্তাকে যতই প্রশস্ত করা হোক , বাড়ানো হোক লেনের সংখ্যা তেমন কোন ফায়দা এতে আসবেনা ।

প্রয়োজন উন্মূক্ত সড়ক । সামনের পথ থাকতে হবে পরিষ্কার । তবেই হাইওয়ে ব্যবহারকারী যানবাহন সহনীয় সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে । হাইওয়েতে অবশ্যই রিক্সা, ভ্যানগাড়ী, ঠেলাগাড়ী, গরুর গাড়ী চলাচল বন্ধ করতে হবে । কিন্তু লোকাল বাস , যা অল্প দূরত্বের যাত্রি বহন করে তার কি হবে ? এটিতো বন্ধ করা যাবেনা । একে অবশ্যই চালু রাখতে হবে । তবে কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন হবে । এসব বাসের স্টপেজ ঘন ঘন হবে । ঘন বলতে এমন না যে মহল্লায় মহল্লায় পাড়ায় পাড়ায় তা করতে হবে । একটি উপজেলার আওতায় বড়জোর দুটি স্টপেজ থাকতে পারে । হাইওয়ে বরাবর দিক পরিবর্তন করার বা ক্রসিংএর সুবিধা থাকবে এই পয়েন্টগুলোতে । বাড়ী থেকে বেরিয়েই বাসে উঠে পড়ার সুবিধা মানুষকে দেয়া সম্ভব নয় । গ্রাম্য রাস্তায় বা এলাকার রাস্তা বেয়েই তাকে নিকটবর্তী স্টপেজে পৌঁছাতে হবে । সেখানে গিয়েই তাকে বাস ধরতে হবে । যদি নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে হাইওয়েতে উঠতে চায় ওইসব পয়েন্টেই তা করতে হবে । ইচ্ছে হলতো যে কোন জায়গা দিয়ে হাইওয়েতে উঠে গেলাম , ইচ্ছে মত যাত্রার দিক ঘুরিয়ে দিলাম এটি বন্ধ করতে হবে ।

হাইওয়ের শোল্ডারে অথবা তার পাশে গা ঘেসে গড়ে উঠা বাজার দোকানপাট সড়ক বিভাগকে অবশ্যই উচ্ছেদ করতে হবে । রাস্তার পাশে প্রাইভেট জমিতে যদি বাজার হয় , তাতে অবশ্য সড়ক বিভাগের কিছু বলার থাকেনা । বলার না থাকলেও করার অবশ্যই থাকে । রাস্তার মুখে বাজার জমার উদ্দেশ্যই হল সহজ জমায়েত ও যোগাযোগের সুবিধা পাওয়া । স্বীয় সুবিধার জন্য বৃহত্তরের অসুবিধার কথা আর কে ভাবে এদেশে ! ছোট ছোট স্বার্থপর আচরণ আর ভ্রান্তি মিলে সৃষ্টি হয় বড় জাতীয় দূর্গতি । এখন সড়ক বিভাগ যেটা করতে পারে তা হল এসব বাজারের এন্ট্রেন্স হাইওয়ে থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে । এসব বাজারের সাথে হাইওয়ের কোন সরাসরি যোগাযোগ থাকতে পারবেনা । কেউ বা কোন বাহন এসব বাজার থেকে হাইওয়েতে পদার্পন করতে পারবেনা । হাইওয়ে থেকেও এসব বাজারে ঢোকা যাবেনা । এসব বাজারে মানুষ চলাচল করবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা এলজিইডির রাস্তায় । রাস্তা পারাপারের জন্য রোডস / এলজিইডি বা অন্য কোন বিভাগ থেকে ফুটওভার ব্রীজ তৈরী করে দেয়া যেতে পারে ।

হাট বাজার এবং প্রযোজ্য স্থান সমূহে রাস্তার দুপাশে ফেন্সিংএর ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হবে । আর লোকাল বাসের স্টপেজ পয়েন্ট গুলোতে ওপেনিং রেখে বাকি হাইওয়ে বরাবর রোড ডিভাইডার নির্মান করতে হবে । লোকাল বাস থামার জন্য হাইওয়ের পাশে প্রয়োজনীয় আকারের প্লাটফর্ম তৈরী করতে হবে । এসব বাস অবশ্যই হাইওয়ের উপরে থামতে পারবেনা , এটি স্টপেজ পয়েন্টে হাইওয়ের বাইরে এর জন্য নির্ধারিত প্লাটফর্মে থেমে যাত্রি উঠা নামা করবে ।

উপরে আলোচ্য ব্যাবস্থাটি খুবই জরুরী । এটি ছাড়া লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রাস্তা প্রশস্ত করা যেতে পারে, চার লেনের হাইওয়ে নির্মান করা যেতে পারে কিন্তু ফলাফল তেমন পরিবর্তনের আশা করা যায় না । প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক ক্ষতি নেই । তবে এর সাথে উপরের মৌলিক বিষয় গুলোর অন্তর্ভূক্তি জরুরী । হাইওয়ের উন্নতি সাধন আমাদের জনগনের জন্য ও দেশের গতিশীল অর্থনীতির জন্য প্রয়োজন ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৫

এক্সপেরিয়া বলেছেন: আসলেই তা দরকার

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯

ওয়াসেত সাহিন বলেছেন: ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন ।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: যৌক্তিক পোস্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.